OrdinaryITPostAd

বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

অনেক প্রবাসী ভাইয়েরা বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তাই আজকে আমরা বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। বিদেশ থেকে কিভাবে ব্যাংকে টাকা পাঠানো যায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আজকের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে পড়ুন।

আর্টিকেল সূচিপত্র (যে অংশ পড়তে চান তার ওপর ক্লিক করুন)

  1. বিদেশ থেকে দেশে ব্যাংকে টাকা পাঠানো
  2. বিদেশ থেকে সোনালী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
  3. সোনালী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর সুবিধা
  4. বিদেশ থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
  5. ডাচ বাংলা ব্যাংকে টাকা পাঠানোর সুবিধা
  6. বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
  7. একনজরে বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
  8. লেখকের মন্তব্য

১.বিদেশ থেকে দেশে ব্যাংকে টাকা পাঠানো | বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম

প্রবাসী কর্মী সরকার হিসাব অনুযায়ী বিশ্বের প্রায় ১৬৮ টি দেশে বাংলাদেশি কর্মীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। যার সংখ্যা হল প্রায় ১ কোটি ২০ লাখেরও বেশি। প্রত্যেক কর্মী বা রেমিটেন্স যোদ্ধা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন কাজে অবস্থান করছেন। আর দিনের পর দিন তারা কাজ করে মাসে একটা নির্দিষ্ট রেমিটেন্স আয় করে থাকে যেটা বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় তারা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থান সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে।পুরাতন যারা বিদেশে অবস্থান রয়েছেন তারা অনেকেই জানেন বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম। তবে নতুন যারা বিদেশে অবস্থান করছেন বা নতুন যারা তাদের জন্য বিদেশে গিয়েছেন তারা অনেকেই এই জিনিসটি জানেন না।

আপনি যখন প্রথম স্যালারি পাবেন বিদেশ থেকে, তখন আপনার দেশে থাকা আত্মীয়-স্বজন বা প্রিয় মানুষের নিকট সেই টাকাটি পাঠাতে চাইবেন। অনেক সময় পাঠানোর দরকার পডরে। কেননা আমাদের দেশের অর্থনৈতিক অবস্থান এখন খুব একটা ভালো হলেও বিগত দিনের অতটা ভাল ছিলনা। আর অধিকাংশ মানুষ অভাবের কারণে বিদেশে অবস্থান করে কাজের জন্য। আর কাজ শেষে তাদের কষ্টার্জিত টাকা গুলো কিভাবে দেশে পাঠাবে সেটা নিয়ে তাদের চিন্তা করতে হয়।মূলত বিদেশ থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর অনেক নিয়ম রয়েছে। তবে কিছু জটিল এবং কিছু সহজ পদ্ধতি রয়েছে। কিন্তু এইসব নিয়মের মধ্যে বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম টা আজকে আপনাদেরকে খুলে বলবো। যেটি জানার পরে আপনারা খুব সহজেই বিদেশ থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠাতে পারবেন এবং সাথে সরকারের প্রণোদনা 2% পার্সেন্ট বোনাস পাবেন।

২.বিদেশ থেকে সোনালী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম | বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম

বিদেশ থেকে সরাসরি সোনালী ব্যাংকে যদি টাকা পাঠাতে চান তবে আপনাকে বিদেশে থাকা কিছু এজেন্ট বা এক্সচেইন্জ হাউজের সাহায্য নিতে হবে। এছাড়াও আপনার কাছে আপনার রিসিভারের কিছু তথ্য থাকা লাগবে। যেমন: ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার, নাম, ইত্যাদি, যার মাধ্যমে আপনি দেশে আপনার প্রিয়জনের নিকট টাকা পাঠাতে পারবেন।

আসুন নিচে দেখে নেয়া যাক কি কি তথ্য আপনার দরকার হবে এবং বিদেশ থেকে দেশে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর প্রসেসটি কি।
  • রেমিটেন্স রিসিভারের সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট নাম্বার।
  • রিসিভারের পুরো নাম এবং ঠিকানা।
  • সোনালী ব্যাংকের ব্র্যাঞ্চের নাম।
  • ব্রাঞ্চ সুইফ্ট কোড।
এগুলো ছাড়াও আরো কিছু তথ্য দরকার হতেও পারে, যা নির্ভর করে আপনি কোন মাধ্যমে টাকা পাঠাচ্ছেন। তবে এখানে উল্লেখিত তথ্য সমূহ কমন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শুধু এগুলো দিয়েই হয়ে যাবে।

সরাসরি দেশের বাইরে থেকে দেশে সোনালী ব্যাংকে টাকা বা রেমিটেন্স পাঠাতে হলে যা যা করতে হবে তা নিচে বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করা হলো।

  1. প্রথমে আপনাকে আপনার নিকটস্থ এক্সচেইন্জ হাউজে যেতে হবে।
  2. সেখানে আপনার দেশে টাকা পাঠানোর ব্যাপারে তাদের জানাতে হবে।
  3. তারপর তারা আপনার জন্য ফর্ম পূরণ করবেন।
  4. সেখানে আপনার রিসিভারের তথ্য নির্ভুল ভাবে দিন, যাতে পরে কোনো সমস্যায় না পড়তে হয়।
  5. ভুল তথ্যের জন্য আপনার লেনদেন হোল্ড হতে পারে। এতে টাকা ফেরত পেলেও সময় নষ্ট হবে। তাই আপনার তথ্য রিচেক করুন।
  6. সবকিছু ঠিক থাকলে এবং আপনার টাকা বুঝিয়ে দিলে তারা আপনার টাকা সোনালী ব্যাংকে ট্রান্সফার করে দিবে।

৩.সোনালী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর সুবিধা | বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম

আপনি যদি বিদেশ থেকে সোনালী ব্যাংকে টাকা পাঠান তবে আপনি কিছু সুবিধা পাবেন। সুবিধা গুলো কি কি আসুন তা দেখে নেয়া যাক।

  • সোনালী ব্যাংক আপনাকে বৈধ পথে রেমিটেন্স আনার সুবিধা দিচ্ছে।
  • এই মাধ্যমে আপনি সহজে এবং দ্রুত আপনার টাকা দেশে পাঠাতে পারবেন।
  • দেশে পাঠানো টাকার সাথে আপনি ২.৫% প্রনোদনা পাবেন ইত্যাদি।
সবচেয়ে বড় কথা হলো, এখানে আপনার টাকা সেইফলি দেশে পৌছে যাবে। আরো বেশ কিছু লেনদেনের মাধ্যম আছে, যারা তুলনামূলক সেইফ নয়

৪.বিদেশ থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম | বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম

বিদেশ থেকে খুব সহজে ডাচ বাংলা ব্যাংকে টাকা পাঠনোর নিয়ম অনুসরণ করে দেশে প্রিয়জনের নিকট টাকা পাঠানো যায়। সরাসরি টাকা পাঠানো যাবে প্রিয়জনের ব্যাংক একাউন্টে। এর জন্য আপনাকে আপনার নিকটস্থ এক্সচেইন্জ হাউজে যেতে হবে। সেখানে আপনার রিসিভারের কিছু তথ্য দেয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার টাকা দেশে সেন্ড করতে পারবেন।

একাউন্ট থাকলে বা একাউন্ট খোলা সম্পন্ন হলে আপনি আপনার রিসিভার থেকে সেই একাউন্টের নাম্বার সংগ্রহ করে নিন। সেই সাথে আরো কিছু জিনিস সংগ্রহ করুন, যেমন: আপনার রিসিভারের নাম, অর্থাৎ যে নাম তিনি ব্যাংকে ব্যবহার করেছেন সেই নাম। নাম দেয়ার সময় খেয়াল রাখবেন যেন কোনো ভুল না হয়।

সেই সাথে আরো লাগবে যে ব্র্যাঞ্চে আপনার রিসিভারের একাউন্ট আছে সেই ব্র্যাঞ্চের নাম এবং ব্র্যাঞ্চ কোড। এগুলো সংগ্রহ করে নিন একদম নির্ভুল ভাবে, যাতে কোনো সমস্যায় না পড়তে হয়।তথ্য নির্ভুল ভাবে দিতে হবে। কারণ, কিছু ভুল হলে আপনার ট্রান্জেকশন সফল নাও হতে পারে, অথবা ট্রান্জেকশন হোল্ডও হয়ে যেতে পারে। তাই এই বিষয়ে সাবধান হওয়া জরুরি।

অনুমোদিত এক্সচেইন্জ হাউজের সাথে লেনদেন সম্পন্ন হওয়ার পর তারা আপনাকে একটি টোকেন দিবে। এই টোকেনটি আপনি সংগ্রহ করে রাখবেন, যাতে কোনো প্রয়োজনে তা ব্যবহার করতে পারেন

ডাচ বাংলা ব্যাংকে টাকা পাঠাতে যা যা লাগবে
  • রিসিভারের ডিবিবিএল একাউন্ট
  • রিসিভারের পুরো নাম
  • একাউন্ট যে শাখায় খোলা, সে শাখার নাম
  • সেই শাখার কোড, মানে ব্র্যাঞ্চ কোড

৫.ডাচ বাংলা ব্যাংকে টাকা পাঠানোর সুবিধা | বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম

আপনি যদি বিদেশ থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকে টাকা পাঠান তবে এখানে আপনি কিছু সুবিধা পাবেন। সচরাচর অন্যান্য ব্যাংক গুলোও তাদের পলিসি অনুযায়ি বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে কিছু সুবিধা দিয়ে থাকেন। তেমনি ডাচ বাংলা ব্যাংকও তাদের গ্রাহকদের কিছু সুবিধা দিয়ে থাকে। সেই সুবিধা গুলো কি কি, আসুন তা দেখে নেয়া যাক।

  • সহজে কিছু স্টেপ ফলো করে দেশে টাকা পাঠানো যায়।
  • এটি সম্পূর্ণ বৈধ একটি প্রক্রিয়া।
  • বৈধ প্রকৃয়ায় টাকা পাঠানোর কারণে সরকার কর্তৃক ঘোষিত প্রনোদনা পাওয়া যায়।
  • টাকা পাঠালে তা সরাসরি রিসিভারের একাউন্টে জমা হয়।
  • এ প্রকৃয়ায় টাকা পাঠানোর কোনো ঝুকি নেই, যেমনটা হুন্ডি বা অন্য কিছুতে আছে।

৬.বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম | বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম

আপনারা হয়তো ইসলামী ব্যাংকের সেলফিন এপ সম্পর্কে জেনে থাকবেন। এই এপটি ব্যবহার করতে আপনাকে প্রথমে একটি ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট তৈরী করতে হবে। চাইলে আপনারা অনলাইনেও এই একাউন্ট খুলতে পারবেন। আর একাউন্ট যদি থেকে থাকে তাহলে আপনাকে সেটা সেলফিনের সাথে যুক্ত করতে হবে।

আপনাকে যিনি টাকা পাঠাবেন তাকে ইসলামী ব্যাংকের ফরেন রেমিটেন্স হাউজ গুলো খুজে নিতে হবে। সেই সাথে যিনি টাকা পাঠাবেন তার আপনার কিছু তথ্যও প্রয়োজন হবে। সেখানে ব্যাংকে গিয়ে আপনার এসব তথ্য টাকা সহ ‍সাবমিট করলে তারা তাকে একটি ইউজার স্লিপ দিবেন। সেই সাথে টাকা ট্রান্সফার করে দিবে।

বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে রিসিভারের (অর্থাৎ আপনার বা যিনি টাকা গ্রহণ করবেন) কিছু তথ্য প্রয়োজন হয় যা সেন্ডার কে সরবরাহ করতে হয়। যা যা দরকার হবে তা নিচে উল্লেখ করে দেয়া হল।
  • সেলফিন ফ্রি ভার্চুয়াল কার্ড নাম্বার।
  • একাউন্ট ধারীর পুরো নাম।
  • একাউন্ট ধারীর মোবাইল নাম্বার।
আপনি যদি একটি সেলফিন একাউন্ট তৈরি করেন তবে আপনি একটি ফ্রি ভার্চুয়াল কার্ড পাবেন। এটি সবার জন্য ফ্রি। এই কার্ডের একটি নাম্বার থাকে। এই নাম্বারটি যিনি টাকা পাঠাবেন তাকে দিতে হবে।সেই সাথে আপনার পুরো নাম যেটা আপনি ব্যাংকে ব্যবহার করেছেন সেটা আপনার পরিচয় পত্র থেকে নির্ভুল ভাবে দিবেন এবং আপনার পার্সনাল মোবাইল নাম্বারও দিতে হবে।

৭.একনজরে বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম | বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম

  1. আপনার ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট লাগবে,
  2. একাউন্টের কিছু তথ্য রেমিটেন্স সেনন্ডারকে পাঠাতে হবে,
  3. রেমিটেন্স সেন্ডার ফরেন রেমিটেন্স হাউজ থেকে আপনার একাউন্টে টাকা পাঠাবে,
  4. টাকা পাঠানোর পর আপনাকে রেমিটেন্স পিন সরবরাহ করবে,
  5. সবশেষ টাকা ‍রিসিভ করার নিয়ম অনুসরণ করে আপনি টাকা রিসিভ করবেন।

৮.লেখকের মন্তব্য | বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম

বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আশা করছি সকল প্রবাসী ভাইয়েরা বুঝতে পেরেছেন কিভাবে বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠাতে হয়।বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম নিয়ে যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে সেটি আমাদের জানাতে পারেন। বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর নিয়ম ছাড়াও অন্য যে কোন বিষয় সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইট THE DU SPEECH ভিজিট করতে পারেন।
আর্টিকেলটি লিখেছেন: নুসরাত জাহান হিভা 
পড়াশোনা করছেন: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় 
লেখকের জেলার নাম: কুমিল্লা



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন:  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। 
জেলা: নাটোর

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url