দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণগুলো কি কি? বিস্তারিত জানুন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণগুলো কি কি ছিল এ সম্পর্কে আপনারা অনেকেই সঠিকভাবে জানেন না। তাই আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণগুলো কি কি ছিল তা নিয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণগুলো কি কি ছিল এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের আজকের আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়বেন। আশা করছি এই সম্পর্কে আপনারা ভালো একটা ধারণা লাভ করতে পারবেন।
আর্টিকেল সূচিপত্র (যে অংশ পড়তে চান তার ওপর ক্লিক করুন)
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে ধারণা
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ
- অক্ষশক্তি এবং মিত্র শক্তি
- জার্মানির পরাজয়ের কারণ
- যেভাবে শেষ হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
- আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর
- লেখকের মন্তব্য
১.দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে ধারণা | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণগুলো কি কি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ মানবসভ্যতার ইতিহাসে এ যাবৎকাল পর্যন্ত সংঘটিত সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ। ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল, এই ছয় বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়সীমা ধরা হলেও ১৯৩৯ সালের আগে এশিয়ায় সংগঠিত কয়েকটি সংঘর্ষকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়।তৎকালীন বিশ্বে সকল পরাশক্তি এবং বেশিরভাগ রাষ্ট্রই এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং দুইটি বিপরীত সামরিক জোটের সৃষ্টি হয়; মিত্রশক্তি আর অক্ষশক্তি। এই মহাসমরকে ইতিহাসের সবচেয়ে বিস্তৃত যুদ্ধ বলে ধরা হয়, যাতে ৩০টি দেশের সব মিলিয়ে ১০ কোটিরও বেশি সামরিক সদস্য অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ খুব দ্রুত একটি সামগ্রিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং সামরিক ও বেসামরিক সম্পদের মধ্যে কোনরকম পার্থক্য না করে তাদের পূর্ণ অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা প্রয়োগ করা শুরু করে।
এছাড়া বেসামরিক জনগণের উপর চালানো নির্বিচার গণহত্যা, হলোকস্ট (হিটলার কর্তৃক ইহুদীদের উপর চালানো গণহত্যা), পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রের প্রয়োগ প্রভৃতি ঘটনায় কুখ্যাত এই যুদ্ধে প্রায় ৫ কোটি থেকে সাড়ে ৮ কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করে। এসব পরিসংখ্যান এটাই প্রমাণ করে যে এটাই পৃথিবীর ইতিহাসে নৃশংসতম যুদ্ধ।
পূর্ব এশিয়ায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের লক্ষে জাপান ইতোমধ্যেই ১৯৩৭ সালে প্রজাতন্ত্রী চীনে আক্রমণ করে। পরবর্তীতে ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর জার্মানি পোল্যান্ড আক্রমণ করে এবং তার ফলশ্রুতিতে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। দ্বিতীয় ঘটনাটিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা বলে গণ্য করা হয়।
আরও পড়ুনঃ ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে?
২.দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণগুলো কি কি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কের অবকাশ রয়েছে। তবে এ নিয়ে একটি সাধারণ ধারণা রয়েছে যা অনেকাংশে গ্রহণযোগ্য। এই কারণটি যুদ্ধোত্তর সময়ে মিত্রশক্তির দেশসমূহের মধ্যে তোষণ নীতির মাধ্যমে সমঝোতার ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায় যা নির্দেশক শক্তির ভূমিকা পালন করে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্স। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি এবং জাপানের আধিপত্য ও সাম্রাজ্যবাদকে দায়ী করে এই কারণটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে যার বিস্তারিত এখানে উল্লেখিত হচ্ছে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি তার সম্পদ, সম্মান এবং ক্ষমতার প্রায় সবটুকুই হারিয়ে বসে। এর সাম্রাজ্যবাদী চিন্তাধারার মূল কারণ ছিল জার্মানির হৃত অর্থনৈতিক, সামরিক এবং ভূমিকেন্দ্রিক সম্পদ পুনরুদ্ধার করা এবং পুনরায় একটি বিশ্বশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা। এর পাশাপাশি পোল্যান্ড এবং ইউক্রেনের সম্পদসমৃদ্ধ ভূমি নিয়ন্ত্রণে আনাও একটি উদ্দেশ্য হিসেবে কাজ করেছে। জার্মানির একটি জাতীয় আকাঙ্ক্ষা ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরপর সম্পাদিত ভার্সাই চুক্তি হতে বেরিয়ে আসার। এরই প্রেক্ষাপটে হিটলার এবং তার নাৎসি বাহিনীর ধারণা ছিল যে একটি জাতীয় বিপ্লবের মাধ্যমে দেশকে সংগঠিত করা সম্ভব হবে।
যুদ্ধের মূল কারণ ছিল মিত্র শক্তির এক পক্ষ চুক্তি। মিত্র শক্তির এই এক পক্ষ চুক্তি জার্মানিরা মেনে নিতে পারেনি তারা ভাবে যে তাদের সাথে পক্ষপাত্তি করা হয়েছে। তাই তাদের মনে একটা ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
৩.অক্ষশক্তি এবং মিত্র শক্তি | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণগুলো কি কি
অক্ষশক্তি বলতে সেসব দেশকে নির্দেশ করা হয় , যারা মিত্রশক্তির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (১৯৩৯-১৯৪৫) সময় যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। অক্ষশক্তির প্রধান তিনটি রাষ্ট্র হল জার্মানি, ইটালী এবং জাপান। এই তিনটি রাষ্ট্র ১৯৪০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে একটি সামরিক জোট গড়ে তোলে। এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে অক্ষশক্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর সাথে সাথে তাদের ইউরোপ, আফ্রিকা, পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত কলোনিগুলোও অক্ষশক্তির অংশ হয়ে যায়। মিত্রশক্তির মতই অক্ষশক্তিতেও বেশ কিছু দেশ নাম লিখিয়ে যুদ্ধ চলাকালীন সময়েই তা প্রত্যাহার করে নেয়।
মিত্র শক্তি বলতে সেসব দেশকে নির্দেশ করা হয়, যারা অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (১৯৩৯-১৯৪৫) সময় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল।মিত্রশক্তির দেশগুলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল প্রত্যক্ষভাবে অক্ষশক্তির আগ্রাসনের কারণে অথবা অক্ষশক্তি কর্তৃক আক্রান্ত হতে পারে এমন ভয়ের কারণে। ১৯৪১ সালের পরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সোভিয়েত ইউনিয়ন এই তিন রাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দ, যারা একত্রে (“বৃহৎ তিন” নামে পরিচিত ছিল), এবং চীন মিত্র শক্তি গঠন করে।পরবর্তীতে বৃহৎ রাষ্ট্র ফ্রান্সও মিত্রশক্তিতে যোগ দেয়। এছাড়া আরও যে সব রাষ্ট্র মিত্র শক্তিতে যোগ দেয় তারা হল অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, ব্রাজিল, কানাডা, চেকোস্লাভিয়া, ইথিওপিয়া, গ্রীস, ভারত, মেক্সিকো, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, ফিলিপাইন কমনওয়েলথ, পোল্যান্ড এবং যুগোস্লাভিয়া। ১৯৪১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্কলিন ডিলানো রুজভেল্ট মিত্রশক্তিকে জাতিসংঘ নামে প্রচার করেন। তিনি বৃহৎ তিন ( যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ও সোভিয়েত ইউনিয়ন ) এবং চীনকে একসাথে ট্রাস্টিশিপ অব পাওয়ারফুল নামে অভিহিত করেন, পরে যা ফোর পুলিশম্যান নামে পরিচিতি পায়।পরবর্তীতে ১৯৪২ সালে একটি ঘোষণার মাধমে বর্তমান জাতিসংঘের গোড়াপত্তন হয়।১৯৪৫ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে পটসডাম সন্মেলনে রুজভেল্ট প্রস্তাব করেন চীন, সোভিয়েত ইউনিয়ন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইউরোপের রাষ্ট্রসমূহে শান্তি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠার রূপরেখা প্রণয়ন করবে। যার মাধ্যমে পরবর্তীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রী পরিষদ গঠিত হয়।
আরও পড়ুনঃ ইংরেজি শেখার সহজ উপায়
৪.জার্মানির পরাজয়ের কারণ | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণগুলো কি কি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রথমদিকে সাফল্য পেলেও শেষপর্যন্ত এই যুদ্ধে অক্ষশক্তি অর্থাৎ জার্মানি , ইতালি ও জাপানের মিলিত জোট পরাজিত হয়েছিল । প্রথমে ইতালি,এরপর জার্মানি এবং সবশেষে জাপান পরাজিত হয় । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণ গুলো কি ছিল তা নিয়ে এই অংশে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব।
হিটলারের রাশিয়া অভিযানের ব্যর্থতা
হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানি কর্তৃক সােভিয়েত রাশিয়া আক্রমণ ছিল এক চরম ভুল সিদ্ধান্ত । হিটলার চেয়েছিলেন অত্যন্ত দ্রুত আক্রমণ চালিয়ে রাশিয়ার দখল নেবেন । কিন্তু তা সম্ভব হয়নি । বিভিন্ন জায়গায় রুশ সেনাবাহিনী প্রবল প্রতিরােধ গড়ে তােলায় এবং পোড়ামাটি নীতি ( খাদ্যশস্য পুড়িয়ে দিতে দিতে পিছু হটা ) ও গেরিলা রণকৌশল প্রয়ােগ করায় জার্মানি সর্বশক্তি নিয়ােগ করেও পরাজিত হয় ।
অক্ষশক্তি ভুক্ত দেশগুলোর লক্ষ্যের ভিন্নতা
অক্ষপক্ষের তিন শক্তি ( জার্মানি , ইতালি , জাপান ) -র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যােগদানের পশ্চাতে আলাদা আলাদা লক্ষ্য ছিল । হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানি চেয়েছিল গণতন্ত্র ও সাম্যবাদের কবর দিয়ে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে । ‘ উদীয়মান সূর্যের দেশ ’ জাপান চেয়েছিল সাম্রাজ্যবাদের প্রসার ঘটাতে । ইতালি তাদের ফ্যাসিবাদী শক্তির দ্বারা গণতন্ত্রের কণ্ঠরােধ করতে চেয়েছিল । অক্ষশক্তির এই আলাদা আলাদা লক্ষ্য তাদের সফল হতে দেয়নি । অপরদিকে মিত্র শক্তিবর্গের একটাই লক্ষ্য ছিল , তা হল বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করা ।
অক্ষশক্তির ভুল রণকৌশল
জার্মানি প্রথমদিকে সাফল্যের সঙ্গে একে একে পশ্চিমি শক্তিগুলির মােকাবিলা করে , সকল শক্তি নিয়ে সােভিয়েত রাশিয়ার বিরুদ্ধে পূর্ব রণাঙ্গনে উপস্থিত হয় । এই সুযােগে ইঙ্গ-মার্কিন মিলিত বাহিনী ফরাসি উপকূল নর্মান্ডিতে অবতরণ করে । ফলে জার্মানিকে দ্বিতীয় রণাঙ্গন খুলতে হয় , যা জার্মানির বিপক্ষে যায় । হিটলারের নেতৃত্বে দুটি রণাঙ্গন খুলে যে চরম ভুল ও নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিয়েছিল জার্মানি , সেই ভুলের মাশুল দিতে পরাজয় বরণ করে অক্ষশক্তি ।
ইংল্যান্ড জয়ে হিটলারের ব্যর্থতা
নৌবাহিনীর গুরুত্বকে অস্বীকার করে হিটলার যান্ত্রিক বাহিনী ( প্যানাৎসার ) , ট্যাংক এবং বিমানবহর ( লুফৎভাফে ) -কে কাজে লাগিয়ে সফল হতে চান । বিমানপথেই ইংল্যান্ডকে ধ্বংস করা যাবে বলে হিটলারকে ভুল বুঝিয়েছিলেন তাঁর বিশ্বস্ত অনুচর গােয়েরিং । কিন্তু বাস্তবে উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন , দ্রুতগতির ব্রিটিশ বিমানগুলির সাহায্যে সাহসী ও দক্ষ ব্রিটিশ বৈমানিকরা জার্মান আক্রমণকে নির্বিষ করে দেন ।
বিশ্বজনমত আদায়ে ব্যর্থতা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন মিত্রশক্তি বর্গ জাতিপুঞ্জ ( United Nations Organisation ) গঠন করে ঘােষণা করে যে , তারা ভবিষ্যতে আর পররাজ্য গ্রাস করার জন্য যুদ্ধ করবে না , তারা লড়াই করবে গণতন্ত্র রক্ষার জন্য । এসব কথায় আকৃষ্ট হয়ে বিশ্বজনমত তাদের পক্ষে আসে । অপরদিকে অক্ষশক্তিভুক্ত দেশগুলি যুদ্ধাপরাধী , পররাজ্য লােলুপ ও গণতন্ত্রের হত্যাকারীরূপে পরিচিতি পাওয়ায় বিশ্বজনমত তাদের বিরুদ্ধে যায় ।
হিটলারের দায়িত্ব
অ্যাডলফ হিটলার ছিলেন একজন অত্যন্ত দাম্ভিক , নিষ্ঠুর , খামখেয়ালি , সন্দেহপ্রবণ , স্বৈরাচারী প্রকৃতির লােক । যুদ্ধ বিশেষজ্ঞ সেনাপতিদের পরামর্শকে তুচ্ছ করে তিনি নিজে ত্রুটিপূর্ণ যুদ্ধ পরিকল্পনা রচনা করায় অক্ষশক্তির পতনের পথ তৈরি হয় । দেশের ভেতরে নাৎসি বাহিনীর প্রতি ক্ষোভ ও ঘৃণা ঝরে পড়ে । এতে জার্মান সেনাবাহিনীর মনােবল নষ্ট হয়ে যায় । অন্যদিকে ইংল্যান্ডের চার্চিল , আমেরিকার রুজভেল্ট ও রাশিয়ার স্তালিনের উন্নত যুদ্ধ পরিকল্পনা অক্ষশক্তির পতন নিশ্চিত করে ।
মিত্রশক্তি কর্তৃক জার্মানি আক্রমণ
যুদ্ধের শুরুর সময়টা জার্মানির অনুকূলে থাকলেও ধীরে ধীরে মিত্রশক্তি জার্মানির কবলে থাকা সমস্ত অঞ্চলগুলি মুক্ত করতে থাকে। অবশেষে ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে মিত্রবাহিনী তিনদিক থেকে জার্মানি আক্রমণ করে। এই তিনটি দিক ছিল -
- আইজেনহাওয়ারের নেতৃত্বে মিত্রবাহিনী জার্মানির পশ্চিম অংশ আক্রমণ করে।
- রাশিয়ার লাল ফৌজ পূর্বদিক থেকে জার্মানি আক্রমণ করে।
- মিত্রবাহিনীর একটি অংশ দক্ষিণ দিক থেকে জার্মানিতে প্রবেশ করে।
মিত্রবাহিনী কর্তৃক বার্লিন দখল
ধীরে ধীরে মিত্রবাহিনী জার্মানির অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে থাকে। পরাজয় নিশ্চিত জেনে হিটলার ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ৩০ এপ্রিল হিটলার নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করে করেন। ২ মে রাশিয়ার লালফৌজ বার্লিনে প্রবেশ করে এবং ৭ মে জার্মানি আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। ৮ মে মিত্রশক্তি 'বিজয় দিবস' পালন করে।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন মুড সুইং এর আসল কারণ
৫.যেভাবে শেষ হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণগুলো কি কি
১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র মিত্রশক্তির সাথে যোগ দেয়। মূলত জার্মানি এবং জাপান দুই অক্ষশক্তিই যুক্তরাষ্ট্রে আক্রমণ করার মাধ্যমে একে যুদ্ধে ডেকে আনে। অপরদিকে চীনের সাথে জাপানের ছিল পুরাতন শত্রুতা। ১৯৩০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকেই এই দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধ চলছিল। এর ফলে চীনও মিত্রপক্ষে যোগদান করে। ১৯৪৫ সালে জার্মানি এবং জাপান উভয় দেশের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়েই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
৬. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণগুলো কি কি
প্রশ্ন ১: কত সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়?
উত্তর: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় ১৯৩৯ সালে।
প্রশ্ন ২: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কত বছর ধরে চলেছিল?
উত্তর:ছয় বছর।
প্রশ্ন ৩: কোন কোন দেশের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ?
উত্তর: জার্মানি এবং জাপান।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণ
৭. লেখকের মন্তব্য | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণগুলো কি কি
আজকে আমরা আলোচনা করলাম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণ গুলো কি কি ছিল এই সম্পর্কে। আশা করছি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণগুলো কি কি ছিল এই সম্পর্কে আপনারা ভালো একটি ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণগুলো কি কি ছিল এ সম্পর্কে যদি আপনার কোন প্রশ্ন থাকে সেটি আমাদের জানাতে পারেন। এছাড়াও যে কোন সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইট THE DU SPEECH ভিজিট করবেন।
আর্টিকেলটি লিখেছেন: নুসরাত জাহান হিভা
পড়াশোনা করছেন: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
লেখকের জেলার নাম: কুমিল্লা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
জেলা: নাটোর
আরও পড়ুনঃ আক্কেল দাতের সমস্যায় যা যা করবেন
The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url