OrdinaryITPostAd

কর্মসংস্থান ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা [আপডেটসহ]

 

দেশের বেকার যুবদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করে দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে কাজ করে এমন একটি ব্যাংক হলো কর্মসংস্থান ব্যাংক। এটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। কর্মসংস্থান ব্যাংক সুযোগ সুবিধা বেশি হওয়ায় সবাই কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নিতে আগ্রহী থাকেন এবং লোন নিয়ে নিজেরা স্বাবলম্বী হন। আজকের আর্টিকেলে আমরা কর্মসংস্থান ব্যাংক সুযোগ সুবিধা নিয়ে আলোচনা করব। 


সংক্ষেপে জেনে নিন
প্রশ্ন কর্মসংস্থান ব্যাংক সুযোগ সুবিধা 
উত্তর ধাপ ০১. কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সবচেয়ে ভালো সুযোগ সুবিধা হলো - সহজে আবেদনযোগ্য, অল্প সুদের হার, সহজে পূরণযোগ্য শর্তাবলি এবং মোটা অঙ্কের লোন।
উত্তর ধাপ ০২. কর্মসংস্থান ব্যাংক সাধারণত শিল্পকারখানা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, বিভিন্ন উৎপাদনশীল প্রকল্প, সেবা খাত, মৎস্য চাষ, প্রানিসম্পদ, যানবহন ও পরিবহন সেবা খাতে ঋণ প্রদান করে থাকে।
উত্তর ধাপ ০৩. কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন নেওয়ার জন্য কিছু যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন যেমন - ঋণ আবেদনকারীকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে, বেকার/ অর্ধ বেকার হতে হবে, বয়স ১৮-৫০ এর ভিতর হতে হবে, অন্য কোনো ব্যাংকে ঋণ খেলাপি থাকা যাবে না ইত্যাদি।

আর্টিকেল সূচিপত্র (যে অংশ পড়তে চান তার উপর ক্লিক করুন) 

  1. কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সুবিধা
  2. কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন প্রদানের খাতসমূহ
  3. কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পাওয়ার যোগ্যতা
  4. লেখকের মন্তব্য

১.কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সুবিধা - কর্মসংস্থান ব্যাংক সুযোগ সুবিধা 

সংক্ষেপেঃ কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সবচেয়ে ভালো সুযোগ সুবিধা হলো - সহজে আবেদনযোগ্য, অল্প সুদের হার, সহজে পূরণযোগ্য শর্তাবলি এবং মোটা অঙ্কের লোন।

দেশের অন্যতম রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার যেসকল সুবিধা রয়েছে তা নিয়ে আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আলোচনা করব। এই লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়লেই একজন ঋণ আবেদনে ইচ্ছুক ব্যক্তি বুঝতে পারবেন কর্মসংস্থান ব্যাংক সুযোগ সুবিধা কী এবং কেন কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নিবেন। 

কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সুবিধাগুলো হলো : 
  • সহজ আবেদন প্রক্রিয়া: কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো লোনের জন্য খুব সহজেই আবেদন করা যায়। ব্যাংকে গিয়ে সরাসরি আবেদনের পাশাপাশি চাইলে অনলাইনেও আবেদন করা যায় যা আবেদনকারীর ভোগান্তি অনেকটাই কমিয়ে দেয়। যে কেউ চাইলেই মাত্র কয়েকটি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া এই ব্যাংকে লোনে জন্য আবেদন করতে বেশি সময়ের দরকার হয় না। স্বল্প সময়ে অত্যন্ত সহজে এই ব্যাংকে ঋণের জন্য আবেদন করা যায় ফলে সময় ও শ্রম দুটোই সাশ্রয় হয়। এছাড়াও এই ব্যাংকে আবেদন করতে আবেদনকারীকে কোনো ভোগান্তির স্বীকার হতে হয় না। একদম ঝামেলাপূর্ণ ভাবে এই ব্যাংক হতে লোন পাওয়া যায়।
  • অল্প সুদের হার : এই ব্যাংকে লোনের ক্ষেত্রে সুদের হার খুবই কম যা অনেকাংশে সুবিধাজনক। সাধারণত বেশিরভাগ ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হার ৪- ৯% সরল সুদের নিয়মে হয়ে থাকে যা ঋণগ্রহীতার জন্য অনেক সুবিধার। এছাড়াও সদস্যের সার্বিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে এই ব্যাংকে লোনের সুদ গ্রহনের জন্য নিয়ম কিছুটা শিথিল করে যা সদস্যদের জন্য অনেক উপকারী। যেকোনো দূর্ঘটনা জনিত কারনে সুদ মওকুফের মতো নিয়মও রয়েছে যা সদস্যদের জন্য অত্যন্ত নমনীয়। 
  • সহজে পূরণযোগ্য শর্তাবলী : ব্যাংক থেকে লোন নিতে যেসব সাধারণ শর্ত পূরণ করতে হয় কর্মসংস্থান ব্যাংকের ক্ষেত্রে এসব শর্ত অনেক সহজ হয় এবং সহজ শর্ত পূরণ করে ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়া যায়। এই ব্যাংক সদস্যদের সার্বিক অবস্থার কথা মাথায় রেখেই ঋণের জন্য শর্ত আরোপ করে ফলে ঋণগ্রহীতার জন্য ঋণ গ্রহন ও পরিশোধের বিষয়টি অনেক সহজ হয়। 
  • মোটা অঙ্কের লোন : এই ব্যাংক থেকে একক একাউন্ট এ সর্বোচ্চ ২৫ লক্ষ টাকা এবং কমপক্ষে ৫ জনের গ্রুপে সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যায়। যেহেতু এই ব্যাংকের উদ্দেশ্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী করা তাই এই পদক্ষেপ। এর ফলে ঋণ গ্রহীতা লোন নিয়ে ভালো কিছু করতে পারে এবং নিজে স্বচ্ছল হওয়ার পাশাপাশি সহজভাবে ঋণ পরিশোধ করতে পারে। 

২.কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন প্রদানের খাতসমূহ - কর্মসংস্থান ব্যাংক সুযোগ সুবিধা 

সংক্ষেপেঃ কর্মসংস্থান ব্যাংক সাধারণত শিল্পকারখানা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, বিভিন্ন উৎপাদনশীল প্রকল্প, সেবা খাত, মৎস্য চাষ, প্রানিসম্পদ, যানবহন ও পরিবহন সেবা খাতে ঋণ প্রদান করে থাকে।
 
কর্মসংস্থান ব্যাংক কাজ করে বাংলাদেশের শিক্ষিত এবং অর্ধশিক্ষিত বেকার যুব সমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দেশ্য। তাই এই ব্যাংক লোন দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু খাত নির্ধারণ করে যেসব খাতের আওতায় এই ব্যাংক থেকে লোন পাওয়া যায়। কর্মসংস্থান ব্যাংক সুযোগ সুবিধা জানার পাশাপাশি আমাদের লোনের খাতসমূহও জানা দরকার। আর্টিকেলের এই অংশে তাই আমরা কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন প্রদানের খাতসমূহ নিয়ে আলোচনা করব। 

কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন খাতসমূহ: 
  • শিল্প-কারখানা : বিভিন্ন শিল্প কারখানা যেমন কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরির কারখানা, প্রাণি খাদ্য তৈরির কারখানা, মৎস্য খাদ্য তৈরির কারখানা, চিড়া/মুড়ি কল/ শিল্প, ধানের চাতাল/রাইস মিল, বেকারী শিল্প, অয়েল মিল, স’মিল, ফলজাত খাদ্য শিল্প , সুষম সার প্রস্ত্ততকরণ, আটা/ময়দা/সুজি প্রস্ত্ততকরণ, ডিজাইন ও ফ্যাশনওয়্যার, স্টার্চ, গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজ উৎপাদনকারী শিল্প, সুগন্ধি চাল উৎপাদন, ডাল প্রক্রিয়াজাতকরণ, বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ইত্যাদি।
  • ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প : মৃৎ শিল্প, কামারের কাজ, ব্লক-বাটিক/প্রিন্টিং, তাঁত শিল্প, কাঠের/ স্টীলের আসবাবপত্র তৈরিকরণ, রেশম বস্ত্র উৎপাদনকারী শিল্প, বাঁশ ও বেত শিল্প, ক্ষুদ্র প্রিন্টিং এবং সাইনবোর্ড তৈরি, চামড়াজাত শিল্প ইত্যাদি।
  • বিভিন্ন উৎপাদনশীল প্রকল্প : মাশরুম চাষ, সবজি চাষ, রেশম চাষ, ফল চাষ, মৌমাছি চাষ, নকশীকাঁথা তৈরি, পান বরজ, নার্সারী, ফুল চাষ ইত্যাদি।
  • সেবা খাত : সেলুন/লন্ড্রি, বিউটি পার্লার এবং হারবাল ট্রিটমেন্ট, কম্পিউটার সেবা, ফটোকপি সেবা, টিভি/ভিসিআর/বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি/ মোবাইল ফোন মেরামত, গ্রামীণ যানবাহন, সেলাই মেশিন, গাড়ি মেরামত ওয়ার্কশপ, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, স্টুডিও, শিক্ষা সেবা (কোচিং সেন্টার/কিন্ডার গার্টেন), ক্যাবল অপারেটরস, জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ, কমিউনিটি সেন্টার, বিনোদন পার্ক, আবাসিক হোটেল, পর্যটন কটেজ, সোলার পাওয়ার, সাইবার ক্যাফে ইত্যাদি।
  • মৎস্য চাষ : কার্প জাতীয়, পাংগাস, চিংড়ি, মনোসেক্স তেলাপিয়া, থাই কৈ, মিশ্র মৎস্য চাষ ও রেণু পোনা উৎপাদন (পুকুরে)।
  • প্রাণিসম্পদ : দুগ্ধ খামার, গরু মোটাতাজাকরণ, ছাগল/ভেড়া/মহিষ পালন, ব্রয়লার/ককরেল মুরগীর খামার, লেয়ার মুরগীর খামার, কোয়েল/টার্কির খামার।
  • যানবাহন/পরিবহন সেবা : টিভিসএস টু-হুইলার/থ্রি হুইলার-এর মাধ্যমে পণ্য/যাত্রী পরিবহন সেবা প্রকল্পে ঋণ প্রদান 

৩.কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পাওয়ার যোগ্যতা - কর্মসংস্থান ব্যাংক সুযোগ সুবিধা 

সংক্ষেপেঃ কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন নেওয়ার জন্য কিছু যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন যেমন - ঋণ আবেদনকারীকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে, বেকার/ অর্ধ বেকার হতে হবে, বয়স ১৮-৫০ এর ভিতর হতে হবে, অন্য কোনো ব্যাংকে ঋণ খেলাপি থাকা যাবে না ইত্যাদি।

কর্মসংস্থান ব্যাংক সুযোগ সুবিধা গুলোর পাশাপাশি ঋণ গ্রহনের ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই সীমাবদ্ধতা মূলত ঋণ গ্রহনের যোগ্যতা, যেসব পূরণ করার মাধ্যমে কোনো আবেদনকারী ঋণ গ্রহন করতে পারবে।

কর্মসংস্থান ব্যাংক ঋণ নেওয়ার যোগ্যতা হলো: 
  • ঋণ গ্রহনে আগ্রহী উদ্যোক্তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে;
  • কর্মসংস্থান ব্যাংকের যে শাখা হতে ঋণের আবেদন করবে সে শাখার অধিক্ষেত্রের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। স্থায়ী বাসিন্দা না হলে শাখার অধিক্ষেত্রের একজন স্থায়ী বাসিন্দাকে ঋণের জামিনদার হতে হবে;
  • ঋণ আবেদনকারীকে বেকার/অর্ধ বেকার হতে হবে;
  • বয়স সাধারণত ১৮ হতে ৫০ বছর হতে হবে। তবে পুরাতন ঋণগ্রহীতাদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা শিথিলযোগ্য;
  • উদ্যোক্তাকে ইকুইটি বহনের ক্ষমতা থাকতে হবে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে);
  • যে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ঋণ নেবেন তা পরিচালনার বিষয়ে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ/অভিজ্ঞতা থাকতে হবে;
  • ঋণ ব্যবহারের যোগ্যতাসহ ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা ও আর্থিক আচরণে সুনামের অধিকারী হতে হবে;
  • অন্য কোনো ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এনজিও অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপী হলে ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন না;
  • ঋণ নীতিমালার অন্যান্য নিয়ম অনুসরণে সক্ষম হতে হবে।

৪.লেখকের মন্তব্য - কর্মসংস্থান ব্যাংক সুযোগ সুবিধা 

আজকের আর্টিকেলে আমরা কর্মসংস্থান ব্যাংক সুযোগ সুবিধা, কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন দেওয়ার খাতসমূহ, লোন নেওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আর্টিকেল সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন, পরামর্শ কিংবা অভিযোগ থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম আরও তথ্যবহুল আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট The DU Speech ভিজিট করতে পারেন।


এই আর্টিকেলের-
লেখক: মোছাঃ ফাতেমা খাতুন 
পড়াশোনা করছেন লালমনিরহাট নার্সিং কলেজে। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন।
জেলা: গাইবান্ধা 


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন:  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে।
জেলা: নাটোর

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url