OrdinaryITPostAd

রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয়!

রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি এই বিষয়ে অনেকেই জানতে চেয়েছেন। আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করবো রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি সেই বিষয়ে।রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে বা রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হলে আজকের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে পড়ুন।

আর্টিকেল সূচিপত্র (যে অংশ পড়তে চান তার ওপর ক্লিক করুন)

  1. রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ
  2. রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে কি রোজা ভেঙ্গে যায়?
  3. রমজান মাসে দিনের বেলায় স্বপ্নদোষ হলে কি রোজা ভেঙ্গে যায়?
  4. ফরজ গোসল
  5. সেহেরি খাওয়ার আগে ফরজ গোসল করতে হবে কিনা?
  6. রমজান মাসে সহবাস করার নিয়ম
  7. লেখকের মন্তব্য

১.রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ | রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয়

রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কী তা জানতে অনেকেই লজ্জাবোধ করেন। এ অবস্থায় রোজা ভেঙে গেছে মনে করে অনেকেই দিনের বেলায় পানাহার করে থাকে। আসলে এ বিষয়টি জেনে নেয়া লজ্জার কোনো বিষয় নয়। রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষে করণীয় তুলে ধরা হলো-কেউ কেউ মনে করেন, রোজা অবস্থায় যদি স্বপ্নদোষ হয়, তাহলে রোজা ভেঙে যায়। তাদের এ ধারণা ঠিক নয়। স্বপ্নদোষের কারণে রোজা ভাঙে না।হাদিসের বর্ণনায় এসেছে, তিনটি বস্তু রোজা ভঙ্গের কারণ নয়
  1. বমি,
  2. শিঙ্গা লাগানো,
  3. স্বপ্নদোষ।
সুতরাং রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভেঙে যায় ভেবে পানাহার করা ঠিক নয়। বরং রোজা পালন করে তা পরিপূর্ণ করা।

২.রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে কি রোজা ভেঙ্গে যায়? | রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয়

সব মাসের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মাস হলো রমজান। রমজান মাস রহমতের মাস। মাগফিরাতের মাস। নাজাতের মাস। এ মাস আমাদের ওপর বর্ষন করে যাচ্ছে। রমজান নিয়ে মানুষের আছে নানা প্রশ্ন। তেমনি কিছু প্রশ্ন হলো রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি বা স্বপ্নদোষ হলো রোজা ভেঙে যায় কি? স্বপ্নদোষ মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরের বিষয়। এটি ঘুমের ভেতরে হয়ে থাকে। ঘুমের ভেতরে স্বপ্নদোষ হলে স্বপ্নদোষের কারণেও রোজা ভাঙে না। তবে স্বপ্নদোষের কারণে গোসল ফরজ হয়। কিন্তু কেউ কেউ মনে করেন, রোজা অবস্থায় যদি স্বপ্নদোষ হয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। তাদের এ ধারণা সঠিক নয়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তিনটি জিনিস রোজা ভঙ্গের কারণ নয়। বমি, শিঙ্গা লাগানো ও স্বপ্নদোষ।’ (জামে তিরমিজি : ৭১৯, বায়হাকি : ৪/২৬৪)

অনেকে এই ভয়ে রমজান মাসে দিনের বেলা ঘুমান না, মনে করেন স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভেঙে যাবে। এ ধারণা ঠিক নয়। সুতরাং রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভেঙে যায় ভেবে পানাহার করা ঠিক নয়। বরং রোজা পালন করে তা পরিপূর্ণ করা। রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভেঙে যায় এ ধারণা ঠিক নয়। (ফতওয়ায়ে শামি, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ৩৬৬)

৩.রমজান মাসে দিনের বেলায় স্বপ্নদোষ হলে কি রোজা ভেঙ্গে যায়? | রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয়

রমজান মাসে রোজা থাকা অবস্থায় দুপুর বেলায় না ঘুমানোর কোন কারণ নেই। দুপুর বেলা ঘুমালে রোজা ভাঙ্গে না। এমনকি দুপুর বেলা ঘুমের মধ্যে স্বপ্নদোষ হলে সেটার কারণে রোজা নষ্ট হয় না।রমজান মাসে দিনে স্বপ্নদোষ হলে করণীয় হলো স্বপ্নদোষ হলে গোসল করা ফরজ হয়ে যায়। উম্মুল মুমিনীন হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) বলেন, আবু তালহা (রাঃ) এর স্ত্রী উম্মে সুলাইম (রাঃ) হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আল্লাহ তাআলা ছিলেন সত্যের বিষয়ে নিঃসঙ্কোচ। তিনি জিজ্ঞাসা করেন কোন নারীর যদি স্বপ্নদোষ হয় তাহলে কি তার ওপর গোসল করা ফরজ হয়ে যায়? আল্লাহর রাসূল (সাঃ) উত্তরে বলেছিলেন," হ্যাঁ" তবে সে যদি পানি বা ভেজা দেখতে পান। (সহিহ বুখারী ১/৪২) অর্থাৎ এই হাদিস থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, মেয়েদের ও ছেলেদের মতোই স্বপ্নদোষ হয়। আর স্বপ্নদোষ হলে উভয়ের (ছেলে এবং মেয়ে) গোসল করা ফরজ হয়ে যায়।

৪.ফরজ গোসল | রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয়

যে গোসল করা অপরিহার্য তাকে ফরজ গোসল বলে।রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয় হলো ফরজ গোসল। ঘুমের মধ্যে কারো স্বপ্নদোষ হলে স্বামী স্ত্রীর মিলনে ফরজ গোসল করতে হয়। আর সেটা থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্য আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা যদি নাপাক হয়ে থাক, তাহলে গোসল করো।[ সূরা মায়েদাহঃ ৬] মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন - হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন মাতাল অবস্থায় থাকো তখন তোমরা নামাজের ধারের কাছে যেও না। যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা না বুঝতে পারবে তোমরা কি বলছো। আবার যৌন সঙ্গম করার পরে যতক্ষণ না গোসল করছ। [ সূরা আন নিসাঃ ৪৩] 
যেসব কারণে ফরজ গোসল করতে হয় তা হলো,
  1. স্বপ্নদোষ বা উত্তেজনাবশত বীর্যপাত হলে
  2. নারী-পুরুষ মিলনে সহবাসে বীর্যপাত হোক বা না হোক
  3. ইসলাম গ্রহণ করলে (নব মুসলিম হলে)
  4. স্বপ্নের কথা মনেই থাকুক বা না থাকুক শরীর, কাপড় বা বিছানায় বীর্যের কোন চিহ্ন দেখতে পেলে
  5. নিফাস (সন্তান প্রসবের পর যে রক্ত স্রাব হয়) শেষ হলে
  6. মহিলাদের মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধ হলে
  7. স্ত্রী-পুরুষ কারো উত্তেজনার সাথে বীর্যপাত বের হলে
  8. ফরজ গোসল ছাড়া নামাজ হবে না

৫.সেহেরি খাওয়ার আগে ফরজ গোসল করতে হবে কিনা? | রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয়

ইসলামের সমস্ত আদেশ-নির্দেশ, হুকুম আহকাম পালন সবকিছু পবিত্রতার উপর নির্ভর করে। সেজন্য পবিত্রতাকে বলা হয়েছে ঈমানের অঙ্গ। এখানে পবিত্রতা বলতে বাতেনী ও জাহেরী সকল প্রকার নাপাকি হতে পবিত্র হবার কথা বুঝানো হয়েছে। পবিত্রতার উপকারিতা এবং ফজিলত অনেক। রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে গোসলের নিয়ম ও রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয় হলো ফরজ গোসল করা।

ফরজ গোসল না করে সেহরি খাওয়া যাবে কি না? গোসল ফরজ হওয়া অবস্থায় তাওয়াফ, নামাজ, মসজিদে যাওয়া  এবং  কোরআন তেলাওয়াত ও স্পর্শ করা ছাড়া বাকি সবগুলো কাজ করা যাবে। এমনকি সেহরি ও খেতে পারবেন। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, গোসল ফরজ হওয়ার পরও বিনা কারণে অপবিত্র অবস্থায় এক অক্ত নামাজের সময় পার হয়ে যাওয়া মারাত্মক গুনাহ। (বাদায়ে ১/১৫১)

৬.রমজান মাসে সহবাস করার নিয়ম |  রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয়

রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি এর পাশাপাশি রমজান মাসে সহবাস করার নিয়ম নিয়েও অনেকেই জানতে চান।আল্লাহতালা বলেছেন রমজান মাসে ইফতারের পর থেকে সেহরির আগমুহূর্ত পর্যন্ত স্ত্রীর সাথে সহবাস হালাল করেছেন। তবে রমজান মাসে সহবাসের ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।কারণ রমজান মাসে কেউ যদি রোজা থাকা অবস্থায় দিনের বেলায় সহবাসে লিপ্ত হয় তার জন্য নিম্নের বিষয়গুলো বর্ধিত হবে -
  • সে গুনাহগার হবে
  • তার সেই দিনের রোজা টা নষ্ট হবে
  • সেদিনের রোজার কাযা ওয়াজিব করা হবে
  • সেদিনের বাকি অংশ পানাহার এবং যৌন মিলন থেকে বিরত থাকবে
  • সেদিনের রোজার কাফফারা ওয়াজিব হবে অর্থাৎ একনাগাড়ে ষাট দিন রোজা রাখতে হবে

৭.লেখকের মন্তব্য | রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয়

আজকে আমরা রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি এই বিষয়ে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আশা করছি রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি এই বিষয়ে আপনারা সকল তথ্য ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।রমজান মাসে স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি এই সম্পর্কে আপনাদের যেকোন প্রশ্ন অথবা মতামত আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। রোজা সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইট THE DU SPEECH ভিজিট করতে পারেন।
আর্টিকেলটি লিখেছেন: নুসরাত জাহান হিভা 
পড়াশোনা করছেন: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় 
লেখকের জেলার নাম: কুমিল্লা



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন:  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। 
জেলা: নাটোর

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url