OrdinaryITPostAd

কোন কোন ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে ২০২৩

বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক এর অর্থনৈতিক মন্দা চলছে।এই মন্দা কাটিয়ে উঠতে না পারলে ব্যাংকগুলো তাদের ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হবে।কোন কোন ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে ২০২৩ আর্টিকেলে আমরা বাংলাদেশের এরকম কয়েকটি ব্যাংকের নাম জানব।সেই সাথে কোন কোন ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে ২০২৩ সালে তাদের দেউলিয়া হওয়ার কারণ নিয়েও আলোচনা করব।এসকল ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে কোন কোন ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে ২০২৩ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।


অনুচ্ছেদ সূচি (যে অংশ পড়তে চান তার উপরে ক্লিক করুন)

  1. দেউলিয়া ও দেউলিয়াত্ব কী
  2. দেউলিয়া হওয়ার শর্ত 
  3. যেসব ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে 
  4. প্রশ্ন-উত্তর পর্ব 
  5. লেখকের মন্তব্য 

১.দেউলিয়া ও দেউলিয়াত্ব কী| কোন কোন ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে ২০২৩

কোন কোন ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে ২০২৩ আর্টিকেলের এই অংশে আমরা দেউলিয়া ও দেউলিয়াত্ব নিয়ে আলোচনা করব।

দেউলিয়া শব্দের অর্থ নিঃস্ব, ঋণ পরিশোধে অসমর্থ।কোন ব্যক্তি,প্রতিষ্ঠান বা দেশ যখন পাওনাদার আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে অক্ষম হয় তখন উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া হিসেবে গণ্য করা হয় আর এই অবস্থাকে দেউলিয়াত্ব বলে।সাধারণভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ,বৈশ্বিক পরিস্থিতি,ঋণ খেলাপি বা অন্য কোন কারণে কারো ঋণ পরিশোধের মতো সক্ষমতা না থাকলে ঐ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ঋণ পরিশোধের অক্ষমতা স্বীকার করে নিজেকে দেউলিয়া হিসেবে ঘোষণার জন্য দেউলিয়া বিষয়ক আদালতে আবেদন করতে পারবে।দেউলিয়া হিসেবে ঘোষণার আবেদন যথাযথ যুক্তিযুক্ত হলে দেউলিয়া বিষয়ক আদালত উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া ঘোষণা করবে এবং পাওনাদারদের নির্দিষ্ট একটি প্রক্রিয়ায় আংশিক ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করবে।

ঋণ খেলাপিদের ব্যাংকের টাকা ফেরত না দেওয়ার এটা একটা উপায় কারণ নিজেকে দেউলিয়া হিসেবে ঘোষণা করে দিলে পাওনাদারদের ঋণ পরিশোধ করতে হবে না। দেউলিয়াত্ব একটি ব্যবসাপ্রতিষ্টান বা ব্যক্তিকে ঋণ ক্ষমা করে নতুন করে ব্যবসা শুরু করার সুযোগ করে দেয়,আর পাওনাদাররাও নিজেদের সম্পূর্ণ টাকা না পেলেও আংশিক পায় ফলে ক্ষতির পরিমাণ একটু হলেও কম হয়ে যায়।

২.দেউলিয়া হওয়ার শর্ত|কোন কোন ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে ২০২৩

বাংলাদেশে দেউলিয়া বিষয়ক আইন এবং দেউলিয়া বিষয়ক আদালত রয়েছে।কোন ব্যক্তি,প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যাংক নিজেদেরকে দেউলিয়া ঘোষণা করার আবেদন করলেই তাদের দেউলিয়া ঘোষণা করা হবে না।তাদের সামগ্রিক অবস্থা বিচার-বিবেচনা করে কিছু শর্তসাপেক্ষে দেউলিয়া বলা হবে।কোন কোন ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে ২০২৩ আর্টিকেলের এই অংশে আমরা বাংলাদেশ দেউলিয়া বিষয়ক আইন ১৯৯৭ অনুযায়ী কাদেরকে দেউলিয়া বলা হবে এবং কাদেরকে দেউলিয়া বলা হবে না তা জানতে পারবো।

যাদেরকে দেউলিয়া ঘোষণা করা যাবে:

  1. কোন বিদেশী নাগরিক বাংলাদেশে নূন্যতম এক বছর যাবত অবস্থান করলে এবং বাংলাদেশে অবস্থান কালে যদি ঋণগ্রস্ত হয় এবং দেউলিয়াত্ব মূলক কোনো কর্ম সম্পাদনা করে তাহলে তাকে দেউলিয়া ঘোষণা করা যাবে।অনুরূপভাবে কোনো বিদেশি বাংলাদেশি নাগরিকের বিরুদ্ধে দেউলিয়া ঘোষণার আবেদন করতে পারবে।
  2. জেলখানায় বন্দি কয়েদিকেও শর্তসাপেক্ষে দেউলিয়া ঘোষণা করা যায়।
  3. কোন বিবাহিত মহিলা যদি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং ঋণ পরিশোধের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ তার না থাকে তাহলে তাকেও দেউলিয়া ঘোষণা করা যাবে।
  4. কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ যদি বেড়ে যায় এবং ব্যাংকের সম্পদ দ্বারা আমানতদারদের আমানত পূরণ অসম্ভব হয় তাহলে সেই ব্যাংকে দেউলিয়া ঘোষণা করা যাবে।
  5. দেউলিয়া বিষয়ক আইন ১৯৯৭ এর ২(৩৬) ধারায় কোন কোম্পানি,ব্যাংক, সংবিধিবদ্ধ বা অন্যবিধ সংস্থা,সমিতি ও অংশীদারি কারবার কে 'ব্যক্তি' হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার কারণে কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান কেও দেউলিয়া হিসেবে ঘোষণা করা যাবে।এই আইনের অধীন অপরাধ সংগঠনকারী ব্যক্তি যদি কোম্পানি, ব্যাংক বা সমিতি হয় তাহলে উক্ত কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের মালিক,পরিচালক, ব্যবস্থাপক,সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তা বা প্রতিনিধি কর্তৃক অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে গণ্য হবে,যদি না তিনি প্রমাণ করতে পারেন যে উক্ত অপরাধ তার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হয়েছে অথবা উক্ত অপরাধ সংগঠন রোধ করার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন।

৩.যেসব ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে|কোন কোন ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে ২০২৩

একটি ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থা মূল্যায়ন করা হয় তিনটি সূচকের উপর।এগুলো হলো খেলাপি ঋণের পরিমাণ,প্রভিশন ঘাটতি সংরক্ষণ ও মূলধনের পরিমান।যে সব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেশি,প্রভিশন ঘাটতি ও মূলধনের স্বল্পতা রয়েছে সে সব ব্যাংক বেশি সংকটে আছে।এই তিনটি সূচকের আরও অবনতি হলে ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে।কোন কোন ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে ২০২৩ আর্টিকেলের এই অংশে আমরা যেসব ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে তার তালিকা নিয়ে আলোচনা করব।
বাংলাদেশের অন্তর্গত ব্যাংকসমূহের ক্যামেলস রেটিং ২০২২ অনুযায়ী প্রান্তিক বা সংকটপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ১০ টি ব্যাংক।এগুলো হলো:
  1. বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক
  2. বেসিক ব্যাংক
  3. বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক
  4. বাংলাদেশ ন্যাশনাল ব্যাংক
  5. জনতা ব্যাংক
  6. অগ্রণী ব্যাংক 
  7. আইসিবি ইসলামি ব্যাংক
  8. রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক
  9. রুপালী ব্যাংক
  10. সোনালি ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে তালিকায় উল্লিখিত ব্যাংকের মধ্যে কয়েকটি ব্যাংক অধিক ঋণ খেলাপি,প্রভিশন ঘাটতি ও মূলধন ঘাটতিতে বেশি ভুগছে।এগুলো হলো জনতা,বেসিক,রুপালী,ন্যাশনাল ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।ব্যাংকগুলোর মধ্যে সোনালী,জনতা,রুপালী এবং বেসিক ব্যাংকের সার্বিক অবস্থার সংকট থাকলেও দেউলিয়া হপয়ার সম্ভাবনা নেই।কারন এগুলো রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক। রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক সমূহ দেউলিয়া হতে গেলে আগে রাষ্ট্র দেউলিয়া হতে হবে।অর্থাৎ বাংলাদেশ দেউলিয়া হলেই কেবল এসব ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে।নয়তো এসব রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা সংকটপূর্ণ হলেও এগুলোর দেউলিয়া হওয়ার আশংকা নেই।

অন্যদিকে তালিকায় উল্লিখিত অন্যান্য ব্যাংকগুলোর সংকট মোকাবিলা করে অবস্থার উন্নতি না হলে এসব ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে।তবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫২বছরের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হয় নি।তাই আশা করা যায় সংকট কাটিয়ে খুব শীঘ্রই এসব ব্যাংক পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে।

৪.প্রশ্ন-উত্তর পর্ব।কোন কোন ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে ২০২৩

কোন কোন ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে ২০২৩ আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আর্টিকেল সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করব।
  1. প্রশ্ন: খেলাপি ঋণ কি?                    উত্তর:কোনো কারণে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর যখন কোনো ঋণ বা ঋণের কিস্তি ফেরত পাওয়া না যায়,তখন ঐ ঋণকে খেলাপি ঋণ বলে।
  2. প্রশ্ন: প্রভিশন কি?                             উত্তর:সব ধরনের ব্যাংক যেসব ঋণ বিতরণ করে, তার গুণমান বিবেচনায় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিরাপত্তা সঞ্চিতি হিসেবে জমা রাখতে হয়।একেই প্রভিশন বলে।
  3.  প্রশ্ন: ক্যামেলস ( CAMELS) রেটিং কী?   উত্তর:ক্যামেলস (CAMELS) রেটিং হলো Capital adequacy, Assets,  Management capability, Earnings, Liquidity , Sensitivity to Market এর প্রধম অক্ষরগুলোর সমন্বয়ে একটি সংক্ষিপ্ত রূপ।একটি ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা মূল্যায়ন করার জন্য ক্যামেলস রেটিং ব্যবহার করা হয়।
  4. প্রশ্ন: ব্যাংক দেউলিয়া হলে আমানতকারীদের ক্ষতিপূরণ কিভাবে দেওয়া হবে?           উত্তর:‘আমানত সুরক্ষা আইন-২০২০’ অনুযায়ী কোনো ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া বা বন্ধ  হলে প্রত্যেক আমানতকারী সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাবেন। ওই প্রতিষ্ঠানের কোনো গ্রাহকের একাধিক অ্যাকাউন্টে এক লাখ টাকার বেশি থাকলেও তিনি সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকাই পাবেন।

৫.লেখকের মন্তব্য|কোন কোন ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে ২০২৩

আধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ব্যাংক একটি দেশের প্রধান অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি কেননা অর্থনীতির বিকশের জন্য প্রয়োজন উৎপাদনখাতে বিনিয়োগ আর ব্যাংকের কাজ হলো উক্তরূপ বিনিয়োগের জন্য পুঁজি সংগ্রহ ও সরবরাহ করা।তাই দেশের অর্থনীতিতে ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ প্রভব রয়েছে।

কোন কোন ব্যাংক দেউলিয়া হতে পারে ২০২৩ আর্টিকেলে আমরা বাংলাদেশের ব্যাংক সমূহের ভিতর কয়েকটি ব্যাংকের অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে আলোচনা করেছি।আর্টিকেল সম্পর্কিত যেকোন প্রশ্ন,অভিযোগ,পরামর্শ কিংবা মতামত আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা আপনাদের প্রত্যেকটি কমেন্টের যথাযথ উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।এরকম আরও তথ্যবহুল আর্টিকেল পড়তে ঘুড়ে আসুন আমাদের ওয়েবসাইট The DU Speech 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url