OrdinaryITPostAd

বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত জানুন বিস্তারিত!

সবুজে ঘেরা এক অপূর্ব সৌন্দর্যের প্রতীক আমাদের বাংলাদেশ। কবি বলেছেন "এ দেশেতে জন্ম যেন, এ দেশেতে মরি"। আজকের আর্টিকেলটিতে থাকছে বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত তা নিয়ে।বাংলাদেশের ইতিহাস,সংস্কৃতি সব থাকবে আজকের এই বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত আর্টিকেলটিতে।আশা করি বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগবে।





আর্টিকেলের সূচিপত্র(যে অংশ পড়তে চান,তার উপরে ক্লিক করুন)

  1. বাংলাদেশের ইতিহাস 
  2. বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরিচায়
  3. বাঙ্গালির নৃতাত্ত্বিক পরিচয়
  4. বাংলাদেশের ভৌগোলিক ঐতিহ্য 
  5. বাংলাদেশের জেলাগুলো ঐতিহ্য
  6. পাট উৎপাদনে বাংলাদেশের ইতিহাস 
  7. ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের ইতিহাস
  8. বাংলাদেশের নদ-নদীর ঐতিহ্য
  9. বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত
  10. লেখকের মন্তব্য

1.বাংলাদেশের ইতিহাস | বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত 

আমরা সবাই ব্রিটিশ যুগকে জানি,জানি পাকিস্তানের যুগকে কিন্তু আমরা যা জানিনা তা হলো এই বাংলার আসল পরিচয়কে।বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত ছিল তা কি আমরা আসলেই জানি?আজকে এই আর্টিকেলের প্রথম পরিচ্ছেদে সেই ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকেই আপনাদের সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হলো।

প্রাচীন কালে বাংলাদেশ বলে কোনো দেশ ছিল না।প্রাচীনকালে এই জায়গাকে বলা হতো বাংলা বা বঙ্গাল।প্রাচীনকালে বাংলাদেশ এবং কলকাতা মিলে ছিল একটি মাত্র বাংলা প্রেসিডিয়াম বা বাংলা প্রদেশ এবং এই বাংলা প্রেসিডিয়ামের জনপদের নাম ছিল বঙ্গ।প্রাচীনকালে বঙ্গ এবং বাংলা দুটো আলাদা জনপদ ছিল নাকি একই জনপদের ভিন্ন নাম হয়েছে তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে নানা মতভেদ দেখতে পাওয়া যায়।সময়ের পরিক্রমায় এই দেশের যে ইতিহাস এবং ঐতিহ্য গড়ে উঠে তা সত্যিই বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ধার করা ছিল না।বাংলার সংস্কৃতি ছিল একান্ত নিজের এবং প্রাচীন বাংলার  পরিবেশ যে কত মধুর ছিল, তার সৌন্দর্য যে কত মনোমুগ্ধকর ছিল তা না দেখলে সত্যিই কল্পনা করাও অসম্ভব।বাংলার যে ইতিহাস জানা যায় তা বিভিন্ন সম্রাটদের তাম্রলিপ্তি থেকেই শুধু জানা যায়,এ ছাড়া বিভিন্ন পান্ডলিপি এবং প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দেশনা থেকেও কিছুটা জানা যায়, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলোর অর্থ বের করা এখন পর্যন্তও সম্ভব হয়নি।আশা করি,বিজ্ঞানের কারনে একসময় এই ইতিহাস-ঐতিহ্যকে আমরা জানতে পারব।

বাংলাদেশ কি কারনে বিখ্যাত এইটা জানার জন্য আমাদের প্রাচীন সংস্কৃতির দিকে তাকাতে হবে।আহা! কত সুন্দরই না ছিল আমাদের সেই সংস্কৃতি। কত হৃদয়ের দরদ দিয়ে সব  কাজ করা হতো যা ক্রমশ বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে।  যা এখন মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এসে দখল করে নিয়েছে তা আগে সবই মানুষ কঠোর পরিশ্রম আর নিজ হাতের শক্তি-সামর্থ্য দিয়ে করত।এখন আর মানুষ, সবাই মিলে পিঠা বানানোর চরকি ব্যবহার করেনা,সবাই এক মিনিটে গুড়ো করা যায় এমন মেশিনের কাছে ছুটে চলে আসছে।সময়ের সাথে সাথে আমাদের যে ইতিহাস-ঐতিহ্য ছিল তা একপ্রকার মানুষ ভুলতেই চলেছে।

সেই বাংলার ইতিহাস জানতে হলে আমাদের দেখতে হবে প্রাচীন সব সাহিত্য আর পুথি-পত্রের দিকে, সেই ইতিহাস জানতে হলে আমাদের ঝুকতে হবে বাংলার নবাবী,সুলতানি আমলের দিকে।আমাদের জানতে হবে আমাদের বাংলার প্রথম স্বাধীন নৃপতি শশাংকের দিকে।জানতে হবে পাল শাসন,গুপ্ত শাসনের দিকে।

প্রাচীন কালে যে বাংলার ঐশ্বর্যের জন্য বারবার লুট করা হয়েছিল কলকাতা, ঢাকা, চট্রগ্রামকে- সে ঐশ্বর্য এখন কোথাই।আমাদের যে ভাটিয়ালী,ভাওয়ালি, ঘেটু গান ছিল সেগুলো কোথায়?সেগুলো আজ শুধু বন্ধ ঘরের পুথিতে কিংবা কোন জাদুঘরের ভিতরেই সংরক্ষিত আছে।এই বাংলার পরিবেশ যে কত মধুর এবং ঐশ্বর্যে ভরা ছিল সেগুলো কোথাই হারিয়ে গেল?সেগুলো শুধু ইতিহাস হিসেবেই বাংলার বুকে বেঁচে রয়েছে।আজ কেউ আর সেই বাংলার চিরায়ত মুখ দেখেনা জীবনানন্দ এর মতো। কেউ বলেনা"বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি"।কেউ আর ফিরে আসতে চাইনা এই বাংলায় মারা যাওয়ার পরেও। কেউ বলেনা "আবার আসিব ফিরে,ধান সিঁড়িটির তীরে, এই বাংলায়"।বাংলা যে কতটুকু সুন্দর ছিল তা আমাদের পক্ষে কল্পনা করাও অসম্ভব।

এর পরে ধীরে ধীরে বিভিন্ন শাসক এসে এই বাংলার সব সম্পদ লুট করে নিয়ে গেল,এইটাই হয়তো বাংলার ভাগ্যে লেখা ছিল।এর পরেও আজও এই বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য,মাঠ ভরা ধান,গোয়াল ভরা গোরু,নদী ভরা মাছ,বন্যার অতুল প্রবাহ এখনো সেই বাংলারই প্রতিচ্ছবি হয়ে বেঁচে আছে যে বাংলাকে আগে দেখা যেত।এখনো সেই ঢাকাই মসলিনের ঐতিহ্য খুঁজে পাওয়া যায়।সেই গ্রামীণ পিঠা আর নদীর তরতাজা মাছের মজা এখনো হয়তো পাওয়া যায় এই ভেজাল নগরীর যুগে।


2.বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস  | বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত 

বাংলাদেশ কিসের জন্য  বিখ্যাত তা জানার আগে আপনাকে অবশ্যই এই দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন সম্পর্কে জানতে হবে।তা নিয়েই সংক্ষিপ্ত ভাবেই এই অনুচ্ছেদটি লেখা হলো-

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে হলে আমাকে সবার আগে এই স্বাধীনতার পটভূমি সম্পর্কে জানতে হবে।১৯০৫ সালে যখন বাংলা ভাগ হয়ে আসাম এবং পূর্ববাংলা মিলে একটি প্রদেশ এবং পশ্চিম বাংলা অন্য একটি প্রদেশ হয়,তখন থেকেই গণআন্দোলন শুরু হয়ে যায় বাংলার হিন্দু আর মুসলমানদের মধ্যে।

কলকাতায় বসবাসরত বেশিরভাগ জমিদার ছিল বাংলাদেশের ভূস্বামী, আর তারা ভয় পাচ্ছিল যে বাংলা যদি ভাগ হয়ে যায় তাহলে তাদের জমিদারি চলে যেতে পারে, তাই তারা প্রত্যাক্ষ ভাবে আন্দোলন শুরু করে দেয় ব্রিটিশ সরকারের বিপক্ষে। যা দিকে এই বাংলার মুসলমান এবং মুসলমানদের নেতারা খুব কষ্ট পাই।যার ফলস্বরূপ ১৯০৬ সালে কংগ্রেসের বিপক্ষে গঠিত হয় মুসলিম লীগ।ক্রমান্বয়ে মুসলিম লীগ মুসলমানদের জন্য এবং কংগ্রেস হিন্দুদের জন্য এইরকম ধারণার শুরু হয়।মুসলমানরা শুধু মুসলিম লীগকেই ভোট দিত এবং হিন্দুরা কংগ্রেসকে।এভাবে ক্রমান্বয়ে বাংলার মুসলমানরা বুঝতে পারে যে তারা অন্য জাতি এবং এই দেশে কখনো একসাথে হিন্দু এবং মুসলমান একসাথে থাকতে পারেনা।

১৯১১ সালের বঙ্গভঙ্গ এর মাধ্যমেও তারা বুঝতে পারে যে ব্রিটিশ সরকার হিন্দুদের পক্ষ অবলম্বন করছে সবসময়। মুসলিমদের সব কিছু থেকে বঞ্চিত রাখছে।যার ফলস্বরূপ একের পর এক আন্দোলনের মাধ্যমে অবশেষে ব্রিটিশরা বাধ্য হয় এই ভারতমহাদেশ কে ভাগ করতে।এক অংশ পাকিস্তান অন্য অংশ ভারত।১৪ আগস্ট পাকিস্তান স্বাধীন হয়, যার প্রধানমন্ত্রী হন লিয়াকত আলী খান,আর ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীন হয়, যার প্রধানমন্ত্রী হয় জওহরলাল নেহেরু।এভাবে পূর্ব বাংলার মানুষ এক বুক আশা নিয়ে পূর্ব বাংলার মানুষ পাকিস্তান সৃষ্টিকে খুশির সাথে বরণ করে নেয়।কিন্তু কিছু সময় পরেই তাদের ভুল ভাঙ্গে।তারা বুঝতে পারে, এই দেশে এক ধরনের শাসক শ্রেনি তৈরি হয়েছে,যারা পূর্ব বাংলাকে চুষে খেতে চাই এবং সব সম্পদ পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যেতে চাই।ক্রমান্বয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী বাংলার মানুষের মাতৃভাষাকে কেড়ে নিতে চাই এবং উর্দুকে মাতৃভাষা করতে চাই,যা শুনে পূর্ব বাংলার মানুষ আন্দোলনে ফেটে পড়ে। আর সেই আন্দোলনের পথ ধরেই ১৯৫২ সালে আমরা বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে পাই।

ক্রমান্বয়ে যে স্বাধীনতার বীজ বাঙ্গালির মনে উদয় হয়েছিল তা বাড়তে শুরু করে।১৯৫২ সালের পর ১৯৫৪ সালের নির্বাচন, ১৯৫৬ সালের সংবিধান,১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন,১৯৬৬ সালের ৬ দফা,১৯৬৮ সালের আগরতলা মামলা এবং ১৯৬৯ সালের গণ আন্দোলন, ১৯৭০ সালের নির্বাচন এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার আন্দোলন এবং যার ফলশ্রুতিতে আমরা পাই আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ। এই সবকিছুর মূলেই ছিল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্রভাব।

৩০ লক্ষ লোকের রক্তের বিনিময়ে আমরা পাই আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ। প্রায় ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে,হাজারো মা-বোনের ইজ্জত আর কোটি মানুষের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পাই এই স্বাধীন বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ তার স্বাধীনতা যুদ্ধ আর ভাষা আন্দোলনের জন্য সবার কাছেই প্রশংসনীয় এবং এর জন্যই বাংলাদেশ বিখ্যাত বিশ্বের দরবারে।বাংলাদেশ তার স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্যই বিশ্বের দরবারে আপন মহিমায় মহিমান্বিত। 

3.বাঙ্গালীর নৃতাত্তিক পরিচয় | বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত 

বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত এই আর্টিকেলের এই অংশে বাঙ্গালির নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলা হবে।

ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ এই ভারতবর্ষ কে বলেছিল নৃতাত্ত্বিক জাদুঘর।এখানকার মানুষদের মধ্যে এত ভিন্ন ভিন্ন গুনাবলি ও তাদের নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য ভিন্ন হওয়াই তাদের এক আদি পুরুষ থেকে এসেছে বললে ভুল হবে কারন আমাদের সবার ডিএনের গঠন ভিন্ন।

এই বাংলায় দীর্ঘকাল যাবৎ নানা বর্ণের মানুষ বসবাস করেছে।সেই প্রাচীন বাংলার কথা মহাভারতেও উল্লেখ করা হয়েছিল কিন্তু কষ্টের কথা এই যে মহাভারতে এই অঞ্চলে আসার কথা একদম নিষেধ ছিল, মহাভারতে বলা হয়েছে বঙ্গে অসুরেরা বসবাস করে তাই যে এই জায়গাই আসবে সে কঠোর শাস্তি পাবে।"ঐতরেয় আরণ্যাক" গ্রন্থেও এই বঙ্গ জনপদের কথাও বলা হয়েছিল।কিন্তু সেখানেও এই স্থানের খারাপ দিকটার কথাই বলা হয়েছিল।

যায়হোক, সময় বদলেছে।ভূ-তাত্ত্বিক ও নৃতাত্ত্বিকেরা প্রমাণ করেছে যে এই জায়গাই প্রাচীনকালে লোকজন বসবাস করত।প্রাচীনকালকে নৃবিজ্ঞানীরা ৩ ভাগে ভাগ করেছে।

1.প্রাক প্রস্তর যুগঃ যে সময় মানুষ শুধু ফল-মূল খেয়ে এবং পাথর মেরে আগুন জ্বালানো শিখছিল

2.প্রস্তর যুগঃ যে সময় মানুষ আগুন দিয়ে পশু রান্না করে খাওয়া আর লোহার ব্যবহার শিখছিল।

3.তাম্র যুগঃ এ সময় তামার ব্যবহার আর লোহা দিয়ে হাতিয়ার তৈরি করা হয়েছিল।

ভূ-তাত্ত্বিকেরা এই ৩ টি বৈশিষ্ট্যই এই বাংলায় খুজে পেয়েছে।অর্থাৎ এই অঞ্চলে মানুষের বসবাস ছিল।তাহলে কারা ছিল তারা?এর উত্তরে নৃবিজ্ঞানীরা বলেন, এখান কার আদিবাসীরা পাহাড়ে বসবাস করত,ঝুম চাষ করত, ফলমূল খেয়ে জীবিকা নির্বাহ করত,এইসব লক্ষণ দেখে বুঝা যায় এখানে ক্ষদ্র নৃগোষ্টি ভীল,সাঁওতাল, চাকমারা বসবাস করত।এছাড়াও গবেষকেরা এখানে চান্ডাল সম্প্রদায় বসবাস করত বলেও ধারণা দিয়েছেন।তাহলে আমরা বর্তমানে যাদেরকে খারাপ চোখে দেখি,সে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরাই কি এখানকার আদি অধিবাসী। উত্তর হচ্ছে হ্যাঁ,তারাই।এদের আদি--অস্ট্রোলিয় বলা হয়।এদের অন্য নাম হচ্ছে নিগ্রো অথবা অস্ট্রিক।সময়ের পরিক্রমায় এই অঞ্চলে অস্ট্রিক এর পর দ্রাবিড় লোকজন সিন্ধু অঞ্চল থেকে আসা শুরু করে এবং ক্রমান্বয়ে আর্যরা ইউরাল পর্বত মালা অতিক্রম করে এখানে এসে বসবাস শুরু করে।এভাবে নানা সময়ে নানা ধরনের লোকজন এই বাংলায় এসে বৈচিত্র্য সৃষ্টি করে। গবেষণায় দেখা গেছে,মানুষের গঠনকে ২ ভাবে বের করা যায়।১.মানুষের মস্তিষ্কের দৈর্ঘ্যের পরিমাপ করে,২.মানুষের মস্তিষ্কের প্রস্থের মাপ করে।

আমাদের এখানকার আদি যে বাসিন্দারা ছিল তাদের মস্তিষ্কের প্রস্থের মাপ ছিল বেশি আর আর্যদের দৈর্ঘ্যের পরিমাপ করে।এভাবে খুব সহজেই মস্তিষ্কের সাহায্যে বুঝা যায় যে আর্যরা এই অঞ্চলের বাসিন্দা ছিল না,তারা অন্য কোন জায়গা থেকে এসে ক্রমান্বয়ে এই অঞ্চল দখল করে নিয়েছিল।এছাড়াও শারীরিক গঠন দেখেও তারা যে দুই ভিন্ন জাতি তা খুব সহজেই বুঝা যায়।এর পরবর্তীতে বাজ্ঞালিরা নানা মানুষের সাথে মিলনের কারনে তাদের একেক জনের দৈহিক গঠন একেক রকম হয়ে যায় আর আমরা সংকর জাতি হিসেবে গড়ে উঠি।

4. বাংলাদেশের ভৌগোলিক পরিচয় | বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত 

বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত এই অংশে আমরা বাংলাদেশের ভৌগোলিক গঠন সম্পর্কে জানব-

আমরা যদি এই দেশের ভৌগোলিক অবস্থান খুজে বের করি তাহলে আমরা দেখতে পাব যে বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায়, ভারত এবং মায়ানমারের মাঝখানে। বাংলাদেশ ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৬১০ কি.মি জুরে বিস্তৃত।বাংলাদেশের পশ্চিম,পূর্ব এবং উত্তর অংশ জুড়ে রয়েছে ভারত।আর দক্ষিণে রয়েছে মিয়ানমার। বাংলাদেশের পশ্চিমে রয়েছে ভারতের পশ্চিম বঙ্গ,উত্তরে পশ্চিম বঙ্গ,  আসাম এবং মেঘালয়, পূর্বে আসাম, ত্রিপুরা, মেজোরাম অঞ্চল।এছাড়াও ভারত ছাড়াও বাংলাদেশের মায়ানমারের বার্মা সীমান্ত অঞ্চলেরও অবস্থান রয়েছে।

বাংলাদেশের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত অন্যান্য সুমদ্র সৈকত হতে দীর্ঘতম এবং অন্যতম।বাংলাদেশের মাঝখান দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা এবং দ্রাঘিমা রেখা অতিক্রম করেছে এবং বাংলাদেশ সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা থেকে প্রায় ১০ কি.মি উচ্চতায় অবস্থিত।বাংলাদেশের জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ।এবং এই নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া আর জলবায়ুর উপর নির্ভর করে বাংলাদেশকে ৬ টি ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে ভাগ করা হয়েছে।এই ঋতুগুলোর উপর নির্ভর করে এ দেশে ফসল ফলানো হয় এবং গ্রীষ্ম,বর্ষা,শীত, হেমন্ত, বসন্ত, শরৎ হলো বাংলাদেশের ৬ টি ঋতু।এভাবে ৬ টি ঋতু ৬ টি কারনে বিখ্যাত এবং বাংলার সংস্কৃতি ও কৃষিপ্রধান অর্থনীতির সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত।

কারন এই মৌসুম গুলোর উপর নির্ভর করেই বাংলাদেশের কৃষিকাজ, মৎস্য উৎপাদন,শীতকালীন ফসল উৎপাদন ইত্যাদি করা হয়।তাই ভৌগোলিকগত দিক থেকেও বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য একটি অংশ হলো এই দেশের ঋতু ব্যবস্থা।

5.বাংলাদেশের জেলাগুলোর  ঐতিহ্য | বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত 

বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত আর্টিকেলটির এই অনুচ্ছেদে বাংলাদেশের সমৃদ্ধময় জেলার ইতিহাস বলা হবে-

বাংলাদেশে ৬৪ টি জেলা রয়েছে,প্রত্যেক জেলার রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি এবং নিজস্ব ঐতিহ্য।এখন সে সংস্কৃতির সামান্য এবং কয়েকটি জেলার প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা আর কয়েকটি জেলার বিশেষ কোন বস্তু যার জন্য সে জেলাটি বিখ্যার তা তুলে ধরার চেষ্টা করব এবং সে ঐতিহ্যকেই আপনাদের চোখের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব।

বগুড়া জেলার মহাস্থানগড়ঃ

মহাস্থানগড় বাংলাদেশের প্রাচীন স্থাপত্যে ও পুরাকীর্তি গুলোর মধ্যে একটি।প্রসিদ্ধ এই নগরী ইতিহাসে পুন্ড্রবর্ধন বা পুন্ড্রনগর নামে বিখ্যাত।একসময় মহাস্থানগড় এই বাংলার রাজধানী ছিল।যিশু খ্রিষ্টের জন্মের আগেও এখানে সভ্য জনপদ গড়ে উঠেছিল বলে ইতিহাসবিদেরা মনে করে এবং যার নিদের্শন এখনো এইখানকার প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দেশনগুলো বয়ে বেরাচ্ছে।২০১৬ সালে এই স্থানকে সার্কের সাংস্কৃতিক রাজধানী বলেও ঘোষনা দেওয়া হয়েছিল।এ থেকে বুঝা যায় যে এই স্থাপনা কতটা গুরুত্বপূর্ণ এই বাংলার জন্য।

মহাস্থানগড় বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত।বগুড়া জেলা থেকে ১৮ কি.মি উত্তরে গেলে করতোয়া নদীর কাছে গেলে এই নন্দিত শহরের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাওয়া যায়।

এছাড়া ৬৩৯ সালে এই অঞ্চলে বিখ্যাত চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েন সাং এসেছিলেন।পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর এবং বৌদ্ধ শিক্ষার প্রানকেন্দ্র ছিল বলে তিনি মতামত দিয়েছেন তার গ্রন্থে।এছাড়াও এখানে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শাসক, শাসন করায় এখানে ভৌগোলিক সৌন্দর্য সৃষ্টি হয়েছে।

বর্তমানে মহাস্থানগড়ের দূর্গের ভেতরে কয়েকটি ঢিবি নির্মাণ নিদর্শন হিসেবে দেখতে পাওয়া যায়।এগুলোর মধ্যে জিয়ত কুন্ড নামে একটি কূপ রয়েছে যে কূপে জীবন প্রদানের শক্তি আছে বলে মানুষ মনে করে।

এছাড়াও রয়েছে মানকালীরধাপ,পরশুরামের ভিটা,বৈরাগীর ভিটা,খোদার পাথর ভিটা, মুনির ঘোন কেল্লা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

নওগাঁ জেলার পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহারঃ পাহারপুরের বৌদ্ধবিহারের সাথে জড়িত আছে এই বাংলার পাল শাসক ধর্মপালের নাম।তাঁর একান্ত প্রচেষ্টায় নির্মিত হয় পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহার।

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারকে অনেকেই সোমপুর বৌদ্ধ বিহারও বলে।অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা ৯ম শতকের শুরুর দিকে এই বিহার তৈরি হয়েছিল বলে ধারণা করা যায়।১৮৭৯ সালে স্যার  আলেকজান্ডার কালিংহাম এই বিশাল স্থাপনার এই বৌদ্ধ বিহারটি আবিষ্কার করেন।ইউনেস্কোর মতে এটি এশিয়ার ২য় বৃহত্তম বিহার ছিল।আয়তনে এ বিহারের সাথে ভারতের নালন্দা মহাবিহারেরও তুলনা করা যায়।এটি ৩০০ বছর ধরে বৌদ্ধদের ধর্মীয় শিক্ষা কেন্দ্র ছিল।শুধুমাত্র এই বাংলাদেশের লোকজনেই যে এখানে এসে শিক্ষা নিত তা নয় বরং গোটা ভারতবর্ষের লোকজন এখানে এসে বৌদ্ধ ধর্ম শিক্ষা গ্রহণ করত।এই বিহারেএ বিখ্যাত আচার্য ছিলেন অতীশ দীপঙ্কর। সময়ের পরিক্রমায় এই বিহার আজ পরিত্যক্ত। 

১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো এই সাংস্কৃতিক,ধর্মীয় স্থাপত্যকে বিশ্ব সংস্কৃতির অংশ হিসেবে ঘোষনা করেছে।

কুমিল্লার শালবন বৌদ্ধ বিহারঃশালবন বৌদ্ধ বিহার প্রাচীন স্থাপত্যগুলোর মধ্যে একটি।কুমিল্লা জেলার লালমাই, ময়নামতি প্রত্নস্থলের অসংখ্য প্রাচীন স্থাপত্যেগুলোর মধ্যে কুমিল্লার এই বৌদ্ধবিহার একটি।

এছাড়া সোনারগাঁও,উত্তরা গণভবন,ভাওয়াল রাজবাড়ী, সোনারং জড়ামঠ,নরসিংদী জেলার ওয়ারী বটেশ্বর, দিনাজপুরের সিতাকোট বিহার,ষাট গম্বুজ মসজিদ,৭ গম্বুজ মসজিদ,চক বাজার মসজিদ,ঢাকেশ্বরী মন্দির।সবগুলোই প্রাচীন বাংলার এক বিশাল ঐতিহ্য এবং সংকৃতির পরিচয় বহন করে।

বাংলাদেশ একটি নদী-মাতৃক দেশ।এ দেশের বেশির ভাগ সংস্কৃতি তাই নদীকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিল।এইখানের যে জেলাগুলো রয়েছে সেগুলোও এই নদীকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিল।ক্রমান্বয়ে সেখানকার ভৌগোলিক অবস্থান সে জেলাগুলোকে আরও সমৃদ্ধশীল করেছে।সে জেলা গুলো নানা কারনে বিখ্যাত ছিল।যেমনঃরাজশাহীর আম,বগুড়ার দই,পিরোজপুরের পেয়ারা,ডাব,আমড়া,কক্সবাজারের মিষ্টিপান,কিশোরগঞ্জের বালিশ মিষ্টি,নক্সী পিঠা,কুমিল্লার রসমালাই আর খাদী।কুষ্টিয়ার তিলের গজা, খাগড়াছড়ির হলুদ,খুলনার সন্দেশ,নারিকেল,চিংড়ি, চাঁদপুরের ইলিশ,গাজিপুরের কাঁঠাল,পেয়ারা,টাঙ্গাইলের চমচম,নরসিংদীর সাগরকলা,দিনাজপুরের লিচু,পাপড়,নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি,নাটোরের কাঁচাগোল্লা, বান্দরবানের হিল জুস,রংপুরের আখ,লক্ষ্মীপুরের সুপাড়ি,শেরপুরের ছানার পায়েস,সিরাজগঞ্জের পানিতোয়া,ধানসিঁড়ির দই,সিলেটের সাতকড়ার আচার,কমলালেবু আর পালেয়ার চা এই সবই বাংলাদেশের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের অংশ।

বাংলাদেশের ভৌগোলিক সৌন্দর্য এই কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিস আরও সুন্দর করে তুলেছে।বাংলার যে প্রাচীন এবং সমৃদ্ধশালী ইতিহাস এবং ঐতিহ্য ছিল তাকে ধারণ করেছে।ক্রমান্বয়ে তৈরি করেছে আমাদের সোনার বাংলাদেশকে।

6.পাট উৎপাদনে বাংলাদেশের ইতিহাস | বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত 

একসময় পাট ছিল এই বাংলার প্রধান অর্থনীতিক ফসল।

বাঙ্গালির অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য পাটের ভূমিকা একটি সর্ব সাধারণ স্বীকৃত ইতিহাস।বাংলাদেশের নামের সাথে পাটের নামও অতপ্রতোভাবে জড়িত।পাট একসময় এ দেশের অর্তনীতির সর্বোচ্চ বৃহত্তম খাত ছিল আর এখনো পাট বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম কৃষিজ উপাদান হিসেবে রয়েছে।

পাটের সঙ্গে রয়েছে এ দেশের মানুষ আর বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরের অর্থনীতির চাকা সচল করার যে পন্থা তার নিবিড় সম্পর্ক। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে পাটকে জাতীয়করণ করা হয় প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে।১৯৭২ সালে জুট মিলস করপোরেশনও গঠন করা হয়।এর পরবর্তী পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনাতে পাটকে জাতীয় ফসল হিসেবে ঘোষনা দেওয়া হয়।এ থেকে সহজেই বুঝা যায় বাংলাদেশের অর্থনীতি আর রাজনৈতিক ইতিহাসের সাথে পাটের গুরুত্ব কতটুকু ছিল।

জুট বা পাট একসময় এ দেশে সোনালী আশ নামে পরিচিত ছিল।পাটকে বলা হয় দা গোল্ডেন ফাইবার অব বাংলাদেশ। বাংলাদেশ নামের সাথেই পাট নামটি প্রাচীনকাল থেকেই জড়িয়ে গিয়েছিল।১৯৫২ সালে বাওয়া জুট মিলস স্থাপনের মাধ্যমে এ দেশে পাটের যাত্রা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।পরবর্তী সময়ে এ অঞ্চলের আবহাওয়া আর বিদেশের চাহিদা অনুযায়ী এখানে প্রতিষ্ঠা করা হয় এশিয়ার বৃহত্তম পাটকল আদমজী জুট মিলস এবং এ খাতে অসম্ভব অগ্রগতি আর লাভ দেখে এর পরবর্তীতে আরও শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকে।১৯৬০ এ যার সংখ্যা পৌছায় ১৬ টিতে, আর স্বাধীনতার এর আগে সংখ্যাটি পৌছায় ৭৫ টিতে।তারপরেই শুরু হয় পাট শিল্পের অগ্রযাত্রা।

বিশ্ব এখন পরিবেশ দূষণকারী পলিথিন ব্যাগকে নিষিদ্ধ করেছে যার বিকল্প হিসেবে পাটকে সবাই গ্রহণ করছিল।কিন্তু ক্রমাগত আমরা এই বিশাল সম্ভবনাময় শিল্পকে ধ্বংসের কাছে নিয়ে চলে এসেছি।সময়ের পরিবর্তনে এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পটি এখন প্রায় মৃতের পথে চলে গেছে,বিশ্ব যখন পাটের জিনিসপত্র এর প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে তখন আমরা শুধু বস্তা আর চটের মধ্যেই এই বিশাল সম্ভবনাময় শিল্পকে বেঁধে রাখছি।স্বাধীনতার পরপরই পাট থেকে ৮৭% আয় হতো বাংলাদেশের যা এখন ২-৭ এর মধ্যে নেমে এসেছে।

ক্রমান্বয়ে পাট শিল্পের ঐতিহ্য আর ইতিহাস ধ্বংস হতে শুরু করেছে।আর দিন দিন দূর্নীতি,অদক্ষতা,অযোগ্যতা,অব্যবস্থাপনার কারনে আজ পাটশিল্প প্রায় বন্ধের পথে।একসময় বাংলাদেশকে যে সোনালী আশের দেশ বলা হতো তা মূলত এই পাঠের জন্যই বলা হতো।

বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত এই আর্টিকেলটির এই অংশে আমরা জানলাম সোনালী পাটের ইতিহাস আর এর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক। 

7.ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের ইতিহাস  | বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত 

বাংলাদেশের কৃষি খাতে প্রধান উৎপাদনকারী এবং অর্থনীতিতে সব থেকে বেশি অর্থ এনে দেয় ধান।

বাংলাদেশকে বলা হয় কৃষিপ্রধান দেশ,আর এই কৃষি খাতের প্রধান উপাদান হলো ধান।বাংলাদেশের প্রায় ৯০% কৃষিজমিতে ধান উৎপাদন করা হয়।

ধানের বৈজ্ঞানিক নাম হলো "Oryza Sativa"। এটি হলো একপ্রকার Oryza গোত্রের দানা জাতীয় উদ্ভিদ।ধান উষ্ণ জলবায়ুতে, বিশেষত এই পূর্ব এশিয়াই ব্যাপক ভাবে জন্মে।ধানবীজ বা চাল লক্ষ লক্ষ ধরে এই অঞ্চলের মানুষের প্রধান খাদ্য।পৃথিবীর প্রায় ৪০% মানুষের প্রধান খাদ্যের চাহিদা যোগায় এই ধান।বাংলাদেশ,ভারত,শ্রীলংকা,মিয়ানমার,ভিয়েতনামের ৯০% মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত,আর এই ভাত তৈরি হয় ধান থেকে।

ধান বাঙ্গালির জীবন আর ঐতিহ্যের সাথে অতপ্রতোভাবে জড়িত।ধানকে  বাঙ্গালির জীবন আর সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।ধানকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের মাটিতে অনেক উৎসব আর সংস্কৃতির জন্ম হয়েছে,যা বহু পরম্পরা ধরে চলে আসছে 

বিখ্যাত পৌষ সংক্রান্তি ও নবান্ন উৎসব যা আদিকাল হতে ধান তোলার প্রথম দিনের সাথে যুক্ত,আর এই উৎসবটা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই পালন করে থাকে।এ সময় নতুন চাল দিয়ে ক্ষীর বানিয়ে ঘরে ঘরে বিতরণ করা বাঙ্গালীর চিরায়ত ঐতিহ্যের গুলোর মধ্যে একটি।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ধানকে কেন্দ্র করে যে উৎসব আয়োজন করা হতো তাতে বর্তমানে বিরাট পার্থক্য দেখা দিয়েছে যার ফলে ধান নির্ভর সমাজ ও সংস্কৃতিতেও এসেছে বিরাট পরিবর্তন। ধানভিত্তিক অর্থনীতির রূপধারায় ও এসেছে বিশাল পার্থক্য।গোরু দিয়ে,মই দিয়ে হাল চাষ এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।এছাড়া ধানের জাতেরও এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে।

ধান নিয়ে এই বাংলার কবিরা অনেক কবিতা রচনা করেছেন কারণ এ দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো ধানচাষ।

ধান চাষের উপর নির্ভর করে এই দেশের কৃষি মৌসুমকে ৩ ভাগে ভাগ করেছে।এই ৩ টি মৌসুমের নামঃআউশ,আমন আর বোরো,আর এই অংশগুলোর উপর নির্ভর করেই বাংলার প্রধান কৃষি সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

আউশ ধানঃখুব দ্রুত ফসল উৎপাদন হওয়াই এ ফসলের নাম হয়েছে আউশ ধান।এ ধান জন্মে প্রধানত বর্ষাকলের সময়ে।এই ধান আষাঢ় মাসে জন্মায় বলে একে আষাঢ়ী ধান বলা হয়।তবে এই ধান ইচ্ছে করলে বছরের যেকোনো সময়ই উৎপাদন করা যায়।

আমনঃ বাংলাদেশের আমন মৌসুমকে প্রধানত ৩ ভাগে ভাগ করা যায়।

১.রোপা আমন

২.বোনা আমন

৩.বাওয়া আমন

বাংলাদেশের প্রায় সবজায়গাতেই এই আমন ধানের চাষ হয়৷

৩.বোরো ধানঃবাংলাদেশের বৃষ্টি নির্ভর ফুলগুলোর মধ্যে যে ফসলটি সব থেকে বেশি বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল সে ফসলটির নাম হলো বোরো ফসল।বোরো ধান প্রধানত সেচ নির্ভর চাষ পদ্ধতি।উচ্চ ফলনশীল বোরো ধান আবাদের পর থেকে সমস্ত কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে।এর জন্য  যেমন আউশ ধানের ফলন অনেক কমে গেছে তেমনি রবি মৌসুৃমে প্রচলিত ফসল ডাল,তৈল বীজ,শাকসবজি ইত্যাদির ফলনও ব্যাপকভাবে কমে গেছে।

তারপরেও বাংলার মাটিতে সব থেকে বেশি চাষ হয় বোরো ধান,কারণ এই ধানের কারনেই এই মাটিতে ধানের কোনো ঘাটতি হয়না।এর ফলনও হয় প্রচুর।

বাংলাদেশ প্রাচীন কাল থেকেই এই ধানের জন্য বিখ্যাত কারণ এই ধান উৎপাদনে বাংলার যে নদ-নদী গুলো রয়েছে তা প্রত্যাক্ষ আর পরোক্ষ ভাবে বিশাল ভূমিকা পালন করেছে।যার জন্য ফলনও হয় তুলনামূলক অনেক বেশি।

বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে।

8.বাংলাদেশের নদ-নদীর  ঐতিহ্য | বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত 

বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে নদীর সম্পর্ক ওতপ্রতভাবে জড়িত।বাংলার যে কৃষ্টি-সংস্কৃতি তা প্রায় সবকিছুই নদী কেন্দ্রিক।বাংলাদেশকে বলা হয় নদীমাতৃক দেশ।বাংলাদেশের চারপাশে ছোট বড় অসংখ্যা নদ-নদী রয়েছে।সে নদ-নদী গুলো বাংলার কৃষি,নদী পথে ভ্রমণ, বিভিন্ন কৃষ্টি সব কিছুর সাথেই জড়িত।নদী থেকে যে বিপুল পরিমান মাছ আহরণ করা হয় সেগুলো দিয়ে এই বাংলার মৎস্য ঘাটতি মেটানো হয়,আর বাকি মাছগুলো বিদেশে বিক্রি করে বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে বাংলাদেশ।বিশেষ করে এই দেশের চিংড়ি, ইলিশ,চিতল, বৈয়াল রপ্তানি করে বাংলাদেশ বিপুল পরিমান একটা বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে।এছাড়া বঙ্গোপসাগরে যে বিপুল পরিমান গ্যাস আর মৎস্য খুজে পাওয়া গেছে তা কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ অতি শিঘ্রই একটি উন্নত দেশের পর্যায়ে চলে যাবে।

বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত এই আর্টিকেলটির এই অংশ পড়ে আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে।

9.আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন এবং উত্তর | বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত 

বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত আর্টিকেলের এই অনুচ্ছেদে আপনাদের করা কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো-

প্রশ্ন ১ঃবাংলাদেশ কি কি কারনে বিখ্যাত?

উত্তরঃবাংলাদেশ তার সমৃদ্ধ ইতিহাস,সংস্কৃতি, নদ-নদী,পাট ও ধানের জন্য বিখ্যাত।

প্রশ্ন ২ঃপাট উৎপাদন করে বাংলাদেশ কত টাকা আয় করে

উত্তরঃ১০ হাজার কোটি টাকার মতো।

প্রশ্ন ৩ঃবাংলাদেশের প্রধান উৎপাদিত কৃষি উপাদান কোনটি?

উত্তরঃধান

প্রশ্ন ৪ঃWhite Gold কাকে বলা হয়?

উত্তরঃ চিংড়ি কে সাদা সোনা বা white gold  বলা হয়।

প্রশ্ন ৫ঃবাংলাদেশ কে কিসের দেশে বলা হতো?

উত্তরঃসোনালী পাটের দেশ 

10.লেখকের মন্তব্য  | বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত 

বাংলাদেশের ইতিহাস সমৃদ্ধির ইতিহাস।প্রাচীনকাল থেকে এই অঞ্চল তার নিজস্ব সংস্কৃতি, শিক্ষা আর প্রাকৃতিল উপাদানের জন্য বিশ্বে প্রশংসনীয় অবস্থায় ছিল,যদিও বারবার লুটপাতের রাজনীতি ও বিদেশি শাসকদ্বারা এই দেশের জমির অপব্যবহার আর সেচ্ছারিতার জন্য কখনো এই বাংলা আর আগের মতো সমৃদ্ধিশালী হয়ে উঠতে পারেনি।বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত ছিল এই আর্টিকেলটিতে তাই খুব সংক্ষিপ্ত ভাবে আপনাদের সামনে তুলে ধরা হল। আশা করি বাংলাদেশ কিসের জন্য বিখ্যাত ছিল সেই প্রশ্নের উত্তরটি আপনারা পেয়েছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url