সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব সম্পর্কে জানুন | সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশ
আসসালামু আলাইকুম। আশা করছি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব সম্পর্কে জানতে চান। তাই আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব নিয়ে। আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব।তাছাড়াও আমরা আজকের সিঙ্গাপুরের ভ্রমর সম্পর্কিত বিষয় নিয়েও আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করছি আপনারা সিঙ্গাপুর সম্পর্কিত সকল তথ্য জানতে পারবেন।
আর্টিকেল সূচিপত্র (যে অংশ পড়তে চান তার ওপর ক্লিক করুন)
- সিঙ্গাপুর সম্পর্কে ধারণা
- সিঙ্গাপুর নামকরণের ইতিহাস
- সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব কত
- বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর যেতে কত সময় লাগে
- সিঙ্গাপুর ভ্রমন
- বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর যাতায়াত
- লেখকের মন্তব্য
১.সিঙ্গাপুর সম্পর্কে ধারণা | সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব
সিঙ্গাপুর একটি ক্ষুদ্র ও ব্যাপকভাবে নগরায়িত দ্বীপরাষ্ট্র। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে মালয় উপদ্বীপের দক্ষিণতম প্রান্তে, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মাঝখানে অবস্থিত। সিঙ্গাপুরের স্থলভূমির মোট আয়তন ৬৯৯ বর্গকিলোমিটার। এর তটরেখার দৈর্ঘ্য ১৯৩ কিলোমিটার। এটি মালয়েশিয়া থেকে জোহর প্রণালী এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর প্রণালী দ্বারা বিচ্ছিন্ন।
সিঙ্গাপুরের মূল ভূখণ্ডটি একটি হীরকাকৃতি দ্বীপ, তবে এর প্রশাসনিক সীমানার ভেতরে আরও বেশ কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপ অবস্থিত। এদের মধ্যে পেদ্রা ব্রাংকা নামের দ্বীপটি সিঙ্গাপুর থেকে সবচেয়ে বেশি দূরত্বে অবস্থিত। সিঙ্গাপুরের সীমানার অন্তর্গত কয়েক ডজন ক্ষুদ্রাকার দ্বীপের মধ্যে জুরং দ্বীপ, পুলাউ তেকোং, পুলাউ উবিন ও সেন্তোসা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বড়।
সিঙ্গাপুর দ্বীপের বেশিরভাগ এলাকা সমুদ্র সমতল থেকে ১৫ মিটারের চেয়ে বেশি উঁচুতে অবস্থিত নয়। সিঙ্গাপুরের সর্বোচ্চ বিন্দুটির নাম বুকিত তিমাহ; এটি সমুদ্র সমতল থেকে ১৬৪ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত গ্র্যানাইট পাথরে নির্মিত একটি শিলা। সিঙ্গাপুরের উত্তর-পশ্চিমে আছে পাললিক শিলা দ্বারা নির্মিত ছোট ছোট টিলা ও উপত্যকা, অন্যদিকে পূর্বভাগ মূলত বালুময় সমতল ভূমি দিয়ে গঠিত। সিঙ্গাপুরে কোন প্রাকৃতিক হ্রদ নেই, তবে সুপেয় পানি সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য কৃত্রিম জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে।
সিঙ্গাপুর প্রশাসন সমুদ্রতলের মাটি, পর্বত ও অন্যান্য দেশ থেকে মাটি সংগ্রহ করে দেশটির স্থলভাগের আয়তন বৃদ্ধি করে চলেছেন। ১৯৬০-এর দশকে দেশটির আয়তন ছিল প্রায় ৫৮২ বর্গকিলোমিটার, বর্তমান এটি ৬৯৯ বর্গকিলোমিটার এবং ২০৩৩ সাল নাগাদ এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে আরও ১০০ বর্গকিলোমিটার।
আরও পড়ুনঃ ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে?
২.সিঙ্গাপুর নামকরণের ইতিহাস | সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব
মালয় কাহিনী অনুসারে, ১২৯৯ সালে স্যাঙ নিলা উতামা(Sang Nila Utama) আজকের সিঙ্গাপুরকে 'সিঙ্গাপুরা' নামে নামকরণ করেন। স্যাঙ নিলা উতামা তখন শ্রীবিজয়া(Srivijiya) সাম্রাজ্যের রাজধানী প্যালেমবাগ (Palembang) এর রাজপুত্র ছিলেন। একদিন তিনি ও তার কিছু সৈন্য মিলে বিনটান দ্বীপে শিকারের করতে যান। শিকারের সময় সে একটা হরিণের পিছু নিতে নিতে একটা ছোট পাহাড়ের কাছে উপনীত হয় কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি আর হরিণকে দেখতে পায় নাহ। তারপর হরিণটিকে শিকারের উদ্দেশ্যে সামনে থাকা একটা বড় পাহাড়ের চূড়ায় উঠার সিদ্ধান্ত নেন। পাহাড়ে উঠার পর তিনি আরও একটা দ্বীপ দেখতে পান। মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করার পর তিনি জানতে পারলেন দ্বীপটির নাম 'তেমাসেক'। তিনি সেখানে যাওয়ার জন্য তার লোকজনকে আদেশ করলেন এবং জাহাজে চড়ে তেমাসেক দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। তেমাসেক যাওয়ার পথে তার জাহাজ সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়ে, ঝড়ের তান্ডবলীলা বেড়ে যাওয়ার কারণে তিনি জাহাজ থেকে ভারী মালামাল ফেলে দেওয়ার আদেশ দেন। কিন্তু কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছিল নাহ, ঝড়ের গতি বেড়েই চলেছিল। এমতবস্থায় জাহাজের ক্যাপ্টেন, রাজপুত্র স্যাঙ নিলা উতামাকে তার মুকুট সাগরে ফেলে দেওয়ার কথা বললেন। ক্যাপ্টেনের কথা অনুযায়ী স্যাঙ নিলা তার মাথার মুকুট সমুদ্রে ফেলে দিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ঝড় থেমে যায় এবং তারা সবাই 'তেমাসেক' দ্বীপে নিরাপদে পৌছান। সেখানে তিনি দ্রুতগতিতে জঙ্গলের দিকে চলে যাওয়া একটি জন্তু দেখতে পান। মন্ত্রী জন্তুটিকে সিংহ নামে অভিহিত করে। এরপর স্যাঙ নিলা উতামা সেখানে বাস করা শুরু করলেন এবং একটা শহর প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি শহরটির নাম দেন সিঙ্গাপুরা(Singapura) বা সিংহের শহর(Lion City)। তবে সবথেকে মজার বিষয় হল সিঙ্গাপুরে কোন সিংহ নেই। ধারণা করা হয় স্যাঙ নিলা উতামা যে জন্তুটাকে দেখেছিলেন সেটি আসলে সিংহ ছিল নাহ সেটি 'মালেশিয়ান বাঘ' ছিল।
৩.সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব কত | সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব
ঢাকা, বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরের রোড বাই রোড দূরত্ব হলো ৪,১৪৭.২ কিলোমিটার। বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর ফ্লাইট বা বিমান পথের দূরত্ব হলো প্রায় ২৮৯২ কিলোমিটার।
আরও পড়ুনঃ ইংরেজি শেখার সহজ উপায়
৪.বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর যেতে কত সময় লাগে | সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব
AH2 রোড ধরে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর যেতে ৬৯ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এছাড়াও গুগল ম্যাপ অনুযায়ী যদি আপনি হেটে সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করতে চান তাহলে আনুমানিক ৮৩৬ ঘন্টা সময় লাগতে পারে। বিমান দিয়ে ঢাকা টু সিঙ্গাপুর সবচেয়ে কম সময়ে যেতে ৪ ঘন্টা ৫ মিনিট সময় লাগে।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন মুড সুইং এর আসল কারণ
৫.সিঙ্গাপুর ভ্রমন | সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব
সিঙ্গাপুর (Singapore), আধুনিক স্থাপত্য শৈলী আর অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া মহাদেশের একটি একটি ছোট্ট দ্বীপ রাষ্ট্র। দেশটি মালয় উপদ্বীপের নিকটে অবস্থিত। সিঙ্গাপুরের পোর্ট বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম বাণিজ্যিক পোর্ট। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বিলাসবহুল দেশ এটি। সিঙ্গাপুর এয়ারপোর্টে নামলেই আপনি বুঝবেন যে এটি বিশ্বের সেরা কয়েকটি এয়ারপোর্টের মধ্যে একটি। বাস হোক প্রাইভেট কার হোক ট্রাফিক সিগন্যাল অথবা জ্যামের মত বিরক্তিকর পরিস্থিতিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করা লাগবে না। আর রাস্তার দুই পাশ সুন্দর গাছ দিয়ে সাজিয়ে রাখার জন্য আপনার সফরকে আরো আরামদায়ক করে তোলে।
করোনা মহামারির ফলে দীর্ঘ লকডাউনের পর ভ্রমণপিপাসুদের জন্য ধীরে ধীরে উন্মুক্ত করে দেয়া হচ্ছে পর্যটন দেশগুলো। সেই সারিতে আছে উদ্যাননগরী হিসেবে খ্যাত পরিচ্ছন্ন শহরের দেশ সিঙ্গাপুরও। ২০১৯ এর সমীক্ষানুযায়ী, পৃথিবীর সর্বাধিক ভ্রমণকৃত শহরগুলোর মধ্যে সিঙ্গাপুর শীর্ষ পাঁচ-এ অবস্থান করছে। সিঙ্গাপুর পর্যটন বোর্ড-এর তথ্যমতে, ২০১৯ সালে ১ কোটি ৯১ লাখ দর্শনার্থী সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করেছিল যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় সাড়ে তিনগুণ।
৬. বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর যাতায়াত | সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব
ঢাকা থেকে প্রায় সোয়া চার ঘণ্টার ভেতর বিমানে করে সরাসরি সিঙ্গাপুর পৌঁছা যায়। বিমান কোম্পানি এবং ভ্রমণের সময়ভেদে এয়ার টিকেটে খরচ পড়বে প্রায় সাড়ে ৩৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা।
এয়ারপোর্টে পৌছে সেখান থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য আছে মাস রেপিড ট্রাঞ্জিট বা এমআরটি। সাশ্রয়ী ভাড়ায় ভ্রমণের জন্য এয়ারপোর্ট থেকেই ওঠা যাবে মেট্রো রেলে। এই শাটল ট্রেনে চার ডলারের মধ্যে চ্যাঙ্গি এয়ারপোর্ট থেকে পৌছা যাবে মেরিনা বে’তে। এছাড়াও সারা সিঙ্গাপুরের অভিজাত সড়ক জুড়ে আছে পাবলিক বাস। এগুলোতে সর্বোচ্চ তিন ডলার পর্যন্ত ভাড়া পড়তে পারে। ট্যাক্সির বিকল্প হিসেবে যাতায়াত খরচ বাঁচানোর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে গ্র্যাব। এটি হচ্ছে বাংলাদেশের পাঠাওয়ের মত সিঙ্গাপুরের পাবলিক রাইড সার্ভিস।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার উপায়
৭. লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আপনাদের সাথে সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব নিয়ে আলোচনা করলাম। আশা করছি সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব সম্পর্কে আপনারা বুঝতে পেরেছেন। সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব এবং সিঙ্গাপুরের ভিসা সম্পর্কিত যেকোন প্রশ্ন আমাদেরকে জানাবেন। সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব সম্পর্কে আপনার মতামত কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাবেন ।আপনাদের মতামত আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠন THE DU SPEECH এর পাশে থাকবেন। যেকোন বিষয় জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন।
আর্টিকেলটি লিখেছেন: নুসরাত জাহান হিভা
পড়াশোনা করছেন: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
লেখকের জেলার নাম: কুমিল্লা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
জেলা: নাটোর
আরও পড়ুনঃ আক্কেল দাতের সমস্যায় যা যা করবেন
The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url