OrdinaryITPostAd

দূর্গা পূজা ২০২৩ বাংলা কত তারিখ

 

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। হিন্দুদের পাশাপাশি বাংলাদেশের আরও বেশ কিছু ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষও পালন করে থাকে এই পূজা। পৃথিবীর সকল হিন্দুধর্মাবলম্বীরাই এই উৎসব পালন করে থাকে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, দূর্গা পূজা ২০২৩ বাংলা কত তারিখ?  আজকের আর্টিকেলে আমরা এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই দূর্গা পূজা ২০২৩ বাংলা কত তারিখ জানতে আর্টিকেলটি পড়ুন।



সংক্ষেপে জেনে নিন
প্রশ্ন দূর্গা পূজা ২০২৩ বাংলা কত তারিখ
উত্তর ধাপ ০১. দূর্গা পূজা শুরু হবে বাংলা ২৬ আশ্বিন ১৪৩০ তারিখে এবং শেষ হবে ০৬ কার্তিক ১৪৩০ তারিখে।

উত্তর ধাপ ০২. এবারে দুর্গার আগমন ও গমনের বাহক হবে ঘোটক বা ঘোড়া। 
উত্তর ধাপ ০৩. দূর্গা পূজার প্রবর্তক হলেন কৃষ্ণ আর বাংলায় দূর্গা পূজা প্রথম শুরু করেন কংস নারায়ণ রায়।

আর্টিকেল সূচিপত্র (যে অংশ পড়তে চান তার উপর ক্লিক করুন) 

  1. দূর্গা পূজার ক্যালেন্ডার
  2. এবারে দূর্গার কিসে আগমন
  3. বাংলায় দূর্গা পূজা প্রথমে কে শুরু করেন
  4. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর 
  5. লেখকের মন্তব্য

১.দূর্গা পূজার ক্যালেন্ডার -  দূর্গা পূজা ২০২৩ বাংলা কত তারিখ

সংক্ষেপেঃ দূর্গা পূজা শুরু হবে বাংলা ২৬ আশ্বিন ১৪৩০ তারিখে এবং শেষ হবে ০৬ কার্তিক ১৪৩০ তারিখে।

দূর্গা পূজা সাধারণত বেশ কয়েকদিন ব্যাপী হয়ে থাকে। আর্টিকেলের এই অংশে আমরা দূর্গা পূজা ২০২৩ বাংলা কত তারিখ এবং দূর্জা পূজা ক্যালেন্ডার নিয়ে আলোচনা করব। 

  • মহালয়া : ২৬ আশ্বিন ১৪৩০ (১৪ অক্টোবর, ২০২৩) 
  • পঞ্চমী : ০১কার্তিক ১৪৩০ ( ১৯ অক্টোবর, ২০২৩)
  • ষষ্ঠী: ০২ কার্তিক ১৪৩০, (২০ অক্টোবর, শুক্রবার)। এই তিথি শুরু হবে ১৯ অক্টোবর রাত ১টা ০১ মিনিটে শুরু ও শেষ হবে ২০ অক্টোবর রাত ১১টা ৫৪ মিনিটে। দুপুর ৩টা ১৯ মিনিট থেকে ৫ টা ৩৮ মিনিটের মধ্যে বিল্ব নিমন্ত্রণ করতে হবে।
  • সপ্তমী : ০৩ কার্তিক ১৪৩০ (২১ অক্টোবর, শনিবার)। এই তিথি শুরু হবে ২০ অক্টোবর রাত ১১টা ৫৪ মিনিটে এবং শেষ হবে ২১ অক্টোবর রাত ১০ টা ২৩ মিনিটে। এ দিন কলা বউ স্নান ও নবপত্রিকা পুজো করা হয়।
  • অষ্টমী : ০৪ কার্তিক ১৪৩০ (২২ অক্টোবর, রবিবার)। মহাষ্টমী তিথি শুরু হবে ২১ অক্টোবর রাত ১০ টা ২৩ মিনিট থেকে এবং শেষ হবে ২২ অক্টোবর সন্ধ্যা ৮ টা ২৮ মিনিটে। কুমারী পুজো ও সন্ধি পুজো করতে হবে এই সময়ের মধ্যে। সন্ধি পুজোর লগ্ন শুরু সন্ধ্যা ৫ টা ২৪ মিনিটে এবং শেষ ভোর ৬ টা ১২ মিনিটে। বলিদান সেরে নিতে হবে সন্ধ্যা ৫ টা ৪৮ মিনিটের মধ্যে। 
  • নবমী : ০৫ কার্তিক ১৪৩০, (২৩ অক্টোবর, সোমবার)। মহানবমী তিথি শুরু হবে ২২ অক্টোবর রাত ৮ টা ২৮ মিনিটে এবং ২৩ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬ টা ১৪ মিনিটে শেষ হবে।
  • বিজয়া দশমী : ০৬ কার্তিক ১৪৩০ ( ২৪ অক্টোবর ২০২৩, মঙ্গলবার)। বিজয়া দশমী শুরু হবে ২৩ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬ টা ১৪ মিনিটে এবং শেষ হবে ২৪ অক্টোবর দুপুর ৩ টা ৪৪ মিনিটে।

২.এবারে দূর্গার কিসে আগমন - দূর্গা পূজা ২০২৩ বাংলা কত তারিখ

সংক্ষেপেঃ এবারে দুর্গার আগমন ও গমনের বাহক হবে ঘোটক বা ঘোড়া। 

আর্টিকেলের শুরুতে আমরা দূর্গা পূজা ২০২৩ বাংলা কত তারিখ তা নিয়ে আলোচনা করেছি। এই অংশে আমরা এবারে দূর্গা কিসে আগমন করবে তা নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব। 

দূর্গা পূজার একটি অন্যতম আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে দেবী দূর্গার বাহন। দুর্গার আগমন ও প্রস্থানের বাহন ও এর উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ফলাফল নিয়ে বাঙালি সমাজে বহু কথা প্রচলিত রয়েছে। দেবী দুর্গা ও তাঁর পুত্র-কন্যার নিজস্ব বাহন থাকলেও দূর্গা আগমন ও প্রস্থানের বাহনের কথা আলাদা করে পঞ্জিকায় উল্লেখ করা থাকে। 

পঞ্জিকা অনুসারে দূর্গা পূজার সপ্তমীতে দেবীর আগমন হয়, আর গমন হয় দশমীতে। এই দুই দিন সপ্তাহের কোন কোন বারে পড়ছে, তার উপরেই নির্ভর করে দেবীর আগমন ও গমনের বাহন। শাস্ত্র অনুযায়ী সপ্তমী রবি বা সোমবার হলে দেবীর বাহন হবে গজ বা হাতি। সপ্তমী শনি বা মঙ্গলবার হলে দেবীর বাহন ঘোটক বা ঘোড়া। সপ্তমী বৃহস্পতি বা শুক্রবার হলে দেবীর বাহন দোলা বা পালকি। সপ্তমী বুধবার হলে দেবীর বাহন নৌকা। এবারে সপ্তমী হবে শনিবার। সুতরাং দেবীর আগমনের বাহক হবে ঘোড়া।
একই ভাবে, দশমী রবি বা সোমবার হলে দেবীর বিদায়ী বাহন গজ বা হাতি। দশমী শনি বা মঙ্গলবার হলে দেবী বিদায় নেবেন ঘোড়ায় চড়ে। দশমী বৃহস্পতি বা শুক্রবার হলে দেবীর গমন হবে দোলা বা পালকিতে। আর দশমী বুধবার হলে নৌকায় করে কৈলাশে ফিরবেন দেবী। এবছর দশমীর দিন মঙ্গলবার। তাই দেবীর বিদায়ী বাহন হলো ঘোড়া। সুতরাং দেখা যাচ্ছে এবছর দেবীর আগমন ও গমনের বাহন একই।
হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী, দুর্গার আগমন ও গমনের বাহন নির্ধারণ করে মর্তলোকে সারা বছর কেমন যাবে। প্রতি বছর দুর্গার আগমন ও প্রস্থান সাধারণত একই বাহনে হয় না। যদি কোনও বছর হয়‚ তবে তা খুবই অশুভ ইঙ্গিত বহন করে। এই বছর দুর্গার আসা ও যাওয়া, দুটোই হবে ঘোড়ায়। ফলে আগামী এক বছর অশুভ প্রভাব থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

৩.বাংলায় দূর্গা পূজা প্রথমে কে শুরু করেন - দূর্গা পূজা ২০২৩ বাংলা কত তারিখ

সংক্ষেপেঃ দূর্গা পূজার প্রবর্তক হলেন কৃষ্ণ আর বাংলায় দূর্গা পূজা প্রথম শুরু করেন কংস নারায়ণ রায়।

দূর্গা পূজা ২০২৩ বাংলা কত তারিখ তা জানার পাশাপাশি অনেকে দূর্গা পূজা প্রথমে কে শুরু করেন তা জানতে চান। আর্টিকেলের এই অংশে আমরা দূর্গা পূজা প্রথমে কে শুরু করেন তা নিয়ে আলোচনা করব। 

ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ অনুসারে দুর্গাপূজার প্রবর্তক বলা হয়েছে কৃষ্ণকে। এই পুরাণে বিভিন্ন দেবদেবীরা কীভাবে দুর্গাপূজা করেছিলেন, তার একটি তালিকা পাওয়া যায়। তবে এই প্রসঙ্গে কোনো পৌরাণিক গল্পের বিস্তারিত বর্ণনা এই পুরাণে দেওয়া হয়নি। পূরাণে বলা হয়েছে সৃষ্টির প্রথম যুগে পরমাত্মা কৃষ্ণ বৈকুণ্ঠের আদি-বৃন্দাবনের মহারাসমণ্ডলে প্রথম দুর্গাপূজা করেন। এরপর মধু ও কৈটভ নামে দুই অসুরের ভয়ে ব্রহ্মা দ্বিতীয় দুর্গাপূজা করেছিলেন। ত্রিপুর নামে এক অসুরের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে শিব বিপদে পড়ে তৃতীয় দুর্গাপূজার আয়োজন করেন। দুর্বাসা মুনির অভিশাপে লক্ষ্মীকে হারিয়ে ইন্দ্র যে পূজার আয়োজন করেছিলেন, সেটি ছিল চতুর্থ দুর্গাপূজা। এরপর থেকেই পৃথিবীতে মুনিঋষি, সিদ্ধপুরুষ, দেবতা ও মানুষেরা নানা দেশে নানা সময়ে দুর্গাপূজা করে আসছে। 

তবে বাংলায় দূর্গা পূজা প্রথম কে প্রবর্তন করেন এই প্রশ্নের উত্তরে কংস নারায়নের নামটিই প্রথমে উঠে আসে। ইতিহাসখ্যাত কংস নারায়ণ রায় তাহিরপুর রাজবংশের রাজা ছিলেন। ৮৮৭ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসের মহা ষষ্ঠী তিথিতে অকালবোধনের মাধ্যমে কংস নারায়ণ দেবী দুর্গার প্রতিমা গড়ে প্রথম দুর্গাপূজা করেন। কংস নারায়ণের প্রথম দুর্গা পূজাটি হয়েছিল রাজবাড়ি সংলগ্ন প্রধান ফটকের পাশেই একটি বেদীতে।

৪.আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন - দূর্গা পূজা ২০২৩ বাংলা কত তারিখ

আর্টিকেলের এই অংশে আমরা দূর্গা পূজা ২০২৩ বাংলা কত তারিখ তা নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর নিয়ে আলোচনা করব। 

প্রশ্ন ১: দূর্গা শব্দের অর্থ কী? 

উত্তর: দূর্গা অর্থ হলো যিনি দুর্গতি বা সংকট থেকে রক্ষা করেন। অর্থাৎ যে দেবী দুর্গম নামক অসুরকে বধ করেছিলেন তিনিই হলেন হিন্দু দেবী পার্বতীর এক উগ্র রূপ দূর্গা। 

প্রশ্ন ২: দূর্গা পূজার আরও কি নাম রয়েছে?

উত্তর: দূর্গা পূজার আরও যেসব নাম রয়েছে তা হলো :  দুর্গোৎসব, শারদীয়া দুর্গাপূজা, শারদোৎসব, দেবীপক্ষ, অকালবোধন, মহাপূজা, শরৎকালীন দুর্গাপূজা, বাসন্তী পূজা (বসন্তকালীন দুর্গাপূজা) ইত্যাদি। 

প্রশ্ন ৩: দূর্গা পূজা কতদিন ব্যাপি হয়? 

উত্তর: দূর্গা পূজা ১০ দিন ব্যাপি হয়।

প্রশ্ন ৪: দূর্গার বাহু সংখ্যা কত? 

উত্তর: দুর্গার বাহুসংখ্যা অনেক। পুরাণ গ্রন্থাদিতে দূর্গার সহস্রভুজা, ত্রিংশতিভুজা, বিংশতিভুজা, অষ্টাদশভুজা, ষোড়শভুজা, দশভুজা, অষ্টভুজা ও চতুর্ভুজা মূর্তির উল্লেখ পাওয়া যায় বা বিভিন্ন স্থাপত্য-ভাস্কর্যে দেখা যায়। তবে দশভুজা রূপটিই সমধিক জনপ্রিয়। তাই সাধারণভাবে দুর্গার বাহু সংখ্যা ১০ টি ধরা হয়।

প্রশ্ন ৫: দূর্গার বাহন কি?

উত্তর: দূর্গার বাহন সিংহ।

প্রশ্ন ৬: মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তিতে তাঁকে কোন অসুরকে বধরত অবস্থায় দেখা যায়? 

উত্তর: মহিষাসুরমর্দিনী-মূর্তিতে তাঁকে মহিষাসুর নামে এক অসুরকে বধরত অবস্থায় দেখা যায়।

প্রশ্ন ৭: দূর্গার অস্ত্র কী? 

উত্তর: দূর্গার অস্ত্র ত্রিশূল, খড়্গ, চক্র, গদা, শঙ্খ, শক্তি, ঢাল বা খেটে, বাণ এবং ধনুক, ঘণ্টা, পরশু, নাগপাশ ইত্যাদি।

৫.লেখকের মন্তব্য - দূর্গা পূজা ২০২৩ বাংলা কত তারিখ

আজকের আর্টিকেলে আমরা দূর্গা পূজা ২০২৩ বাংলা কত তারিখ তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আর্টিকেল সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম আরও তথ্যবহুল আর্টিকেল পড়তে আমাদের The DU Speech ভিজিট করতে পারেন।


এই আর্টিকেলের-
লেখক: মোছাঃ ফাতেমা খাতুন 
পড়াশোনা করছেন লালমনিরহাট নার্সিং কলেজে। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন।
জেলা: গাইবান্ধা 


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন:  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে।
জেলা: নাটোর

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url