আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত
আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে অনেকেই সঠিক তথ্য জানেন না। তাই আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা নিয়ে। আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে সকল কিছু জানতে হলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আশা করছি আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে আপনারা সকল তথ্য জানতে পারবেন।
আর্টিকেল সূচিপত্র (যে অংশ পড়তে চান তার ওপর ক্লিক করুন)
- আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা
- ভিসার ধরন
- স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
- আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের নিয়ম
- ভিসা আবেদনের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
- আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ
- পার্ট টাইম জব
- লেখকের মন্তব্য
১.আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা | আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে ১৪৬০০ এরও বেশি স্টুডেন্ট ভিসা এফ১ টাইপ ইস্যু করা হয়েছে। এবং এভাবেই রেকর্ড সংখ্যক ছাত্র ছাত্রী প্রতি বছরই বিদেশে, মূলত আমেরিকায় পড়তে চলে যাচ্ছে। এখান থেকে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে আমেরিকা ছাত্র ছাত্রীদের কাছে উচ্চশিক্ষার অন্যতম জায়গা হয়ে উঠেছে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন শাখায় বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষা দিয়ে থাকে একই সঙ্গে ছাত্রদের অর্থনৈতিক ক্ষমতা প্রদান করে। পাশাপাশি তাদের বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে। এই স্বপ্নগুলো অনেক ছাত্র ছাত্রীরাই পূরণ করতে চায় কিন্তু এটা ততক্ষন অসম্ভব যতক্ষণ না স্টুডেন্ট ভিসায় স্ট্যাম্প পড়ছে। তাহলে দেখা নিন কী ভাবে সহজেই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়াটা সহজ করে তোলা যায়।
আরও পড়ুনঃ ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে?
২.ভিসার ধরন | আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
বর্তমানে তিন ধরনের স্টুডেন্ট ভিসা হয় আমেরিকায় পড়তে যাওয়ার জন্য। দেখে নেওয়া যাক সেগুলো।
- প্রথমেই বলা যাক এফ১ স্টুডেন্ট ভিসার কথা। এফ১ স্টুডেন্ট ভিসা আপনার তখনই লাগবে যখন আপনার এক সপ্তাহে ১৮ ঘণ্টার বেশি সময় পড়তে হবে। এর মধ্যে গ্রাজুয়েট, আন্ডারগ্রাজুয়েট সমস্ত ধরনের কোর্স থাকে যেমন, এমএস, এমবিএ, ইত্যাদি। যিনি এফ১ ভিসার জন্য আবেদন করলেন তাঁর স্বামী বা স্ত্রী অথবা সন্তান তাঁর সঙ্গে যেতে পারেন এফ২ ভিসার সাহায্যে। কিন্তু এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে স্বামী/স্ত্রী যিনি যাচ্ছেন তিনি আমেরিকায় গিয়ে কোনও কাজ করতে পারবেন না। তাঁদের আলাদা করে আবেদন করতে হবে নিজের ভিসার জন্য।
- এরপর বলা যাক জে১ এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ভিসার কথা। যাঁরা কোনও এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে যোগদান করতে যাচ্ছেন তাঁদের এই ভিসা লাগবে। ফুলব্রাইট স্কলার, কিংবা অন্যান্য ছাত্র ছাত্রীরা অল্প দিনের কোনও কোর্স করতে বিদেশে গেলে তাঁরা এই ভিসার আবেদন করবেন। এছাড়াও কেউ যদি কোনও এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে গিয়ে স্থির করেন ভোকেশনাল ট্রেনিং নিতে চান পাশাপাশি তাহলেও সেক্ষেত্রে জে১ ভিসা অবশ্যই।
- তৃতীয় এবং শেষ ধরনের ভিসা হচ্ছে এম১। এটি হচ্ছে ভোকেশনাল অথবা নন অ্যাকাডেমিক ভিসা। এই ভিসাটি কেবলমাত্র তাঁদের জন্যই সংরক্ষিত যাঁরা ভোকেশনাল কিংবা টেকনিক্যাল স্কুলে পড়ার জন্য আমেরিকা যেতে চান। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে এই ভিসায় টাইম বেঁধে দেওয়া থাকে। তার বেশি কোনও ছাত্র সেখানে থাকতে পারবেন না।
৩.স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা | আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
যেসকল স্টুডেন্ট আমেরিকা গিয়ে পড়াশোনা করতে চান। তাদের জন্য আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসার ব্যবস্থা রয়েছে। আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আপনার কিছু যোগ্যতা থাকা লাগবে। যে সকল শিক্ষার্থীর মেধা অনেক ভালো ও IELTS / TOFEL স্কোর অনেক বেশি তারাই আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে।
এছাড়াও আপনি যদি কোনো কাজ করার জন্য আমেরিকা যান, তাহলে আপনাকে সেই কাজের প্রতি প্রশিক্ষণ নিতে হবে। আপনি নির্মাণ কাজে আমেরিকা যেতে চাইলে, আগে সেই কাজের প্রতি দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তারপর আপনাকে আমেরিকা যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। এছাড়াও যারা ভ্রমণ করার জন্য আমেরিকা যাবেন তাদের কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা কোন প্রয়োজন নাই।
আরও পড়ুনঃ ইংরেজি শেখার সহজ উপায়
৪.আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের নিয়ম | আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
সাধারনত বাংলাদেশ থেকে যত ছাত্র যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যায় বেশিরভাগই স্কলারশীপ নিয়ে পড়তে যায়। কারন আমেরিকায় লিভিং কস্ট অনেক বেশি ও টিউশন ফি ও অত্যাধিক। এছাড়াও বিদেশী ছাত্ররা আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পড়তে যাওয়ার সময় ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হয়। তাই আজকে আমাদের আলোচনা হবে মূল স্কালারশীপ নিয়ে পড়তে যাওয়ার খরচ ও নিয়ম সম্পর্কে। ইউএসএ এম্বাসির পরামর্শ অনুযায়ী স্কলারশীপের জন্য সাধারনত ৭/৮ টি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করা উচিত। সাধারনত আবেদনের ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যেই আপনার কনফারমেশন লেটার চলে আসে ছাত্রের কাছে। কনফারমেশন লেটার চলে আসলে এমবাসি তে দেখিয়ে ভিসা আবেদনের বাকি কাজ খুব দ্রুত ই করে ফেলা যায়।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন মুড সুইং এর আসল কারণ
৫.ভিসা আবেদনের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস | আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
এতক্ষন আমরা আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। এখন আমরা জানবো আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস। যেহেতু সাধারনত আমাদের দেশ থেকে অনার্স বা মাস্টার্স সমমান ডিগ্রির জন্য স্টুডেন্টরা আমেরিকা যায় আজকে আমরা সে ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রমানের সনদ। (উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা অনার্স সার্টিফিকেট)
- IELTS/TOFEL সার্টিফিকেট। অবশ্য অনেক ক্ষেত্রে IELTS/TOFEL না থাকলেও সমস্যা হয় না কারন এটা এম্বাসির আরোপিত কোন শর্ত নয় বরং ইউনিভার্সিটির শর্ত। তাই আপনি যে ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করছেন সেখানে IELTS/TOFEL চাচ্ছে কি না তার উপর নির্ভর করবে সার্টিফিকেট লাগবে কি না।
- স্কলারশীপের ক্ষেত্রে অনার্সের রেজাল্ট বা IELTS এর রেজাল্ট খুবই হেল্পফুল হিসেবে কাজ করে। যাদের IELTS এ ৬.৫ রেজাল্ট থাকে তারা সহজেই ভালো ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স এর সুযোগ পেয়ে যান সাথে স্কলারশীপ পাওয়ার চান্স ও অনেক বেশি থাকে।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট: স্টুডেন্টভিসায় পড়তে যাওয়ার সবচেয়ে বড় একটি বাধা হচ্ছে আপনার নিজের অথবা আপনার বাবা, মায়ের ব্যাংক একাউন্টে ৩০ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা জমা দেখাতে হবে। যেহেতু আমেরিকায় লিভিং কস্ট অনেক বেশি তাই এই ব্যাংক স্টেমেন্ট দেখানোর মাধ্যমে এম্বাসি নিশ্চিত হবে আপনি সে দেশে গিয়ে নিজের লিভিং কস্ট চালানোর মত ক্ষমতা আছে।
- টিউশন ফি: যদি ১০০% স্কলারশীপ হয় তাহলে আপনার টিউশন ফি নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। তবে ১০০% স্কলারশীপ না হলে ভিসা আবেদনের সময় প্রথম সেমিস্টারের সময় টিউশন ফি প্রদান করতে হবে।
উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্টস হচ্ছে কমন। অর্থাৎ আপনি যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান না কেনো আপনার এই ডকুমেন্টস গুলো লাগবেই। এছাড়াও প্রতিষ্ঠান ও স্কলারশীপ এর ধরন ভেদে কাগজপত্র আরো কম বেশি লাগতে পারে। তাই ভিসা আবেদনের পূর্বে কনফার্ম হয়ে নিন আপনার কি কি কাগজপত্র লাগবে।
৬.আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ | আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কিছুটা নির্ভর করে স্কলারশীপের ধরন ও প্রতিষ্ঠানের ধরনের উপরে। তবুও আমরা একটা সাধারন ধারনা দেয়ার চেষ্টা করবো আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কেমন পড়তে পারে।
- বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন: সাধারনত বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন এখন সম্পূর্ন অনলাইন ভিত্তিক হয়ে গেছে অর্থাৎ আপনি চাইলে নিজে ঘরে বসেই ফ্রি তে আবেদন করতে পারবেন। তবে আপনি যদি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সিলেক্ট হয়ে থাকেন তাহলে তারা সাধারনত ২৮ দিনের মধ্যে কনফার্মেশন লেটার পাঠাবে আর এর জন্য আপনার খরচ হবে $400 থেকে $500
- কনফার্মেশন লেটার হাতে আসার পর আপনাকে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে $250
- এম্বাসি ফি $180 দিতে হবে।
- অর্থাৎ আপনার সব মিলিয়ে ভিসা ও আবেদন সহ খরচ পড়বে $880 থেকে $900 যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৮০-৯০ হাজার টাকার মত।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার উপায়
৭.পার্ট টাইম জব | আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ যেহতু একটু বেশি তাই সাধারনত ছাত্ররা পড়তে গেলে সবার প্রথমে চিন্তা থাকে পার্ট টাইম জব করে নিজের লিভিং কস্ট ম্যানেজ করার। কিন্তু আপনি স্টুডেন্ট ভিসায় পড়তে গেলে প্রথম বছর কোন জব করতে পারবেন না। এরপর চাইলে বিভিন্ন ধরনের পার্ট টাইম জব করতে পারেন ঘন্টা $15 থেকে $20 করে। সাধারনত পড়াশুনার পাশাপাশি আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা ও সামার ভেকেশনে ফুলটাইম কাজের সুযোগ পাবেন।
৮. লেখকের মন্তব্য | আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের পক্ষ থেকে আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে। আশা করছি আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে আপনারা সকল কিছু জানতে পেরেছেন। আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন থাকে সেটি আমাদের জানাতে পারেন। এ সম্পর্কে আপনাদের কি মতামত তা আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। যে কোন বিষয় সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
আর্টিকেলটি লিখেছেন: নুসরাত জাহান হিভা
পড়াশোনা করছেন: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
লেখকের জেলার নাম: কুমিল্লা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
জেলা: নাটোর
আরও পড়ুনঃ আক্কেল দাতের সমস্যায় যা যা করবেন
The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url