OrdinaryITPostAd

ইতালি সর্বনিম্ন বেতন কত ২০২৪[বিস্তারিত জানুন]

ইতালির সর্বনিম্ন বেতন কত ২০২৪ এই বিষয়ে ইতালি যেতে ইচ্ছুক সকলেরই কমন প্রশ্ন। পশ্চিম ইউরোপের একটি প্রাচীনতম দেশ হচ্ছে ইতালি। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের একটি স্বপ্ন ইতালি যাওয়া। ইতালিগামী সকলের জন্য আমরা আজকের এই আর্টিকেলে ইতালির সর্বনিম্ন বেতন কত ২০২৪ এই নিয়ে আলোচনা করব। কাজেই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। 

তাছাড়া আরো আলোচনা করব- ইতালিতে প্রবাসি শ্রমিকের বেতন কত? ইতালিতে কৃষি ভিসার বেতন কত?ইতালির সর্বনিম্ন মজুরি কত? ইতালিতে চাকরির বেতন কত?ইতালির সর্বোচ্চ বেতন কত?ইতালিতে ইলেকট্রিক কাজের বেতন কত?

আর্টিকেল সূচিপত্র 

১. ইতালির সর্বনিম্ন বেতন কত ২০২৪

ইতালির সর্বনিম্ন বেতন কত ২০২৪ এই সম্পর্কে আমরা আর্টিকেলর শুরুতেই আলোচনা করব। 
অনেক মানুষ রয়েছে যারা ইতালি যাওয়ার পূর্বে ইতালির বেতন সম্পর্কে জানতে চায়। নতুন অবস্থায় ইতালিতে একজন শ্রমিককে কম টাকা বেতন দেওয়া হয়। তবে কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাড়াতে থাকলে বেতনের পরিমাণও বাড়ে। কাজের ধরনের উপরও বেতনের পরিমাণ নির্ভর করে থাকে। অন্যান্য দেশের তুলনায় ইতালিতে একটু বেশি বেতন দেওয়া হয়ে থাকে। ইতালিতে আপনি যে ধরনের কাজই করুন না কেন প্রতিমাসে সর্বনিম্ন ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ইতালিতে নূন্যতম বেতন সীমা নেই। দেশটিতে প্রতি মাসে গড় বেতন হচ্ছে ২,৫০০ ইউরো। 

২. ইতালিতে প্রবাসি শ্রমিকের বেতন কত 

ইতালিতে প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ দেয় বিভিন্ন কাজের জন্য। একজন প্রবাসী শ্রমিক কত টাকা বেতন পেয়ে থাকবে তা নির্ভর করে শ্রমিকটি কোন কাজে কর্মরত রয়েছেন তার উপর। চলুন তাহলে দেখে নেই ইতালিতে একজন প্রবাসি শ্রমিক বিভিন্ন কাজে কর্মরত থেকে কত টাকা বেতন পেয়ে থাকে। 
  • রেস্টুরেন্টে কর্মরত একজন প্রবাসী শ্রমিক মাসিক বেতন পায় প্রায় ৮০ হাজার টাকা। 
  • কোম্পানি ভিসায় একজন শ্রমিক বেতন পেয়ে থাকে ৪০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।
  • ইতালিতে একজন প্রবাসি ড্রাইভারের বেতন হয়ে থাকে ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। 
  • কন্সট্রাকশন কাজে নিয়োজিত একজন কর্মী বেতন পেয়ে থাকে ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা।
  • ইতালিতে একজন ক্লিনার মাসিক বেতন পায় ৬০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা। 
  • একজন কোম্পানির কাজে কর্মরত শ্রমিকের বেতন হয়ে থাকে ৪০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। 

৩. ইতালিতে কৃষি ভিসার বেতন কত 

কৃষি কাজের চাহিদা ইতালিতে অন্যান্য কাজের তুলনায় বেশি। কারণ ইতালিতে ফসলি জমির পরিমাণ সর্বাধিক। ইতালিতে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিবছরই সরকারিভাবে লোক নিয়োগ দিয়ে থাকে। কৃষি ভিসায় ইতালি যাওয়ার পূর্বে ইতালির কৃষি ভিসার বেতন সম্পর্কে জানতে চায়।আপনি যদি ইতালিতে কৃষি ভিসায় যান তাহলে মাসিক ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা মাসিক ইনকাম করতে পারবেন। তবে অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি সাপেক্ষে বেতনের পরিমাণও কম বেশি হয়ে থাকবে। 

কৃষি ভিসার আবেদন :

প্রতি বছরই ইতালির সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে কৃষক নিয়োগের সার্কুলার দিয়ে থাকে। বিভিন্ন নিউজ থেকে জানা যায় যে,ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে ইতালির কৃষি ভিসার আবেদন শুরু হয়। আপনি যদি কৃষি ভিসার আবেদন করতে চান তাহলে আপনাকে সঠিক সময়ে আবেদন ফরম পূরণ করে সাবমিট করতে হবে। কৃষি ভিসার আবেদন করার জন্য প্রথমে গুগলের ক্রোম ব্রাউজারে প্রবেশ করুন। এখান থেকে ইতালির ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। কৃষি ভিসার আবেদন করার ওয়েবসাইট হচ্ছে https://visa.vfsglobal.com/one-pager/italy/bangladesh/english/। এই লিংকে প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য ও ডকুমেন্টস দিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। সুতরাং এভাবেই আপনি ইতালির কৃষি ভিসার আবেদন করতে পারবেন। 

কৃষি ভিসার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস :

কৃষি ভিসার আবেদন করার জন্য আপনার কিছু ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে। এসব ডকুমেন্টস ব্যতীত ভিসার আবেদন অসম্ভব। চলুন তাহলে কৃষি ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপএ গুলো দেখে নেই -
  • সচল পাসপোর্ট (৬ মাস মেয়াদের) 
  • রঙিন ছবি(পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি)
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট 
  • চেয়ারম্যান সনদপএ
  • জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি 
  • কৃষি কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে তার সার্টিফিকেট
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট 

কৃষি ভিসা খরচ:

সরকারিভাবে আপনি যদি ইতালির এগ্রিকালচার ভিসা পেয়ে যান তাহলে অনেক কম খরচে আপনি ইতালি যেতে পারবেন। আবার যদি এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে যান তাহলে আপনার অনেক টাকা খরচ পরবে। এজেন্সি মাধ্যমে ইতালির কৃষি ভিসায় যেতে আপনার ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা খরচ হবে। 

কৃষি ভিসা প্রসেসিং টাইম:

যারা কৃষি ভিসায় ইতালি যেতে চায় তারা জানতে চায় যে ইতালির কৃষি ভিসা প্রসেসিং হতে কত সময় লাগে? পূর্বে ইতালির কৃষি ভিসা প্রসেসিং হতে প্রায় দেড় থেকে দুই বছর সময় লাগতো কিন্তু বর্তমানে ফাইল জমা দেওয়ার ৬০ দিনের মধ্যেই ভিসা পাওয়া যায়।

ইতালিতে বৈধ হওয়ার উপায়:

অনেকেই রয়েছে যারা ইতালিতে অবৈধ অবস্থায় থাকে। এর ফলে কাজের সুযোগ সুবিধা যেমন কম থাকে ঠিক তেমনি বৈধ হওয়ার অনেক উপায়ও অনেকে খোঁজে থাকে। আপনি যদি ইতালিতে বৈধ হতে চান তাহলে আপনাকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। অনলাইনে আবেদন করার জন্য https://nullaostalavoro.dlci.interno.it/ এই লিংকে প্রবেশ করুন। আবেদন করার জন্য অবশ্যই আপনাকে আবেদন ফি দিতে হবে। ইতালিতে বৈধ হওয়ার জন্য আবেদন ফি হচ্ছে ৫০০ টাকা। 

৪. ইতালির সর্বনিম্ন মজুরি কত 

ইতালির সর্বনিম্ন মজুরি সম্পর্কে অনেকেই জানতে চায়। ইতালিতে সর্বনিম্ন মজুরি কত হবে তা নির্দিষ্ট করা নেই। কেননা ইতালিতে ঘণ্টা ভিত্তিক ইউরো বেতন দেওয়া হয়। আপনি যদি ইতালিতে ১ ঘন্টা কাজ করেন তাহলে মাসিক ৩ থেকে ৫ ইউরো পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। আবার কাজের ভিন্নতার উপর বেতনের পরিমাণও কম বেশি হয়ে থাকবে। ইতালিতে সাধারণ একজন শ্রমিক মাসিক এক হাজার থেকে ১২০০ ইউরো পর্যন্ত বেতন ইনকাম করতে পারবে।ইতালির সর্বনিম্ন মজুরি হচ্ছে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৮০ হাজার টাকা। 

ইতালি ভিসার দাম:

ইতালির ভিসা সিজনাল ও নন সিজনাল দুই রকমই হতে পারে। সিজনাল ভিসায় ইতালিতে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যেতে হয়। অন্যদিকে নন- সিজনাল ভিসায় আপনি পড়াশোনা, কাজ বা পরিবারের সদস্যের সাথে থাকতে পারেন। নন সিজনাল ভিসায় ইতালি যেতে ভিসার দাম পড়বে ১১ থেকে ১২ লক্ষ টাকা। স্টুডেন্ট ভিসায় ইতালি যেতে খরচ পড়বে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা। মূলত ভিসার দাম নির্ভর করে ভিসার ধরনের উপর। 

ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি :

ইতালিতে প্রতিনিয়ত কাজের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতালিতে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন কাজের প্রচুর কর্মসংস্থান। যারা ইতালিতে যেতে চায় তারা প্রতিনিয়তই প্রশ্ন করে থাকে ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি। আর্টিকেলের এই অংশে জানতে পারবেন ইতালিতে কোন কাজের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। 
  • কৃষি কাজ
  • ফুড প্যাকেজিং
  • কন্সট্রাকশন 
  • গাড়ির ড্রাইভিং
  • মেকানিক্যাল
  • পাইপ ফিটিং 
  • ক্লিনিং ম্যান
কৃষি কাজ 
ইতালির সরকার প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে কৃষি খাতকে উন্নত করার জন্য। এজন্য প্রতিনিয়ত এই কাজে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে।বর্তমানে স্পন্সর ভিসার মাধ্যমে ইতালিতে কৃষিকাজে লোক নিয়োগ দিচ্ছে। যেকোনো দেশের নাগরিক এই ভিসার মাধ্যমে ইতালিতে যেতে পারবেন। তাছাড়া আপনার যদি ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা নাও থাকে তাহলেও কৃষি ভিসায় ইতালিতে যেয়ে ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন । ইতালিতে কৃষি কাজ করার অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। কৃষি ভিসায় ইতালিতে যেয়ে আপনি সবজি বাগান, ফলের বাগান এবং গবাদি পশু পালন করতে পারবেন। 

ফুড প্যাকেজিং

ইতালিতে অনেক ফলের বাগান রয়েছে। এসব ফলের বাগানে কাজ করার জন্য অনেক সংখ্যক লোকের প্রয়োজন। ফলের বাগান থেকে ফল সংগ্রহ করার জন্য অনেক ফুড কর্মীর প্রয়োজন হয়। আপনি যদি এসব ফলের বাগানে কাজ করতে চান তাহলে কাজের ভিসায় পাড়ি জমান ইতালিতে। দেশটিতে কাজটির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। 

ড্রাইভিং
আপনি যদি ভালো গাড়ি ড্রাইভিং করতে পারেন তাহলে ইতালিতে আপনি ড্রাইভিং কাজের ভিসায় যেতে পারেন।ইতালিতে ড্রাইভিং কাজের ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং ইতালিতে ড্রাইভিং ভিসায় যেয়ে অনেক টাকা আয় করতে পারবেন। 

কন্সট্রাকশন
ইতালিতে বর্তমানে কন্সট্রাকশন কাজের জন্য ব্যাপক সংখ্যক নিয়োগ দেওয়া হয়। অতীতেও এই কাজের ব্যাপক চাহিদা ছিলো, বর্তমানেও এর অনেক চাহিদা। ইতালিতে অনেক বড় বড় প্রজেক্ট রয়েছে এবং এসব প্রজেক্টের কন্সট্রাকশন কাজের জন্য প্রচুর লোক প্রয়োজন। 

ইতালিতে কত ঘন্টা কাজ করা যায়

অনেকেই জানতে চায় ইতালিতে কত ঘন্টা কাজ করতে হয়।সপ্তাহে একজন ইতালি কর্মীকে প্রায় ৪০ ঘন্টা কাজ করতে হয়। অমেক ক্ষেএে আবার ৪৮ ঘন্টাও কাজ করতে হয়। মূলত কত ঘন্টা কাজ করতে হবে তা নির্ভর করে থাকে নিয়োগকর্তার উপর। আপনি যদি শ্রমিক হিসেবে ইতালিতে কাজ করতে চান তাহলে সপ্তাহে ৪০ থেকে ৪৮ ঘন্টা কাজ করার পাশাপাশি দুই তিন দিন ছুটিও কাটাতে পারবেন। 

৫. ইতালিতে চাকরির বেতন কত 

ইতালির চাকরির বেতন কত হবে তা নির্ভর করে চাকরির ধরনের উপর। আপনি যদি ইতালিতে রেস্টুরেন্টের চাকরি নেন তাহলে মাসিক ১.৫-২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।আবার যদি গার্মেন্টেসে কাজ করেন তাহলেও অনেক টাকা আয় করতে পারবেন। মূলত আপনি কত টাকা ইনকাম করবেন তা আপনার কাজের দক্ষতা এবং চাকরির ধরনের উপর নির্ভর করবে। 

৬. ইতালির সর্বোচ্চ বেতন কত 

ইতালিতে সর্বোচ্চ বেতন কত এই ব্যাপারে অনেকেই জানতে চায়। ইতালিতে অনেকগুলো কাজের বেতন সর্বোচ্চ। চলুন ইতালিতে সর্বোচ্চ বেতন সম্পর্কে জেনে নেই। 
  • সার্জন(একজন সার্জনের সর্বোচ্চ মাসিক বেতন হচ্ছে ২১,০০০ ইউরো। 
  • আইনজীবী (একজন আইনজীবীর সর্বোচ্চ বেতন হচ্ছে ১৬,০০০ ইউরো। 
  • ব্যাংক ম্যানেজার (একজন ব্যাংক ম্যানেজারের সর্বোচ্চ বেতন হচ্ছে ১৬,০০০ ইউরো। 
  • মার্কেটিং ডিরেক্টর (একজন মার্কেটিং ডিরেক্টরের মাসিক বেতন হয়ে থাকে ৮,০০০ ইউরো। 
  • প্রফেসর(একজন প্রফেসর এর মাসিক বেতন ১০,০০০ ইউরো)

৭. ইতালিতে ইলেকট্রিক কাজের বেতন কত 

ইতালিতে ইলেকট্রিক কাজের রয়েছে অনেক চাহিদা। আপনি যদি ইলেকট্রিক কাজে দক্ষ হন তাহলে ইতালিতে যেয়ে ভালে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তবে ইলেকট্রিক কাজ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই ইতালি ভাষা জানতে হবে। আপনি যদি ইতালিয় ভাষা না জানেন তাহলে ইলেকট্রিক কাজ করে আপনি মাসিক ১২০০ ইউরো পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। আবার যদি আপনি ভাষা জানেন তাহলে মাসিক মিনিমাম ১৮০০ থেকে ২০০০ ইউরো পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। 

৮.ইতালি স্টুডেন্ট ভিসা

উচ্চশিক্ষার জন্য বর্তমানে জনপ্রিয় দেশগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ইতালি। ইতালির উচ্চ শিক্ষা শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইতালিতে উচ্চ শিক্ষা প্রদানকারী প্রায় ৯০ টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ পরিচালিত হয় সরকারি অর্থায়নে। ইতালিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি ও অল্প। ইতালির বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোর্স নিজের পছন্দমত বাছাই করে পড়তে পারবেন। 

ইতালি স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা :

আপনি যদি ইতালি স্টুডেন্ট ভিসা পেতে চান তাহলে আপনার বেশ কিছু যোগ্যতার প্রয়োজন হবে। মাস শেষ হওয়ার পর আপনাকে পড়াশোনা, থাকা - খাওয়াতে গুনতে হবে লাখ লাখ টাকা। তার পাশাপাশি রয়েছে অনেক মেধাবী স্টুডেন্টের কম্পিটিশন। চলুন তাহলে ইতালি স্টুডেন্ট ভিসার জন্য কি কি যোগ্যতা প্রয়োজন সেগুলো দেখে নেই। 

একাডেমিক যোগ্যতা

আপনি যদি ইতালিতে স্টুডেন্ট ভিসা পেতে চান তাহলে আপনার একাডেমি যোগ্যতা অনেক ভালো হতে হবে। আপনাকে এইচএসসিতে ভালো রেজাল্ট করতে হবে। ইতালির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চান্স পাওয়ার জন্য কেমন রেজাল্টের প্রয়োজন হবে তা বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ করে থাকে। 
ভাষা
আপনি যদি ইতালিতে স্টুডেন্ট ভিসা পেতে চান তাহলে আপনার আইইএলটিএস স্কোর থাকতে হবে 6.00। নয়তো আপনি ভিসার জন্য গ্রহণযোগ্যতা পাবেন না। এক্ষেত্রে আপনাকে এক্ষেত্রে আপনাকে B2 Level Euro pass Language Passport Classification এবং C2 Level Euro Pass Language Exam পরীক্ষা দিতে হবে এবং ভালোভাবে পাশ করতে হবে। 
অর্থনৈতিক 
আপনি যদি ইতালিতে স্টুডেন্ট ভিসা পেতে চান তাহলে আপনার ব্যাংকে পাঁচ লাখের বেশি অর্থ থাকতে হবে। কারণ ইতালিতে বসবাস করতে অনেক টাকা খরচ যায়।

স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন 

আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসায় ইতালি যেতে চান তাহলে আপনাকে প্রথমে এইচএসসি পাশ করতে হবে। তারপর আবেদন করার জন্য নিম্নোক্ত টিপসগুলো ফলো করতে পারেন। 
  • স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করার জন্য প্রথমে পাসপোর্ট তৈরি করতে হবে। 
  • এবার আপনাকে দেখতে হবে যে ভিসার আবেদন করার জন্য সকল যোগ্যতা আপনার আছে কি না। 
  • এবার আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়টি সিলেক্ট করে নিন।
  • তারপর ভিসার আবেদন ফরম ডাউনলোড করতে হবে। 
  • এবার আবেদন ফরমটি পূরণ করে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। 
  • যেই বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দ করবেন সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যোগ্যতা যাচাই করতে হবে।
  • এবার এম্বাসিতে যেয়ে স্কলারশিপের প্রি-এপ্লিকেশন রিকোয়ারমেন্ট পূরণ করতে হবে। 
  • নির্দিষ্ট দিনে উপস্থিত হয়ে ভিসাটি সংগ্রহ করে নিন।

ইতালি স্টুডেন্ট ভিসার স্কলারশিপ 

ইতালির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকগুলো বিষয় রয়েছে সেসব বিষয়ে খুব সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যায়। যেমন নিউরোসাইন্স, বিজ্ঞান, ফিলোলজি, ডেটা সায়েন্স, দর্শন ইত্যাদি।অনেক বিশ্ববিদ্যালয় পিএইচডি ডিগ্রিতেও স্কলারশিপ দেয়। ইতালিতে স্টুডেন্ট ভিসার খরচ অনেক কম তবে থাকা খাওয়ার খরচও অনেক বেশি।স্টুডেন্ট ভিসায় স্কলারশিপ পেয়ে ইতালি যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই কোন জায়গাতে থাকবেন, কোথায় পার্ট টাইম জব করবেন সবকিছু নিশ্চিত করে নেবেন। নয়তো টাকার ক্রাইসিসে আপনার পড়াশোনা ভালো মতো চালানো সম্ভব হবে না। ইতালির বিশ্ববিদ্যালয় গুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্টুডেন্টদেরকে প্রায় ৪৩ টির মতো শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে থাকে। 

ইতালি স্পন্সর ভিসা 

ইতালি স্পন্সর ভিসা হচ্ছে এমন একটি ভিসা যা ইতালিতে অবস্থিত কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান অন্য দেশের কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে। প্রথমে নিয়োগদাতা কোম্পানি স্পন্সর ভিসার জন্য ওয়ার্ক পারমিটের জন্য ইতালি সরকারের কাছে আবেদন করে। যদি ওয়ার্ক পারমিট অনুমতি হয় তাহলে কোম্পানি বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মীর জন্য ভিসা আবেদন করে থাকে। যদিও স্পনসর ভিসার জন্য ইতালির সরকার ১ বছর মেয়াদ দিয়ে থাকে কিন্তু পরবর্তীতে তা ৩ বছর পর্যন্ত নবায়ন করা যায়। ২০২৪ সালে ইতালির সরকার স্পন্সর ভিসার জন্য ভিসা বরাদ্দ করেছে প্রায় ৫২ হাজার। স্পন্সর ভিসায় বিভিন্ন খাতে কর্মীদের যেমন কৃষি, পর্যটক, রেস্টুরেন্ট, ড্রাইভিং এসব খাতে কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। স্পন্সর ভিসা সংক্রান্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ে প্রকাশিত রয়েছে। 

স্পন্সর ভিসা আবেদনের সময়সীমা 

বাংলাদেশের অনেক মানুষই স্পন্সর ভিসার মাধ্যমে ইতালি যেতে চায়। কারণ এই ভিসার মাধ্যমে ইতালি যাওয়া অনেকটাই সহজ। অনেকে আবার জানতেও চায় ইতালি স্পন্সর ভিসার আবেদন কবে শুরু হবে। ২০২৪ সালে ইতালি স্পন্সর ভিসা আবেদন শুরু হবে ১৮,২১এবং ২৫ মার্চ।তাছাড়া ২০২৪ সালে ক্লিক ডে ঘোষণা করা হয়েছে যা ১৮,২১,২৫ মার্চ। আপনি যদি স্পন্সর ভিসার মাধ্যমে ইতালি যেতে চান তাহলে অবশ্যই সরকারি এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করবেন। 

স্পন্সর ভিসার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস 

স্পন্সর ভিসায় ইতালি যাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে কি কি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস লাগে সেগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। চলুন তাহলে জেনে নেই -
  • বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং পাসপোর্টের মেয়াদ হতে হবে কমপক্ষে ৬ মাস
  • জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি(অরিজিনাল) 
  • ইতালিয় ভাষা সম্পর্কে ধারণা 
  • বর্তমানে আপনি যে স্থানে কর্মরত রয়েছেন তার বৈধ প্রমাণপএ
  • যদি প্রবাসে কর্মরত থাকেন তাহলে তার প্রমাণপএ
  • দুই কপি সাম্প্রতিক তোলা ছবি (অবশ্যই সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের হতে হবে)
  • পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফরম
সুতরাং বলা যায় যে, স্পন্সর ভিসার আবেদন করার জন্য আপনার উপরোক্ত ডকুমেন্টস গুলোর প্রয়োজন হবে।

স্পন্সর ভিসার আবেদন 

স্পন্সর ভিসায় ইতালি যাওয়ার জন্য প্রথমে যা প্রয়োজন সেটি হলো ভিসার জন্য আবেদন করা। অনেকেই স্পন্সর ভিসা আবেদন করার সঠিক উপায় সম্পর্কে জানে না। আর্টিকেলের এই অংশটি পড়লে আপনি সঠিকভাবে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। 
  • স্পন্সর ভিসার আবেদন করার জন্য প্রথমে আপনাকে ইতালির ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।https://www.vfsglobal.com/italy/bangladesh/index.html এটি হচ্ছে ইতালির সরকারি ওয়েবসাইট। 
  • এবার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর 'Visa Types' নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন। এখান থেকে ভিসা ক্যাটাগরি সিলেক্ট করে নিন।“How to Apply”এই ক্যাটাগরিতে প্রবেশ করার পর ভিসা বিষয়ক সকল তথ্য পেয়ে যাবেন। 
  • এবার প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে ভিসার আবেদন ফরমটি পূরণ করে নিন।
  • নির্দিষ্ট পরিমাণ ভিসা ফি অনলাইনের মাধ্যমে প্রদান করুন। 
  • পূরণকৃত আবেদন ফরমটি প্রিন্ট করে ভিসা সেন্টারে জমা দিন।
  • তারপর নির্দিষ্ট দিনে উপস্থিত হয়ে ভিসাটি সংগ্রহ করুন।

ইতালি স্পন্সর ভিসা খরচ

ইতালি স্পন্সর ভিসার আবেদন করার জন্য ফি লাগবে মোট ৯ হাজার ৭০ টাকা, ভিসা আবেদন ফি বাবদ লাগবে পাঁচ হাজার টাকা, ব্যাংক ড্রাফট চার্জ ২৭০ টাকা এবং সার্বিস চার্জ বাবদ তিন হাজার আটশ টাকা। এছাড়া আপনি যদি ইতালির চাকরির আবেদনে নিয়োগ পেতে চান তাহলে ৩০০ থেকে ৪০০ ইউরো বেশি খরচ হবে। বাংলাদেশী টাকায় যা প্রায় ৩৬ হাজার থেকে ৪৬ হাজার টাকা। আপনি যদি স্পন্সর ভিসায় এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান তাহলে ১২ লক্ষ থেকে ১৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হবে কারণ বর্তমানে এই ভিসাটির অনেক চাহিদা রয়েছে। সুতরাং স্পন্সর ভিসায় ইতালি যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ভালো এজেন্সির সহযোগিতা নিবেন তাহলে খরচ একটু কম পড়তে পারে। 

ইতালি টুরিস্ট ভিসা

আপনি যদি ভ্রমণের গন্তব্যস্থল হিসেবে ইতালিকে বেছে নেন তাহলে প্রয়োজন টুরিস্ট ভিসার। বর্তমানে ইতালির টুরিস্ট ভিসা পাওয়া খুবই সহজ। 

টুরিস্ট ভিসার আবেদন 

টুরিস্ট ভিসায় ইতালি যাওয়ার জন্য প্রথমে প্রয়োজন ভিসার জন্য আবেদন।https://www.schengenvisainfo.com/download-schengen-visa-application-form/italy/ এই ওয়েবসাইট থেকে টুরিস্ট ভিসা ডাউনলোত করে আবেদন করতে পারবেন। প্রয়োজনীয় সকল কাগজপএ দিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করে ফেলুন। 

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র 
টুরিস্ট ভিসার আবেদন করার জন্য বেশ কিছু কাগজপএের প্রয়োজন হবে। আর্টিকেলের এই অংশে আপনি জানতে পারবেন টুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপএ সম্পর্কে। 
  • পাসপোর্ট (মূল পাসপোর্টের ফটোকপি) 
  • যদি সন্তান থাকে তাহলে সন্তানের জন্ম নিবন্ধন 
  • পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের) 
  • ম্যারিজ সার্টিফিকেট
  • জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি 
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট (ছয় মাসের)
  • ট্রেড লাইসেন্স 
  • ইউটিলিটি বিলের মূলকপি ও ফটোকপি
  • পাসপোর্টের ফটোকপি (বাবা - মায়ের স্বাক্ষরসহ) 
সুতরাং টুরিস্ট ভিসার আবেদন করার জন্য উপরোক্ত ডকুমেন্টস গুলোর প্রয়োজন হবে। 

টুরিস্ট ভিসা প্রসেসিং খরচ

ইতালি টুরিস্ট ভিসা ফি হচ্ছে ৭৪৬০ টাকা এবং শিশুদের ক্ষেত্রে (৬ থেকে ১২) বছরের জন্য ভিসা ফি হচ্ছে ৫২১২ টাকা। 

ইতালির বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান

রোম সাম্রাজ্যের একটি দেশ হচ্ছে ইতালি। ইতালিতে রয়েছে প্রচুর দর্শনীয় স্থান। চলুন ইতালির কতগুলো দর্শনীয় স্থান দেখে নেই -
  • দ্য কলোসিয়াম
  • পিসা
  • মিলান
  • রোম
  • ভেনিস
  • ইউফিজি গ্যালারি
  • আমালফি
  • ভেনিস
  • পোর্টোফিনো
সুতরাং উপরোক্ত স্থানগুলোতে টুরিস্ট ভিসায় ভ্রমণ করতে পারেন। 
ইতালি বাসা বাড়া
ইউরোপের দেশ ইতালিতে আয়ের পরিমাণ যেমন বেশি ঠিক তেমনি দেশটিতে জীবনযাত্রার খরচও পড়ে অনেক বেশি। আপনি যদি ইতালিতে বসবাস করতে চান তাহলে আপনার খাওয়া দাওয়াতে যত টাকা খরচ পড়বে তার চেয়ে বেশি খরচ হবে আবাসনে। আর্টিকেলের এই অংশে ইতালির বাসা বাড়া সম্পর্কে জানতে পারবেন। 

আপনি যদি ইতালিতে আপনার আত্মীয় এর মাধ্যমে বাসা ভাড়া নেন তাহলে এটি হবে সবচেয়ে ভালো। কারণ এক্ষেত্রে আপনার অতিরিক্ত কমিশনের প্রয়োজন হবে না। তাছাড়া এজেন্টের মাধ্যমেও আপনি একটি ভালো বাসা পেতে পারেন। যদিও এজেন্ট আপনার থেকে কমিশন নিবে পাশাপাশি আপনাকে কিছু সুযোগ সুবিধাও দিবে। 

বাসা ভাড়া কত পড়বে তা নির্ভর করবে বাসার ধরনের উপর। আপনি যদি শহরে বাসা বাড়া নেন তাহলে আপনার খরচ হতে পারে ৩৫০ ইউরো থেকে ৪৫০ ইউরোর মতো। আবার গ্রামের সাইডে বাসা বাড়া নিলে একটু কম পড়বে। এক্ষেত্রে আপনার খরচ হতে পারে ২৫০ থেকে ৩০০ ইউরোর মতো। আবার পরিচিত অনেকজন থাকলে সবাই মিলে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েও থাকতে পারেন। এক্ষেত্রে বাড়ি ভাড়া অনেক কম পড়বে এবং আপনার অনেকটাই সাশ্রয় হবে। 

ইতালি স্পাউস ভিসা

ইতালি স্পাউস ভিসা হচ্ছে একটি পারিবারিক পুনমির্লন ভিসা। এই দীর্ঘমেয়াদি ভিসাটি বিদেশি নাগরিকদের দেওয়া হয় যার মাধ্যমে তারা প্রমাণ করতে পারবে যে, ইতালিতে তাদের পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। এটি ইতালিতে বৈধ বসবাসের অনুমতি দেয়। 

ইতালি স্পাউস ভিসা খরচ

ইতালি স্পাউস ভিসার আবেদন করার জন্য খরচ পড়বে 12180 টাকা, ব্যাংক ড্রাফট এর জন্য খরচ পড়বে 230 টাকা এবং বিএফএস গ্লোবাল সার্বিস চার্জ বাবদ 1600 টাকা।

ইতালিতে নাগরিকত্ব বা গ্রীণ কার্ড পাওয়ার উপায় 

আর্টিকেলর এই অংশে আলোচনা করব ইতালির নাগরিকত্ব বা গ্রীণ কার্ড পাওয়ার উপায় নিয়ে। অনেকেই আছেন ইতালিতে যারা গ্রীণ কার্ড সম্পর্কে ভালোভাবে জানে না। অনেকে আবার ইতালিতে যেতে চায়। এতে তারা অনিশ্চয়তায় ভুগে গ্রীণ কার্ড পাবে কি না এই নিয়ে। 

ইউরোপের সকল দেশেই নাগরিকত্বের সকল সুযোগ সুবিধা শতভাগ পাওয়া যায়। এসব দেশে একবার নাগরিকত্ব পেলে সেই ব্যাক্তির জীবনে আর চিন্তার প্রয়োজন নেই। ঐ দেশের সরকারই তার সকল দায়িত্ব নিয়ে থাকে। ইতালিতে যেতে ইচ্ছুক প্রায় সবারই প্রধান উদ্দেশ্য থাকে গ্রীণ কার্ড পাওয়া। এজন্য এটা এখন পাওয়া সোনার হরিণের মতো। ইতালির নাগরিকত্ব পাওয়া আপনার দ্বারাও সম্ভব যদি আপনি ইতালিতে বড় ধরনের কোন অপরাধ না করেন অথবা ইতালি থেকে চলে না আসেন। দ্রুত নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য কতগুলো উপায় রয়েছে। 

ইতালিতে আপনি দুইভাবে বৈধ হতে পারেন। 
  • এসাইলাম
  • সানাটোরিয়া
এসাইলাম
এসাইলাম প্রক্রিয়ার অর্থ হচ্ছে আপনি ইতালিয় সরকারের কাছে তার দেশে থাকার জন্য আশ্রয়প্রার্থী। ইতালিতে যদি আপনি সরকারের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেন তাহলে নির্দিষ্ট কতগুলো প্রামাণ থাকা সাপেক্ষে আশ্রয় পাবেন। যদি কেউ তার নিজ দেশে ধর্মীয়,সামাজিক এবং রাজনৈতিক দিক থেকে অধিকার বঞ্চিত হয় বা জীবননাশের হুমকি থাকে তাহলে ইতালিয় সরকার তাকে আশ্রয় সুযোগ করে দিবে। 

এসাইলাম আবেদনের পদ্ধতি 
বেশ কয়েকটি ধাপে আপনি এসাইলাম আবেদন করতে পারেন। 
  • আপনার বয়স যদি ১৮ বছরের নিচে হয় তাহলে আবেদন করতে পারবেন 
  • মানবিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করতে পারবেন 
  • রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করতে পারবেন 
আপনি যেভাবে আবেদন করেন না কেন আপনাকে উপযুক্ত প্রমাণ পেশ করতে হবে। আবেদন করার জন্য আপনাকে বেশ কয়েকটি কাগজপত্র জমা দিতে হবে যেমন - কর্মস্থলের প্রমাণপত্র, যে দলের লোক তার প্রমাণ পত্র,কখনো কখনো ছবিও চাওয়া হয়। এসব কাগজপত্র সহ ফরম পূরণ করে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে জমা দিবেন। 

সানাটোরিয়া
ইতালিতে অবৈধ লোকের সংখ্যা বেশি হয়ে গেলে ইতালি সরকার বৈধ হওয়ার ঘোষণা দেয়।তখন আপনি বৈধ হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে সানাটোরিয়ার মাধ্যমে বৈধ হওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত মানতে হয়। 
  • সাধারণত প্রতি বছর এই সুযোগ দেয়া হয় না। বেশিরভাগ সময় দুই থেকে তিন বছর পর পর এই সুযোগ দেওয়া হয়। 
  • এই আবেদন করার সময় আপনাকে ইতালিতে অবস্থান করতে হবে। অনেকে অন্য দেশে থেকে এই ধরনের আবেদন করে থাকে এ ক্ষেত্রে তাদের আবেদন বাতিল হয়ে যায়। 
  • আপনাকে গৃহস্থালির কাজ, বৃদ্ধ বা প্রতিবন্ধীদের সেবা, এবং কৃষি কাজে কমপক্ষে ছয় মাসের কাজের প্রমাণ থাকতে হবে। 
ইতালিতে বৈধ হওয়ার এটি সবচেয়ে সহজ উপায়। খুব সহজে মাত্র কয়েকটি নিয়ম অনুসরণ করলে আপনি ইতালিতে বৈধতা পেয়ে যাবেন। এজন্য আপনাকে উপরোক্ত কাজগুলোতে সংযুক্ত থাকতে হবে। 

সানাটোরিয়া আবেদনের নিয়ম 
যদি সরকার কর্তৃক ঘোষণা দেয়া হয় তাহলে প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টসহ ফরম পূরণ করে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে জমা দিতে হবে। তারপর আপনাকে ৬ মাসের থাকার জন্য অনুমতি পত্র দেয়া হবে। এসময় আপনি যদি একটি পার্মানেন্ট কাজ নিতে পারেন তাহলে আপনার জন্য গ্রীণ কার্ড পাওয়া খুবই সহজ হবে। 

ইতালির গ্রীণ কার্ডের সুবিধা 

ইতালির গ্রীন কার্ড হচ্ছে ইতারের একটি ইতালি পারমিট যা রাষ্ট্রীয় অধিকার বা ইতালির সাথে সংশ্লিষ্ট। এটি একটি কার্যকরী ভিসা যা একাধিক সময়ের জন্য প্রেরণ করা হয়। গ্রীণ কার্ডের মাধ্যমে মানুষ অনেক ধরনের কাজ করতে পারে এবং অনেক ধরনের উদ্যোগ নিতে পারে। 
  • ইতালির গ্রীণ কার্ড ধারীরা অনেক সামাজিক সুরক্ষা পায় যেমন অনুপাতিক সহায়তা, অকার্যকরতা ইত্যাদি। 
  • ইতালির গ্রীণ কার্ড ধারীরা শিক্ষার্থী ভিসার সুযোগ পেয়ে থাকে। এতে তারা ইতালির বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহজেই ভর্তি হতে পারে। 
  • ইতালির গ্রীণ কার্ড প্রাপ্ত সবাই বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সুবিধা পেয়ে থাকে। এতে রয়েছে ওষুধ সুবিধা ও ভাষা শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা। 
  • ইতালির গ্রীণ কার্ড প্রাপ্তর অফিসে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পায়। যেমন চাকরি প্রাপ্তি, ব্যবসা, বিনিয়োগ ইত্যাদি। 

গ্রীণ কার্ড আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র 

ইতালিতে গ্রিণ কার্ডের আবেদন করার জন্য বেশ কিছু কাগজপত্র থাকা জরুরি। এসব কাগজপত্র না থাকলে আপনি কখনোই গ্রিণ কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। অনেকেই গ্রীন কার্ডের জন্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলো সম্পর্কে জানেনা। চলুন তাহলে জেনে নেই। 
  • স্ট্যাম্প (মার্কা বা বোল্লো)। এটির দাম হয়ে থাকে প্রায় ১৬ ইউরো। 
  • ইতালিতে বসবাসের প্রমাণপত্র 
  • কাজের কন্টাক্ট পেপারের ফটোকপি। 
  • পাসপোর্টের ফটোকপি 
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি 
  • ভিসার ফটোকপি

ইতালি গ্রীন কার্ডের আবেদন 

আপনি যদি ইতালিতে গ্রীন কার্ড পেতে চান তাহলে আপনাকে গ্রীন কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে। কারণ আবেদন করা ছাড়া গ্রীণ কার্ড পাওয়া অসম্ভব। ইতালিতে বসবাসরত অনেক বাংলাদেশী এখনো গ্রীন গার্ড পায়নি। তারা জানেও না কিভাবে সঠিকভাবে গ্রীন কার্ডের জন্য আবেদন করতে হয়। নিচের নিয়ম গুলো ফলো করলে আপনি খুব সহজেই ইতালি গ্রীন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। 
  • প্রথমে ইতালির যেই শহরে আপনি রয়েছেন সেই শহরের পোস্ট অফিসে যাবেন।
  • তারপর ফ্রেন্ড ডক্স থেকে আপনাকে একটি আবেদন ফর্ম নিতে হবে। 
  • এবার সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদন ফরমটি পূরণ করে নিন। 
  • আবেদন ফরম পূরণ করে জমা দেওয়ার পর আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি ৮০ ইউরো পেমেন্ট করতে হবে। 
  • আপনি যখন পেমেন্ট করবেন তখন আপনাকে একটি রিসিভ কাগজ এবং একটি লেটার দিবে। লেটারে আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার জন্য ডেট উল্লেখ থাকবে। 
  • তারপর পুলিশ হেডকোয়ার্টারে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার জন্য কাগজ নিয়ে যেতে হবে। এখানে আপনার সকল কাগজপত্র ভালো করে যাচাই করা হবে। 
  • তারপর আপনার গ্রীন কার্ড হয়ে গেলে আপনার মোবাইলে ফোনে একটি মেসেজ দেয়া হবে। এবং নির্দিষ্ট দিনে আপনি উপস্থিত হয়েছেন কার্ডটি সংগ্রহ করতে পারবেন। 
সতরাং উপরোক্ত ধাপগুলো ফলো করে আপনি খুব সহজেই গ্রীন কার্ড এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

গ্রীণ কার্ডের মেয়াদ 

অনেকের মনে এই প্রশ্নটিই থাকতে পারে যে ইতালিতে গ্রীন কার্ডের মেয়াদ কতদিন থাকে। চলুন আপনার মনের প্রশ্নটির উত্তর দেই। সাধারণত গ্রীণ কার্ডের একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। তবে ভিসার ধরনের উপর মেয়াদের পরিমাণ কম বেশি হয়ে থাকে। যেমন-
  • ফ্যামিলি ভিসার জন্য গ্রীন কার্ডের মেয়াদ হচ্ছে ২ বছর। 
  • সিজনাল ভিসার জন্য গ্রীণ কার্ডের মেয়াদ হচ্ছে ৯ মাস।
  • স্টুডেন্ট ভিসার জন্য গ্রীণ কার্ডের মেয়াদ হচ্ছে ১ বছর। 
  • স্পন্সর ভিসার জন্য গ্রীণ কার্ডের মেয়াদ হচ্ছে ২ বছর। 
এখন নিশ্চয়ই আপনি গ্রীণ কার্ডের মেয়াদ সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। 

গ্রীণ কার্ড পাওয়ার সময় 

অনেকেই জানতে চায় ইতালিতে গ্রীণ কার্ড পেতে কত সময় লাগে। মূলত ইতালিতে গ্রীণ কার্ড পাওয়ার জন্য আপনাকে এক বছর ইতালিতে অবস্থান করতে হবে। পাশাপাশি আপনাকে ইতালীয় ভাষা শিক্ষা পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হতে হবে। 

৯. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর 

প্রশ্ন ১: ফ্যামিলি ভিসার জন্য গ্রীণ কার্ডের মেয়াদ কতদিন? 

উত্তর: ফ্যামিলি ভিসার জন্য গ্রীণ কার্ডের মেয়াদ হচ্ছে ২ বছর। 

প্রশ্ন ২: ইতালির সর্বনিম্ন বেতন কত?

উত্তর: ইতালির সর্বনিম্ন বেতন হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। 

প্রশ্ন ৩: ইতালি স্পাউস ভিসার খরচ কত? 

উত্তর: ইতালি স্পাউস ভিসা খরচ হচ্ছে 12,180 টাকা। 

প্রশ্ন ৪: ইতালি টুরিস্ট ভিসা ফি কত? 

উত্তর: ইতালি টুরিস্ট ভিসা ফি হচ্ছে ৭,৪৬০ টাকা। 

প্রশ্ন ৫: নন সিজনাল ভিসায় ইতালি যেতে কত টাকা খরচ পড়বে?

উত্তর: নন সিজনাল ভিসায় ইতালি যেতে খরচ পড়ে প্রায় ১১ থেকে ১২ লক্ষ টাকা। 

প্রশ্ন ৬: ইতালিতে বৈধ হওয়ার আবেদন ফি কত?

উত্তর: ইতালিতে বৈধ হওয়ার আবেদন ফি হচ্ছে ৫০০ টাকা। 

প্রশ্ন ৭: গ্রীণ কার্ড পাওয়ার জন্য ইতালিতে কত দিন অবস্থান করতে হয়?

উত্তর: গ্রীণ কার্ড পাওয়ার জন্য ইতালিতে ১ বছর অবস্থান করতে হয়। 

প্রশ্ন ৮: ইতালির স্পন্সর ভিসা কত বছর পর্যন্ত নবায়ন করা যায়?

উত্তর: ইতালির স্পন্সর ভিসা তিন বছর পর্যন্ত নবায়ন করা যায়।

প্রশ্ন ৯: স্টুডেন্ট ভিসার গ্রীণ কার্ডের মেয়াদ কত বছর?

উত্তর: স্টুডেন্ট ভিসার গ্রীণ কার্ডের মেয়াদ হচ্ছে ১ বছর।

প্রশ্ন ১০: সিজনাল ভিসার গ্রীণ কার্ডের মেয়াদ কত দিন?

উত্তর: সিজনাল ভিসার গ্রীণ কার্ডের মেয়াদ হচ্ছে ৯ মাস। 

১০. লেখকের মন্তব্য 

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে ইতালির সর্বনিম্ন বেতন কত ২০২৪ এবং এই রিলেটেড বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি আপনার উপকারে আসবে। আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার মতামত, পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পড়তে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট The Du Speech। ধন্যবাদ। 

এই আর্টিকেলের-

লেখক: মোসা: কবিতা  
পড়াশোনা করছেন লালমনিরহাট নার্সিং কলেজে। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন।
জেলা: নরসিংদী 


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন:  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে।
জেলা: নাটোর

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url