OrdinaryITPostAd

আইসল্যান্ডে কাজের ভিসা ও আইসল্যান্ড যাওয়ার উপায় জানুন!

আইসল্যান্ড ইউরোপ মহাদেশের একটি প্রজাতান্ত্রিক দ্বীপ রাষ্ট্র। অন্যান্য দেশের মতো এই দেশের প্রবাসিদের কাজের সুযোগ রয়েছে। তাই আইসল্যান্ডে কাজের ভিসা নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন৷ কেননা অনেকেই আইসল্যান্ডে কাজের ভিসা সম্পর্কে জানে না। আজকের আর্টিকেলে আমরা আইসল্যান্ডে কাজের ভিসা ও এই ভিসায় আবেদনের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করব।

সংক্ষেপে জেনে নিন
প্রশ্ন আইসল্যান্ড কাজের ভিসা 
উত্তর ধাপ ০১.  আইসল্যান্ডে কাজের ভিসা পেতে গেলে দুইটি পারমিট নিতে হয়। একটি ওয়ার্ক পারমিট অন্যটি রেসিডেন্স পারমিট 
উত্তর ধাপ ০২.  ওয়ার্ক পারমিট নিতে যথাযথ যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে আইসল্যান্ডের কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য আবেদন করতে হবে।চাকরী হয়ে গেলেই ওয়ার্ক পারমিট হয়ে যাবে।
উত্তর ধাপ ০৩.
রেসিডেন্স পারমিট এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভিসা আবেদন এর সময় জমা দিতে হবে।
উত্তর ধাপ ০৪. আইসল্যান্ডে কাজের ভিসায় আবেদন করতে হলে প্রথমেই আইসল্যান্ডে একটি চাকরী নিশ্চিত করতে হবে এরপর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেই ভিসা পাওয়া যাবে।
উত্তর ধাপ ০৫. আইসল্যান্ডে কাজের ভিসা আবেদনের জন্য স্নাতক সার্টিফিকেট, জব পাওয়ার কভার লেটার, বৈধ পাসপোর্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, মেডিকেল টেস্ট এর রিপোর্ট, এনআইডি অথবা জন্মসনদ ইত্যাদি লাগবে।
উত্তর ধাপ ০৬.
বাংলাদেশে আইসল্যান্ড ভিসা সার্ভিস সেন্টার এর ঠিকানা :
হাউজ ১৮০ ব্লক বসুন্ধরা আরএ,
ঢাকা -১২২৯
বাংলাদেশ 
টেলিফোন: (+৮৮০) ২৮৮৪৫১৩৩


অনুচ্ছেদ সূচি (যে অংশ পড়তে চান তার উপর ক্লিক করুন) 

  1. আইসল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট 
  2. আইসল্যান্ডে অস্থায়ী রেসিডেন্স পারমিট 
  3. আইসল্যান্ড কাজের ভিসায় আবেদনের প্রক্রিয়া 
  4. আইসল্যান্ডে কাজের ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র 
  5. বাংলাদেশে আইসল্যান্ড ভিসা সার্ভিস সেন্টার 
  6. লেখকের মন্তব্য 

 .আইসল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট | আইসল্যান্ডে কাজের ভিসা

সংক্ষেপ: আইসল্যান্ডে কাজের ভিসা পেতে গেলে ওয়ার্ক পারমিট নিতে হবে৷ এজন্য যথাযথ যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে আইসল্যান্ডে একটি কাজ নিতে হবে। তাহলেই ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া যাবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত দেশের বাহিরের কোনো দেশের নাগরিক আইসল্যান্ডে কাজ করতে আসলে তাকে অবশ্যই একটি ওয়ার্ক ও রেসিডেন্স পারমিট লাগবে। আইসল্যান্ডে কাজের ভিসা নিয়ে আলোচনা করার আগে আইসল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে আলোচনা করব।

আইসল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট : আইসল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট পেতে হলে যথেষ্ট যোগ্যতা থাকতে হবে। আইসল্যান্ডে জব ভিসা হলো টাইপ ডি লং টার্ম ভিসা। টাইপ ডি ভিসা সাধারণত আইসল্যান্ডে এক বছরের বেশি সময় নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে অবস্থানের জন্য পারমিট করা হয়। বেতনভুক্ত কর্মচারীরা টাইপ ডি ভিসার মাধ্যমে আইসল্যান্ডে কাজের জন্য যেতে পারে এবং এক বছরের
বেশি সময় অবস্থান করতে পারে। এই ভিসা ক্যাটাগরির আওতায় যারা কাজের উদ্দশ্যে আইসল্যান্ড যেতে পারেন  :

  • বেতনভুক্ত কর্মচারী ( চাকুরজীবী)
  • স্ব-নিযুক্ত কর্মী 
  • উচ্চ যোগ্যতা সম্পন্ন কর্মী (বিজনেস ভিসার আওতায়)

ওয়ার্ক পারমিটের জন্য প্রথমেই আইসল্যান্ডে একটি কাজ পেতে হবে। এক্ষেত্রে নিয়োগকারী কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান যে সার্কুলার দেবে সেই অনুযায়ী সিভি এবং কভার লেটার পাঠাতে হবে। জব কনফার্ম হলে ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আবেদন করতে হবে।

ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আবেদন করতে আবেদনপত্র পূরন করে তা আইসল্যান্ডের ডিরেক্টর অফ ইমিগ্রেশন এ জমা দিতে হবে। সেখান থেকে আবেদনপত্রটি ডিরেক্টরেট অফ লেবার এ পাঠানো হয়। এখানেই সকল ওয়ার্ক পারমিট এর কাজ সম্পন্ন হয় এবং ইস্যু করা হয়। আইসল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য যা যা প্রয়োজন তা হলো:

  • কাজের বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে।
  • নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত কন্ট্রাক্ট পেপার।
  • আবেদনকারীর শিক্ষা জীবনের ডিগ্রি সমূহের একটি সার্টিফাইড কপি। এটা অবশ্যই ইংরেজি অথবা আইসল্যান্ডের ভাষায় ট্রান্সলেট করা থাকতে হবে।
  • অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র ( যদি থাকে)
  • রিটার্ন ট্রিপের কনফার্মেশন (যদি আবেদনকারী আইসল্যান্ডে চাকরী করা কালীন অসুস্থতা বা এক্সিডেন্ট এর জন্য অক্ষম হয়ে যায় তাহলে তাকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে এমন কনফার্মেশন) 
আইসল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতার সহিত সকল কাজ সম্পন্ন করতে হবে। আবেদন পত্র নিজের স্বাক্ষর এবং কন্ট্রাক্ট পেপারে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান/ ব্যক্তির স্বাক্ষর থাকতে হবে। ওয়ার্ক পারমিট এর সাথে সাথে বাসস্থান নির্ধারণ করতে হবে এবং রেসিডেন্স পারমিট নিতে হবে।

২.আইসল্যান্ডে অস্থায়ী রেসিডেন্স পারমিট | আইসল্যান্ড কাজের ভিসা

সংক্ষেপ: আইসল্যান্ডে কাজের জন্য যেতে ওয়ার্ক পারমিট এর পাশাপাশি রেসিডেন্স পারমিট এর ও প্রয়োজন হয়। রেসিডেন্স পারমিট এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভিসা আবেদন এর সময় জমা দিতে হবে।

আইসল্যান্ডে কাজের ভিসায় যেতে দুইটি পারমিট লাগে একটি হলো ওয়ার্ক পারমিট আর একটি রেসিডেন্স পারমিট। রেসিডেন্স পারমিট পাওয়ার জন্য যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন তা হলো:
  • ইমিগ্রেশন ফর্ম ও ফরমের শেষে দশ ডলার (বি $ 10.00) নোটারাইজড বাহামিয়ান ডাকটিকিট স্ট্যাম্প সংযুক্ত করতে হবে।
  • দুটি (২) পাসপোর্ট আকারের ছবি (বিপরীতে স্বাক্ষর সহ)
  • পুলিশ সার্টিফিকেট 
  • আইসল্যান্ডে অস্থায়ী রেসিডেন্সি পারমিটের জন্য পাঁচ ৫ বছরের বাসস্থান নির্ধারণ। 
  • মেডিকেল সনদপত্র (আইসল্যান্ডের অস্থায়ী রেসিডেন্সির জন্য আবেদনের ত্রিশ ৩০ এর দিন আগে নয় এমন )
  • দুইটি চারিত্রিক প্রশংসাপত্র।
  • আর্থিক রেফারেন্স 
  • আবেদনকারী স্বত্বাধিকারী কিনা তা নিশ্চিতকরণ (আইসল্যান্ডে বাড়ি বা সম্পত্তি থাকলে, এবং  তার ঠিকানা)
  • আয়ের উৎস (আইসল্যান্ডের অস্থায়ী রেসিডেন্সির জন্য কর্মসংস্থান, পেনশন, বিনিয়োগ, ট্রাস্ট ফান্ড ইত্যাদির মাধ্যমে প্রাপ্ত কিনা)
  • আইসল্যান্ড থেকে কোনো উদ্দেশ্যে প্রস্থান (যদি প্রযোজ্য হয় ) প্রমাণিত টিকিট।

৩.আইসল্যান্ড কাজের ভিসায় আবেদনের প্রক্রিয়া | আইসল্যান্ড কাজের ভিসা

সংক্ষেপ: আইসল্যান্ডে কাজের ভিসায় আবেদন করতে হলে প্রথমেই আইসল্যান্ডে একটি চাকরী নিশ্চিত করতে হবে এরপর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেই ভিসা পাওয়া যাবে।

আইসল্যান্ডে কাজের ভিসার আওতায় যেসব পোস্টে চাকরী করার সুযোগ রয়েছে তা হলো:
  • অ্যালুমিনিয়াম স্মেল্টিং
  • মাছ প্রক্রিয়াকরণ
  • ভূ ক্ষমতা প্রকল্প 
  • জলবিদ্যুৎ প্রকল্প 
  • চিকিৎসা/ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য
  • পর্যটন
  • নির্মাণ
  • স্বাস্থ্যসেবা
  • আইটি
আইসল্যান্ডে কাজের জন্য আবেদন করতে ন্যুনতম স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে নির্দিষ্ট কোম্পানির ওয়েবসাইটে আবেদনের মাধ্যমে চাকরী কনফার্ম করতে হবে। এরপর আইসল্যান্ডে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদনের নিয়ম:
  • একটি চাকরি নিশ্চিত করতে হবে।
  • দূতাবাস থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে (এক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস যেখানে আইসল্যান্ড এর ভিসার কাজ করা হয় সেখানে যোগাযোগ করতে হবে।)
  • আইসল্যান্ডের নিয়োগকর্তা কতৃক কর্মচারীর জন্য বসবাসের অনুমতির জন্য আবেদন করতে হবে।
  • সকল আবেদন পারমিট হলে মেডিকেল টেস্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
  • ভিসা ফি জমা দিতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র তৈরি করে জমা দিতে হবে।

৪.আইসল্যান্ডে কাজের ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র | আইসল্যান্ড কাজের ভিসা 

সংক্ষেপ: আইসল্যান্ডে কাজের ভিসা আবেদনের জন্য স্নাতক সার্টিফিকেট, জব পাওয়ার কভার লেটার, বৈধ পাসপোর্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, মেডিকেল টেস্ট এর রিপোর্ট, এনআইডি অথবা জন্মসনদ ইত্যাদি লাগবে।

আইসল্যান্ডে কাজের ভিসা আবেদনের সময় যেসব কাগজপত্র লাগবে তা হলো:
  • স্নাতক সার্টিফিকেট
  • কাজের অভিজ্ঞতা সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
  • আইসল্যান্ডের ভাষা ট্রেনিং এর সার্টিফিকেট ( ইংরেজি ভাষা জানলেও হবে)
  • জব পাওয়ার কভার লেটার
  • চাকরির চুক্তিপত্র
  • মুল প্রশংসাপত্র যা নিয়োগকর্তা কতৃক দেওয়া হয়েছে 
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স 
  • বৈধ পাসপোর্ট ( ১০ বছরের ভিতর ইস্যু করা এবং লুক্সেমবার্গ হতে ফেরত আসার পরও ছয় মাস মেয়াদ থাকবে এমন পাসপোর্ট)
  • ভিসা ফি
  • সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি 
  • আইডেন্টিটি সার্টিফিকেট (যেমন : জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট) 
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট 
  • ব্যাংক একাউন্ট এর কাগজপত্র 
সকল কাগজপত্র অবশ্যই ইংরেজি অথবা আইসল্যান্ডিক ভাষায় থাকতে হবে। এজন্য অফিশিয়ালভাবে ট্রান্সলেশন করতে হবে।

৫.বাংলাদেশের আইসল্যান্ড ভিসা সার্ভিস সেন্টার | আইসল্যান্ড কাজের ভিসা 

সংক্ষেপ: বাংলাদেশে আইসল্যান্ড ভিসা সার্ভিস সেন্টার এর ঠিকানা :
হাউজ ১৮০ ব্লক বসুন্ধরা আরএ,
ঢাকা -১২২৯
বাংলাদেশ 
টেলিফোন: (+৮৮০) ২৮৮৪৫১৩৩

বাংলাদেশে আইসল্যান্ড ভিসা সার্ভিস সেন্টার বা কনস্যুলেটর রয়েছে যেটা আইসল্যান্ড কাজের ভিসা সার্ভিস প্রদান করে। এটি ঢাকায় অবস্থিত।ঢাকার আইসল্যান্ড এর কনস্যুলেট ভিসা এবং পাসপোর্ট এর প্রসেসিং, ডকুমেন্ট বৈধকরণ ইত্যাদি পরিষেবাগুলো দিয়ে থাকে। আইসল্যান্ড কনস্যুলেট এর ঠিকানা:
হাউজ ১৮০ ব্লক বসুন্ধরা আরএ,
ঢাকা -১২২৯
বাংলাদেশ 
টেলিফোন: (+৮৮০) ২৮৮৪৫১৩৩

৬.লেখকের মন্তব্য | আইসল্যান্ড কাজের ভিসা 

আইসল্যান্ড উত্তর ইউরোপের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। এই দেশে কাজের জন্য যেতে অনেকেই আগ্রহী। কোনো এজেন্সি আইসল্যান্ড এ কাজ দিতে পারে না। কেননা এখানে উচ্চ যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিরাই কেবল কাজের জন্য সুযোগ পায়। একারনেই বিভিন্ন কোম্পানি কতৃক প্রদত্ত সার্কুলার দেখে চাকরীর জন্য আবেদন করতে হয় এবং ভিসা পেতে হয়।

আজকের আর্টিকেল এ আমরা আইসল্যান্ডে কাজের ভিসা, কিভাবে আইসল্যান্ড এ কাজ পাওয়া যায়, কিভাবে আবেদন করতে হয় ইত্যাদি বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আইসল্যান্ডে কাজ সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। সেই সাথে এরকম আড়ও তথ্যবহুল আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট The DU Speech ভিজিট করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url