OrdinaryITPostAd

কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম [আপডেট তথ্য]

বাংলাদেশের সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে কৃষি ব্যাংক অন্যতম। এ ব্যাংক থেকে খুব সহজেই লোন নেয়া যায়। তাই অনেকেই কৃষি ব্যাংক লোন সম্পর্কে জানতে চায়। আসলে, বাংলাদেশে যেসব ব্যাংক মানুষকে সুবিধাজনক শর্তে লোন দেয় তার মধ্যে এটা অন্যতম। বিশেষ করে যারা কৃষক বা কৃষি কাজের সাথে যুক্ত তারা এ ব্যাংক থেকে অনেক সুবিধা পেয়ে থাকে। তাই, সবাইকে লোন নেয়ার পূর্বে কৃষি ব্যাংক লোন সম্পর্কে জানা জরুরি। আমাদের এই আর্টিকেলে এ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।

আর্টিকেল সূচিপত্র - কৃষি ব্যাংক লোন


১. কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সাধারণত তিন ধরনের লোন দিয়ে থাকে। যেমন, স্বল্পমেয়াদি ঋণ, মধ্যমমেয়াদি ঋণ ও দীর্ঘমেয়াদী ঋণ। তাই, এই তিন ধরনের ঋণের উপর নির্ভর করে কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন- স্বল্পমেয়াদি ঋণ সর্বোচ্চ ১৮ মাসের জন্য প্রদান করা হয়ে থাকে। শস্য খাতে প্রদত্ত এই ঋণে প্রায় ৮% ইন্টারেস্ট দিতে হয়। আবার, মধ্যম মেয়াদের ঋণের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সময় দেওয়া হয়ে থাকে। মধ্যম মেয়াদের ঋণের ক্ষেত্রে ঋণের সুদ ৯% তবে যে সকল ঋণ শস্য খাতের আওতায় পড়ে সেগুলোর ক্ষেত্রে ৮ পার্সেন্ট সুদ দিতে হয়। এরপর হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী ঋণের ক্ষেত্রে সময়সীমা পাঁচ বছরের উর্ধ্বে। এই মেয়াদেও কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট ৯% দিতে হয়, তবে যে সকল ক্ষেত্রে শস্য খাতের আওতায় পড়ে সে সকল ক্ষেত্রে ৮ পারসেন্ট ঋণ দিতে হয়।


২. কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন


বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের লোন পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম হলো কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন। এটা এক ধরনের ঋণ পণ্য যা কৃষকদের বিভিন্ন দিকের অগ্রগতি সাধনের জন্য দেয়া হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে কৃষকরা বিভিন্ন নতুন প্রযুক্তি, কৃষি সংক্রান্ত উদ্যোগ, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, জমি সংশোধন ও অন্যান্য কাজের জন্য আবশ্যক অর্থ পায়। মূলত, বাংলাদেশ সরকার কৃষিকে উন্নত করার জন্য এবং পিছিয়ে পড়া কৃষকদের উন্নতি সাধন করার জন্য এ লোন ব্যবস্থা চালু করেছে। কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন নেওয়ার জন্য আপনাকে কিছু নিয়ম ফলো করতে হবে এবং কিছু কাগজপত্র জমা দেওয়া লাগবে। এ লোন নেওয়ার জন্য আপনার যে সমস্ত কাগজপত্র লাগবে সেগুলো হল-


  • unchecked

    জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি বা পাসপোর্ট এর ফটোকপি।

  • unchecked

    আবেদনকারীর কৃষি কার্ড থাকতে হবে ।

  • unchecked

    পাসপোর্ট সাইজের তোলা আবেদনকারীর স্পষ্ট ছবি।

  • unchecked

    জামানত কারীর ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি ও পাসপোর্ট সাইজের ছবি।


এছাড়াও আপনার আরো ভিন্ন ধরনের কাগজপত্র লাগতে পারে। এজন্য আপনার নিকটস্থ কৃষি অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে। 


কৃষি ব্যাংকের লোন নেওয়ার জন্য আপনাকে কিছু রিকোয়ারমেন্ট পূর্ন করতে হবে। যেসব যোগ্যতা থাকলে আপনি এই ঋণ পেতে পারেন সেগুলো হলো -



  • কৃষিকাজে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকতে হবে।

  • অন্য কোন ব্যাংকের ঋণ খেলাপি থাকতে পারবে না।

  • আবেদনকারী কৃষক তার প্রমাণ পত্র থাকতে হবে। যেমন- কৃষি কার্ড।

  • জাতীয় পরিচয় পত্র ও জামানত দাতার তথ্য থাকতে হবে।



এভাবেই ঋণ পাওয়ার জন্য আপনার প্রয়োজনীয় সবকিছু থাকলে, আপনি আপনার নিকটস্থ কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করবেন। সেখানে আপনি নির্দিষ্ট আবেদন ফরম পূরণ করার মাধ্যমে এ লোন পেতে পারেন। 


৩. কৃষি ব্যাংক লোন অ্যাপস

কৃষি ব্যাংকের লোন নেয়া সহজ করার জন্য আপনি মোবাইল অ্যাপস বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন। এই অ্যাপস এর মাধ্যমে আপনি ঋণের আবেদন, ঋণের স্থিতি যাচাই এবং লোন পরিশোধের জন্য সুবিধাজনক মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ করতে পারবেন।

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের লোন apps এর নাম হচ্ছে “BKB-Janala”। আপনি গুগল প্লে স্টোরে এপসের নাম লিখে সার্চ দিলেই পেয়ে যাবেন। অথবা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকেও অ্যাপস এর লিংক পাওয়া যাবে। যেসব লোনের আবেদন করতে পারবে এই apps এর মাধ্যমে তা হল — কৃষি লোন, মৎস্য ঋণ, লাইফস্টক ঋণ, কৃষি ও সেচ যন্ত্রপাতি ঋণ, মুজিব বর্ষ ক্রেডিট স্কিম ঋণ, পোশাক ঋণ, গ্যারান্টি পত্র প্রাপ্ত ঋণ, মৃত স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য বীমা ঋণ, কৃষি ঋণসহ আরো অনেক ধরনের ঋণের আবেদন করা যায় অ্যাপস এর মাধ্যমে।


অ্যাপটি ব্যবহার করতে মোবাইল ডিভাইস অথবা কম্পিউটার ডিভাইস থাকতে হবে এবং ইন্টারনেট সংযোগ লাগবে। এটি বাংলা ভাষায় ব্যবহার করতে পারবেন। অ্যাপটির লিঙ্ক নিচে দেয়া হল – https://www.krishibank.org.bd/apps/BKB-Janala.apk


৪. কৃষি ব্যাংক লোন নেয়ার নিয়ম

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য সরাসরি নিকটস্থ কৃষি ব্যাংকে গিয়ে লোনের আবেদন করতে হবে। অথবা আপনি অ্যাপসের মাধ্যমেও লোনের জন্য আবেদন করতে পারেন। সরাসরি ব্যাংকে আবেদনের ক্ষেত্রে সেখানে গিয়ে কর্মকর্তাদের এ ধরনের লোন প্রয়োজন সে ব্যাপারে জানাতে হবে। এরপর লোন নেয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট আবেদন যোগ্যতা এবং শর্ত যাচাই করা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নির্দিষ্ট আবেদন ফরম পূরণ সাপেক্ষে এবং কাগজপত্র জমা দিয়ে লোন নেয়া যাবে। 


বিশেষ দ্রষ্টব্য, লোনের ক্ষেত্রে কৃষক ঋণের জন্য আবেদন করার পরে তাকে ১০ টাকা দিয়ে একটি সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে হবে।


৫. কৃষি ব্যাংক সিসি লোন

কৃষি ব্যাংক সিসি লোন বা ক্রেডিট কার্ড লোন সুবিধা বিষয়টি কৃষকদের একটি সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। সি সি লোনের মাধ্যমে কৃষকরা নির্দিষ্ট মৌলিক ইন্টারেস্ট দিয়ে আবশ্যকীয় অর্থ পায়। এ লোনের সুদের হার অন্যান্য ঋণের সুদের হারের চেয়ে কম। এই লোনের মাধ্যমে কৃষকরা তাদের প্রয়োজনীয় কৃষি উপাদান এবং সরঞ্জাম পেতে পারেন, যা কৃষি ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য অনেক সাহায্য করে। কৃষি ব্যাংকের সিসি ঋণের মধ্যে সুদের হার সাধারণত কম থাকে। এজন্য এটা কৃষকের বহন করা সহজ হয়। এ ধরনের লোন নিতে হলে নিকটস্থ কৃষি অফিসে অথবা ব্যাংকের অ্যাপসে সিসি লোনের জন্য আবেদন করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাবমিট করতে হবে।


৬. কৃষি ঋণ কত প্রকার

কৃষি ব্যাংক সাধারণত কৃষকদের বিভিন্ন প্রকারের  লোন দিয়ে থাকে। কৃষকের বীজ বপন থেকে শুরু করে চূড়ান্ত পর্যায়ে ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বিভিন্ন প্রকারে, বিভিন্ন ভাগে কৃষি ব্যাংক লোন প্রদান করে থাকে। এই লোনগুলো প্রধানত তিন ভাগে বিভক্ত করা যায় —-


  1. স্বল্পমেয়াদি ঋণ 

  2. মধ্যম মেয়াদি ঋণ

  3.  দীর্ঘমেয়াদি ঋণ 


স্বল্প মেয়াদের জন্য কৃষকরা ঋণ নিয়ে থাকেন, তাকে স্বল্পমেয়াদি ঋণ বলে। এক্ষেত্রে ঋণের মেয়াদ সাধারণত এক বছর হয়ে থাকে। এই ঋণ কৃষকরা ফসলের বৃদ্ধি বীজ বপন শাহরুখ কীটনাশক ব্যবহার করার জন্য নেয়। 



মধ্যম মেয়াদি ঋণের জন্য সাধারণত এক বছর থেকে পাঁচ বছরের সময় প্রদান করা হয়ে থাকে। কৃষি সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি কেনার জন্য এ ধরনের ঋণ নিয়ে থাকে।



সাধারণত ৫ বছরের বেশি সময়ের জন্য যেদিন নেওয়া হয় তাকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বলে। কৃষকরা সেচ ব্যবস্থা অথবা ভূমি উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ঋণ নিয়ে থাকে।



প্রয়োজন অনুসারে কৃষি ঋণ কয়েক প্রকার হয়ে থাকে। সেগুলো হল —


  • unchecked

    কৃষাণ ক্রেডিট কার্ড 

  • unchecked

    এগ্রিকালচার টার্ম লোন

  • unchecked

     সোলার পাম্প সেট

  • unchecked

    লোন ফর এলাইট এগ্রিকালচার এক্টিভিটি 

  • unchecked

    ফার্ম মেকানাইজেশন লোন


৭. কৃষি ব্যাংক গাভী লোন

বাংলাদেশের দারিদ্র দূরীকরণের লক্ষ্যে কৃষি ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।  কৃষি ব্যাংকের অন্যতম একটা প্রজেক্ট হচ্ছে গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প। গরু মোটাতাজাকরণের লক্ষ্যে কৃষি ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে। গরু মোটাতাজাকরণ ও গাভী পালনের জন্য জামানতবিহীন ঋণ প্রায় দুই লক্ষ থেকে তিন লক্ষ টাকা পাওয়া যায়।

এ ঋণ পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসে গিয়ে কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে হবে। এরপর নির্দিষ্ট আবেদন ফরম পূরণ ও কাগজপত্র জমাদান সাপেক্ষে ঋণ পাওয়া যায়।

৮. কৃষি ব্যাংক লোন নেয়ার আবেদন ফরম

কৃষি ব্যাংক লোন এর আবেদন ফরম পূরণের জন্য আপনি নিম্নোক্ত ওয়েবসাইটে ঢুকে আবেদন ফরম অপশনে ক্লিক করবেন। অতঃপর আবেদন ফরমে কতগুলো অপশন আসবে। এই অপশন থেকে আপনি যে সেক্টরে আবেদন করতে চান, উক্ত অপশনে ক্লিক করে আপনি খুব সহজেই আবেদন করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি আপনার নিকটস্থ কৃষি ব্যাংক অফিসে গিয়েও সরাসরি ফরম পূরণ করা সাপেক্ষে আবেদন ফরম পূরণ করতে পারবেন।

            

https://www.krishibank.org.bd/bkbjanala/loan/# 



৯. কৃষি ব্যাংক লোন পরিশোধের নিয়ম

ঋণগ্রহীতারা যাতে সময়মতো তাদের ঋণ পরিশোধ করতে পারে এবং খেলাপি এড়াতে পারে তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের কিছু ঋণ পরিশোধের নিয়ম রয়েছে। 

কৃষি ঋণ পরিশোধের নিয়ম:

পরিশোধের সময়সূচী: ব্যাংক ঋণগ্রহীতাকে একটি পরিশোধের সময়সূচী প্রদান করবে যাতে পরিশোধের পরিমাণ এবং সময় উল্লেখ থাকে। ঋণগ্রহীতাদের অবশ্যই এই সময়সূচী মেনে চলতে হবে এবং সময়মতো অর্থপ্রদান করতে হবে।

নমনীয় পরিশোধের শর্তাবলী: বি, কে, বি বা কৃষি ব্যাংক বাংলাদেশ নমনীয় পরিশোধের শর্তাবলী অফার করে যা ঋণগ্রহীতাকে নগদ প্রবাহ এবং শস্যচক্র অনুযায়ী ঋণ পরিশোধ করতে দেয়। এটি আর্থিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং ঋণগ্রহীতারা সময়মতো তাদের পরিশোধ করতে পারে তা নিশ্চিত করে।

বিলম্বে অর্থপ্রদানের জরিমানা: বিলম্বে অর্থপ্রদানের জরিমানা চার্জ করুন। ঋণগ্রহীতা নির্ধারিত তারিখে ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে, বকেয়া পরিমাণের উপর জরিমানা ধার্য করা হবে।

অগ্রিম পরিশোধের বিকল্প: ব্যাঙ্কগুলি ঋণগ্রহীতাদের তাদের ঋণের প্রি পেই বা প্রিপেইড করার অনুমতি দেয়, যা ঋণের সামগ্রিক সুদের খরচ কমাতে সাহায্য করে।

ঋণ পুনর্গঠন: কিছু ক্ষেত্রে, ব্যাংক ঋণ পুনর্গঠন বিবেচনা করতে পারে যদি ঋণগ্রহীতা আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। এর মধ্যে ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়ানো বা ঋণের পরিমাণ কমানো জড়িত থাকতে পারে।

জামানত বাজেয়াপ্ত করা: ঋণগ্রহীতা ঋণে খেলাপি হলে, ব্যাংকের সেই জামানত বাজেয়াপ্ত করার অধিকার রয়েছে যা ঋণকে সুরক্ষিত করে।

ঋণগ্রহীতারা তাদের ঋণ পরিশোধে কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হলে, সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে আলোচনা করতে তাদের কৃষি ব্যাংকের যেকোনো শাখায় যোগাযোগ করা উচিত।

১০. বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে কৃষি ঋণের সুবিধা

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কৃষক এবং কৃষি ব্যবসার বৃদ্ধি ও বিকাশে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ঋণ প্রদান করে থাকে। এখানে কৃষি ঋণের কিছু সুবিধা আলোচনা করা হল:

মূলধন: বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ঋণ কৃষক এবং কৃষি-সম্পর্কিত ব্যবসায়কে তাদের উৎপাদনশীল কর্মকাণ্ডে বিনিয়োগ করতে সক্ষম করার জন্য মূলধন প্রদান করে থাকে, যা ফলন এবং মুনাফা বাড়াতে সাহায্য করে। এই মূলধনগুলো কৃষি খাতের উন্নয়নে অবদান রাখে।

প্রতিযোগিতামূলক সুদের হার: কৃষি ঋণের সুদের হার কম এবং কৃষক ও কৃষি সংক্রান্ত পেশার সাথে জড়িতদের জন্য সাশ্রয়ী। এটি ঋণের বোঝা কমাতে সাহায্য করে এবং কৃষক ও এর সাথে জড়িতদেরসদক্ষতার সাথে তাদের অর্থব্যবস্থা পরিচালনা করা সহজ করে তোলে।

নমনীয় পরিশোধের শর্তাবলী: কৃষি ঋণ প্রায়ই নমনীয় পরিশোধের শর্তাবলীর সাথে আসে, যা কৃষক এবং এ সংক্রান্ত ব্যবসাকে বৃদ্ধি-ভিত্তিক পরিশোধ করতে দেয়। এটি আর্থিক চাপ কমাতে খুবই হেল্পফুল। 

কারিগরি সহায়তা: কৃষি ঋণ প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং প্রশিক্ষণের সাথে আসে যা কৃষক এবং কৃষিব্যবসায়কে চাষাবাদের অনুশীলন উন্নত করতে এবং আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করতে সহায়তা করে থাকে।

গ্রামীণ উন্নয়ন: কৃষি ঋণ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে থাকে এবং গ্রামীণ এলাকায় অবকাঠামো উন্নত করে গ্রামীণ উন্নয়নকে উৎসাহিত করে। এটি দারিদ্র্য কমাতে সাহায্য করে এবং এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ভূমিকা রাখে, যার ফলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।

১১. কৃষি ঋণ কত প্রকার . বাংলাদেশের কৃষি ব্যাংক থেকে উপলব্ধ কৃষি ঋণের ধরন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কৃষক এবং কৃষি সংক্রান্ত পেশার নির্দিষ্ট চাহিদা পূরণের জন্য বিভিন্ন ধরনের কৃষি ঋণ প্রদান করে থাকে। এই ধরনের ঋণের কিছু উদাহরণ এখানে দেওয়া হল:-

ফসল উৎপাদন ঋণ: এই ধরনের ঋণ কৃষকদের ফসল উৎপাদন সংক্রান্ত কার্যক্রম যেমন বীজ বপন, সার, কীটনাশক প্রদান এবং অন্যান্য উপকরণ কেনা বাবদ তহবিল প্রদান করে। এ ধরনের ঋণের পরিমাণ সাধারণত ফসলের মূল্যের উপর ভিত্তি করে হয় এবং ঋণ পরিশোধের শর্তাবলী প্রায়ই নমনীয় হয় এবং ফসলের ফলনের সাথে আবদ্ধ হয় আমার থাকে।

কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ঋণ: কৃষকদের যন্ত্রপাতি ও  এ সংক্রান্ত সরঞ্জাম  কিনা বাবদ বা মেরামত করার জন্য প্রদান করা হয়। এ ঋণ সাধারণত কৃষকদের আয় এবং নগদ লেনদেনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে থাকে। এই ঋণ প্রায়ই শিথিল পরিশোধযোগ্য শর্তাবলীর আওতায় হয়ে থাকে।

প্রাণিসম্পদ ঋণ: এই ঋণ কৃষকদের জন্য গঠিত করা হয়েছে যারা গবাদি পশু, ছাগল বা হাঁস-মুরগি পালন করে থাকে। এটি গবাদি পশু ক্রয় বাবদ তহবিল সরবরাহ করে থাকে।

ফিশারিজ লোন: এই ঋণটি এমন ব্যক্তিদের জন্য দেওয়া হয়, যারা মাছ চাষ, মৎস্য চাষ বা এই সম্পর্কিত কার্যকলাপে নিযুক্ত । এটি মাছের খাদ্য ক্রয় বাবদ, মাছের পুকুর রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ এবং অন্য দরকারি উপকরণগুলির জন্য তহবিল সরবরাহ করে।

 কৃষি- প্রক্রিয়াকরণ ঋণ: এই ঋণটি পণ্যের প্রক্রিয়াকরণ এবং প্যাকেজিংয়ের সাথে জড়িত কৃষি সংক্রান্ত ব্যবসার উন্নতির জন্য করা হয়েছে । এটি প্রক্রিয়াকরণ এবং প্যাকেজিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য তহবিল সরবরাহ করে এবং ঋণ পরিশোধের শর্তাবলী প্রায়ই নমনীয় হয়ে থাকে। 

 ক্ষুদ্র ঋণ: এই ঋণ সীমিত আর্থিক সংস্থান সহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কৃষক এবং কৃষি সংক্রান্ত ব্যবসার জন্য করা হয়েছে । এটি স্বল্প- সুদের হার এবং নমনীয় পরিশোধের শর্তাবলী সহ ছোট ঋণ প্রদান করে, যা ক্ষুদ্র আকারের কৃষি এবং উদ্যোক্তাকে সহায়তা করে থাকে। 

 বাংলাদেশের কৃষি ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের কৃষি ঋণ অফার করে যা কৃষি খাতের বিভিন্ন চাহিদা পূরণ করে । কৃষি সম্পর্কিত ব্যবসাকে তাদের কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে এবং আকাঙ্খিত সাফল্য অর্জনে সহায়তা করে।

১২. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর

প্রশ্ন ১: কৃষি লোন কত টাকা?

উত্তর: কৃষি লোন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা হয়ে থাকে। 

প্রশ্ন ২: বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কি সরকারি? 

উত্তর: বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক শতভাগ রাষ্ট্রের মালিকানাধীন বিশেষায়িত ব্যাংক।

প্রশ্ন ৩: কৃষি ব্যাংক অনলাইন?

উত্তর: বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক স্মার্ট বাংলাদেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে, তার প্রায় ১০৩৮ শাখায় অনলাইন সেবা প্রদান করে থাকে ।

১৩. লেখকের মন্তব্য

আমাদের আজকের এ আর্টিকেলে কৃষি ব্যাংক লোন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এ সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন হলে, কমেন্টে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা আপনাদের যথাযথ উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব। এরকম আরো তথ্য বহুল আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট The DU Speech  ভিজিট করতে পারেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url