সৌদি আরবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশী কর্মী বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এজন্য বাংলাদেশী অনেকেই জানতে চায় সৌদি আরবে কোন ভিসা ভালো হবে। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করব - সৌদি আরবে কোন ভিসা ভালো। সৌদি আরব কোন ভিসা ভালো এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি পড়ুন।
তাছাড়াও আরো আলোচনা করব - সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি?, সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন কত?, সৌদি আরবে ফ্রি ভিসার দাম কত?, সৌদি আরব ভিসা কত প্রকার?, সৌদি আরব ক্লিনার ভিসা,সৌদি আরব সুপার মার্কেট ভিসা, সৌদি আরবে কাজের ভিসা, সৌদি আরবে সাপ্লাই ভিসা।
আর্টিকেল সূচিপত্র
১. সৌদি আরব কোন ভিসা ভালো
আপনি যদি সৌদি আরবের সকল ভিসা সম্পর্কে জানেন তাহলে কোন ভিসাটি আপনার জন্য ভালো হবে তা নির্ধারণ করতে পারবেন। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নেই।
আমেল আইদি ভিসা :
এই ভিসাতে সৌদি যেতে হলে সৌদি আরবে বসবাসরত একজন কফিলের অধীনে যেতে হবে। সৌদি আরবের মালিককে সৌদি ভাষায় কফিল বলা হয়। এ ভিসায় গেলে আপনাকে কফিলের অনুমতিতে কাজ করতে হবে এবং তার অনুমতি ব্যতীত কোন ধরনের কাজ আপনি করতে পারবেন না। তার জন্য কফিলকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রিয়াল দিতে হয়। এই ভিসায় যাওয়ার জন্য আপনার খরচ হতে পারে চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা। এই ভিসায় গিয়ে আপনি মাসিক কত টাকা ইনকাম করবেন তা নির্ভর করবে আপনার কাজে ধরনের উপর।
ক্লিনার ভিসা :
আপনার যদি কোন কাজে দক্ষতা কম থাকে বা না থাকে তাহলে আপনি সৌদি আরবে ক্লিনার ভিসায় যেতে পারেন। অনেকেই আছেন যাদের তেমন কোন দক্ষতা নেই তারা এই ভিসায় সৌদি আরব গিয়ে ভালো টাকা আয় করছেন।আপনার আগ্রহ থাকলে বিষয়টি নিয়ে আরো যাচাই-বাছাই করে দেখতে পারেন। এই ভিসাতে গেলে আপনার খরচ হবে প্রায় চার লক্ষ টাকা এবং বেতন ও পাবেন মাসিক ১০০০ রিয়াল। তাছাড়া আপনি যদি কঠোর পরিশ্রমী হয়ে থাকেন তাহলে বেতনের পরিমাণ আরো বেশি হবে।
মাজরার ভিসা :
এই ভিসায় যাওয়া শ্রমিকদের সৌদি আরবের ফল বাগানে কাজ করতে দেওয়া হয়। আপনি কাজে অদক্ষ বা কম দক্ষ হলেও এক ভিসায় গিয়ে ভালো টাকা আয় করতে পারবেন। এই ভিসায় সৌদি আরব যেতে আপনার খরচ হবে তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। বেতন ও পাবেন মাসিক ১ থেকে দেড় হাজার রিয়াল।
সুপার মার্কেট ভিসা :
সৌদি আরবের অনেকগুলো ভালো ভিসার মধ্যে একটি হচ্ছে সুপার মার্কেট ভিসা। এই ভিসায় সৌদি আরব যেতে বয়স হতে হবে ২১-৩৮ এর মধ্যে।সুপার মার্কেটে কাজ করে আপনি মাসিক ১ থেকে ১.৪ হাজার রিয়াল পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। এই ভিসায় গেলে অনেক ওভারটাইমের সুযোগ পাবেন যা থেকে অনেক বাড়তি টাকা আয় করতে পারবেন।
আমেল মঞ্জিল ভিসা :
এই ভিসায় সৌদি আরব গেলে বাড়ির ভেতরের বিভিন্ন কাজ যেমন দারোয়ান, ক্লিনার তা অন্য যেকোনো ধরনের কাজ করতে দেয়া হবে। এই ভিসায় যেতে খরচ হবে তিন থেকে চার লক্ষ টাকা। এই ভিসায় গেলে মালিকের অনুমতি ব্যতীত কোন কাজ করতে পারবেন না। তবে প্রতি বছর ভিসা রিনিউ করতে হয়। ভিসা রিনিউ করতে খরচ হতে পারে এক থেকে এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা।
চাওয়াক খাছ ভিসা :
এই ভিসায় সৌদি আরব আসলে আপনাকে ড্রাইভার এর কাজ দেওয়া হবে। চাওয়াক খাছ ভিসায় সৌদি আরবে আসতে খরচ হতে পারে তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। এখানে ড্রাইভিং এর কাজ মূলত মালিকের অধীনে করতে হয়। ড্রাইভিং এর পাশাপাশি যদি অন্য কোন কাজ করতে চান তাহলে মালিকের অনুমতি নিতে হবে।এই ভিসায় সৌদিতে আসলে আপনি মাসিক ১ থেকে দেড় হাজার রিয়াল যা বাংলা টাকায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন।
সুতরাং সৌদি আরবে আসার জন্য কোন ভিসা ভালো হবে সেটা নির্ভর করবে আপনার পছন্দের উপর। আপনার যদি কাজের দক্ষতা থাকে তাহলে যে কোন ভিসায় সৌদি আরবে ভালো টাকা আয় করতে পারবেন।
সৌদি আরব পরিচিতি :
আরব উপদ্বীপে অবস্থিত মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশ হচ্ছে সৌদি আরব। সৌদি আরবের রাজধানী হচ্ছে রিয়াদ। সৌদি আরব বাহরাইন, কাতার, কুয়েত, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং জর্ডানের সাথে সীমানা ভাগ করে। সৌদি আরব দেশটির বেশির ভাগই মরুভূমি। মানব সভ্যতার ইতিহাসে প্রাচীন কিছু সভ্যতার আবাসস্থল সৌদি আরবে পাওয়া যায়। ইসলামের জন্মস্থান সৌদি আরব ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং দেশটি হাউস অফ সৌদ দ্বারা শাসিত হয়। সৌদি আরব তেল উৎপাদনের জন্য অনেক বিখ্যাত। বিশ্বের দ্বিতীয় তেলের মজুদ এবং বিশ্বের বৃহত্তম পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশ হচ্ছে সৌদি আরব। সৌদি আরব আরব লীগ, ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা এবং জাতিসংঘের সদস্য দেশ।সৌদি আরবের প্রধান ভাষা হচ্ছে আরবি। সৌদি আরবের ২০ মিলিয়নের চেয়েও বেশি মানুষ আরবি ভাষায় কথা বলে। সৌদি আরবের অর্থনীতি অনেক শক্তিশালী।
২. সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি
সবাই কাজ শুরু করার আগে প্রথমে বেতন সম্পর্কে জানার চেষ্টা করে। বেতন বেশি হওয়ার পরিমাণ নির্ভর করবে কাজের ধরনের উপর। বেতনের পরিমাণ কাজের ধরণ,শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রতিষ্ঠানের ধরণ,পেশাগত অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।
Media বেতন :
সৌদি আরবে একজন জার্নালিস্ট,ফটোগ্রাফারের বেতন হয়ে থাকে তিন হাজার থেকে 8000 রিয়াল পর্যন্ত।
পেশাগত হেলথকেয়ারের বেতন :
একজন ফার্মাসিস্ট, নার্স এবং ডাক্তারের মাসিক বেতন হয়ে থাকে ৫০০০ থেকে ১৫ হাজার সৌদি রিয়াল।
ইঞ্জিনিয়ারের বেতন :
সৌদিতে একজন ইঞ্জিনিয়ার এর মাসিক বেতন হয়ে থাকে ৪০০০ থেকে ১০ হাজার সৌদি রিয়াল।
পেট্রোলিয়াম ওয়ার্কার :
একজন পেশাদার পেট্রোলিয়াম ওয়ার্কার এর বেতন ৩০০০ থেকে ৭ হাজার সৌদি রিয়াল পর্যন্ত হয়ে থাকে।
আরো কতগুলো কাজের বেতনের পরিমাণ সম্পর্কে চলুন জেনে নেই।এসব কাজের টাকার পরিমাণ আমেরিকান ডলারে দেওয়া হয়েছে -
- ওয়েটার - $14,362
- রিসেপশনিস্ট - $15,051
- নির্বাহী সহকারি - $25,904
- হিসাব রক্ষক - $17,957
- গ্রাহক সেবা - $38,758
- সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং - $32,505
- অফিস ম্যানেজার - $31,204
- মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার - $30,743
সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি:
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ প্রবাসী জীবন হিসেবে সৌদি আরবকে বেছে নেয়। সৌদি আরবে অনেক ধরনের কাজ থাকলেও কিছু কিছু কাজ আছে যেগুলোর চাহিদা অনেক বেশি। চলুন তাহলে জানি সৌদি আরবে কোন কোন কাজের চাহিদা বেশি।
- পাইপ ফিটার
- রড মিস্ত্রি
- অটোমোবাইল
- ইলেকট্রনিক
- কন্সট্রাকশন
- লেবার
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- নার্সিং
- প্রকল্প ব্যবস্থাপনা
- ড্রাইভার
- ক্লিনার
- প্রশাসনিক সহকারি
- ওয়েল্ডিং
- প্লাম্বিং
- রেস্টুরেন্ট
সুতরাং বলা যায় যে উপরোক্ত কাজগুলোর চাহিদা সৌদি আরবে অনেক বেশি। আপনি যদি এসব কাজে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তাহলে সৌদি আরব গিয়ে ভালো টাকা উপার্জন করতে পারবেন। সৌদি আরবে plumber এর কাজের অনেক চাহিদা রয়েছে। যদি প্লাম্বিং কাজের ভিসা নিয়ে সৌদি আরব আসেন তাহলে মাসিক ১৪০০-২০০০ রিয়াল পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন। আবার অটোমোবাইল, ওয়েল্ডিং এসব কাজেরও ভালো চাহিদা রয়েছে সৌদি আরবে। যাইহোক যেকোনো একটি কাজে দক্ষতা অর্জন করুন আর সৌদি আরব গিয়ে অর্জন করুন হাজার হাজার রিয়াল।
৩. সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার বেতন কত
সৌদি আরবে বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি রয়েছে। এদের একেক কোম্পানির বেতন একেক রকম। এমন অনেকে আছে যারা সৌদি আরবে কোম্পানি ভিসা যেতে চায় কিন্তু তাদের মনে একটাই প্রশ্ন সৌদি আরবে কোম্পানি ভিসা বেতন কত পাওয়া যাবে। কোম্পানি ভিসায় ভিন্ন ভিন্ন বেতন রয়েছে।যেমন ড্রাইভিং ভিসার বেতন একরকম আবার লেবার ভিসার বেতন এক রকম।
সৌদি আরবের ড্রাইভিং ভিসায় বেতন ২০০০ থেকে ৫০০০ রিয়াল পর্যন্ত হয়ে থাকে।আবার লেবার ভিসায় বেতন ৮০০ থেকে ১০০০ রিয়াল পর্যন্ত হয়ে থাকে।সুপারমার্কেট ভিসার বেতন হয় ১২০০ থেকে ১৪০০ রিয়াল।কোন একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে রাজমিস্ত্রির কাজ করলে ২৫০০ থেকে ৩০০০ রিয়াল পর্যন্ত বেতন দেয়া হয় বাংলা টাকায় যার পরিমাণ ৮৫ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা। আবার যদি কোন ফাস্টফুড বা তেলের কোম্পানিতে চাকরি নেন তাহলে শুরুর দিকে মাসিক ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকবেন।
সৌদি আরব কোম্পানি ভিসা :
বাংলাদেশের অনেক প্রবাসীর স্বপ্ন থাকে কোম্পানি ভিসায় সৌদি আরব যাওয়া। বিভিন্ন ধরণের কোম্পানি ভিসা চালু রয়েছে যেমন রেস্টুরেন্টের ভিসা, লেবার ভিসা, মেকানিক্যাল ভিসা এবং ড্রাইভিং ভিসা। আপনি যদি ভালো বেতন পেতে চান তাহলে ভালো কোম্পানির ভিসা নিতে হবে। ভালো কোম্পানিতে বেতনই শুধু ভালো না বরং সুযোগ সুবিধাও বেশ ভালো। চলুন সৌদি আরবের কতগুলো ভালো কোম্পানির নাম জানি।
- আলমারাই কোম্পানি
- পেপসি কোম্পানি
- আল ইমামা কোম্পানি
- বিনলাদেন কোম্পানি
- আমরাকো কোম্পানি
- বলদিয়া কোম্পানি
- সাসকো কোম্পানি
- জুসুর ইমদাদ কোম্পানি
- ইনিশিয়াল কোম্পানি
সুতরাং উপরোক্ত কোম্পানিগুলোতে আপনি ভিসা নিয়ে যেতে পারেন।চলুন সৌদি আরবের কয়েকটি কোম্পানি সম্পর্কে জানি।
সৌদি আরবের আল মারাই কোম্পানি :
সৌদি আরবের অনেক ভালো কোম্পানি গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে আল মারাই কোম্পানি। বার্ষিক ব্যবসায়িক দিক থেকে কোম্পানিটি সৌদি আরবের ৫ম প্রতিষ্ঠান। এই কোম্পানিতে আপনি বেতন ও সুযোগ সুবিধা অনেক ভালো পাবেন। এই কোম্পানিতে ১৪৫০ রিয়াল পর্যন্ত বেতন দেওয়া হয়ে থাকে। এই কোম্পানিতে কাজ করা অবস্থায় যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহলে চিকিৎসা বাবদ সকল খরচ বহন করবে।
জুসুর ইমদাদ কোম্পানি :
সৌদি আরবের একটি স্বনামধন্য কোম্পানি হচ্ছে জুসুর ইমদাদ কোম্পানি। এই কোম্পানিতে বর্তমানে দশ হাজারের বেশি শ্রমিক কর্মরত আছেন। কোম্পানিটি ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।এই কোম্পানিতে কাজ করলে আপনি মাসিক এক লক্ষ টাকার মতো আয় করতে পারবেন।
সাসকো কোম্পানি :
এই কোম্পানিটি মূলত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং উন্নয়ন ব্যবস্থার কাজ করে থাকে। এই প্রতিষ্ঠান ২০২১ সালে যাএা শুরু করে। এই কোম্পানি শ্রমিকদের ভালো টাকা বেতন দিয়ে থাকে। এখানে চাকরি পাওয়াও তেমন কঠিন নয়। প্রতিষ্ঠানটি মূলত শেয়ারবাজারের মতো কাজ করে। কোম্পানিটির ট্রেডিং অভিজ্ঞতা রয়েছে প্রায় ৪০ বছরের মতো।
সৌদি আরব কোম্পানি ভিসার যোগ্যতা:
সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা করতে যেসব কাগজপত্রের প্রয়োজন সেগুলো হলো :
- পাসপোর্ট (পাসপোর্টের মেয়াদ হতে হবে ৬ মাস এবং দুটি ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকতে হবে)
- রঙিন ছবি (ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড অবশ্যই সাদা হতে হবে)
- ভিসা আবেদন ফর্ম
- মেডিকেল রিপোর্ট
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- ব্যাক্তির একাডেমিক সার্টিফিকেট
- সৌদি আরব হতে স্পন্সরকারী কোম্পানির চুক্তিপএ,যা অবশ্য সৌদি আরবের চেম্বার অফ কমার্স এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রত্যয়িত হতে হবে।
- জাতীয় পরিচয়পএ
- নাগরিক ও চারিএিক সনদপএ
- কোভিড ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট
উপরোক্ত কাগজপত্র গুলো সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার আবেদন করতে প্রয়োজন হবে।
কোম্পানি ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া:
ভিসা পাওয়া এবং ভিসা নিশ্চিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে ভিসার জন্য আবেদন করা। পূর্বে ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া অনেক জটিল ছিলো কিন্তু বর্তমানে তা খুবই সহজ।মূলত সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার আবেদন নিয়োগকর্তা করে থাকে। নিচে ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
- সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার আবেদন করার জন্য প্রথমে https://visa.vfsglobal.com/bgd/bn/can/apply-visa এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
- ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ভিসার ধরণ নির্ধারণ করুন
- সঠিক স্থানে সঠিকভাবে তথ্য দিন
- সাক্ষাৎকার লিপিবদ্ধ করুন
- নির্দিষ্ট ভিসা আবেদন কেন্দ্রে আবেদন ফরম জমা দিন
- তারপর এপ্লিকেশন ট্র্যাক করুন। ফোনের এসএমএসেও এটি পেতে পারেন।
- ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টারে উপস্থিত হয়ে ভিসাটি সংগ্রহ করে নিন।
কাজেই উপরোক্ত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে খুব সহজেই সৌদি আরব কোম্পানি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
সৌদি আরব কোম্পানি ভিসার ফি:
সৌদি আরব কোম্পানি ভিসার ফি সম্পর্কে যারা জানে না আর্টিকেলের এই অংশটি তাদের জন্যই। ভিসার জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি কে ভিসা ফি বলা হয়। সৌদি আরব কোম্পানি ভিসার ফি বেশিরভাগ ক্ষেএেই স্পন্সরকারী কোম্পানি ৫০% বহন করে থাকে। নিয়োগকর্তা যদি সৌদি নাগরিক হন এবং কোম্পানি যদি ৫০% বহন করে তাহলে মোট ভিসা ফি লাগবে ৭,২০০ রিয়াল। তার মধ্যে কাজের ভিসার জন্য ৪৫০ রিয়াল,বীমা খরচের জন্য ৬,০০০ রিয়াল,ইকামা পাওয়ার জন্য ৭৫০ রিয়াল।আবার কোম্পানি যদি ৫০% বহন করে এবং নিয়োগকারী সৌদি নাগরিক না হয় তাহলে ভিসা ফি এর জন্য খরচ পরবে ৮,৪০০ রিয়াল। এর মধ্যে কাজের ভিসা ফি হচ্ছে ৭,২০০ রিয়াল।
সুতরাং কোম্পানি ভিসা ফি জমা দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই স্পন্সরকারী সম্পর্কে জেনে নিবেন যে তিনি সৌদি প্রবাসী নাকি সৌদি নাগরিক।
কোম্পানি ভিসার বয়সসীমা :
একজন প্রবাসী শ্রমিক যদি শারিরীক ভাবে সুস্থ থাকে এবং ভিসার নির্দেশনাবলী মেনে কাজ করে তাহলে সৌদি সরকারের আইন অনুযায়ী একজন বৈধ কোম্পানি ভিসায় ১৮ থেকে ৬০ বছর অব্দি কাজ করতে পারবে।আর যদি কেউ কোম্পানির সাথে চুক্তিধারী হয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে ৬০ বছরের অধিক হলেও কাজ করতে পারবে।তা হতে হবে সৌদি সরকারের বিশেষ অনুমুতি সাপেক্ষে।
কোম্পানি ভিসা চেক:
পূর্বে ভিসার চেকিং শুধুমাত্র এজেন্সি এবং দূতাবাসের উপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে শুধুমাএ পাসপোর্ট দিয়েও ভিসা চেক করতে পারবেন । চলুন সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা চেকিং পদ্ধতি জেনে নেই -
- কোম্পানি ভিসা চেক করার জন্য প্রথমে https://visa.mofa.gov.sa// এই লিংকে প্রবেশ করে হবে
- তারপর ডানপাশে একটি ত্রি হাইপেন অপশন দেখতে পাবেন এখান থেকে বোঝার সুবিধার্তে ইংরেজি ভাষা সিলেক্ট করে নিন।
- তারপর Query অপশনে যান এবং এখান থেকে “ভিসার আবেদন” টি নিবার্চন করুন।
- এবার আবেদন নাম্বার দিন
- পাসপোর্টের নাম্বার প্রদান করুন
- ক্যাপচা নাম্বারটি দিন
- সবকিছু দেওয়া হয়ে গেলে সার্চ অপশনে ক্লিক করুন।এবার আপনাকে পরবর্তী পৃষ্ঠাতে নিয়ে যাবে এবং ভিসার আবস্থা দেখাবে।
উপরোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করে খুব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্টের সাহায্যে আপনার কোম্পানি ভিসাটি ঘরে বসে চেক করে নিতে পারেন।
কোম্পানি ভিসার ধরন:
অনেক বড় বড় কোম্পানি রয়েছে সৌদি আরবে। বাংলাদেশের অনেক শ্রমিক এসব কোম্পানিতে কাজ করে। শিক্ষাগত যোগ্যতা, কাজের ধরণ এবং কাজের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে ভিসাও বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে।যেমন-
- টুরিস্ট গাইড ভিসা
- ড্রাইভিং ভিসা
- ক্লিনার ভিসা
- কনস্ট্রাকশন ভিসা
- আইটি ভিসা
- ইন্জিনিয়ার ভিসা
এই সকল ভিসা সৌদি আরবের কোম্পানি গুলো বেশি প্রদান করে থাকে। অন্যান্য সেক্টরেও সৌদি আরব ভিসা দিয়ে থাকে।
৪. সৌদি আরবের ফ্রি ভিসার দাম কত
সৌদি আরবের অন্যান্য ভিসার থেকে ফ্রি ভিসার সুযোগ সুবিধা বেশি। সুযোগ সুবিধা বেশি থাকার কারণে খরচ একটু বেশি করতে হবে। কারণ ফ্রি ভিসায় ইচ্ছামত যে কোন কাজ বা যে কোন কোম্পানিতে চাকরি নিতে পারবেন। ফ্রী ভিসায় যাওয়ার আগে অবশ্যই সঠিক তথ্য জেনে যাবেন। কিছু প্রতারক দালালরা ফ্রি ভিসার কথা বলে অন্য ভিসা দিয়ে থাকে।ফ্রি ভিসা পাওয়া অনেকটাই কঠিন । সৌদি আরবের একটি ফ্রি ভিসা পেতে আপনার খরচ পরবে প্রায় ৫ -৬ লক্ষ টাকা।
সৌদি আরব স্টুডেন্ট ভিসা :
সৌদি আরবে স্টুডেন্ট ভিসা চালু রয়েছে। আপনি চাইলে উচ্চ শিক্ষার জন্য সৌদি আরবকে বেছে নিতে পারেন। সৌদি আরব বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার বিপরীতে সৌদির নিজস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার বিনিয়োগে চাপ দিয়েছেন। সৌদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্যে বিনামূল্যে পড়াশোনা, প্রযুক্তি ও গবেষণা ইত্যাদি বিষয় চালু রয়েছে। সৌদি আরবের স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে সৌদি আরবের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে। স্টুডেন্ট ভিসা ইস্যু করতে সৌদির শিক্ষককে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রানওয়ে থেকে ভিসার অনুমোদন দিলে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন ।
সৌদি আরব স্টুডেন্ট ভিসার কাগজপত্র :
সৌদি আরব স্টুডেন্ট ভিসা পেতে হলে যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন চলুন তা দেখে নেই -
- পাসপোর্ট (পাসপোর্টের মেয়াদ হতে হবে কমপক্ষে ৬ মাস)
- জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি
- মেডিকেল রিপোর্ট (বয়স ১৬ বছরের নিচে হলে মেডিকেল রিপোর্ট জমা দিতে হবে না)
- তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি (সদ্য তোলা সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের হতে হবে)
- চারিএিক সনদপএের সত্যায়িত ফটোকপি
- নাগরিক সনদপত্র (যা হতে হবে সিটি কর্পোরেশন, ইউনিয়ন পরিষদ এবং পৌরসভা কর্তৃক)
- একাডেমিক সার্টিফিকেটের ফটোকপি
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (এটি হতে হবে আবেদনের তারিখ হতে ৬ মাসের মধ্যে জারিকৃত এবং আবেদনকারীর অপরাধ রেকর্ড সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা থাকবে)
- ভিসা রেফারেল নোট(এটি সৌদি জেদ্দার শাখা এবং সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত হবে যা ভিসার সংখ্যা এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ নির্দেশ করবে)
সৌদি আরব স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন :
- সৌদি আরবের স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করতে https://www.evisa.gov.md/ এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
- ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর আবেদন বাটনে ক্লিক করুন
- সঠিক তথ্য দিয়ে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন ফরম পূরণ করুন।
- ভিসার জন্য নির্দিষ্ট ভিসা ফি প্রদান করুন
- ভিসা প্রক্রিয়াকরণ হতে ৩০ মিনিট সময় লাগবে
- নির্দিষ্ট সময় পর আপনি আপনার স্টুডেন্ট ভিসা পেয়ে যাবেন।
স্টুডেন্ট ভিসার ফি:
সৌদি আরব স্টুডেন্ট ভিসা ফি অনলাইনে পেমেন্ট করতে হয়। অফলাইনে পেমেন্ট করার কোন সুযোগ নেই। সৌদি আরবে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করার ফি হচ্ছে SAR 50। তবে এই ফি নির্দিষ্ট নয় তা পরিবর্তন যোগ্য। ভিসা ফির সাথে প্রযোজ্য হারে ভ্যাটও দিতে হবে।
সৌদি আরবের পড়াশোনার খরচ :
সৌদি আরবে পড়াশোনা করতে কত টাকা খরচ হবে তা নির্ভর করবে আপনি কোন ইউনিভার্সিটি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন তার উপর। আপনি যদি সৌদি আরবের ভালো কোন ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন তাহলে খরচ হবে অনেক বেশি আবার যদি লো মানের ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন তাহলে খরচ পড়বে কম।সুতরাং সৌদি আরবে পড়াশোনা করতে কত টাকা খরচ হবে তা নির্ভর করবে একান্তই আপনার উপর।
সৌদি আরবের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের তালিকা :
সৌদি আরবের সেরা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে :
- ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ মদিনা
- কিং ফয়সাল ইউনিভার্সিটি
- কিং খালিদ ইউনিভার্সিটি
- কিং সৌদ বিন আব্দুল আজিজ ইউনিভার্সিটি ফর হেলথ সাইন
- কাসিম ইউনিভার্সিটি
- আল ফয়সাল ইউনিভার্সিটি
- কিং সাউথ ইউনিভার্সিটি
- ইমাম আব্দুর রহমান বিন ফয়সাল ইউনিভার্সিটি
- কিং ফাহাদ ইউনিভার্সিটি অফ পেট্রোলিয়াম এন্ড মিনারেল
- উম্মে আল কুরা ইউনিভার্সিটি
- কিং আব্দুল আজিজ ইন ভার্সিটি
চলুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক -
কিং আব্দুল আজিজ ইন ভার্সিটি:
এটি সৌদি আরবের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ব বিদ্যালয়টি সৌদি আরবের জেদ্দায় অবস্থিত। ২০২১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টি এক নম্বর আরব বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্থান পেয়েছে। সৌদি আরবের সেরা ১০ টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্বের ৫০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি সেরা। ১৯৬৭ সালে একদল ব্যবসায়ী এ বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছিল।
কিং ফাহাদ ইউনিভার্সিটি অফ পেট্রোলিয়াম এন্ড মিনারেলস:
এই বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বের তিনটি শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে একটি। বিশ্ববিদ্যালয়টি মূলত খনিজ পদার্থ এবং পেট্রোলিয়াম নিয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিয়ে থাকে। বিশ্বের ১০০০ টি সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সৌদি আরবের দশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি অন্তর্গত ।
কিং ফয়সাল ইউনিভার্সিটি :
এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৫ সালে। বিশ্ব বিদ্যালয়টি সৌদি আরবের হাফুফ শহরে অবস্থিত। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৪ টি কলেজ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৯০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। সৌদি আরবের সেরা ১০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এটি অন্যতম।
উম্মে আল কুরা ইউনিভার্সিটি :
এটি সৌদি আরবের অন্যতম প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। আরবের সেরা ১০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হচ্ছে উম্মে আল কুরা ইউনিভার্সিটি। বিশ্ববিদ্যালয়টি আরবি শিক্ষা,শরিয়া,মেডিসিন ও প্রকৌশল বিষয় খুবই উন্নত। এটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে ১৯৪৯ সালে এবং সৌদি আরবের মক্কা প্রদেশে অবস্থিত।
কাসিম ইউনিভার্সিটি:
কাসিম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৪ সালে। এটি সৌদি আরবের বুরেদা শহরে অবস্থিত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ক্যাম্পাস প্রায় ৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত।বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৬২টি মাস্টার্স,৭৩১ ব্যাচেলর্স, ১৭ পিএইচডি এবং ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম চালু রয়েছে।
ইমাম আব্দুর রহমান বিন ফয়সাল বিশ্ববিদ্যালয় :
বিশ্ববিদ্যালয়টি কলেজ অফ মেডিসিন, কলেজ অফ আর্কিটেকচার,ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্য অগ্রগামী কলেজ নিয়ে ১৯৭৫ সালে যাত্রা শুরু করে। দীর্ঘ ৪ দশক পরে বিশ্ববিদ্যালয়টি ৪৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এবং ২১ টি কলেজ নিয়ে শীর্ষস্থানীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।বিশ্বের সেরা এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয় এবং সৌদি আরবের সেরা দশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি অন্তর্গত।
কিং সউদ বিশ্ববিদ্যালয় :
কিং সউদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব নাম ছিল রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়।এটি বর্তমানে এশিয়ার অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৫৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছে।সৌদি আরবের সেরা ১০ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অন্তর্গত কিং সউদ বিশ্ববিদ্যালয় সৌদি আরবের রিয়াদে অবস্থিত।
কিং সউদ বিন আব্দুল আজিজ ইউনিভার্সিটি ফর হেলথ সাইন্স:
এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৫ সালে। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে এটি প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। সৌদি আরবের সেরা ১০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এর অবস্থান সপ্তম। এতে শিক্ষার্থী রয়েছে ৩ হাজার ৮৫ জন। এটি সৌদি আরবের রিয়াদে অবস্থিত। তাছাড়া জেদ্দা, আল -আহসাতে বিশ্ববিদ্যালয়টির দুটি ক্যাম্পাস রয়েছে।
৫. সৌদি আরব ভিসা কত প্রকার
অন্য সকল দেশে যেমন অনেক ধরনের ভিসা থাকে ঠিক তেমনি সৌদি আরবেও কয়েক প্রকার ভিসা রয়েছে। সৌদি আরবে মোট ৬ প্রকার ভিসা চালু রয়েছে। যেমন-
- ব্যবসা ভিসা
- টুরিস্ট ভিসা
- কাজের ভিসা
- শিক্ষা ভিসা
- ফ্যামিলি ভিসা
- হজ ভিসা
তাছাড়াও আরো ভিসার আছে যেমন-
- মাজরার ভিসা
- কোম্পানি ভিসা
- আমেল মঞ্জিল ভিসা
- আমেল আহদি ভিসা
- চাওয়াক খাছ ভিসা
এসকল ভিসার যেকোন একটি ভিসা দিয়ে আপনি সৌদি আরবে যেতে পারবেন। ভিসাগুলো সম্পর্কে চলুন সংক্ষিপ্ত আকারে জেনে নেই।
হজ ভিসা:
প্রতি বছর প্রায় লক্ষাধিক মানুষ সৌদি আরবে যায় হজ করতে। অনেকে আবার ওমরাহ হজ্জ করতেও যায়। বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে হজ ভিসা সংগ্রহ করা হয়। একজন ব্যাক্তি হজ ভিসার মাধ্যমে ভিসার মূল্যসহ হজ সম্পন্ন করতে প্রায় ৬ লক্ষ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা খরচ হবে। বর্তমানে যদি কেউ ওমরাহ হজ করতে চায় তাহলে তাকে ৫০০ রিয়াল খরচ করতে হবে বাংলাদেশী টাকায় যা প্রায় ১৪-১৫ হাজার।সম্পূর্ণ ওমরাহ হজ পালন করতে একজন ব্যাক্তির ৭৫ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকার মতো খরচ হবে।
টুরিস্ট ভিসা :
বর্তমানে সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য টুরিস্ট ভিসার আবেদন অনলাইনে করতে পারবেন। টুরিস্ট ভিসা ৬ মাস মাল্টিপল এন্ট্রি এবং ৩ মাস সিঙ্গেল এন্ট্রি হয়ে থাকে। একটি টুরিস্ট ভিসার মূল্য হচ্ছে ৩০০ রিয়াল বাংলাদেশী টাকায় যা ৮,০০০ টাকার মতো। তবে সব কিছু মিলিয়ে আপনার ৫০-৭০ হাজার টাকা খরচ হবে।
বিজনেস ভিসা:
বিজনেস ভিসা দেওয়া হয় ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য। বিজনেস ভিসায় সৌদি আরব গিয়ে কোনো ধরণের কাজ করার সুযোগ নেই।
৩ ধরণের মেয়াদে বিজনেস ভিসা হয়ে থাকে।
- ১ বছরের মাল্টিপল এন্ট্রি
- ৩ মাসের সিঙ্গেল এন্ট্রি
- ৬ মাসের মাল্টিপল এন্ট্রি
একবার টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে সর্বোচ্চ ৯০ দিন অবস্থান করে দেশে ফিরে মাল্টিপল এন্ট্রিতে আবার যেতে পারবেন ।
বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের বিমান ভাড়া :
আর্টিকেলের এই অংশে জানতে পারবেন বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের বিমান ভাড়া সম্পর্কে।
- বাংলাদেশের ঢাকা থেকে জেদ্দার বিমান ভাড়া হচ্ছে ৫৫ হাজার টাকা
- বাংলাদেশের ঢাকা হতে সৌদি আরবের দাম্মামের বিমান ভাড়া হচ্ছে ৫০ হাজার ৭০ টাকা
- ঢাকা থেকে সৌদি আরবের রিয়াদের বিমান ভাড়া হচ্ছে ৫৫ হাজার ৮০০ টাকা।
- বাংলাদেশের ঢাকা হতে মদিনার বিমান ভাড়া হচ্ছে ৭৫ হাজার ৫২০ টাকা।
সৌদি আরব যেতে কত সময় লাগে :
প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ থেকে হাজারো মানুষ সৌদি আরবে হজ করার উদ্দেশ্যে, কাজের উদ্দেশ্যে এবং বিভিন্ন উদ্দেশ্যে যায় । তাদের একটি কমন প্রশ্ন হচ্ছে সৌদি আরব যেতে কত সময় লাগে? বাংলাদেশ থেকে সরাসরি বিমানে করে সৌদি আরব যেতে সময় লাগবে ৬ ঘন্টা ৪০ মিনিটের মতো। আর যদি ভেঙে ভেঙে বা বিরতি নিয়ে যান তাহলে সময় একটু বেশি লাগবে। এক্ষেত্রে সৌদি আরব পৌঁছাতে 7 বা 8 ঘণ্টার মতো সময় লাগবে।
৬. সৌদি আরব ক্লিনার ভিসা
সৌদি আরবে ক্লিনার ভিসার অনেক চাহিদা। এই কাজে দক্ষতা তেমন না থাকলেও সৌদি আরব যাওয়া যায়। সৌদি আরবে ক্লিনার ভিসায় যেতে আপনার ৪ লক্ষ টাকার মতো খরচ হবে। যদি ক্লিনার ভিসায় সৌদি আরব যান তাহলে মাসিক ১ হাজার রিয়াল এর মতো ইনকাম করতে পারবেন।
সৌদি আরব রেস্টুরেন্ট ভিসা:
রেস্টুরেন্ট ভিসায় বাংলাদেশ থেকে অনেকেই যেতে চায় কারণ রেস্টুরেন্ট ভিসায় কাজ যেমন কম ঠিক তেমনি এর সুযোগ সুবিধাও অনেক।রেস্টুরেন্ট ভিসাতে থাকা খাওয়ার অনেক সুবিধা। এই ভিসায় যেতে খরচও খুব কম পড়বে। সৌদি আরবে রেস্টুরেন্ট ভিসায় একজন শ্রমিককে ১২০০- ১৪০০ রিয়াল বাংলাদেশী টাকায় যা ৩৫ হাজার থেকে ৫৮ হাজার টাকার মতো বেতন দেওয়া হয়। রেস্টুরেন্টে বেতনের পাশাপাশি আপনি কাস্টমারের কাছে থেকে বোনাসও নিতে পারেন। সুতরাং আপনি যদি রেস্টুরেন্ট ভিসায় সৌদি যেতে চান তাহলে অবশ্যই আগে থেকে সবকিছু জেনে যাবেন।
৭. সৌদি আরব সুপার মার্কেট ভিসা
সৌদি আরবের ভালো ভিসাগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে সুপার মার্কেট ভিসা। সুপার মার্কেট ভিসায় যেতে বয়স হতে হবে ২১ থেকে ৩৮ এর মধ্যে। আপনি যদি সুপারমার্কেট ভিসায় সৌদি আরব যান তাহলে মাসিক ১০০০ থেকে ১৪০০ রিয়াল ইনকাম করতে পারবেন। পাশাপাশি আপনি ওভারটাইম করেও ভালো টাকা আয় করতে পারবেন।
সৌদি আরব সাপ্লাই ভিসা :
সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা মানেই হচ্ছে সাপ্লাই ভিসা। সাপ্লাই মানে হচ্ছে আপনি যে কফিলের অধীনে সৌদি আরব যাবেন তার নির্দিষ্ট কোন কাজ নেই এবং সে ভাড়াতে আপনাকে কাজ করাবে। যে কোম্পানিতে আপনি ভারাতে কাজ করবেন সেই কোম্পানি আপনাকে বেতন দিবে না। আপনার কফিলের সাথে কোম্পানির কন্টাক্ট থাকবে। আপনি যত টাকার কাজ করেন না কেন আপনার কফিলের সাথে তা সংযুক্ত থাকবে।
এটি হচ্ছে সাপ্লাই ভিসার কাজ।আপনার কফিলের সাথে আপনার যত টাকার কন্টাক্ট থাকবে আপনি তত টাকাই স্যালারি পাবেন ।কফিলের বিভিন্ন ধরণের কাজের সাথে কন্টাক্ট থাকতে পারে। কফিল আপনাকে যে কাজে পাঠাবে আপনাকে সেই কাজই করতে হবে। সাপ্লাই কোম্পানিতে সৌদি আরব যাওয়ার আগে অবশ্যই সবকিছু জেনে বুঝে যাবেন কেননা অনেক কোম্পানি সাপ্লাই ভিসার নাম করে কোম্পানি ভিসা দিয়ে থাকে। সৌদি আরবে অনেক ভালো ভালো সাপ্লাই কোম্পানি রয়েছে।
৮.সৌদি আরব কাজের ভিসা
বাংলাদেশ থেকে অনেকে কাজের ভিসা নিয়ে সৌদি আরব যেয়ে থাকেন। আপনি যদি কাজের ভিসায় সৌদি আরব যেতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে অটোমোবাইল, পাইপ ফিটিং, নির্মাণ কাজ ও ইলেকট্রনিক্স এসব বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করে খুব সহজে কাজের ভিসা নিয়ে আসতে পারেন সৌদি আরব।
সৌদি আরব কাজের ভিসার বেতন :
আপনি যদি কাজের ভিসায় সৌদি আরব যান তাহলে মাসিক চল্লিশ হাজার বা তার অধিক টাকা আয় করতে পারবেন। তবে বেতনের পরিমাণ কাজের ক্যাটাগরি এবং কোম্পানির উপর নির্ভর করে কম বেশি হয়ে থাকে। একেক কোম্পানির কাজের বেতন একেক রকম। তবে যে কাজই করেন না কেন আপনি মাসিক সর্বনিম্ন ৪০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন।
সৌদি আরব ভিসা এজেন্সি :
বাংলাদেশে অনেক সরকারি বেসরকারি ভিসা এজেন্সি গড়ে উঠেছে যারা প্রতিনিয়ত সৌদি আরবে মানুষ প্রেরণ করে।ARMAN HOLIDAYS , VISA THING , Shebaru উল্লেখযোগ্য কতগুলো ভিসা এজেন্সি। তাছাড়া বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব বা যেকোন দেশে যাওয়ার জন্য বোয়েসেল হচ্ছে একটি বিশ্বস্ত এজেন্সি।
সৌদি আরব টুরিস্ট ভিসা :
সৌদি সরকার বিদেশি পর্যটকদের জন্য ইলেকট্রনিক ভিসার অনুমোদন দিয়েছে। সৌদি আরবে অনেক আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা বিদেশি পর্যটকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার এবং বাহরাইন এসব দেশ ব্যতীত অন্য সকল দেশ সৌদি ভিসা পাওয়ার জন্য যোগ্য। এ সকল দেশের নাগরিকরা শুধু মাত্র জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে যেতে পারবেন। যে সকল দেশের নাগরিকরা সৌদি ভিসার যোগ্য তাদেরকে সৌদি দূতাবাস বা কনস্যুলটে অবদান করতে হবে । সৌদি আরব তিন ধরনের টুরিস্ট ভিসা প্রদান করে থাকে। যেমন - নিয়মিত টুরিস্ট ভিসা, বৈদ্যুতিক ভিসা এবং আগমনের উপর ভিসা।
সৌদি আরব টুরিস্ট ভিসার খরচ:
টুরিস্ট ভিসা নিয়ে সৌদি আরব যেতে হলে আপনার খরচ পড়বে ২০০০ থেকে ৩০০০ রিয়াল বাংলাদেশী টাকায় যার পরিমাণ ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। যদিও টাকার পরিমাণ নির্দিষ্ট নয়। এছাড়া আনুষঙ্গিক আরও খরচ হবে।
টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ:
সৌদি আরবের একটি টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ ৯০ দিন পর্যন্ত হয়ে থাকে। যদিও ভিসা ১ বছরের জন্য স্ট্যাম্প করা থাকে কিন্তু ৯০ দিনের বেশি থাকতে পারবেন না। মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসাতে ১৮০ দিন সৌদি আরবে থাকতে পারবেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৯০ দিনের বেশি টুরিস্ট ভিসায় থাকা উচিত নয়।
টুরিস্ট ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপএ:
টুরিস্ট ভিসার জন্য যেসব কাগজপত্রের প্রয়োজন সেগুলো হচ্ছে -
- বৈধ পাসপোর্ট (পাসপোর্টের মেয়াদ হতে হবে কমপক্ষে ৬ মাস)
- ছবি(পাসপোর্ট সাইজের)
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি (বয়স যদি ১৮ বছরের বেশি হয়)আর শিশুদের জন্য জন্ম নিবন্ধন
- করণা ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- ভিসা ইস্যুর ৯০ দিনের মধ্যে দেশে ফেরত আসার টিকিট।
আরব ই ভিসার আবেদন :
- সৌদি আরবে টুরিস্ট ভিসার আবেদন করার জন্য প্রথমে আপনাকে https://www.evisa.gov.md/ এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
- ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর আবেদন করুন অপশনে ক্লিক করুন।
- সঠিকভাবে সকল তথ্য দিয়ে আবেদনপএ পূরণ করে নিন।
- ভিসার জন্য নির্দিষ্ট ভিসা ফি প্রদান করুন।
- ই- ভিসা প্রক্রিয়াকরণের জন্য ৩০ মিনিট সময় নেওয়া হবে।
- ই ভিসা পাওয়ার পর এটি প্রিন্ট করতে হবে এবং ভিসা পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে আপনি সৌদি আরবে পৌঁছাতে পারবেন।
সুতরাং বলা যায়, উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে আপনি ই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের দূরত্ব :
সারা বিশ্বের মুসলমানের কাছে পবিত্র একটি শহর হচ্ছে সৌদি আরব। অনেক মুসলমান জানতে চায় বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব কত দূরে অবস্থিত? সৌদি আরব বিশাল একটি দেশ হওয়ার কারণে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরের দূরত্ব ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। ঢাকা থেকে সৌদি আরবের রিয়াদের দূরত্ব একরকম আবার ঢাকা থেকে মদিনার দূরত্ব একরকম। ঢাকা থেকে মক্কার দূরত্ব হচ্ছে ৫১৬৩ কিলোমিটার এবং ঢাকা থেকে মদিনা দূরত্ব হচ্ছে ৫১২২ কিলোমিটার ।বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের দূরত্ব হচ্ছে ২৮৪৯ মাইল।
সৌদি আরবের নাগরিকত্ব পাওয়ার শর্ত সমূহ :
সৌদি আরবের সিটিজেনশিপ সিস্টেমের ৮ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে সৌদি আরবের বাইরে জন্মগ্রহণকারী কোনো ব্যক্তির পিতা যদি হয় বিদেশী এবং মাতা যদি হয় সৌদি নারী তাহলে তাকে নাগরিকত্ব পেতে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমন :
- ব্যক্তির বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে
- ব্যক্তিকে অনর্গল আরবি ভাষায় কথা বলা পারতে হবে।
- ব্যক্তির আচার ব্যবহার খুবই ভালো হতে হবে
- ব্যক্তিকে ৬ মাসের বেশি কারাদণ্ডের দণ্ডিত হওয়া যাবে না।
বিদেশি ব্যক্তির সৌদি আরবের নাগরিকত্ব পেতে যেসব শর্ত মানতে হবে সেগুলো হচ্ছে -
- ব্যক্তির পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট বা ইকামা থাকতে হবে।
- ব্যক্তির আয়ের বৈধতা থাকতে হবে
- ব্যক্তিকে কোন ফৌজদারি মামলায় সাজা পাওয়া যাবে না এবং ছয় মাসের বেশি কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়া যাবে না।
- ব্যক্তির ব্যবহার ভালো হতে হবে।
যারা বর্তমানে সৌদির নাগরিক তারা যে উপায়ে নাগরিকত্ব পেয়েছেন -
- বিদেশি কাউকে নাগরিকত্ব অর্পণ করার মাধ্যমে
- বিবাহ করার মাধ্যমে
- জন্মসূত্রে সৌদির নাগরিক হওয়ার মাধ্যমে
- আসল সৌদিয়ান হিসেবে
- সৌদি বংশোদ্ভূত
সৌদি আরব থেকে ইউরোপে যাওয়ার উপায় :
সৌদি আরব প্রচুর কর্মসংস্থানের উৎস হওয়া সত্ত্বেও অনেক মানুষ সৌদি আরব থেকে অন্য দেশে যেতে চায়।আর্টিকেলের এই অংশে আপনি জানতে পারবেন সৌদি আরব থেকে ইউরোপের দেশগুলোতে যাওয়ার উপায় সম্পর্কে ।
সৌদি আরব থেকে বৈধভাবে ইউরোপে যাওয়া যায়। সৌদি আরব থেকে তিনটি উপায়ে আপনি ইউরোপে যেতে পারবেন।
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- টুরিস্ট ভিসা
- স্টুডেন্ট ভিসা
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা :
সৌদি আরব থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় ইউরোপ যেতে প্রথমে আপনাকে ইউরোপের বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজের জন্য আবেদন করতে হবে।ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় ইউরোপ যাওয়ার মাধ্যমে সহজেই ইউরোপের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া যায়। ইউরোপের সকল দেশে কর্মসংস্থানের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। ইউরোপ যেতে অবশ্যই দালালের সাথে যোগাযোগ না করে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করবেন।
স্টুডেন্ট ভিসা :
সৌদি আরব থেকে স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে ইউরোপ যেতে পারবেন। ইউরোপে স্টুডেন্ট ভিসা পেতে অবশ্যই স্নাতক ডিগ্রী কমপ্লিট করতে হবে। তারপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রী করার জন্য ইউরোপের যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে হবে।
টুরিস্ট ভিসা :
সৌদি আরব থেকে ইউরোপ যাওয়ার একটি ভালো উপায় হচ্ছে টুরিস্ট ভিসা। সাধারণত তিন মাস বা 90 দিনের যে ভিসা ইস্যু করা হয় তাকে টুরিস্ট ভিসা বলা হয়। সুতরাং টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ইউরোপের যেকোন দেশে ৯০ দিন থাকতে পারবেন।
সৌদি আরবের ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা:
সৌদি আরবের মুদ্রার নাম হচ্ছে রিয়াল। প্রতিনিয়ত ডলারের রেট যেমন উঠানামা করে ঠিক তেমনি সৌদি রিয়ালের রেটও কম বেশি হয়ে থাকে। সৌদি আরবের বর্তমান রিয়াল রেট অনুযায়ী সৌদি আরবের এক রিয়াল বাংলাদেশের ২৯. ৫৩ টাকা। ঠিক তেমনি সৌদি আরবের ১০০ রিয়াল বাংলাদেশের ২,৯৫৩টাকা।
বাংলাদেশের সাথে সৌদি আরবের সময়ের পার্থক্য:
বাংলাদেশের বিভিন্ন মানুষ নানা কারণে সৌদি আরবে অবস্থান করে থাকে। এর ফলে দেশ থেকে তাদের আপনজন জানতে চায় বাংলাদেশের সাথে সৌদি আরবের সময়ের পার্থক্য সম্পর্কে। বাংলাদেশের সাথে সৌদি আরবের ৩ ঘন্টা সময়ের পার্থক্য রয়েছে।আন্তর্জাতিক সময় অনুযায়ী সৌদি আরবে বাংলাদেশ থেকে ৩ ঘন্টা সময় কম থাকে সবসময়। মনে করেন এখন বাংলাদেশে সময় সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিট।সৌদি আরবে তখন বিকাল ৪.৩০ মিনিট। আশা করি বিষয়টি বুজতে পারছেন।
সৌদি আরব ভিসা আবেদনের নতুন প্ল্যাটফরম:
সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নতুন একটি ভিসা আবেদনের প্ল্যাটফরম 'কেএসএ ভিসা' চালু করেছে। যেকোন ভিসা আবেদন অর্থাৎ হজ,ওমরাহ,পর্যটন সবকিছুর ভিসা এটি দিয়ে করা যাবে।নতুন এই সার্চ ইঞ্জিনটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন এবং বেশ স্মার্ট। যদি কোন নতুন ব্যাক্তি ভিসার জন্য আবেদন করতে চায় তাহলে তাকে গাইড করা এবং বিভিন্ন পরামর্শ দানে সক্ষম এই প্ল্যাটফরমটি।
৯. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর
প্রশ্ন ১: সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসায় যাওয়ার জন্য কত বছর বয়স হতে হবে?
উত্তর: সৌদি আরব কোম্পানি ভিসায় যাওয়ার জন্য প্রার্থীর বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৬০ বছর।
প্রশ্ন ২:সৌদি আরবের মুদ্রার নাম কি?
উত্তর: সৌদি আরবের মুদ্রার নাম হচ্ছে রিয়াল।
প্রশ্ন ৩: সৌদি আরবের এক রিয়াল বাংলাদেশের কত টাকা?
উত্তর: সৌদি আরবের এক রিয়াল বাংলাদেশের ২৯.৫৩ টাকা।
প্রশ্ন ৪:বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের দূরত্ব কত?
উত্তর: বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের দূরত্ব হচ্ছে ২৮৪৯ মাইল।
প্রশ্ন ৫:সৌদি আরবের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য ব্যক্তির বয়স কত হতে হবে?
উত্তর: সৌদি আরবের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য ব্যক্তির বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে।
প্রশ্ন ৬: সৌদি আরবের টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ কতদিন?
উত্তর: সৌদি আরবের টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ হচ্ছে 90 দিন।
প্রশ্ন ৭:সৌদি আরবের ই ভিসা প্রক্রিয়াকরণ করতে কত সময় লাগে?
উত্তর:সৌদি আরবের ই ভিসা প্রক্রিয়াকরণ করতে ৩০ মিনিট সময় লাগে।
প্রশ্ন ৮:সৌদি আরবের সুপার মার্কেট ভিসার বেতন কত?
উত্তর:সৌদি আরবের সুপার মার্কেট ভিসার বেতন হচ্ছে এক হাজার থেকে ১৪০০ রিয়াল।
প্রশ্ন ৯:সৌদি আরব ক্লিনার ভিসায় যেতে কত টাকা খরচ হবে?
উত্তর:সৌদি আরব ক্লিনার ভিসায় যেতে চার লক্ষ টাকার মতো খরচ হবে।
প্রশ্ন ১০:সৌদি আরব স্টুডেন্ট ভিসার ফি কত?
উত্তর: সৌদি আরব স্টুডেন্ট ভিসার ফি হচ্ছে SAR 50।
১০. লেখকের মন্তব্য
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে সৌদি আরব কোন ভিসা ভালো,সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি?, সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন কত?, সৌদি আরবে ফ্রি ভিসার দাম কত?, সৌদি আরব ভিসা কত প্রকার?, সৌদি আরব ক্লিনার ভিসা,সৌদি আরব সুপার মার্কেট ভিসা, সৌদি আরবে কাজের ভিসা, সৌদি আরবে সাপ্লাই ভিসা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি আপনার উপকারে আসবে। আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার মতামত, পরামর্শ কিংবা প্রশ্ন আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমৃদ্ধ প্রবাস রিলেটেড আর্টিকেল পড়তে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট
The Du Speech।ধন্যবাদ।
এই আর্টিকেলের-
লেখক: মোসা: কবিতা
পড়াশোনা করছেন লালমনিরহাট নার্সিং কলেজে। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন।
জেলা: নরসিংদী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে।
জেলা: নাটোর
The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url