OrdinaryITPostAd

পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম [দাম, সেবন পদ্ধতি]

পায়খানা বা মলত্যাগ স্বাভাবিক না হওয়া এবং শুষ্ক ও কঠিন মল ত্যাগ করাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য অনেকে পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেটের নাম জানতে চান।আজকের আর্টিকেলে আমরা পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেটের নাম, দাম ও ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।তাই পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেটের নাম জানতে আর্টিকেলটি পড়ুন।

অনুচ্ছেদ সূচি (যে অংশ পড়তে চান তার উপর ক্লিক করুন) 

  1. কোষ্ঠকাঠিন্য কী এবং কেন হয়
  2. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ট্যাবলেট এর নাম ও দাম
  3. ব্যবহারের নিয়ম ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া 
  4. চিরতরে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় 
  5. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার খাবারের নাম
  6. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে নিয়ম মাফিক জীবন 
  7. প্রশ্ন-উত্তর পর্ব 
  8. লেখকের মন্তব্য 

.কোষ্ঠকাঠিন্য কী এবং কেন হয়?

কোনো রোগের চিকিৎসা করা বা নেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সেই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা প্রয়োজন।কেননা রোগ সম্পর্কে সঠিক ধারনা না থাকলে রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিকার সফলভাবে করা যায় না।তাই পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেটের নাম জানার আগে আমরা পায়খানা ক্লিয়ার কেন হয় না, এটা কোন রোগ এবং রোগটি কেন হয় তা জানব।

কোষ্ঠকাঠিন্য একটি অস্বাভাবিক শারীরিক সমস্যা যখন একজন ব্যক্তি সহজে মলত্যাগ করতে সক্ষম হন না। ডাক্তারদের মতে কেউ যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ রাফেজ বা আশ যুক্ত খাবার গ্রহণ করার পরেও প্রতি সপ্তাহে তিনবারের কম পায়খানায় যায় এবং শুষ্ক ও কঠিন মল নিষ্কাশন হয় তখন এ অবস্থায়কে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে।কোষ্ঠকাঠিন্য ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। কারো ক্ষেত্রে এটা সাময়িক সমস্যার কারণ হয় আবার কারো ক্ষেত্র জটিল রুপ ধারণ করে পাইলস ও গেজের মতো রোগের পাদূর্ভাব ঘটায় যা ব্যথা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করে এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রার মানকে ব্যাহত করে।

কোষ্ঠকাঠিন্যের সঠিক কারণ চিহ্নিত করা একটু কঠিন। তারপরেও এমন অনেকগুলো জিনিস রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করে। যেমন:

  • পর্যাপ্ত ফাইবার বা আঁশ জাতীয় খাবার না খাওয়া।আঁশ জাতীয় খাবারের মধ্যে রয়েছে ফল,সবজি, খাদ্যশস্য ইত্যাদি।
  • দৈনিক জীবনযাত্রার রুটিন পরিবর্তন।যেমন খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন,বিশ্রামের অভাব।
  • মল ত্যাগ করার বেগ আসলে তা উপেক্ষা করা
  • নির্দিষ্ট ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া 
  • পর্যাপ্ত পানি পান না করা 
  • শিশুদের মধ্যে উদ্বেগ বা বিষণ্যতা 
  • খারাপ খাদ্যগ্রহণ
  • টয়লেট ব্যবহার সম্পর্কে অসচেতনতা।
এছাড়াও স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য জানতে ভিজিট করতে পারেন likespeech.com ওয়েবসাইটে   

২.কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঔষধের নাম ও দাম |পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার অনেক ট্যাবলেট রয়েছে।আর্টিকেলের এই অংশে আমরা পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম ও দাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।   

Glysup 2.3 :  এটা পায়খানার রাস্তায় ব্যবহার করবেন। খুবই সিরিয়াস যদি হয় তবেই এই ঔষধ ব্যবহার করবেন। সাধারণ কোষ্টকাঠিন্যের জন্য এই ঔষধ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। নিকটস্থ ফার্মেসিতে গিয়ে গ্লাইসাপের কথা বললেই দিয়ে দিবে। প্রতিটি গ্লাইসাপের মূল্য ৫টাকা করে। টয়লেট করার পূর্বে মলদ্বার দিয়ে ৪ পিস গ্লাইসাপ প্রবেশ করিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর মলত্যাগের চাপ আসবে ৬-১০ মিনিটেই। এরপর মলত্যাগ করবেন। 
মনে রাখবেন এটা নিয়মিত ব্যবহারের জন্য নয়। আপনার সমস্যা হলে নিয়মিত ইছুপগুলের ভুসি শরবত করে প্রতিদিন সকালে সেবন করবেন। এবং আঁশ জাতীয় খাবার খান। খাদ্য তালিকায় বেশি বেশি শাক-সবজি রাখুন। নিচে গ্লাইসাপের ছবি যুক্ত করে দেওয়া হলো।

Lax 5 mg Tablet: এটি মল বেরিয়ে আসার জন্য অন্ত্রের পেশীগুলোকে উত্তেজিত করতে সাহায্য করে।এটি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াও নেওয়া যায় তবে যেকোন ঔষধ সেবনের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।এই ট্যাবলেট একটির বাংলাদেশ প্রাইস ১৩টাকা, এক প্যাকের মূল্য ১৩০ টাকা।এই ট্যাবলেটের বিকল্প হিসেবে নিম্নোক্ত ঔষধগুলো ব্যবহার করা যায়:
  • Gerbisa 5 mg tablet 
  • Dulcoflex 5mg tablet
  • Lupiplax tablet 
  • Bisafort 5 mg tablet
  • Laxidyl tablet 
  • Bisomer 5 mg tablet
  • Swilax 5 mg tablet 
  • Bylax 5 mg tablet  
  • Bo lax 5mg tablet 
  • Julax 5 mg tablet
Mopride 1 mg: যেসব কোষ্ঠ্যকাঠিন্য রোগীর ল্যাক্সেটিভ (lax 5 mg) দিয়ে অবস্থার উন্নতি হয় না তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসক এই ট্যাবলেট সেবনের নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।এর একটি ট্যাবলেটের মূল্য ১৪ টাকা।এক প্যাকে ১৫ টি ট্যাবলেট থাকে যার মূল্য ৪২০ টাকা।চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতিত এই ট্যাবলেট সেবন করা উচিত নয়।

Pico Plus Syrup : পুরাতন ও দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য সহ যেকোনো কারণে সৃষ্ট সকল প্রকার কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিকারে এই সিরাপ নির্দেশিত হয়। এটি গ্রহণের পর বৃহদন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সক্রিয় হয় এবং বৃহদন্ত্রে কাজ করে এটি অন্ত্রের প্রাচীরের প্রান্তকে উদ্দীপনা দেয়ার মাধ্যমে বৃহতন্ত্রের লুমেনে পানি ও ইলেক্ট্রোলাইটের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে পেরিস্টালসিস ত্বরান্বিত করে। ফলশ্রুতিতে মল নরম হয়ে দ্রুততার সাথে অগ্রসর হয় এবং মলাশয়ের পূর্ণতা অনুভূত হয়। মলাশয়ের এই প্রভাব মলত্যাগ ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। এই সিরাপের ১০০ মিলিগ্রাম এর মূল্য ১৫০।

Glycerin Suppository: শুষ্ক ত্বক,ত্বকের প্রদাহ এবং সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের সমস্যাগুলিকে নিয়ন্ত্রণ,চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ করার জন্য এটি  ব্যবহার করা হয়। মূলত কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পায়ুপথের ত্বকের আর্দ্রতা ও প্রদাহ দূর করে পায়ুপথ পিচ্ছিল রাখার কাজে এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াও এটি ব্যবহার করা যায় তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করাই উত্তম।এই সাপোজিটরির 1.15 gm এর মূল্য ৩ টাকা।এটি যেসব নামে বাজারে পাওয়া যায় তা হলো:
  • Glysup Suppository 1.15 gm ( 3 taka)
  • Glysup Suppository 2.30 gm (5 taka)
  • Sapotor Suppository 1.15 gm ( 3 taka)
আরও পড়ুনঃ রমজান নিয়ে ছোট হাদিস

.ব্যবহারের নিয়ম ও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া | পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেটের নাম


আর্টিকেলের প্রথম অংশে আমরা পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেটের নাম ও দাম জেনেছি।এই অংশে আমরা সব ট্যাবলেটের ব্যবহারের নিয়ম ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করব। 

Lax 5mg Tablet: এই ঔষধ মুখে খাওয়া যায়।প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির স্বাভাবিক মাত্রা  এক থেকে তিনদিন,প্রায় ৫-১৫ মিলিগ্রাম।এই ট্যাবলেটের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো হলো: 
  • পেট ব্যাথা 
  • ক্লান্তি 
  • ডায়রিয়া 
  • বমি বমি ভাব 
  • দ্রুত বা অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন 
  • মাথা ঘোরা 
  • ত্বকে ফুসকুড়ি 
  • তন্দ্রা
গর্ভকালীন এবং দুগ্ধদানকালীন ব্যবহারের ক্ষত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Mopride 1 mg Tablet : প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে দিনে দুইবার খাবার পূর্বে অথবা পরে মুখে সেবনযোগ্য।আশানুরূপ ফলের জন্য দিনে ২ মিলিগ্রাম এর বেশি খাওয়া উচিত নয়।বয়স্ক ব্যক্তিদের দিনে ১ মিলিগ্রাম সেবনযোগ্য।শিশু এবং ১৮ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে এই ট্যাবলেট নির্দেশিত নয়।এই ট্যাবলেট সেবনে নিম্নোক্ত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়:
  • মাথাব্যথা 
  • তলপেটে ব্যথা 
  • বমি বমি ভাব  
  • ডায়রিয়া 
  • ক্লান্তি
Pico Plus Syrup: প্রাপ্তবয়স্ক এবং দশ বছরের বেশি বয়স্ক শিশুদের ক্ষেত্রে দিনে ৫-১০ মিলিগ্রাম অথবা ১-২ চা চামচ, ৪-১০ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন ২.৫-৫ মিলিগ্রাম বা ১/২ - ১ চা চামচ এবং ৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে ০.২৫ মিলিগ্রাম প্রতি কেজি শারীরিক ওজনের জন্য রাতে ঘুমানোর আগে সেবনযোগ্য।এই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো হলো:
  • ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা 
  • আন্ত্রিক প্রদাহ 
  • অন্ত্রের বাধাগ্রস্হতা
  • বমি বমি ভাব
Glycerin Suppository: প্রাপ্তবয়স্ক এবং ছয় বছরের ঊর্ধ্বে শিশুদের জন্য একটি গ্লিসারিন ২.৩০ সাপোজিটরি দিনে একবার, ২-৬ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ১.১৫ সাপোজিটরি দিনে একবার পায়ুপথে দেয়া হয় যা ১৫ মিনিট থেকে এক ঘন্টার মধ্যে অন্ত্রের গতি সৃষ্টি করে। দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।এই সাপোজিটরের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে মলদ্বারে জ্বালাপোড়া এবং প্রদাহ হতে পারে।

৪. চিরতরে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় 

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা অনেক কঠিন যদি আপনি নিয়মিত জীবন যাপন না করেন। চিরতরে পায়খানা ক্লিয়ার করার সমস্যা দূর করতে হলে আপনাকে সঠিক খাবার দাবার সময়মতো খেতে হবে। খাওয়া বা ঘুমে কোন প্রকারের অনিয়ম করা যাবে না। আশ বা ফাইবার যুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। ফলমূল বেশি খেতে হবে।

ইসবগুলের ভুসি 

এতেও মাঝে মাঝে কাজ নাও হতে পারে সে ক্ষেত্রে আপনাকে ইসবগুলের ভুসির সরবত নিয়িমিত সেবন করতে হবে। এতে আপনি খুব দ্রুতই উপকৃত হবেন। পাশাপাশি খাবারে বেশি পরিমাণে শাক-সবজি ও ফলমূল রাখতে হবে। 

বেশি পানি পান

বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। পানি পান করা কম হলে আপনি এ ধরণের সমস্যা থেকে বের হতে পারবেন না। তবে শুরুতে আপনাকে একটু সময় দিতে হবে। খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে না।  

দুশ্চিন্তা বাদ দিতে হবে 

পায়খানা ক্লিয়ারের সমস্যা দূর করতে দুশ্চিন্তা একদমই বাদ দিতে হবে। দুশ্চিন্তা করলে পাকস্থলিজনিত অনেক সমস্যার সম্মুখিন হতে হয় তার মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য অন্যতম। এছাড়াও দুশ্চিন্তার কারনে মুখমণ্ডলের বিবর্ণ রুপের প্রকাশ  ঘটে । তাই সুস্থ্য থাকতে দূর করতে হবে দুশ্চিন্তা। এই অভার টেনশন দূর করতে অন্যতম সহায়ক হলো নিয়মিত খেলাধুলা করা। এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়িমিত খেলাধুলা করেছে তারা অন্যদের তুলনায় ৪০ শতাংশ কম অভার থিংকিং করে।   

বেগ পেলে চেপে রাখা যাবে না

এমন অনেকেই আছেন যারা ব্যস্ততার কারণে ঠিক সময়ে টয়লেটে যান না। এভাবে এই বাজে অভ্যেসের তৈরি হলে আপনার এই সমস্যা হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার এখন, তাই এমন বাজে অভ্যেস থাকলে তা আজকেই বর্জন করুন। 

কোষ্ঠকাঠিন্য বা পায়খানা ক্লিয়ার না হওয়ার কারণ

বেশ কিছু কারণে পায়খানা ক্লিয়ার হয় না যাকে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য বলে থাকি। কি কি কারণে পায়খানা ক্লিয়ার হয় না সেগুলো হলো-
  • বিভিন্ন ঔষধ সেবন করলে যেমন- ব্যাথার ঔষধ, গ্যাস্টিকের ঔষধ, উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ ও খিঁচুনির ঔষধ দীর্ঘদিন সেবন করলে
  • নিয়িমিত না ঘুমালে 
  • মানসিকভাবে সুস্থ্য না থাকলে
  • অন্ত্রনালিতে ক্যান্সার হলে
  • পানি কম খেলে
  • আঁশ জাতিয় খাবার কম খেলে
  • পরিশ্রম কম করলে 
এই সমস্ত কারণে পায়খানা ক্লিয়ার বা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে এছাড়াও নানা ধরণের অসুস্থ্যতা থাকলে পায়খানা ক্লিয়ারের  জটিলতায় ভুগতে পারেন। তাই আপনি যদি সুস্থ্য থাকতে চান তাহলে এই টপিকগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা  করবেন । 

কোষ্ঠকাঠিন্য এর লক্ষণ 

বেশ কিছু কারণ রয়েছে যেগুলো দেখা দিলেই বুঝবেন যে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যবা পায়খানা ক্লিয়ার নিয়ে ঝামেলায় পড়েছেন। কোষ্ঠকাঠিন্য এর লক্ষণগুলো হল-
  1. পায়খানা করতে সময় লাগবে
  2. পায়খানা করতে কষ্ট হবে
  3. মলদ্বারের আশে পাশে ও তলপেটে ব্যাথা হবে। 
  4. পায়খানায় পুর্ণতা না আসা 
  5. অনেক সময় রক্তপাত  হওয়া 
উপরিউক্ত সমস্যা গুলো দেখা দিলেই আপনি বুঝবেন যে আপনার সমস্যা হয়েছে আপনার এখন চিকিৎসা প্রয়োজন। 

৫.  কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার খাবারের নাম

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার বেশ কিছু খাবার খুবই প্রসিদ্ধ যা ব্যবহারে অনেকেই উপকৃত হচ্ছে ফলে এম.বি.বিএস ডাক্তারও এই সকল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। 

ইসবগুলের ভুসি ব্যবহার করা

পায়খানা ক্লিয়ারের সমস্যায় বহুল ব্যবহৃত একটি ভেজস উপাদানের নাম ইসবগুলের ভুসি। নিকটস্থ যেকোন মুদির দোকান অথবা  ফার্মেসিতে যোগাযোগ করলেই পেয়ে যাবেন।  প্রতিদিন রাতে একগ্লাস পানিতে এক চা চামচ ইসবগুলের ভুসি ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে খালি পেটে শরবত করে নিয়িমিত সেবন করলে ৭/৮ দিনের মধ্যেই উপকার বুঝতে পারবেন।  চাইলে আপনি এর সাথে চিনি যুক্ত করে নিতে পারেন। 

আঁশ যুক্ত খাবার

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন আঁশ জাতীয় খাবার কেননা এই আঁশ জাতীয় খাবারের রাফেজের কারণে অতিরিক্ত পরিমাণে পানি ধারণ করতে পারে ফলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কিছু আঁশ যুক্ত খাবারের নাম -
  • সবুজ ও লাল শাক-সবজি
  • বিভিন্ন ধরণের মৌসুমী ফল 

যে খাদ্য এড়িয়ে চলবেন 

আপনার এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে নিয়িমিত কিছু খাবার পরিহার করে চলতে হবে। যে সকল খাবার পায়খানা ক্লিয়ারের ক্ষেত্রে  বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ    করে। কিছু খাবারের তালিকা এখানে প্রদান করা হলো-
  • তেল চর্বি জাতীয় খাবার ঃ এই ধরণের খাবারের ফলে পাকস্থলি জনিত অনেক ধরণের সমস্যার দেখা পাওয়া যায়। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এই ধরণের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।  এছাড়াও এ জাতীয় খাবারের অধিক গ্রহণে হার্ট এট্যাকের মত রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • লাল মাংশ অর্থাৎ গরুর বা খাসির মাংস ঃ লাল মাংস ডাক্তাররা সব খাদ্য তালিকায় রাখতে নিরুতসাহিত করেন কেননা এই ধরণের খাবার সহজে হজম হয় না, ফলে সমস্যা আরও তীব্রতর হয়ে উঠে। তাই এ ধরণের খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ রাখা উচিত। 
  • চকলেট ঃ চকুলেটে থাকে প্রচুর পরিমানে ফ্যাট যা একজন কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীকে আরও বিপদের সম্মুখীন করে তোলে। 
  • ব্রেড ঃ ব্রেড জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমানে চিনি বা সুগার পাওয়া যায় যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকারক ।
  • সফট ড্রিংক ঃ সফট ড্রিংকে প্রচুর পরিমানে চিনি থাকে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক । এই এই সফট ড্রিংক জাতীয়  খাবার না খাওয়াই উচিত এই খাবারে মধ্যে পড়ে বেশ কিছু পানিয় যেমন কোকাকোলা, পেপসি, ডিউ, স্প্রাইটসহ নানা রকম  কোম্পানির সফট ড্রিংক। 
  • অতিরিক্ত চিনি যুক্ত কেক ঃ এই খাবারটিও বেকারি জাতীয় খাবারের মধ্যে  পড়ে।  তাই এই জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই উচিত। 
  • মসলা জাতীয় খাবার ঃ আপনি একটু খ্যাল করলেই দেখবেন যে মসলা জাতীয় খাবারের প্রচলন আমাদের উপমহাদেশেই বেশি এই  ধরণের খাবার পশ্চিমারা বা জাপানিজরা তাদের  খাদ্য  তালিকায়  রাখে না। কেননা এই মসলা জাতীয় খাবার স্বস্থ্যের গ জন্য অনেক খারাপ প্রভাব ফেলে। 
  • অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাবার ঃ যেকোন চিনি জাতীয় খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ প্রভাব ফেলে এই অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাবার পরিহার করতে বলেন বিষেশজ্ঞ ডাক্তাররা। 
  • বেকারি খাবার ঃ বরাবরের মতই বেকারি জাতীয় খাবারের কারণে কেমন ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় বা এই খাবার গ্রহনের ফলে আমাদের শরীরের উপর কেমন প্রভাব ফেলে তা আলোচনা করেছি। কিছু বেকারি খবার হলো- কেক, পাউরুটি।
  • ভাজাপোড়া ঃ তেল বা চিনি জাতীয় খাবার গ্রহন করা একদমই ঠিক নয়, এতে শরিরের উপর বাজে প্রভাব ফেলে। যেমন- চানাচুর ভাজা, ঝালমুড়ি , ছোলা ভাজা ইত্যাদি। 
  • চিপস ঃ যেহেতু  চিপস এমন একটি খাবার যার ফলে শরীরে ফ্যাট জমে তাই এই চিপস জাতীয় খাবার না খাওয়াই উচিত। 
  • কাঁচকলা ঃ  কাচকলাতে এমন কিছু উপাদান আছে যা কোষ্ঠকাঠিন্যকে আরো মারাত্বক করে তোলে। তাই যারা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগছেন তাদের উচিত হবে এই ধরণের সবজি খাদ্য তালিকায়  না রাখা । 
  • হিমায়িত খাবার  ঃ যে সকল খাবারের হিমায়িত করা প্রয়োজন হয় অথবা বিভিন্ন কারণে যে সকল খাবারকে হিমায়িত করা  হয় সে সকল খাবারকে খাদ্য তালিকায় না রাখাই উচিত যেমন- ইলিশ মাছ, হিমায়িত মাংস।

৬. পায়খানা ক্লিয়ার করতে নিয়ম মাফিক জীবন যাপন 

পায়খানা ক্লিয়ার করতে জীবনকে সাজিয়ে গুছিয়ে তুলতে হবে তাছাড়া পায়খানা ক্লিয়ার করা খুবই মুশকিল। অনিয়মত্রান্ত্রিক উপায়ে জীবন যাপন করলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা ধীরে ধীরে প্রকট আকার  ধারণ করবে।

নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া

বর্তমান প্রজন্মের এক বড় সমস্যা  হলো দেরীতে ঘুমানো আবার দেরিতে  ঘুম থেক উঠা । এরফলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং পায়খানা ক্লিয়ার হয় না। দ্রুত ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। 

ব্যায়াম করা

কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে বাঁচতে খাবার ঠিক রাখার পাশাপাশি আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে এতে করে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে ধীরে ধীরে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। 

বিশ্রাম নেওয়া 

কাজের চাপে অনেকেই ভালো বিশ্রাম নিতে পারেন না। এতে করে আপনার সমস্যা বাড়তে থাকে। তাই পায়খানা ক্লিয়ার করতে কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নিন যা  আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্য বড়  সহায়ক। 

৪.প্রশ্ন-উত্তর  পর্ব | পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেটের নাম

পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম আর্টিকেলের এই অংশে আমরা কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর নিয়ে আলোচনা করব।
  1. কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে কী কী জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে?                                                       উত্তর: দীর্ঘ মেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে অর্শ বা পাইলস, ফিস্টুলা বা ভগন্দর, অ্যানাল ফিশার বা গেজ রোগ, প্রস্রাবের সমস্যা, রেক্টাল প্রোলাপস বা মলদ্বার বাইরে বের হয়ে আসা, ইন্টেসটাইনাল অবস্ট্রাকশন, পেটব্যথা বা ফাঁপা, অরুচি, ক্ষুধামান্দ্যের মতো জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
  2. কী খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়?  উত্তর: ইসবগুলের ভূষি নিয়মিত সেবনে পায়খানা ক্লিয়ার হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।এছাড়াও খাদ্য তালিকায় প্রচুর ফলমূল, শাক সবজি সহ বিভিন্ন রাফেজ জাতীয় খাবার রাখতে হবে। পরিমিত পরিমান পানি পান করতে হবে।

.লেখকের মন্তব্য | পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম

কোষ্ঠকাঠিন্য এমন একটা পরিস্থিতি যখন রোগীকে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এজন্য কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার পর প্রতিকার করার চেয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য যাতে না হয় সেইদিকে খেয়াল রাখলে এই পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব। আজকের আর্টিকেলে আমরা পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম, দাম, ব্যবহারের নিয়ম ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেছি। আর্টিকেল সম্পর্কে যেকোন প্রশ্ন, মতামত, পরামর্শ কিংবা অভিযোগ কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম আরও তথ্যবহুল আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট The DU Speech ভিজিট করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url