OrdinaryITPostAd

ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার উপায়!

ইতালি, ফ্রান্স ও পর্তুগাল তিনটি দেশই ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত। অনেকেই ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার উপায় জানতে চান, কেননা এখন প্রবাসের প্রতি সবার আগ্রহ দিনদিন বেড়েই চলেছে। ইতালির নাগরিকদের ক্ষেত্রে ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার উপায় সহজ হলেও বাংলাদেশি নাগরিকের ক্ষেত্রে এটি সহজ নয়। আজকের আর্টিকেলে আমরা ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করব।

 


সংক্ষেপে জেনে নিন
প্রশ্ন ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার উপায়
উত্তর ধাপ ০১.  আকাশ, রেলপথ,সড়কপথ এমনকি পানি পথেও ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়া যায়
উত্তর ধাপ ০২.  সেনজেন ভিসা থাকা আবশ্যক
উত্তর ধাপ ০৩.  এজেন্সি ছাড়াও ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়া যায়। এক্ষেত্রে সঠিক জ্ঞান থাকতে হবে।
 

অনুচ্ছেদ সূচি(যে অংশ পড়তে চান তার উপর ক্লিক করুন) 

  1. ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার ভিসা 
  2. ইতালি থেকে ফ্রান্স যাওয়ার উপায় 
  3. ইতালি থেকে পর্তুগাল যাওয়ার উপায়
  4. প্রশ্ন-উত্তর পর্ব 
  5. লেখকের মন্তব্য 

১.ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার ভিসা | ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার উপায়

সংক্ষেপ: ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার ভিসার নাম সেনজেন ভিসা। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশে প্রবেশের জন্য এই ভিসা প্রয়োজন হয়।

ফ্রান্স ও পর্তুগাল ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশ। এই দেশগুলোতে প্রবেশের জন্য অবশ্যই সেনজেন ভিসা থাকতে হবে। ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার উপায় জানার আগে এই ভিসা সম্পর্কে জানতে হবে।

সেনজেন ভিসা : ১৯৮৫ সালে ইউরোপের কয়েকটি দেশ তাদের অভ্যন্তরীণ যাতায়াতকে সহজ করার উদ্দেশ্যে লুক্সেমবার্গ এর সেনজেন শহরে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির আওতাভুক্ত দেশগুলোকে সেনজেন এলাকা এবং প্রদানকৃত ভিসাকে সেনজেন ভিসা বলা হয়।‌‌ ইউরোপের ২৬ টি দেশ সেনজেন অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত এর মধ্যে ইতালি ফ্রান্স ও পর্তুগালে রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে এসব দেশে সেনজেন ভিসা নিয়ে সর্বোচ্চ ৯০ দিন অবস্থান করা যাবে। এক্ষেত্রে ভিসার মেয়াদ হবে ৬ মাস। এই ভিসা ব্যবহার করে একাধিক বার সেনজেন এলাকায় প্রবেশ করা গেলেও কোন অবস্থাতে সর্বমোট ৯০ দিনের বেশি অবস্থান করা যাবে না। তবে কাজের উদ্দেশ্য দীর্ঘদিন অবস্থানের ক্ষেত্রে ঐ দেশের দূতাবাস থেকে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে পারমিট করে নিতে হবে।

সেনজেন ভিসা আবেদন করতে ভিসা আবেদন ফরমের প্রতিটি তথ্যের ঘর পূরণ করে এক কপি আবেদন ফরম অবশ্যই তারিখ ও স্বাক্ষর সহযোগে জমা দিতে হবে। ভিসা আবেদনের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

  • ভ্রমণ শেষ হওয়ার পরও অন্তত ছয় মাস মেয়াদ থাকবে এমন পাসপোর্ট।
  • সাদা পটভূমিতে সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
  • পাসপোর্ট এর ব্যক্তিগত তথ্যের পৃষ্ঠা গুলোর পরিষ্কার ফটোকপি ।
  • প্রতিটি কাগজের মূল কপির সাথে একটি করে ফটোকপি জমা দিতে হবে।
  • কোন ডকুমেন্ট বাংলায় থাকলে বাংলার সাথে সাথে সেই ডকুমেন্টের ইংরেজি অথবা জার্মান অনুবাদে সংযুক্ত করতে হবে।
  • স্বাস্থ্য বীমা করতে হবে ( ন্যূনতম ৩০০০ ইউরো বা  ৩৪৫০০০ টাকা মূল্যমানের)
সেনজেন ভিসা ইস্যু হতে সাধারণত ৭ কর্ম দিবস সময় লাগে তবে কোন কোন ক্ষেত্রে কাগজপত্র যাচাই জনিত কারণে তিন থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। আবেদনপত্র জমা দেয়ার পরে সাক্ষাৎকার দিতে হয়। প্রতিটি ভিসার জন্য সাক্ষাৎকারের পরপরই অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফি জমা দিতে হয়।  

২.ইতালি থেকে ফ্রান্স যাওয়ার উপায় | ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার উপায়

সংক্ষেপ: ইতালি থেকে ফ্রান্সে ট্রেন ও বিমান উভয় উপায়ে যাওয়া যায়। এছাড়া সড়ক ও নৌপথেও যাওয়া যায়।
ইতালি থেকে ফ্রান্সে বিমানের পাশাপাশি ট্রেনেও যাওয়া যায়। ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার উপায় আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আকাশ ও রেলপথপ ইতালি থেকে ফ্রান্স যাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। 
আকাশপথে : ইতালি থেকে ফ্রান্স এর দূরত্ব ১২৭৯.৯ কিলোমিটার। আকাশপথে ইতালি থেকে ফ্রান্স যেতে ২ ঘন্টা ১১ মিনিট সময় লাগে। বিমান ইতালির রাজধানী রোম থেকে ফ্রান্স এর রাজধানী প্যারিসে অবতরণ করে। ইতালির রোম থেকে ফ্রান্স এর প্যারিস এর ফ্লাইটের দাম সর্বনিম্ন ২২৭ ইউরো যা বাংলাদেশি প্রায় ২৬০০০ টাকার সমান। বিভিন্ন এজেন্সির সাহায্যে খুব সহজেই ইতালি থেকে ফ্রান্স যাওয়া যায়। এক্ষেত্রে যা প্রয়োজন তা হলো:
  • একটি বৈধ এবং কমপক্ষে তিনমাস মেয়াদ আছে এমন ইতালিয়ান পাসপোর্ট। এই পাসপোর্ট অবশ্যই ১০ বছরের মধ্যে ইস্যু করা হতে হবে।
  • সেনজিন ভিসা।
  • ফ্রান্সে অবস্থান করার জন্য পর্যাপ্ত তহবিল। এক্ষেত্রে কোনো এজেন্সির মাধ্যমে যদি সম্পূর্ণ খরচ পূর্বে পেইড করা থাকে তাহলে দিনে ১২০ ইউরো আর যদি তা না হয় তাহলে দিনে ৬৫ ইউরো খরচ করার মতো তহবিলের ব্যাংক এভিডেন্স।
  • ফ্রান্স থেকে ফিরে যাওয়ার রাউন্ড ট্রিপের টিকেট। (দীর্ঘমেয়াদি অবস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলি পূরন করতে হবে।)
উপরোক্ত কাগজপত্র প্রদানের মাধ্যমে খুব সহজেই আকাশপথে ইতালি থেকে ফ্রান্সে যাওয়া যায় এবং অবস্থান করা যায়। 
রেলপথে: রেলপথে ইতালি যাওয়া অনেক সহজ।  এক্ষেত্রে বিভিন্ন এজেন্সি মাধ্যমে ভ্রমণ করা যায় অথবা নিজে নিজে ভ্রমণ করা যায়। তবে বৈধ উপায়ে ভ্রমণের জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দরকার হবে। ইতালি থেকে ফ্রান্সে ট্রেনে যাওয়ার দিনের তিনটি ট্রিট পাওয়া যায়। ইটালির মিলান থেকে প্যারিস যেতে ট্রেনে ৭ ঘন্টা সময় লাগে। ইতালি থেকে ফ্রান্সে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ ও মূল রেলপথ হলো ইতালির মিলান থেকে ফ্রান্সের মার্সেলি পর্যন্ত। এজন্য বিভিন্ন এজেন্সি অথবা নিজে নিজে ইতালির মিলন রেলস্টেশনে টিকেট কাটতে হবে। টিকেটের মূল্য গড়ে ৬৭ ইউরো ( বাংলাদেশি ৭৭০০ টাকা)। রেলপথে ইতালি থেকে ফ্রান্সে যাওয়ার জন্য বিমানপথের মতো একই কাগজপত্র প্রয়োজন পড়বে। সীমান্তের অফিসার কতৃক এসব লাগজপত্র যাচাইয়ের পরই কেবল ইতালি থেকে ফ্রান্সে বৈধ ভাবে এবং নিরাপদে যাওয়া যায়।

এছাড়াও পানিপথে ইতালি থেকে ফ্রান্সে যাওয়া যাওয়া যায়।  তবে বৈধভাবে ইতালি থেকে ফ্রান্স যাওয়ার জন্য এই নিয়মই সবচেয়ে ভালো।

 

৩.ইতালি থেকে পর্তুগাল যাওয়ার উপায় | ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার উপায়

সংক্ষেপ: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলে বৈধ উপায়ে প্লেন,ট্রেন, বাস, কার ও জাহাজে করে পর্তুগাল যাওয়া যায়।

পর্তুগাল ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ।  ইতালির মিলান থেকে পর্তুগাল এর লিসবোন এর দূরত্ব ১৬৮৩ কিলোমিটার। ইতালি থেকে পর্তুগাল যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হলো: 

  • একটি বৈধ এবং কমপক্ষে তিনমাস মেয়াদ আছে এমন ইতালিয়ান পাসপোর্ট। এই পাসপোর্ট অবশ্যই ১০ বছরের মধ্যে ইস্যু করা হতে হবে।
  • সেনজিন ভিসা।
  • পর্তুগাল থেকে ফিরে যাওয়ার রাউন্ড ট্রিপের টিকেট। (দীর্ঘমেয়াদি অবস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলি পূরন করতে হবে।)
  • কাজের জন্য পর্তুগাল অবস্থানের জন্য কোম্পানি বা পর্তুগিজ হোস্টের ইনভিটেশন লেটার। 
  • পর্তুগালের সীমান্ত অফিসার কতৃক পাসপোর্টে স্ট্যাম্প করে নিতে হবে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলে বৈধ উপায়ে প্লেন ও ট্রেনে পর্তুগাল যাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে নিরাপদ ও দ্রুত মাধ্যম হচ্চে প্লেন।  প্লেনে পর্তুগাল যেতে ২৭৭ ইউরো বা প্রায় ৩২০০ বাংলাদেশি টাকা খরচ হবে। প্লেনে ইতালির রোম থেকে ডিরেক্ট পর্তুগালের লিসবোনে যাওয়া যায়।  ট্রেনে পর্তুগাল যেতে ইতালির মিলান থেকে ফ্রান্স এর মারসেলি থেকে স্পেনের বার্সেলোনা, বার্সেলোনা থেকে স্পেনের মাদ্রিদ এবং এরপর পর্তুগালের লিসবোনে যাওয়া যায়। এছাড়াও ইতালি থেকে বাস, কার, জাহাজে করে পর্তুগাল যাওয়া যায়।

৪.প্রশ্ন-উত্তর পর্ব | ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার উপায়

ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার উপায় নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন থাকবে। সেইসব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই থাকছে এই পর্ব।
  1. প্রশ্ন : ইতালি থেকে ফ্রান্স এর দূরত্ব কত?         উত্তর: ১২৭৯.৯ কিলোমিটার। 
  2. প্রশ্ন : ইতালি থেকে পর্তুগাল এর দূরত্ব কত?     উত্তর : ১৬৮৩ কিলোমিটার।
  3. প্রশ্ন : ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার সহজ উপায় কোনটি?                                  উত্তর : ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার সবচেয়ে সহজ ও দ্রুত উপায় হলো প্লেন।  

৫.লেখকের মন্তব্য | ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার উপায় 

ইতালির অনেক বাংলাদেশি প্রবাসি রয়েছে যারা বিভিন্ন কারনে ইতালি থেকে পর্তুগাল ও ফ্রান্স যেতে চায়৷ তাদের জন্যই মূলত আজকের আর্টিকেল। আজকের আর্টিকেলে আমরা ইতালি থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যাওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি। আর্টিকেল সম্পর্কে যেকোন প্রশ্ন, পরামর্শ কিংবা অভিযোগ থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।  

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url