বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায়
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় যা সংক্ষেপে বুয়েট নামে পরিচিত,বাংলাদেশের অন্যতম স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ।প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী বুয়েটে পরীক্ষা দেন।তাই শিক্ষার্থীরা বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী থাকেন।এই আর্টিকেলে বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায় সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইলো।
আর্টিকেল সূচিপত্র (যে অংশ পড়তে চান তার ওপর ক্লিক করুন)
- বুয়েটের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
- বুয়েট স্থাপনের ইতিহাস
- বুয়েটের বিভাগসমূহ
- বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা
- বুয়েটে চান্স পাওয়ার উপায়
- আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর
- লেখকের মন্তব্য
১.বুয়েটের সংক্ষিপ্ত পরিচয়।বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায়
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা সংক্ষেপে বুয়েট দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রকৌশল-সম্পর্কিত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান।এটি ঢাকা শহরের লালবাগ থানার পলাশী এলাকায় অবস্থিত।১৮৭৬ সালে ঢাকা সার্ভে স্কুল নামে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি পরবর্তীতে আহসানউল্লাহ স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং এ পরিণত করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে এর নাম হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।বর্তমানে এটি দেশের প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শীর্ষে এবং বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে।
আরও পড়ুনঃ ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে?
২.বুয়েট স্থাপনের ইতিহাস।বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায়
সর্বপ্রথম উদ্যোগ:
বুয়েট উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে জরিপকারদের জন্য একটি জরিপ শিক্ষালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৭৬ সালে তদানীন্তন ব্রিটিশ রাজ ঢাকা সার্ভে স্কুল নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করে।তৎকালীন নওয়াব খাজা আহসানউল্লাহ এ বিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহী হন এবং এক লক্ষ ১২ হাজার টাকা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তার মৃত্যুর পর তার পুত্র নওয়াব সলিমুল্লাহ ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন এবং এর স্বীকৃতি হিসেবে ১৯০৮ সালে বিদ্যায়তনটির নামকরণ করা হয় আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বাংলার শিল্পায়নের জন্য তৎকালীন সরকার ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তৎকালীন সরকার নিযুক্ত একটি কমিটি যন্ত্র, তড়িৎ, কেমি ও কৃষি প্রকৌশলে ৪ বছর মেয়াদী ডিগ্রি কোর্সে ১২০ জন ছাত্রের জন্য ঢাকায় একটি প্রকৌশল কলেজ স্থাপন এবং স্কুলটিকে তৎকালীন পলাশী ব্যারাকে স্থানান্তর করে।১৯৪৭ সালের মে মাসে সরকার ঢাকায় আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলে পরীক্ষা নেয়।
দেশবিভাগের পর:
১৯৪৭ এর দেশবিভাগের ফলে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের মুষ্টিমেয় কয়েকজন শিক্ষক ছাড়া বাকি শিক্ষকদের সবাই ভারতে চলে যান ও ভারত থেকে ৫ জন শিক্ষক এ স্কুলে যোগদান করেন।১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান সরকার এই কলেজটিকে অনুমোদন দেন।
স্বাধীনতার পর:
১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পরে এর নাম পরিবর্তন করে বর্তমানের নাম, অর্থাৎ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় রাখা হয়।বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার পূর্বে অবশ্যই বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায় সম্পর্কে জানা থাকতে হবে।
৩. বুয়েটের বিভাগসমূহ।বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায়
বুয়েটে বর্তমানে ৫ টি অনুষদের অধীনে ১৮ টি বিভাগ রয়েছে।এই বিভাগগুলো পড়তে চাইলে অবশ্যই বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায় সম্পর্কে জানতে হবে।
অনুষদ ও বিভাগগুলো হলো:
প্রকৌশল অনুষদ
- কেমিকৌশল বিভাগ (ChE)
- বস্তু ও ধাতব কৌশল বিভাগ (MME)
- রসায়ন বিভাগ
- গণিত বিভাগ
- পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
- পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ কৌশল বিভাগ
- ন্যানোম্যাটেরিয়ালস এন্ড সিরামিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
স্থাপত্য এবং পরিকল্পনা অনুষদ
- স্থাপত্য বিভাগ
- নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ
- মানবিক বিভাগ
তড়িৎ এবং ইলেকট্রনিক কৌশল অনুষদ
- তড়িৎ এবং ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগ ("EEE")
- কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ ("CSE")
- জৈব চিকিৎসা কৌশল বিভাগ ("BME")
যন্ত্র কৌশল অনুষদ
- যন্ত্রকৌশল বিভাগ ("ME")
- নৌযান ও নৌযন্ত্র কৌশল বিভাগ ("NAME")
- শিল্প ও উৎপাদন কৌশল বিভাগ ("IPE")
পুরকৌশল অনুষদ
- পুরকৌশল বিভাগ (CE)
- পানি সম্পদ কৌশল বিভাগ (WRE)
ইনস্টিটিউটসমূহ
জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্প্রসারণ এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে বুয়েটে ৪টি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। এগুলো হলঃ
- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ইন্সটিটিউট (আইআইসিটি)
- পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট (আইডব্লিউএফএম)
- এপ্রোপ্রিয়েট টেকনোলজি ইনস্টিটিউট (আইএটি)
- দুর্ঘটনা গবেষণা ইন্সটিটিউট (এআরআই)
আরও পড়ুনঃ ইংরেজি শেখার সহজ উপায়
৪.বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা।বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায়
বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায় সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা কমবেশি জানেন।শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশের যেকোন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড/কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে গেড পদ্ধতিতে বিজ্ঞান বিভাগে (গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন সহ) ৫.০০ এর স্কেলে ন্যূনতম জিপিএ ৪.০০ পেয়ে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট/দাখিল/সমমান পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। অথবা বিদেশি শিক্ষা বোর্ড থেকে সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড পেয়ে পাশ করতে হবে।
শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশের যেকোন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড/ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে উচ্চ মাধ্যমিক/আলীম/ সমমানের পরীক্ষায় গেড পদ্ধতিতে ৫.০০ এর স্কেলে জিপিএ ৫.০০ পাশ করে হবে।
গণিত বিষয়ে ২০০ নম্বরের মধ্যে ন্যূনতম ১৭০ নম্বর এবং পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয় সমূহে ৪০০ নম্বরের মধ্যে ন্যূনতম মোট ৩৭২ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক/ আলীম/ সমমানের পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। অথবা বিদেশী শিক্ষা বোর্ড থেকে সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড/ নম্বর পেয়ে পাশ করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন মুড সুইং এর আসল কারণ
৫.বুয়েটে চান্স পাওয়ার উপায়।বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায়
বুয়েট বাংলাদেশের প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানীয়।তাই বুয়েটে চান্স পাওয়া সহজ নয়।তাই শিক্ষার্থীরা জানতে চান বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায় সম্পর্কে। যেকোনো ভালো প্রতিষ্ঠানে চান্স পেতে সবচেয়ে বেশি দরকার মনোযোগ এবং কঠোর পরিশ্রম।শুধু পড়াশোনা করলেই হবে না,রুটিন মাফিক পড়াশোনা করতে হবে।
তবে এমন অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যারা দিনরাত ২৪ ঘন্টা পড়াশোনা করে কিন্তু পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারে না।এর মূল কারণ হলো পরীক্ষার জন্য সঠিক প্রস্তুতি না নেওয়া। শুধু পাঠ্য বই পড়লেই হবে না,বইয়ের বাইরের জ্ঞান থাকতে হবে, সৃজশীলতা থাকতে হবে।সর্বশেষ একাগ্রতার সাথে প্রস্তুতি নিলে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া সম্ভব।
৬.আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর।বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায়
প্রশ্ন ১:বুয়েটে কয়টি অনুষদ রয়েছে?
উত্তর:৫টি।
প্রশ্ন ২:বুয়েটে চান্স পেতে শিক্ষার্থীকে কোন বিভাগের হতে হবে?
উত্তর:বিজ্ঞান বিভাগের।
প্রশ্ন ৩:শিক্ষার্থীকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় কত গ্রেড পয়েন্ট পেতে হবে?
উত্তর:৫.০০
প্রশ্ন ৪:শিক্ষার্থীকে গণিতে কত পেতে হবে?
উত্তর:২০০ এর মধ্যে ১৭০।
প্রশ্ন ৫:শিক্ষার্থীকে পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নে কত পেতে হবে?
উত্তর:৪০০ মধ্যে ৩৭২।
প্রশ্ন ৬:বুয়েটে চান্স পাওয়ার উপায় কি?
উত্তর: একাগ্রতা ও কঠোর পরিশ্রম।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার উপায়
৭.লেখকের মন্তব্য।বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায়
প্রত্যেক বছর বিজ্ঞান বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।তারা বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায় সম্পর্কে জানতে চান।বুয়েটে চান্স পাওয়া সহজ নয়।তবে সঠিক নিয়মে পড়শোনা ও পরিশ্রম পারে বুয়েটে পড়ার চান্স করে দিতে।
এই আর্টিকেলে বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায় সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে।আশা করছি যারা আর্টিকেলটা সম্পূর্ণ পড়েছেন তারা বুয়েটে চান্স পাওয়ার যোগ্যতা ও উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন এবং এই তথ্যের সাহায্যে উপকৃত হয়েছেন।
লেখক: রাজিয়া সুলতানা
পড়াশোনা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন।
জেলা: দিনাজপুর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে।
জেলা: নাটোর
আরও পড়ুনঃ আক্কেল দাঁতের সমস্যায় যা যা করবেন
The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url