OrdinaryITPostAd

লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে? - লিথুনিয়া বেতন কত?

 

ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশ লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে অনেকেরই জানার আগ্রহ রয়েছে। কাজ, পড়াশোনা কিংবা অভিবাসনের জন্য অনেকেই লিথুনিয়া যেতে চান। তাদের জন্য লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে তা জানা জরুরী। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে, লিথুনিয়ায় কোন কোন ভিসায় যাওয়া যায় এসব প্রয়োজনীয় বিষয়ে আলোচনা করব।  



আর্টিকেল সূচিপত্র

১.লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে?


লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে তা নির্ভর করে লিথুনিয়ার ভিসার ধরনের উপর। আর্টিকেলের এই অংশে আমরা মোটামুটিভাবে বিভিন্ন ভিসায় লিথুনিয়া যাওয়ার খরচ সম্পর্কে আলোচনা করব। 

কাজের ভিসায় লিথুনিয়া যেতে লিথুনিয়া ওয়ার্ক ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ও রেসিডেন্স পারমিটের প্রয়োজন হয়। লিথুনিয়া কাজের ভিসার দাম ১২০ ইউরো বা ১৫,০০০ টাকা (প্রায়), টেম্পোরেরি রেসিডেন্স পারমিট ১২০ ইউরো বা ১৫,০০০ টাকা (প্রায়)  এবং রেসিডেন্স পারমিট ইস্যু করতে খরচ ৩০ ইউরো বা প্রায় ৪০০০ টাকা। অর্থাৎ কাজের ভিসায় লিথুনিয়া যেতে শুধুমাত্র ভিসার জন্য খরচ হয় ৩৫,০০০ টাকা (প্রায়)। এর সাথে বিমান ভাড়া, লিথুনিয়া এন্ট্রি ফি, এজেন্সির সার্ভিস চার্জ, মেডিকেল ফি সহ আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ ৭ থেকে ৯ লক্ষ টাকা লাগে কাজের ভিসায় লিথুনিয়া যেতে। 

টুরিস্ট ভিসায় লিথুনিয়া যেতে টুরিস্ট ভিসা ও টেম্পোরারি রেসিডেন্স পারমিট ভিসা লাগবে। লিথুনিয়া টুরিস্ট ভিসার দাম ৮০ ইউরো বা ১০,০০০ টাকা (প্রায়) এবং টেম্পোরারি রেসিডেন্স পারমিট ১২০ ইউরো বা ১৫,০০০ টাকা এবং রেসিডেন্স পারমিট ইস্যু ফি ৩০ ইউরো বা ৪০০০ টাকা। অর্থাৎ টুরিস্ট ভিসায় লিথুনিয়া যেতে ভিসা ফি বাবদ ৩০,০০০ টাকা (প্রায়) এবং এজেন্সির সার্ভিস চার্জ, বিমান ভাড়া সহ ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা লাগে। টুরিস্ট ভিসায় লিথুনিয়া গেলে সর্বোচ্চ ৯০ দিন লিথুনিয়ায় অবস্থান করা যাবে।

আর্জেন্ট কাজে স্বল্প সময়ের জন্য লিথুনিয়া যেতে ভিসা ফি ১৮০ ইউরো বা প্রায় ২২,০০০ টাকা এবং আর্জেন্ট রেসিডেন্স পারমিট ২৪০ ইউরো বা ৩০,০০০ টাকা এবং ভিসা ইস্যু ফি ৯০ ইউরো বা ১০,০০০ টাকা অর্থাৎ ভিসা বাবদ সর্বমোট ৬০,০০০ থেকে ৬৫,০০০ টাকা লাগে। আর্জেন্ট ভিসায় লিথুনিয়া যেতে আনুষঙ্গিক খরচ কম হয়। সর্বসাকুল্যে আর্জেন্ট কাজে লিথুনিয়ার যেতে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা লাগে।

২.লিথুনিয়া ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা?

লিথুনিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত একটি দেশ। এই দেশের মুদ্রার নাম ইউরো। লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে তা জানার পাশাপাশি আমাদের লিথুনিয়ার টাকার মান সম্পর্কেও জানতে হবে। আর্টিকেলের এই অংশে আমরা লিথুনিয়ার ১ টাকা বাংলাদেশের কত তা নিয়ে আলোচনা করব।

বিশ্ব অর্থনীতির বিভিন্ন দিকের উপর নির্ভর করে একটি দেশের টাকার মান অন্য দেশের টাকার তুলনায় কম বেশি হয়ে থাকে। আজকের (নভেম্বর ২০২৩) অর্থনীতির হিসেবে লিথুনিয়ার এক ইউরো এর বাংলাদেশি টাকায় মান হলো ১২১.১৪ টাকা। 
অর্থাৎ, ১ ইউরো = ১২১.১৪ টাকা।
ইউরোর এই মান সময়ের সাথে কম বেশি হয়ে থাকে। তাই ইউরো থেকে টাকায় রুপান্তরের উপায় জেনে নিলে আমরা খুব সহজেই ইউরো ও অন্যান্য মুদ্রার মান জেনে নিতে পারব। এজন্য- 
  • প্রথমেই https://bn.valutafx.com/ লিংক থেকে অথবা গুগলে অনলাইন মুদ্রা বিনিময় রুপান্তরকারী লিখে সার্চ করলেই এই ওয়েবসাইট চলে আসবে। 
  • কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটে গিয়ে "রুপান্তর করুন" নামক অপশনে যে পরিমান মুদ্রা রুপান্তর করতে চান তা লিখতে হবে।
  • এরপর "হতে" অপশনে যে দেশের টাকা রুপান্তর করতে চান তার নাম সিলেক্ট করতে হবে । 
  • সবশেষে " প্রতি " অপশনে যে দেশের টাকায় রুপান্তর করতে চান তা সিলেক্ট করলেই কাঙ্ক্ষিত ফলাফল চলে আসবে। 
এভাবেই খুব সহজে আমরা লিথুনিয়ার ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা তার আপডেট জানতে পারব।

৩.লিথুনিয়ায় কোন কাজের চাহিদা বেশি ?

কাজের উদ্দেশ্যে লিথুনিয়া যেতে হলে লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে এটা জানার পাশাপাশি লিথুনিয়ায় কোন কাজের চাহিদা বেশি এই সম্পর্কেও জানতে হবে। আর্টিকেলের এই অংশে আমরা লিথুনিয়ার বেশ কিছু চাহিদাসম্পন্ন কাজের কথা বলব।

লিথুনিয়ার কাজের চাহিদা অনেকটা সিজন বা মৌসুমের উপর নির্ভর করে। কিছু কিছু মৌসুমে নির্দিষ্ট খাতে শ্রমিকের চাহিদা বাড়ে, আবার কাঙ্ক্ষিত মৌসুম শেষে উক্ত শ্রমিকদের কাজ থাকে না। ফলে তারা কর্মসংস্থানের সংকটে পরে। তাই লিথুনিয়া কাজের ভিসায় যাওয়ার পূর্বে কোন কাজের চাহিদা বেশি তা জেনে ভিসা প্রসেসিং করতে হবে। সাধারণত লিথুনিয়া কিছু কাজের চাহিদা সবসময় থাকে। যেমন :
  • হেভি ট্রাক এবং লড়ি ড্রাইভার
  • সেলসম্যান
  • কার/ ট্যাক্সি ড্রাইভার
  • মোটর, ভেহিকল রিপেয়ারস
  • টেইলর্স
  • বেকারি কিংবা ফ্যাক্টরিতে কাজ
  • রাজমিস্ত্রী
  • প্লাম্বার
সাধারণত যারা লিথুনিয়ায় যেতে চান, অধিকাংশের শিক্ষাগত যোগ্যতা কম থাকে কিংবা থাকে না। তাই এসব কাজে অভিজ্ঞতা থাকা সাপেক্ষে তারা লিথুনিয়ায় যেতে পারে। এসব কাজে শিক্ষাগত যোগ্যতা কিংবা ভাষাগত দক্ষতার খুব বেশি প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই নন-স্কিলড হিসেবে এসব কাজে লিথুনিয়ায় শ্রমিকদের চাহিদা বেশি।

৪.লিথুনিয়া বেতন কত ?

যারা কাজের উদ্দেশ্যে লিথুনিয়া যেতে চান তাদের লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়টি জানার পাশাপাশি লিথুনিয়া বেতন কত এটাও জানা জরুরি। কেননা বেতন কম হলে প্রবাসে গিয়ে কাজ করা লাভজনক হবে না।

চলতি বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী লিথুনিয়ার বেতনসীমায় পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। পূর্বের মজুরি হার থেকে বাড়িয়ে চলতি বছরে লিথুনিয়ার সর্বনিম্ন বেতন ৮৪০ ইউরো বা প্রায় ১ লক্ষ বাংলাদেশি টাকা প্রতি মাস, এবং গড় বেতন ২০০০ ইউরো বা ২ লক্ষ ৫০ হাজার বাংলাদেশি টাকা প্রতি মাস। অর্থাৎ লিথুনিয়ায় কাজের জন্য গেলে যেকোন কাজে সর্বনিম্ন ১ লক্ষ টাকা বেতন হবে। উৎপাদন খাতে (সিজনাল কৃষি, ফ্যাক্টরি ইত্যাদি) গড় বেতন ২০০০ ইউরো বা ২ লক্ষ ৫০ হাজার বাংলাদেশি টাকা প্রতিমাসে। সুতরাং ননস্কিলড ভিসা সহ যেকোনো ভিসায় লিথুনিয়া গেলে ১ লক্ষ থেকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মাসিক বেতন পাওয়া যাবে।

৫.আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর

আর্টিকেলের এই অংশে আমরা লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে তা সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর নিয়ে আলোচনা করব। 

প্রশ্ন ১: কাজের ভিসায় লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে?

উত্তর: কাজের ভিসায় লিথুনিয়া যেতে ৭ থেকে ৯ লক্ষ টাকা লাগে। 

প্রশ্ন ২: বাংলাদেশে কি লিথুনিয়ার এম্বাসি রয়েছে?

উত্তর: হ্যাঁ, বাংলাদেশে লিথুনিয়ার এম্বাসি রয়েছে। এটি রাজধানীর মিরপুর শ্যাওড়াপাড়ায় অবস্থিত। 

প্রশ্ন ৩: লিথুনিয়ার ভিসা পেতে কত দিন সময় লাগে?

উত্তর: লিথুনিয়ার সেনজেন ভিসা পেতে সাধারণত ১৫ দিন সময় লাগে। অন্যান্য ভিসার প্রসেসিং করতে সর্বোচ্চ ৬০ দিন পর্যন্ত সময় লাগে।
প্রশ্ন ৪: লিথুনিয়া কি সেনজেনভুক্ত দেশ? 
উত্তর: হ্যাঁ, লিথুনিয়া সেনজেনভুক্ত দেশ এবং এই দেশে সেনজেন ভিসা প্রযোজ্য রয়েছে।
প্রশ্ন ৫: লিথুনিয়ার সর্বোচ্চ বেতন কত? 
উত্তর : লিথুনিয়ার সর্বোচ্চ বেতন ৪২২০ ইউরো বা ৫ লক্ষ বাংলাদেশি টাকা। 
প্রশ্ন ৬: লিথুনিয়ার ওয়ার্ক পারমিট কিভাবে পাওয়া যায়? 
উত্তর: লিথুনিয়ার ওয়ার্ক পারমিট পেতে-
  • প্রথমেই লিথুনিয়ার লেবার এক্সচেঞ্জ ইস্যু করতে হবে। 
  • নিকটস্ত লিথুনিয়ার দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হবে। 
  • ভিসা আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে হবে।
  • অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে।
প্রশ্ন ৭: লিথুনিয়ার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা কি?
উত্তর : লিথুনিয়ায় ব্যাচেলর পড়তে এইচএসসি পাস, মাস্টার্স করতে ব্যাচেলর আর পিএইচডি করতে মাস্টার্স ডিগ্রীর প্রয়োজন হয়। IELTS ছাড়া এদেশে যাওয়া গেলেও ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে IELTS-এ স্কোর থাকতে হবে ৬.০।


৬.লেখকের মন্তব্য

আজকের আর্টিকেলে আমরা লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে, লিথুনিয়ার টাকার মান, লিথুনিয়ায় কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং লিথুনিয়ায় বেতন কত ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আর্টিকেল সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। সেই সাথে কোনো বিষয়ে জানার থাকলে প্রশ্ন করতে পারেন। এরকম আরও তথ্যবহুল আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট The DU Speech ভিজিট করতে পারেন।


এই আর্টিকেলের-
লেখক: মোছাঃ ফাতেমা খাতুন 
পড়াশোনা করছেন লালমনিরহাট নার্সিং কলেজে। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন।
জেলা: গাইবান্ধা 


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন:  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে।
জেলা: নাটোর

আরও পড়ুনঃ null

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url