বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া যেতে কত টাকা লাগে জানুন
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়া একটি। উন্নত এই দেশটিতে রয়েছে কাজের বিশাল সম্ভাবনা। এজন্য প্রতিনিয়ত রাশিয়া বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ দেয়। বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া যেতে ইচ্ছুক সকলেই বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া যেতে কত টাকা লাগে জানতে চায়। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করব বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া যেতে কত টাকা লাগে। সুতরাং আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
আর্টিকেল সূচিপত্র
- বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
- রাশিয়া কাজের বেতন কত
- রাশিয়া কাজের ভিসার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
- রাশিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
- রাশিয়া ভিসার দাম কত
- রাশিয়া কাজের ভিসা প্রসেসিং সময়
- রাশিয়ার নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
- রাশিয়ান স্টুডেন্ট ভিসা
- আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর
- লেখকের মন্তব্য
আরও পড়ুনঃ মালয়েশিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার উপায়
১. বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া যাওয়ার খরচ অনেকটাই বেশি। কারণ করনা মহামারীর কারণে বিমান ভাড়া সহ অন্যান্য সকল খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এজেন্সি অথবা দালালের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া যেতে প্রায় ৫ থেকে ৭ লাখ টাকার মতো খরচ হবে। তবে যদি সরকারিভাবে রাশিয়া যান তাহলে ৬৫ হাজার টাকার মতো খরচ পরবে। তবে বর্তমানে সরকারিভাবে রাশিয়াতে কোন লোক নিচ্ছে না।
আরও পড়ুনঃ ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে?
২. রাশিয়া কাজের বেতন কত
রাশিয়াতে একজন শ্রমিককে ৮ ঘন্টা কাজ করতে হয়। রাশিয়াতে একজন কাজের ভিসার শ্রমিককে মাসিক ৯০০ থেকে ১২০০ ইউএস ডলার বেতন দেওয়া হয়ে থাকে। যদি আপনার কাজে ভালো দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি মাসিক ১৫০০ থেকে ১৮০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। এছাড়াও আপনার বেসিক কাজের পাশাপাশি যদি ওভারটাইম করেন তাহলে ১৫ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। রাশিয়া যাওয়ার পূর্বে কাজের বেতন কত তা অবশ্যই জেনে যাবেন নয়তো প্রতারণার শিকার হতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ পর্তুগাল কাজের ভিসা অনলাইন আবেদন
৩. রাশিয়া কাজের ভিসার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
আপনি যদি রাশিয়া যেতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। ভিসা আবেদন ব্যতীত রাশিয়া যাওয়া অসম্ভব। ভিসার আবেদন করার জন্য কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন অনেকেই জানে না। আসুন তবে জেনে নেই রাশিয়া কাজের ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস সম্পর্কে -
- বৈধ পাসপোর্ট (পাসপোর্টের মেয়াদ অবশ্যই ৬ মাস হতে হবে)
- ছবি (পাসপোর্ট সাইজের)
- জন্ম নিবন্ধন
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট (৬ মাসের)
- কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপএ
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপএ
আরও পড়ুনঃ মালয়েশিয়া কাজের বেতন কত ২০২৩
৪. রাশিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
আর্টিকেলের এই অংশে জানতে পারবেন রাশিয়াতে কোন কাজের চাহিদা বেশি। আসুন তবে জেনে নেই -
- নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার
- ইলেকট্রিশিয়ান
- ড্রাইভিং
- এগ্রিকালচার
- অটোমোবাইল
- সিকিউরিটি ডিভিশন
উপরোক্ত কাজগুলোর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি রাশিয়াতে সবচেয়ে বেশি প্রকাশ করা হয়।এসব কাজের চাহিদাও অনেক। আপনি যদি উপরোক্ত কাজগুলোর ভিসার জন্য আবেদন করেন তাহলে খুব সহজেই ভিসা পেয়ে যাবেন। ভিসা আবেদন করার আগে অবশ্যই রিকোয়ারমেন্ট গুলো দেখে নিবেন।
আরও পড়ুনঃ জর্ডানের বোয়েসেল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৩
৫. রাশিয়া ভিসার দাম কত
রাশিয়ার একটি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম ১৬০ ডলার। শুধুমাত্র সরকারি ভাবে রাশিয়া যাওয়ার জন্য ১৬০ ডলার প্রযোজ্য। আর এজেন্সির মাধ্যমে গেলে ৩ থেকে ৫ লক্ষ টাকা ভিসার দাম পরবে। বিমান ভাড়া সহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ খরচ আরো বেশি পরবে।
আরও পড়ুনঃ দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
৬. রাশিয়া কাজের ভিসা প্রসেসিং সময়
রাশিয়া কাজের ভিসা প্রসেসিংয়ের কত সময় লাগবে তা নির্ভর করবে আপনি যে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের মাধ্যমে আবেদন করেছেন তার উপর। সাধারণত দুই সপ্তাহের মধ্যেই একটি কাজের ভিসা প্রসেসিং হয়ে যায় তবে পিক সিজনে আবেদন করলে সময় একটু বেশি লাগবে।তাছাড়া ভিসা প্রসেসিংয়ের আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো আপনি কোন দেশ থেকে আবেদন করছেন।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার উপায়
৭. রাশিয়ার নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্যতা
আপনি যদি রাশিয়ার নাগরিকত্ব পেতে চান তাহলে আপনার কিছু যোগ্যতা অবশ্যই থাকতে হবে। আর্টিকেলের এই অংশে রাশিয়ার নাগরিকত্ব হওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
- প্রথমত আপনার কাছে একটি আবেগশীল পাসপোর্ট থাকতে হবে।পাসপোর্ট অবশ্যই বৈধ ও নির্দিষ্ট মেয়াদ কালীন হতে হবে।
- কিছু ডকুমেন্টস যেমন জন্ম সনদ, উচ্চতর শিক্ষার সনদপএ, প্রমাণিত বিবাহ সনদপএ থাকতে হবে।
- রাশিয়ান ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে।
- নাগরিকত্ব অর্জনের জন্য নিয়মিত আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।
- কোভিড -১৯ টেস্ট রিপোর্ট।
- আর্থিক যোগ্যতা থাকতে হবে।
- সাক্ষাৎ কার প্রক্রিয়া নেওয়া হবে।
সুতরাং উপরোক্ত যোগ্যতা থাকা ভিত্তিতে আপনি রাশিয়ার নাগরিকত্ব লাভ করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ মালয়েশিয়া পাম বাগানে কাজের বেতন কত?
৮.রাশিয়ান স্টুডেন্ট ভিসা
রাশিয়া হচ্ছে বিশ্বের এমন একটি দেশ যেখানে গণশিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। রাশিয়ান স্টুডেন্ট ভিসা ৯০ দিনের মধ্যে জারি করা হয়। স্টুডেন্ট ভিসায় রাশিয়া যেতে অবশ্যই স্টুডেন্ট ভিসা পেতে হবে। তবে সিআইএস এর স্টুডেন্টদের ভিসার প্রয়োজন নেই। স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন ফি নির্দিষ্ট নয়। স্টুডেন্ট ভিসা প্রক্রিয়াকরণ হতে সময় লাগে প্রায় ১০ দিন। তবে অনেক ক্ষেএে এটি 7 থেকে 20 কার্যদিবস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
যোগ্যতা:
- রাশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় হতে আমন্ত্রণপএ সংগ্রহ করতে হবে।
- রাশিয়ান ফেডারেশনের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের আমন্ত্রণ
- মেডিকেল রিপোর্ট বিশেষ করে এইচআইভি /এইডস ফলাফল।
- স্বাস্থ্য বিমা নথিপত্র
- পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফরম
- বৈধ আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট
- ছবি (পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি)
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট (গত ৩ মাসের)
স্টুডেন্ট ভিসায় রাশিয়া যাওয়ার পর আপনি কাজও করতে পারবেন। ইচ্ছে করলে আপনি পড়াশোনা শেষ করার পরও রাশিয়াতে থাকতে পারবেন তবে আপনার একটি বৈধ ভিসা প্রয়োজন হবে।
আরও পড়ুনঃ আয়ারল্যান্ড ভিসা প্রসেসিং ২০২৩
৯. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর
প্রশ্ন ১: সরকারি ভাবে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া যেতে কত টাকা খরচ হবে?
উত্তর: সরকারি ভাবে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া যেতে ৬৫ হাজার টাকার মতো খরচ হবে।
প্রশ্ন ২: এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া যেতে কত টাকা খরচ হবে?
উত্তর: এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া যেতে ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা খরচ পরবে।
প্রশ্ন ৩: রাশিয়াতে একজন শ্রমিকের মাসিক বেতন কত?
উত্তর: রাশিয়াতে একজন শ্রমিকের মাসিক বেতন ৯০০ থেকে ১২০০ ইউএসডলার।
প্রশ্ন ৪: রাশিয়ান ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম কত?
উত্তর: রাশিয়ান ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম ১৬০ ডলার।
প্রশ্ন ৫: রাশিয়ান স্টুডেন্ট ভিসা কত দিনের মধ্যে জারি করা হয়?
উত্তর: রাশিয়ান স্টুডেন্ট ভিসা ৯০ দিনের মধ্যে জারি করা হয়।
প্রশ্ন ৬: রাশিয়াতে একজন শ্রমিককে কত সময় কাজ করতে হয়?
উত্তর: রাশিয়াতে একজন শ্রমিককে ৮ ঘন্টা কাজ করতে হয়।
প্রশ্ন ৭: রাশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং হতে কত দিন সময় লাগে?
উত্তর: রাশিয়ান স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং হতে ১০ দিন সময় লাগে।
আরও পড়ুনঃ বুলগেরিয়া কাজের ভিসা
১০. লেখকের মন্তব্য
এই আর্টিকেলে রাশিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি আপনার কিছুটা হলেও উপকারে আসবে। আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার মতামত, পরামর্শ কিংবা প্রশ্ন আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পড়তে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট The Du Speech। ধন্যবাদ।
লেখক: মোসা: কবিতা
পড়াশোনা করছেন লালমনিরহাট নার্সিং কলেজে । তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন।
জেলা: নরসিংদী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে।
জেলা: নাটোর
আরও পড়ুনঃ আক্কেল দাঁতের সমস্যায় যা যা করবেন
The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url