জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর তালিকায় শক্তিশালী একটি রাষ্ট্র হচ্ছে জার্মানি। কাজের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ জার্মানিতে যায় এবং জার্মান ওয়ার্ক পারমিট সম্পর্কে জানতে চায়। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করব - জার্মান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ নিয়ে। কাজেই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
তাছাড়া আরো আলোচনা করব - জার্মান জব ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র,জার্মানি সরকারি ওয়েবসাইট, জার্মানিতে লোক নিয়োগ ২০২৪, বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায়, বোয়েসেল নিয়োগ জার্মান টেকনিক্যাল।
আর্টিকেল সূচিপত্র
- জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪
- জার্মান জব ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- জার্মানি সরকারি ওয়েবসাইট
- জার্মানিতে লোক নিয়োগ ২০২৪
- বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায়
- বোয়েসেল নিয়োগ জার্মান টেকনিক্যাল
- জার্মানি স্টুডেন্ট ভিসা
- জার্মানিতে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
- আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর
- লেখকের মন্তব্য
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
১. জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪
জার্মানিতে বর্তমানে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চালু রয়েছে। জার্মানির ভিসা করতে অন্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি টাকা খরচ পড়ে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় জার্মানিতে বিভিন্ন কাজে লোক নিয়োগ দিয়ে থাকে।বর্তমানে ঘরে বসেই অনলাইনে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করা যায়।
এজেন্সির মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন করলে একটু বেশি টাকা খরচ পড়ে। তবে জার্মানিতে যদি কোন আত্মীয় থেকে থাকে তাহলে তার মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নেওয়া অনেক সহজ। ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার জন্য অবশ্যই ইংরেজি ভাষার দক্ষতা এবং কাজের সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
জার্মানের ওয়ার্ক পারমিটের ধরন গুলো হচ্ছে :
- উচ্চ দক্ষ শ্রমিক পারমিট
- সাধারণ কাজের পারমিট
- জার্মানির জন্য ইইউ ব্লু কার্ড
আপনার যদি অনেক কাজের অভিজ্ঞতা এবং আপনি যদি একজন উচ্চ বেতনের দক্ষ কর্মী হয়ে থাকেন তাহলে উচ্চ দক্ষ শ্রমিক ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। সাধারণ কাজের পারমিট এর জন্য আবেদন করতে আপনাকে জার্মানিতে এমন এক অবস্থানে থাকতে হবে যাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিক দ্বারা পূরণ করা সম্ভব না হয়। আবার ইইউ ব্লু কার্ডের আবেদন করার জন্য আপনার বার্ষিক আয় হতে হবে ৫৬ হাজার ৪০০ ইউরো।
জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট ভিসার প্রচুর চাহিদা। জার্মানির ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মধ্যে যেসব কাজের সুযোগ রয়েছে সেগুলো হচ্ছে -
- কৃষি ভিসা
- ক্লিনার ভিসা
- রেস্টুরেন্ট বা হোটেল ভিসা
- ইলেকট্রিশিয়ান ভিসা
- ড্রাইভিং ভিসা
- ইঞ্জিনিয়ার ভিসা
যোগ্যতা:
জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ এর জন্য যেসব যোগ্যতার প্রয়োজন সেগুলো হচ্ছে -
- একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং পাসপোর্ট এর মেয়াদ হতে হবে কমপক্ষে ছয় মাস।
- জার্মানির কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান হতে চাকরির অফার লেটার
- আর্থিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা
- স্বাস্থ্য বীমা
- একজন দক্ষ কর্মী হতে হবে অর্থাৎ সুনির্দিষ্ট কোন কাজে দক্ষতা থাকতে হবে।
কাগজপত্র :
জার্মান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ এর জন্য যেসব কাগজপত্র লাগবে সেগুলো হচ্ছে -
- পূরনকৃত ভিসা আবেদন ফরম
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (তা স্থানীয় থানা হতে সংগ্রহ করতে হবে)
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- জাতীয় পরিচয় পত্র
- জার্মানির কোন কোম্পানি হতে প্রাপ্ত অফার লেটার
- স্বাস্থ্য বিমার ফটোকপি
- জীবন বৃত্তান্ত
- কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট
জার্মানি ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন :
ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় জার্মানি যাওয়ার আগে অবশ্যই ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন সম্পর্কে জানতে হবে। সাধারণত সরকারি এবং বেসরকারি দুইভাবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। প্রতিবছর নির্দিষ্ট একটি সময়ে জার্মানিতে বিভিন্ন কাজে চাহিদা অনুযায়ী লোক নিয়োগ দেয়। আবেদন করার জন্য প্রথমে অনলাইন থেকে ভিসা আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। তারপর প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে আবেদন ফরমটি পূরণ করতে হবে। ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন এজেন্সির সাহায্য নিয়েও করতে পারেন। এজেন্সির সাহায্য নিলে এজেন্সি আপনার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ব্যবস্থা করে দেবে।
জার্মানিতে কাজের বেতন কত :
জার্মানিতে যেতে ইচ্ছুক অনেকে প্রশ্ন করে থাকে জার্মানিতে কাজের বেতন কত পাওয়া যাবে। আপনার যদি কোন কাজে দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি মাসিক ২ লক্ষ টাকার মতো ইনকাম করতে পারবেন। তবে সাধারণ কোনো কাজ করলেও সর্বোচ্চ দেড় লক্ষ টাকার মতো ইনকাম হয় । বেতনের পরিমাণ নির্ভর করে কাজের ধরনের উপর। জার্মানিতে ডাক্তার, শিক্ষক, কম্পিউটার অপারেটর, নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার, কন্সট্রাকশন এসব কাজের বেতন হয়ে থাকে ৩৫০০ থেকে ৫০০০ ইউরো পর্যন্ত বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় চার লক্ষ পনের হাজার থেকে ৪ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা। আবার মেকানিক্যাল, ফোড ডেলিভারি,ড্রাইভিং, রেস্টুরেন্ট এসব কাজের বেতন হয়ে থাকে ২৫০০ থেকে ৩০০০ ইউরো পর্যন্ত বাংলা টাকায় যা প্রায় ২ লক্ষ ৯৫ হাজার থেকে তিন লক্ষ পঞ্চান্ন হাজার টাকা। শপিংমল ক্লিনার, মেডিকেল ক্লিনার, হোটেল বয় এবং সিকিউরিটি গার্ড এর বেতন হয়ে থাকে ৮৪০ ইউরো থেকে ১৬৭০ ইউরো বাংলা টাকায় যা এক লক্ষ থেকে 2 লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি :
ইউরোপের একটি দেশ হচ্ছে জার্মানি এবং জার্মানি দেশটি খুবই উন্নত হওয়ায় এখানে অনেক কাজের চাহিদা রয়েছে। যারা জার্মানি যেতে ইচ্ছুক তাদের অবশ্যই এসব কাজ সম্পর্কে ধারণা থাকা উচিত। চলুন জার্মানিতে যেসব কাজের চাহিদা রয়েছে সেগুলো এক নজরে দেখে নেই।
- সিকিউরিটি গার্ড
- কন্সট্রাকশন
- ফুড প্যাকেজিং
- শপিং মল ক্লিনার
- মেডিকেল ক্লিনার
- ফুড ডেলিভারি
- ড্রাইভিং
- ডাক্তার
- কম্পিউটার অপারেটর
- হোটেল বয়
- মেকানিক্যাল
- রেস্টুরেন্ট
- নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার
সুতরাং জার্মানি যাওয়ার আগে উপরোক্ত যেকোনো একটি কাজে দক্ষতা অর্জন করে গেলে অনেক ভালো টাকা বেতন পেয়ে থাকবেন।
জার্মানির ভিসা প্রসেসিং হওয়ার সময় :
অনেকেই জানতে চায় জার্মানির ভিসা প্রসেসিং হতে কত সময় লাগবে। সাধারণত জার্মানির ভিসা প্রসেসিং হতে ২৫ থেকে ৩০ দিন সময় লাগে। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে এই সময়ের চেয়ে আরো বেশিও লাগতে পারে।
আরও পড়ুনঃ ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে?
২. জার্মান জব ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
অনেক স্টুডেন্ট রয়েছেন যারা জার্মানিতে বিনামূল্যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করতে চান, তাদের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা ফ্রি থাকলেও থাকা ও খাওয়া ফ্রি নয়। সেজন্য তাদেরকে কোন না কোন জব করতে হয়। একজন স্টুডেন্ট হয়ে জার্মান জব ভিসা পাওয়ার জন্য যেসব কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় সেগুলো হচ্ছে -
- অনুমতি পত্র
- চারিত্রিক সনদপত্র
- খন্ডকালীন কাজ
- কাজের স্থান
- ভিসার কাগজ
- পড়াশোনা চলাকালীন কাজ
- আয়কর পত্র
এবার চলুন উপরোক্ত কাগজগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
ভিসার কাগজ :
জার্মানি যাওয়ার পর ভিসার কাগজের মেয়াদ বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে। জার্মানির যে শহরেই থাকেন না কেন ভিসার মেয়াদ সেই শহর থেকেই বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
অনুমতি পত্র :
জার্মানিতে অনেকে খন্ডকালীন জব করতে চায়। খন্ডকালীন জব করার জন্য প্রয়োজন হয় অনুমতি পত্রের। অনুমতিপত্র ছাড়া কোন ধরনের জব করা যাবে না। জার্মান জব করার জন্য ওয়ার্ক পারমিটেরও প্রয়োজন হয়।
আয়করপত্র :
জার্মান জব করার জন্য প্রয়োজন হয় আয়কর পত্রের। যদি আয়করপত্র সংগ্রহ করতে চান তাহলে গুগলে Lohnsteuerabzug এটি লিখে সার্চ করলেই আয়করপএ পেয়ে যাবেন।
চারিত্রিক সনদপত্র :
চারিত্রিক সনদপত্র হচ্ছে আপনি একজন মানুষ হিসেবে কেমন? কোন ধরনের অপরাধমূলক কাজকর্মের সাথে জড়িত আছেন কিনা এসব কিছু উল্লেখ করে একটি সনদপত্র। জার্মানির প্রতিটি শহরের কাগজপত্র আলাদা হয়।
পড়াশোনাকালীন কাজ:
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনাকালীন অনেক স্টুডেন্ট কাজ করতে চায়। এসব জব করার জন্য গুগলে Werkstudent লিখে সার্চ করুন। একে জার্মান শিক্ষা ব্যবস্থায় থাকা অনেক জব সহজেই খুঁজে পাবেন।
খণ্ডকালীন কাজ :
অনেকে জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা কালীন অবস্থায় সেমিস্টার বিরতিতে জব করে ভালো টাকা উপার্জন করে।সেমিস্টার বিরতির সময় নির্দিষ্ট মেয়াদী কর্মসংস্থান এবং স্বল্পমেয়াদি জবের অনেক চাহিদা রয়েছে। জার্মান অনেক স্টুডেন্টকে সুপারমার্কেট বা রেস্টুরেন্ট এর কাজ করতে দেখা যায়। আপনিও যদি খন্ডকালীন জব করতে চান তাহলে গুগলে Farienjob লিখে সার্চ করুন। এখান থেকে আপনার পছন্দমতো জব পেয়ে যাবেন।
জার্মান সিকার ভিসা :
বিশ্বের চাকরি প্রার্থীদের কাছে পছন্দের একটি গন্তব্য হতে পারে জার্মানি। জার্মানিতে চাকরি নিয়ে আপনি আপনার জীবনের দুর্দান্ত সুযোগ গুলিকে কাজে লাগাতে পারবেন। এজন্য প্রথমে আপনাকে একটি চাকরিপ্রার্থী ভিসা বা সিকার ভিসা নিতে হবে। এই ভিসায় জার্মানিতে গিয়ে কাজের পাশাপাশি থাকতেও পারবেন।
এটি হচ্ছে একটি দীর্ঘমেয়াদি রেসিডেন্ট পারমিট যা দেশটিতে চাকরি না হওয়া পর্যন্ত ছয় মাস থাকার অনুমতি দেয়। চাকরি পাওয়ার পর আপনাকে একটি জার্মান কাজের ভিসা দেওয়া হবে। জার্মানি হচ্ছে এমন একটি দেশ যা তরুণ দক্ষ কর্মীদের আয়ের উৎস স্থাপন করে এবং উচ্চ বেতনের পদ দিতে উৎসাহিত করে। এই ভিসার মাধ্যমে আপনি জার্মানিতে কাজ করতে পারবেন তার কোন গ্যারান্টি দেয় না তবে চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত দেশে থাকার অনুমতি দেয়।
জব সিকার ভিসার আবেদন :
জব সিকার ভিসার আবেদন আপনি নিকটস্থ জার্মান কনস্যুলেট বা দূতাবাস থেকে করতে পারবেন। যদি আপনার দেশে কোন জার্মান দূতাবাস না থাকে তাহলে জার্মানির সাথে সম্পর্কিত ভিসা আবেদন কেন্দ্র থেকে করতে পারবেন। ভিসা আবেদন করার পর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভিসা তৈরি হয়ে যাবে। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটি দুই থেকে তিন মাস সময় লাগতে পারে।
জব সিকার ভিসার আবেদন ফি:
একটি জব সিকার ভিসার আবেদন ফি হচ্ছে ৭৫ ইউরো। যেকোনো সময় এই ফি পরিবর্তন হতে পারে। ভিসা অনুমোদিত না হলে ফি ফেরত দেওয়া হবে না। এটি সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি ভিসার ধরন হিসেবে পরিচিত।
যোগ্যতা:
জব সিকার ভিসার জন্য যেসব যোগ্যতা প্রয়োজন সেগুলো হচ্ছে -
- প্রার্থীর বয়স অবশ্যই ১৮ বছর হতে হবে।
- জার্মান বা বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি ডিগ্রী নিতে হবে।
- পাঁচ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- চিকিৎসা বীমা বা ভ্রমণ বীমা থাকতে হবে।
- ব্যাংক একাউন্ট স্টেটমেন্ট।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র :
জব সিকার ভিসার আবেদন করতে অনেকগুলো কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে। সেগুলো হচ্ছে -
- বৈধ আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি (৩ কপি)।ছবিতে ৮০% পর্যন্ত মুখমন্ডল দৃশ্যমান হতে হবে। ছবিতে কোন কালির চিহ্ন বা দাগ থাকা যাবে না।
- জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একাডেমিক ডিগ্রি।
- জার্মানিতে বসবাস করে এমন একজন স্পন্সরের কাছ থেকে বাধ্যবাধকতা পএ।
- হোটেল বুকিং এর প্রমাণপত্র।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর বিবৃতি
- স্বাস্থ্য বীমার প্যাকেজের প্রমাণপত্র
- আবেদনকারীর সংক্ষিপ্ত পাঠ্যক্রম জীবন। এতে কভার লেটার সংযুক্ত করে জার্মানি যাওয়ার উদ্দেশ্য,কর্মসংস্থান খোঁজার পরিকল্পনা এবং চাকরি না পেলে বিকল্প কর্মজীবনের পরিকল্পনা স্পষ্ট করতে হবে।
সুতরাং উপরোক্ত কাগজপত্র গুলো জার্মান ভিসা তৈরির জন্য প্রয়োজন হবে।
জব সিকার ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া :
- জব সিকার ভিসার আবেদন করার জন্য প্রথমে জার্মানি যাওয়ার জন্য যোগ্যতা যাচাই করতে হবে। যোগ্যতা সম্পর্কে উপরে বর্ণনা করা আছে।
- এবার সঠিক তথ্য দিয়ে ভিসা আবেদন ফরম পূরণ করুন। এতে আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য,জার্মানি যাওয়ার উদ্দেশ্য ইত্যাদি বিষয় প্রয়োজন হতে পারে।
- এবার নিজ দেশের জার্মান দূতাবাস থেকে ইন্টারভিউর অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিন।
- ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস সংগ্রহ করুন।
- এবার ইন্টারভিউ এর জন্য আপনাকে পুরোপুরি তৈরি হতে হবে।
- ভিসার জন্য নির্ধারিত ফি প্রদান করুন। জেনে রাখা ভালো যে এই ফি অফেরতযোগ্য।
সুতরাং উপরোক্ত ধাপগুলো সম্পন্ন হলে আপনি নির্দিষ্ট দিনে ভিসা আবেদন কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে কাঙ্খিত ভিসাটি সংগ্রহ করে নিন।
জার্মানিতে দ্রুত চাকরি পাওয়ার উপায় :
জার্মানিতে দ্রুত চাকরি পাওয়ার জন্য যেসব জিনিস ফলো করা উচিত সেগুলো হচ্ছে -
- জার্মান চাকরির বাজার সম্পর্কে অনলাইন সংস্থা গুলোর সাহায্য নিতে পারেন।
- জার্মানিতে এমন লোকজনের সাথে নেটওয়ার্ক করা যারা চাকরি খোঁজতে অনেক সাহায্য করবে।
- কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাড়াতে হবে। জার্মানিতে চাকরি পাওয়ার একটি বিশেষ দক্ষতা হচ্ছে জার্মান ভাষা জানা। আরেকটি হচ্ছে স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষমতা।
আরও পড়ুনঃ ক্রোয়েশিয়া থেকে ইতালি কত কিলোমিটার
৩. জার্মানি সরকারি ওয়েবসাইট
আপনি যদি জার্মান সরকারের ওয়েবসাইটের আবেদন করে থাকেন তাহলে আর্টিকেলের এই অংশটি আপনার জন্যই।জার্মান সরকারের ওয়েবসাইটের নাম হচ্ছে https://www.make-it-in-germany.com/।এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করে আপনার পছন্দমতো চাকরির আবেদন করতে পারবেন। চাকরির আবেদন কারার পূর্বে অবশ্যই আপনার কোন কাজে দক্ষতা অর্জন করে নেওয়া উচিত। দক্ষতার পাশাপাশি ওয়ার্ক পারমিটেরও প্রয়োজন। ওয়েবসাইটটি শুধুমাত্র দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে। দক্ষতা থাকলে আপনি ফ্রিতেই চাকরি পেয়ে যাবেন।
চলুন জার্মান সরকারের কতগুলো ওয়েবসাইটে কোন কোন জব রয়েছে তা দেখে নেই -
- Careers in transport
- constriction job
- Nursing professionals
- Scientists
- Craftspeople
- Physicians
- Engineers
- IT specialists
এসব চাকরিতে কোন এজেন্সির সাহায্য ছাড়া সহজেই আবেদন করতে পারবেন।
আবেদন প্রক্রিয়া:
জার্মানির সরকারি ওয়েবসাইটে জবের জন্য আবেদন করতে প্রথমে https://www.make-it-in-germany.com/ এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। এখান থেকে আপনার পছন্দমতো জব সার্চ করুন। আবেদনপত্রের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আবেদন করে ফেলুন। আবেদন করার সময় ফোন নাম্বার ও ইমেইল পেতে পারেন। প্রয়োজনে যোগাযোগও করতে পারেন। আবেদনের সময় সিভিও জমা দিতে হবে। আবেদন করার পরে জব পাবেন কি না তা নিয়ে রিপ্লে করা হবে। যদি জব পেয়ে যান তাহলে ভিসার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
বাংলাদেশ থেকে জার্মানির দূরত্ব :
অনেকেই বাংলাদেশ থেকে জার্মানির দূরত্ব সম্পর্কে জানতে চায়। বাংলাদেশ থেকে জার্মানির দূরত্ব হচ্ছে ৭২৮৭ কিলোমিটার।
বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে কত সময় লাগে :
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ জানতে চায় বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে কত সময় লাগে। মূলত বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে সময় লাগে ১৮ ঘন্টা ২৫ মিনিটের মতো।
বাংলাদেশ থেকে জার্মানির বিমান ভাড়া :
বাংলাদেশ থেকে জার্মানির উদ্দেশ্যে যেসব বিমান যায় সেগুলো হচ্ছে -
- কাতার এয়ারওয়েজ
- এমিরেটস এয়ারলাইন্স
- ইতিহাদ এয়ারওয়েজ
- সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স
- ইউ এস বাংলা এয়ারলাইন্স
একেক বিমানের খরচ একেক রকম হয়ে থাকে। যেমন - সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের বিমান ভাড়া হয়ে থাকে ১,৬০,০০০ থেকে ১,৮০,০০০ টাকা। কাতার এয়ারওয়েজ বিমান ভাড়া ৯৭০০০ থেকে ১,১০,০০০ টাকা। ইতিহাদ এয়ারওয়েজ বিমান ভাড়া ৩,৭৬,০০০ থেকে ৪,০০,০০ টাকা। ইউএস বাংলা এয়ারওয়েজ বিমান ভাড়া ৭৫,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকা এবং এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বিমান ভাড়া ১,০৫,০০০ থেকে ১,২৫,০০০ টাকা।
আরও পড়ুনঃ তুর্কি সাইপ্রাস যেতে কত টাকা লাগে?
৪. জার্মানিতে লোক নিয়োগ ২০২৪
ইউরোপের অন্যতম ধনী দেশ হচ্ছে জার্মানি। অনেকের কাছেই এটি একটি স্বপ্নের দেশ। তৃতীয় বিশ্বের মানুষদের প্রচুর কষ্ট করতে হয় দেশটিতে যাওয়ার জন্য। ২০২৪ সালে জার্মান সরকার একটি সুখবর দিল। দেশটি মোট ২৬ হাজার লোক বিনা খরচে নিবে । যেসব খাতে দক্ষ শ্রমিক নিবে জার্মানি সেগুলো হচ্ছে :
- কৃষি
- নির্মাণ
- স্বাস্থ্যসেবা
- শিক্ষকতা
- সামাজিক খাত
জার্মান যাওয়ার জন্য তারাই আবেদন করতে পারবে যাদের ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার মান অনেক ভালো ।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদন করার জন্য জার্মান সরকারের ওয়েবসাইটে যেতে হবে। সেখান থেকে 'ওয়ার্কিং ইন জার্মানি' অপশনে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করার পর ' প্রফেশনস ইন ডিমান্ড জব লিস্টিং 'ক্যাটাগরিতে পছন্দের চাকরি খুজতে পারবে। আবেদন করার জন্য কোন ফি লাগবে না।
নতুন এই নিয়োগে শিক্ষকতা, স্বাস্থ্য সেবা এবং সামাজিক খাতে লোক নিবে ৬০০০৯ জন। নির্মাণ খাতে লোক নেয়া হবে ২৪৯৯ জন। সেফটি এন্ড সিকিউরিটি, ট্রাফিক লজিস্টিকস খাতে লোক নেয়া হবে ১,৫১৪ জন। প্রশাসন ও আইন খাতে লোক নেয়া হবে ২৩৯১ জন।
জার্মানি বিজনেস ভিসা :
জার্মানি বিজনেস ভিসা খুবই জনপ্রিয়। এই ভিসায় আপনাকে ৬ মাস বা ৯০ দিন পর্যন্ত জার্মানিতে থাকার অনুমতি দেয়। আপনি যদি জার্মানিতে ব্যবসা করতে চান তাহলে বিজনেস ভিসা নিতে পারেন। ভিসাটি মূলত যারা ইউরোপের বাইরে থাকে তাদেরকে দেওয়া হয়। ভিসা পাওয়া নির্ভর করবে জাতীয়তার উপর।
বিজনেস ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র :
বিজনেস ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো হচ্ছে -
- বৈধ পাসপোর্ট। পাসপোর্টের মেয়াদ ১০ বছরের বেশি হওয়া যাবে না। পাসপোর্টে একটি ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকতে হবে যাতে ভিসা স্টিকার লাগানো যায়।
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি (২ কপি)।ছবি ৩ মাসের বেশি পুরনো হওয়া যাবে না।
- সঠিক তথ্য দিয়ে ভিসা আবেদন পএ পূরণ করতে হবে। আবেদন ফর্মের দুটি প্রিন্ট কপি থাকতে হবে এবং আবেদন ফর্মের শেষে স্বাক্ষর থাকতে হবে।
- স্বাস্থ্য বীমার প্রমাণপএ।
- নাগরিক প্রমাণপএ যেমন ম্যারেজ সার্টিফিকেট,সন্তানের জন্মসনদ।
- আর্থিক আয়ের প্রমাণপএ যেমন -তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- হোটেল বুকিং প্রমাণপএ।
সুতরাং উপরোক্ত কাগজপত্র গুলো জার্মান বিজনেস ভিসা করতে প্রয়োজন হবে। এসব কাগজপত্র নিয়ে নিকটস্থ জার্মান দূতাবাস থেকে আজই ভিসার জন্য আবেদন করে ফেলুন।
আরও পড়ুনঃ ইতালি এগ্রিকালচার ভিসা প্রসেসিং টাইম
৫. বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায়
আগে বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে অনেক কষ্ট করতে হতো, অনেক ভোগান্তি পোহাতে হতো। এখন কষ্ট অনেক লাঘব হয়েছে। এখন খুব সহজেই বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা, টুরিস্ট ভিসা বা কাজের ভিসা নিয়ে সহজে যাওয়া যায়। তবে ভিসা করার জন্য অবশ্যই কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দূতাবাসে জমা দিতে হবে। কোন ধরনের ভিসায় জার্মানি যেতে চান এটাও সিলেক্ট করতে হবে।
ভিসা সিলেক্ট করে প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস জমা দেওয়ার পর কিছুদিনের মধ্যে কাঙ্খিত জার্মান ভিসাটি প্রদান করা হবে। যদি কোন ঝামেলায় পড়তে না চান তাহলে
ভিসা এজেন্সির সাহায্য নিতে পারেন।
জার্মানিতে কোন ভিসায় যাওয়া সহজ:
অনেকেই জানতে চান জার্মানিতে কোন ভিসা নিয়ে যাওয়া সবচেয়ে সহজ। জার্মানিতে এখন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যাওয়া কঠিন। স্টুডেন্ট ভিসা বা জব ভিসার মাধ্যমে জার্মানি যাওয়া সহজ। জার্মান যাওয়ার আগে জার্মান ভাষা এবং ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে। স্টুডেন্ট ভিসায় জার্মানি গিয়ে পার্ট টাইম জব করতে পারেন।
জার্মান ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস :
জার্মান ভিসার জন্য যেসব কাগজপত্রের প্রয়োজন সেগুলো হচ্ছে -
- বৈধ পাসপোর্ট (পাসপোর্টের মেয়াদ হতে হবে কমপক্ষে ছয় মাস)
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি (২ কপি)
- জার্মান দূতাবাস হতে পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফরম
- জাতীয় পরিচয়পএের ফটোকপি। সাথে বাবা মার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিও লাগবে।
- কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপএ
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- চেয়ারম্যান কর্তৃক সত্যায়িত সনদপত্র
ভিসা করার জন্য উপরোক্ত ডকুমেন্টসগুলো দূতাবাসে জমা দিতে হবে। দূতাবাসে জমা দেওয়ার পর কাগজপত্র কোম্পানির কাছে পাঠানো হবে এবং কোম্পানি সকল কিছু যাচাই- বাছাই করে ভিসা পাওয়ার যোগ্য মনে করলে ভিসা দেওয়া হবে।
জার্মান ভিসা খরচ:
জার্মানির ভিসা করতে কত টাকা খরচ হবে তা সম্পর্কে পূর্ব থেকে ধারনা নেওয়া উচিত। ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় জার্মানি যেতে চাইলে খরচ পড়বে ৮ থেকে ১২ লক্ষ টাকা। স্টুডেন্ট ভিসায় জার্মানি যেতে খরচ হতে পারে ৫ লক্ষ টাকার মতো।জার্মানিতে থাকলে প্রতি মাসে 400 থেকে 500 ইউরো এক্সট্রা খরচ হবে। হাত খরচ ও থাকা খাওয়া মিলিয়ে ৪০০ ইউরোর মধ্যে হয়ে যাবে।
আরও পড়ুনঃ কানাডা যাওয়ার যোগ্যতা
৬. বোয়েসেল নিয়োগ জার্মান টেকনিক্যাল
বোয়েসেল এর নতুন একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি হচ্ছে জার্মান টেকনিক্যাল। জার্মান টেকনিক্যাল পদে আবেদন করতে চাইলে আর্টিকেলের এই অংশটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পদের নাম :জার্মান টেকনিক্যাল
পদের সংখ্যা : ৫
বেতন :প্রথম মাসে বেতন দেওয়া হবে বাংলাদেশী টাকায় ৩২ হাজার টাকা, পরবর্তীতে দক্ষতা সাপেক্ষে বেতন বাড়ানো হবে।
সাপ্তাহিক ছুটি :সাপ্তাহিক ছুটি হচ্ছে ২ দিন তা হলো শুক্রবার ও শনিবার
কাজের সময় : দৈনিক ৮ ঘন্টা (ওভারটাইম বাদে)
কোম্পানির নাম :Porshe
ইতিমধ্যে যাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। আবেদনের সময়সীমা সম্পর্কে জানতে বোয়েসেল এর ওয়েবসাইটে www.boesl.gov.bd ভিজিট করুন। যদিও এটি কিছুদিন পূর্বের নিয়োগ। বর্তমানে জার্মান টেকনিক্যাল এর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে আপডেট জানানো হবে।
শর্তাবলী:
- একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং পাসপোর্টের মেয়াদ হতে হবে কমপক্ষে এক বছর।
- আবেদনকারীকে কমপক্ষে ৮ম শ্রেণি পাসকৃত হতে হবে।
- বাংলাদেশ জার্মান টেকনিক্যাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হতে প্রশিক্ষণ নিতে হবে এবং তিন মাসের সার্টিফিকেট সংযুক্ত করতে হবে।
- আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে । আবেদনকারী সর্বোচ্চ ৫০ বছর পর্যন্ত চাকরি করতে পারবে।
- চাকরির মেয়াদ হচ্ছে সর্বনিম্ন এক বছর
- জার্মান যাওয়ার সমস্ত খরচ আবেদনকারীকে নিজে বহন করতে হবে। তবে চাকরিরত অবস্থায় বাড়িতে আসার জন্য খরচ জার্মান টেকনিক্যাল বহন করবে।
- দৈনিক 8 ঘণ্টা কাজ করতে হবে অর্থাৎ ওভারটাইম ছাড়া সাপ্তাহিক ৫৬ ঘণ্টা কাজ করবে। ওভারটাইমের অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
- আবেদনকারীকে ইলেকট্রিক্যাল কন্ট্রোলার, মেশিন লার্নিং সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
- অন্যান্য সকল শর্ত জার্মান টেকনিক্যাল শ্রম আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া :
বোয়েসেল নিয়োগ জার্মান টেকনিক্যাল এর আবেদন প্রক্রিয়ার ধাপগুলো নিচে দেওয়া হলো :
- প্রথমে প্রয়োজন একটি ইন্টারনেট সংযুক্ত কম্পিউটার মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপের।
- এবার google এর ক্রোম ব্রাউজারে https:// boesl.gov.bd/ লিখে সার্চ করুন।
- সার্চ করার পর বোয়েসেল এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে নিয়ে যাওয়া হবে।
- এবার বোয়েসেল এর নোটিশ প্যানেলে প্রবেশ করুন।
- নোটিশ প্যানেল থেকে জার্মান টেকনিক্যাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি খুঁজে বের করুন।
- এবার একটি পিডিএফ ফাইল দেখতে পাবেন। পিডিএফ ফাইলটি ক্লিক করে ওপেন করুন।
- পিডিএফ ফাইলের নিচের দিকে একটি আবেদন লিংক দেখতে পাবেন।
- আবেদন লিংকে প্রবেশ করলে আবেদন ফর্মটি ওপেন হবে।
- এবার প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে আবেদন ফরমটি পূরণ করে নিন। যদি ভুল তথ্য দেওয়া হয় তাহলে আবেদনটি বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- আবেদন ফরম পূরণ করার পর সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। এবং সাবমিট করে দিন।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র :
- বৈধ পাসপোর্ট (পাসপোর্টের মেয়াদ হতে হবে কমপক্ষে এক বছর)
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে জন্ম নিবন্ধন সনদ।বাবা মায়েরও জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
- একাডেমিক সার্টিফিকেট
- ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট। যদি ব্যাংক একাউন্ট না থাকে তাহলে আত্মীয়-স্বজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট দিলেও চলবে।
- চারিত্রিক সনদপত্র
- মেডিকেল রিপোর্ট
- বিএমইটি কার্ড
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি (২ কপি) । এক্ষেত্রে ছবির background সাদা হতে হবে। ছবিতে নাক, কান, চোখ, মুখ ভালোভাবে দৃশ্যমান হতে হবে । মাথায় টুপি বা ক্যাপ ব্যবহার করা যাবে না।
- আঙ্গুলের ফিঙ্গারপ্রিন্ট।
- চাকরির চুক্তিপএের কপি
- কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট
সুতরাং উপরোক্ত কাগজপএ গুলো যদি ঠিকঠাক থাকে তাহলে খুব সহজেই বোয়েসেল জার্মান টেকনিক্যাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারবেন।
খরচ:
বোয়েসেল নিয়োগ জার্মান টেকনিক্যাল জার্মানি যাওয়ার জন্য বিমান ভাড়া ব্যক্তিকে বহন করতে হবে । বিমান ভাড়া কত পড়বে তা নির্ভর করবে বিমানের ধরণের উপর। সকল তথ্য পর্যবেক্ষণ ও যাচাই বাছাই করার পর আবেদনকারীদের মধ্যে যারা নির্বাচিত হবে তাদেরকে বোয়েসেল সার্ভিস চার্জ বাবদ সর্বোচ্চ ৭০ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ৩০ হাজার টাকা বোয়েসেল এর অফিসে সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখা হতে প্রদান করতে হবে। আপনার সকল কার্যক্রম যদি নির্ভুল হয় তাহলে বোয়েসেল অফিস থেকে ভাইভা ও ইন্টারভিউর জন্য নোটিশ পাঠানো হবে।
যোগাযোগ :
- প্রবাসী কল্যাণ ভবন (৫ ম তলা,) ৭১/৭২ ইস্কাটন গার্ডেন রোড, রমনা, ঢাকা, বাংলাদেশ।
- ইমেইল - info@boesl.gov.bd,md@boesl.gov.bd.
- phone- +88-02-9336508,48317515
বোয়েসেল এর ওয়েবসাইট থেকে সকল তথ্য জেনে নিতে পারবেন। এজন্য বোয়েসেল এর ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার উপায়
৭. জার্মানি স্টুডেন্ট ভিসা
দেশের বাইরে গিয়ে উচ্চ শিক্ষা নেওয়ার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি দেশ হতে পারে জার্মানি। অনেকেই ভালো শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জনের জন্য জার্মানিকে বেছে নেন। আর্টিকেলের এই অংশে স্টুডেন্ট ভিসায় জার্মানিতে যাওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করব।
জার্মানি যাওয়ার যোগ্যতা:
স্টুডেন্ট ভিসায় জার্মানি যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। জার্মানিতে ব্যাচেলর স্টুডেন্ট ভিসায় আবেদন করার জন্য যেসব যোগ্যতার প্রয়োজন সেগুলো হচ্ছে -
- বৈধ পাসপোর্ট (পাসপোর্ট যদি পূর্বের হয় তাহলে কনভার্ট করে এমআরপি পাসপোর্ট করে নিতে হবে।
- আইএলটিএস স্কোর হতে হবে ৬
- আবেদনকারীর জীবনবৃত্তান্ত
- জার্মান ভাষায় দক্ষতা
- বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বছরের সকল মার্কসিট
- আবেদনকারীর এইচএসসির মার্কসিট
- আবেদনকারীর এইচএসসির সার্টিফিকেট
- আবেদনকারীর এসএসসির সার্টিফিকেট
- আবেদনকারীর এসএসসির মার্কসিট
- অফার লেটার। অফার লেটারে কোন বিষয়ে পড়াশোনা করতে চান, অভিজ্ঞতার বর্ণনা নিয়ে লিখতে হবে।
জার্মান স্টুডেন্ট ভিসা খরচ :
জার্মানিতে অনেক নামিদামি বড় বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। স্কলারশিপ পেলে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার খরচ ফ্রি। প্রতি সেমিস্টারে স্টুডেন্ট ইউনিয়নের জন্য ৪০০ থেকে ৭২০ ইউরো পর্যন্ত নেওয়া হয়। জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হলে স্টুডেন্টদেরকে এইচএসসি মিলিয়ে জিপিএ ৭ হতে হবে এবং দুই বছরের বেশি স্টাডি গ্যাপ থাকা যাবেনা।
জার্মানিতে পড়াশোনা করার বয়স বাধ্যবাধকতা রয়েছে। স্নাতক করার জন্য বয়সহতে হবে ২৫ বছর এবং স্নাতকোত্তর করার জন্য বয়স হতে হবে ২৯ বছর।অনেক সময় পত্রিকায় দেখা যায় যে জার্মানিতে পড়াশোনা করতে কোন খরচ লাগেনা। আসলে কথাটি সত্য নয়। জার্মানিতে নরমালি থাকতে খরচ পরতে পারে ৪০০ থেকে ৫০০ ইউরো।আবার বাইরে বাসা ভাড়া নিলে খরচ পড়তে পারে ২০০ থেকে ৩০০ ইউরো। জার্মানিতে থাকলে অবশ্যই হেলথ ইন্সুরেন্স প্রদান করতে হয়। জার্মানিতে প্রতি মাসে হেলথ ইন্সুরেন্স প্রদান করতে হয় ৯০ থেকে ১০০ ইউরো। তবে আপনি যদি ভালো শহরে থাকতে চান তাহলে মাসিক খরচ পড়বে 700 ইউরো।
জার্মান স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন :
জার্মান দেশটি খুবই উন্নত হওয়ায় বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে যায়। জার্মানিতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আর্টিকেলের এই
অংশে আলোচনা করব জার্মান স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন নিয়ে।
জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বছরে দুইবার আবেদন করা যায়। প্রথম আবেদন শুরু হয় পহেলা জানুয়ারি থেকে। দ্বিতীয় আবেদন শুরু হয় ১৫ জুলাই থেকে।https://www.studying-in-germany.org/german-student-visa/#do-you-need-a-visa-to-study-in-germany এই লিংক থেকে সহজে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যান্য তথ্যাবলী জেনে নিবেন।
জার্মান টুরিস্ট ভিসা :
আপনি যদি জার্মানিতে বন্ধবান্ধব, আত্মীয় স্বজনের সাথে দেখা করা, বা জার্মানির কোন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে চান তাহলে আপনার জন্য জার্মান টুরিস্ট ভিসা আদর্শ।
জার্মান টুরিস্ট ভিসার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস :
জার্মান টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে কিছু ইউনিফাইড ডকুমেন্টস দেখাতে হবে। ডকুমেন্টস গুলো এক সেনজেন দেশ থেকে অন্য সেনজেন দেশে ভিন্ন হয়ে থাকে। জার্মান টুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় নথিগুলো হচ্ছে -
- ভিসার আবেদন পত্র পূরণ - প্রথমে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সঠিক ও সৎভাবে দিয়ে ভিসার আবেদন পত্রটি পূরণ করতে হবে। জার্মানির টুরিস্ট ভিসার আবেদন পত্রটি অনলাইন থেকেও ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
- বৈধ পাসপোর্ট -মেয়াদ হতে হবে আপনি সেনজেন দেশে যতদিন থাকবেন তার চেয়ে তিন মাস বেশি। পাসপোর্টে অবশ্যই দুটি ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকতে হবে।
- সাম্প্রতিক তোলা ছবি (দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের)। ছবি অবশ্যই জার্মান দূতাবাস দ্বারা নির্ধারিত মান অনুসরণ করতে হবে।
- স্বাস্থ্যবীমা থাকতে হবে।বীমাতে ভ্রমণ স্বাস্থ্য উল্লেখ করতে হবে যাতে অসুস্থতা ও দুর্ঘটনা অন্তর্ভুক্ত থাকে।
- কভার লেটার। কভার লেটারে জার্মানির টুরিস্ট ভিসায় আবেদন করার কারণ, কতদিন অবস্থান করতে চান ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করে লিখতে হবে।
- নাগরিক ব্যবস্থার বিভিন্ন প্রমাণ পত্র যেমন - সন্তানের জন্ম সনদ, বিবাহের প্রশংসা পত্র ইত্যাদি।
- হোটেল বুকিং এর প্রমাণ পত্র।
সুতরাং উপরোক্ত কাগজপত্র গুলো আপনার জার্মান টুরিস্ট ভিসা আবেদন করতে প্রয়োজন হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া :
- প্রথমে যে ভিসার জন্য আপনি আবেদন করতে চান সেই ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রের চেকলিস্ট দূতাবাসের কাছে থেকে নিতে পারেন।
- সঠিকভাবে আবেদন পত্র পূরণ করতে হবে।
- আপনার ভিসা তৈরির প্রক্রিয়ায় জার্মান দূতাবাসে আপনার সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হবে। ভ্রমণের তিন মাস পূর্বে দূতাবাসে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট সিডিউল করতে পারেন।
- ভিসার জন্য নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে রশিদ সংগ্রহ করুন। অ্যাপয়েন্টমেন্টের দিন এটি কাজে লাগতে পারে।
ভিসা আবেদন করার জন্য নিকটস্থ জার্মান দূতাবাসের সহযোগিতা নিতে পারেন।
জার্মান ভিসা পেতে কত কতদিন লাগবে :
সাধারণত জার্মানির স্বল্প মেয়াদী ভিসা প্রক্রিয়াকরণের জন্য সময় লাগে পনেরো দিন পর্যন্ত। যদি জার্মান দূতাবাসে খুব বেশি অ্যাপ্লিকেশন থাকে তাহলে উচ্চ ভিজিটর ভিসার জন্য ফাইল করতে পারেন। এক্ষেত্রে ভিসা প্রসেসিং হতে ৩০ থেকে ৬০ দিনের মতো সময় লাগবে। বিলম্ব এড়াতে জার্মানিতে যাওয়ার তিন মাস পূর্বে অবশ্যই তাড়াতাড়ি ভিসার আবেদন জমা দিবেন।
ভিসা ছাড়া জার্মানিতে কতদিন পর্যন্ত থাকা যায় :
ইইউ দেশের সদস্য সকল নাগরিক জার্মানিতে সহজেই প্রবেশ করতে পারে এবং ৯০ থেকে ১৮০ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। বেশিদিন থাকার জন্য জার্মান কর্তৃপক্ষের কাছে নিবন্ধন করতে হবে। কানাডা জাপান অস্ট্রেলিয়া দক্ষিণ কোরিয়া নিউজিল্যান্ডের নাগরিকরা জার্মান পৌঁছানোর তিন মাসের মধ্যে জার্মান কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আবাসনের অনুমতি নিতে হবে। যেসব দেশ জার্মানি ও অন্যান্য সেনজেন দেশের সাথে ভিসা- মুক্ত চুক্তির স্বাক্ষর করেনি সেসব দেশের নাগরিককে জার্মানিতে দীর্ঘদিন বসবাসের জন্য জার্মান জাতীয় ভিসার আবেদন করতে হবে।
জার্মানির এক টাকা বাংলাদেশের কত টাকা :
আপনি যদি জার্মানির এক টাকা বাংলাদেশের কত টাকা এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজে থাকেন তাহলে আর্টিকেলের এই সেকশনটি আপনার জন্যই। বাংলাদেশের অনেক মানুষ প্রতিনিয়ত জার্মানি যায়। জার্মানি যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই জার্মানি এবং বাংলাদেশের টাকার পার্থক্যটা জানতে হবে।
জার্মানির মুদ্রার নাম হচ্ছে ইউরো। আরো কয়েকটি দেশে ইউরো মুদ্রা চালু রয়েছে। প্রতিনিয়ত টাকার রেট উঠানামা করে। জার্মানির ১ ইউরো বাংলাদেশের ১১৮ টাকার সমান। তবে কখনো কখনো জার্মানির এই টাকার মান ১১৩ বা ১১৫ হয়ে থাকে।
আরও পড়ুনঃ ইউরোপে কর্মী নিয়োগ ২০২৪
৮.জার্মানিতে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
জার্মানিতে যারা স্টুডেন্ট ভিসায় যায় তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নাগরিকত্ব পাওয়ার কৌতূহল সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের অনেক মানুষই জার্মানির নাগরিক হওয়ার স্বপ্ন দেখে। জার্মানির প্রযুক্তিগত অগ্রগামীতা তার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ। জার্মানির নাগরিকত্ব পেলে ইউরোপীয় ইউনিউনের ২৬টি দেশে সহজেই যেতে পারবেন। তবে জার্মানির নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ নয়। জার্মান পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে বর্ণিত রয়েছে 'জার্মান নাগরিকত্ব পাওয়া অনেক জটিল '
চলুন জার্মানির নাগরিকত্ব পাওয়ার কয়েকটি উপায় নিয়ে আলোচনা করি।
জার্মান ভিসা :
জার্মানি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে প্রথমে যে জিনিসটি প্রয়োজন সেটি হচ্ছে জার্মান ভিসা। পরিবার ভিসা, শিক্ষা ভিসা এবং জব ভিসা এই তিন ভিসার মধ্যে যেকোন একটি ভিসা থাকতে হবে। আপনার যদি একটি জব ভিসা এবং পাসপোর্ট থাকে তাহলে খুব সহজেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ভাষাগত দক্ষতা :
আপনি যদি জার্মানিতে ঝামেলাহীনভাবে নাগরিকত্ব পেতে চান তাহলে জার্মানির ভাষার ওপর দক্ষতা থাকতে হবে। আপনি জার্মান ভাষায় দক্ষ কিনা তার প্রমাণস্বরূপ আপনার কাছে একটি বি-১ সার্টিফিকেট থাকতে হবে। এটা দ্বারা বোঝা যাবে যে আপনি জার্মান ভাষায় লিখতে সক্ষম এবং কথা বলতে পারেন।
বসবাসের সময়কাল:
জার্মানিতে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত জার্মানিতে বসবাস করতে হবে। আপনি যদি জার্মানির নিয়ম অনুযায়ী ৮ বছর বা ছয় থেকে সাত বছর জার্মানিতে থাকেন তাহলে স্থায়ীভাবে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
জার্মান সরকার বসবাসের এই সময়কাল পাঁচ বছরে কমিয়ে আনার চিন্তা করছেন। কেউ যদি অল্প সময়ের মধ্যে ব্যবসা করে খুব ভালো অবস্থানে যেতে পারে তাহলে সে তিন বছরের মধ্যে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ পাবে।
আর্থিক সচ্ছলতা :
জার্মানিতে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য স্বাস্থ্য বীমা এবং চাকরি বা ব্যবসা থাকা জরুরি। আট বছর ধরে স্থায়ী চাকরি করতে হবে এমন না ৮ বছর ধরে যদি কেউ জার্মানিতে পড়াশোনা করে তবে তাও গন্য করা হবে। আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই একটি ভালো উৎস থাকতে হবে। এটা প্রমাণ করতে হবে যে আপনি আর্থিক দিক দিয়ে আপনার সকল চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম ।
বিবাহ :
জার্মানিতে নাগরিকত্ব পাওয়া খুবই সহজ যদি আপনি জার্মানিতে একটি বিবাহ করেন। তবে আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই ব্যক্তিকে তিন বছর জার্মানিতে থাকতে হবে। তিন বছর থাকার মধ্যে আপনি যদি দুই বছর বিয়ে করে থাকেন তাহলে সহজে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
নাগরিকত্ব পরীক্ষা :
সকল শর্ত মেনে আপনি যখন নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করবেন তখন জার্মান সরকার নাগরিকত্ব পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করে দেখবে আপনি নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য কিনা।
পরীক্ষার্থীদের জার্মানের মানুষ আইন ইতিহাস সম্পর্কে মোট ৩৩ টি প্রশ্ন থাকবে। আপনি যদি অর্ধেকের চেয়ে বেশি উত্তর সঠিকভাবে দেন তাহলে আপনি নির্বাচিত হবেন। পাশ করার জন্য কমপক্ষে আপনাকে সতেরো পেতে হবে।
রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা :
আপনি যদি জার্মানিতে বিদ্যমান কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য হন তাহলে এটি নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আপনার একটি প্লাস পয়েন্ট হবে। তাছাড়াও আপনি যদি জার্মান বিভিন্ন সংস্থার সদস্য হন তাহলেও এটি নাগরিকত্ব পেতে অনেক হেল্প করবে। তবে আপনার যদি কোন ধরনের অপরাধে রেকর্ড থাকে তাহলে আপনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
ফি প্রদান :
নাগরিকত্ব পরীক্ষার উত্তীর্ণ হওয়ার উপর নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করতে হবে।জার্মান সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি হচ্ছে ২৫৫ ইউরো।আইডেন্টিটি কার্ড এবং পাসপোর্ট এর জন্য আরো ৮৭ ইউরো দিতে হবে। জার্মানির নাগরিকত্ব হওয়ার উপযুক্ত হিসেবে নির্বাচিত হলে ফি প্রদানের পরেই আপনি জার্মানির স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যাবেন। তবে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দুই থেকে চার মাস সময় লাগবে।
অন্যান্য নিয়মাবলী :-
উপরোক্ত নিয়মগুলো আপনাকে জার্মানির নাগরিকত্ব পেতে অনেক সাহায্য করবে।জার্মানিতে দীর্ঘদিন থাকার আরো কিছু উপায় আছে চলুন সেগুলো দেখে নেই।
ইসি পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট :
ইসি পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট এর স্থায়িত্ব হচ্ছে ৫ বছর। আপনি চাইলে এর জন্য আবেদন করতে পারবে। সময় পরবর্তীতে বাড়ানোও সম্ভব। ইসি পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট পাওয়ার জন্য অন্যতম শর্ত হচ্ছে আপনাকে জার্মানিতে কমপক্ষে পাঁচ বছর থাকতে হবে। তবে আপনার ওয়ার্ক পারমিট বা রেসিডেন্ট পারমিট এর প্রয়োজন হবে। ইসি পার্মানেন্ট রেসিডেন্টর অন্যতম সুবিধা হচ্ছে জার্মানি ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশে থাকা যায়।
সেটেলমেন্ট পারমিট :
দীর্ঘদিন জার্মানিতে থাকার আরেকটি বিকল্প পদ্ধতি হচ্ছে সেটেলমেন্ট পারমিট।জার্মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত কোন শিক্ষার্থী গ্রাজুয়েশনের দুই বছরের মধ্যে এই পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারবে।তবে বি-১ সার্টিফিকেট থাকলে ২১ দিনের মধ্যে আবেদন করা যাবে। তবে এই পারমিট দ্বারা আপনি ইউরোপের অন্যান্য দেশে যেতে পারবেন না।
সদ্য জন্মানো শিশুর জন্য নিয়ম :
বাবা বা মায়ের মধ্যে যেকোনো একজন যদি জার্মানির নাগরিক হয় তাহলে তাদের বাচ্চা জন্মানোর পরে জার্মানির নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে। তবে বাবা বা মায়ের যদি একজনও জার্মানি নাগরিক না হয় তাহলে শিশুর নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য কিছু নিয়মকানুন মানতে হবে। যেমন - শিশুর বাবা মাকে ৮ বছর জার্মানিতে বসবাস করতে হবে।
নাগরিকত্ব ত্যাগ :
জার্মানির নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আপনি যে দেশের নাগরিক সে দেশে নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হবে। ক্ষেত্রবিশেষে এর প্রয়োজনও পড়ে না। দেশ যদি নাগরিকত্ব ত্যাগ করার অনুমতি না দিয়ে সেক্ষেত্রে ভয়ের কিছু নেই।
বিশেষ ব্যাক্তিবর্গ:
কিছু কিছু ব্যক্তিবর্গ রয়েছে যাদেরকে কোন ঝামেলা ছাড়াই জার্মানিতে স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। যেমন- বিজ্ঞানী, গবেষক ।তাদেরকে অন্য যেকোনো দেশ থেকে জার্মানিতে চাকরির জন্য আমন্ত্রণপত্র দেওয়া হয়।
৯. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর
প্রশ্ন ১: জার্মান সরকারের ওয়েবসাইট কোনটি?
উত্তর: জার্মান সরকারের ওয়েবসাইট হচ্ছে https://www.make-it-in-germany.com/।
প্রশ্ন ২:জার্মানির ভিসা প্রসেসিং হতে কত সময় লাগে?
উত্তর: জার্মানির ভিসা প্রসেসিং হতে ২৫ থেকে ৩০ দিন সময় লাগে।
প্রশ্ন ৩: জার্মানির নাগরিকত্ব পরীক্ষায় কতটি প্রশ্ন থাকে?
উত্তর: জার্মানির নাগরিকত্ব পরীক্ষায় ৩৩ টি প্রশ্ন থাকে।
প্রশ্ন ৪: জার্মানির মুদ্রার নাম কি?
উত্তর: জার্মানির মুদ্রার নাম হচ্ছে ইউরো।
প্রশ্ন ৫: জার্মানির এক ইউরো বাংলাদেশের কত টাকা?
উত্তর: জার্মানির এক ইউরো বাংলাদেশের ১১৮ টাকা।
প্রশ্ন ৬: জার্মানিতে স্নাতক করার জন্য বয়স কত হতে হবে?
উত্তর: জার্মানিতে স্নাতক করার জন্য বয়স হতে হবে ২৫ বছর।
প্রশ্ন ৭: জার্মানির নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য জার্মানিতে কত বছর অবস্থান করতে হয়?
উত্তর: জার্মানির নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য জার্মানিতে আট বছর বা ছয় থেকে সাত বছর অবস্থান করতে হয়।
প্রশ্ন ৮: জার্মানির সিকার ভিসার আবেদন ফি কত?
উত্তর: জার্মানির সিকার ভিসার আবেদন ফি হচ্ছে ৭৫ ইউরো।
প্রশ্ন ৯: জার্মানির নাগরিকত্ব পরীক্ষায় পাশ করার জন্য কত পেতে হয়?
উত্তর: জার্মানির নাগরিকত্ব পরীক্ষায় পাশ করার জন্য ১৭ পেতে হয়।
প্রশ্ন ১০: বোয়েসেল নিয়োগ জার্মান টেকনিক্যাল আবেদন করার জন্য কত বছর বয়স হতে হবে?
উত্তর: বোয়েসেল নিয়োগ জার্মান টেকনিক্যাল আবেদন করার জন্য বয়স হতে হবে ২০ থেকে ৩০ বছর।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণ
১০. লেখকের মন্তব্য
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪,জার্মান জব ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র,জার্মানি সরকারি ওয়েবসাইট, জার্মানিতে লোক নিয়োগ ২০২৪, বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায়, বোয়েসেল নিয়োগ জার্মান টেকনিক্যাল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি আপনার উপকার আসবে। আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার মতামত, পরামর্শ কিংবা প্রশ্ন আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম প্রবাস রিলেটেড আরো আর্টিকেল পড়তে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট The Du Speech। ধন্যবাদ।
লেখক: মোসা: কবিতা
পড়াশোনা করছেন লালমনিরহাট নার্সিং কলেজে । তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন।
জেলা: নরসিংদী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে।
জেলা: নাটোর
আরও পড়ুনঃ আক্কেল দাঁতের সমস্যায় যা যা করবেন
The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url