OrdinaryITPostAd

জাপানে পার্ট টাইম জব পাওয়ার উপায় | জাপানে পড়াশোনা এবং পার্ট টাইম জব সম্পর্কে জানুন

আসসালামু আলাইকুম। স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে জাপানে গেলে কিভাবে জাপানে পার্ট টাইম জব করা যাবে বা কি ধরনের জব করা যাবে সেটা নিয়ে আপনার অনেকেই জানতে চান। তাই আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব জাপানে পার্ট টাইম জব পাওয়ার উপায় নিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের আজকের আর্টিকেলটি হল জাপানে পার্ট টাইম জব পাওয়ার উপায় নিয়ে। তাই এ সম্পর্কে সকল কিছু জানতে আর্টিকেলটি পড়ুন।

আর্টিকেল সূচিপত্র (যে অংশ পড়তে চান তার ওপর ক্লিক করুন)

  1. জাপানে পড়াশোনা
  2. জাপান কেন যাবেন
  3. যে বিষয়ে পড়াশোনা করা যাবে
  4. ভিসা আবেদন
  5. সাপোর্টিং ডকুমেন্ট
  6. পার্ট টাইম জব
  7. পার্ট টাইম জবের জন্য কিছু নির্দেশনা
  8. লেখকের মন্তব্য

১.জাপানে পড়াশোনা | জাপানে পার্ট টাইম জব পাওয়ার উপায়

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে জাপানে উচ্চ শিক্ষা এবং স্থায়ীভাবে বসবাস করতে যাওয়া বাংলাদেশির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বর্তমানে জাপানের অর্থনীতি বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম। তবে সে তুলনায় লোকবল দিনদিনই কমছে। বিশ্ব জনসংখ্যা রিভিউ রিপোর্ট -২০১০ অনুযায়ী, জাপানের জনসংখ্যা গত ৫ বছরেই কমে গেছে প্রায় ১০ লাখ। এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো থেকে দক্ষ জনশক্তিকে জাপানে চাকরি ও শিক্ষা অর্জনে উৎসাহিত করতে উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। আর এই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, মালয়েশিয়া, নেপাল, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইনের মতো দেশগুলো। 
অনেকে হয়তো শুনেছেন টোকিওতে এপ্রিল সেশনে COE আসেনি। অনেকেই হতাশ হয়েছেন। জাপানে অনেক প্রভিন্স আছে যেখানে অনেক স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটি আছে। এই সব প্রভিন্সতেও খুব সহজে পড়াশুনা ও কাজ করা যায়। জাপানের বিভিন্ন প্রভিন্সতে সমান ভাবে পড়াশুনার পাশাপাশি পার্ট টাইম কাজ করে টিউশন ফি, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা যায় ও দেশে টাকা পাঠানো সম্ভব। বরং অন্য প্রভিন্সতে টোকিওর তুলনায় খরচ কম। 

২.জাপান কেন যাবেন | জাপানে পার্ট টাইম জব পাওয়ার উপায়

জাপানের শিক্ষা আন্তর্জাতিক মানের। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭৮০টি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক অনেক কম খরচে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি সাপ্তাহিক ২৮ ঘণ্টা পার্টটাইম কাজ করার সুযোগ দিচ্ছে জাপান সরকার, যা ইউরোপ-আমেরিকার অনেক উন্নত দেশেও নেই। এছাড়া বার্ষিক ছুটির সময় কাজের সময় নিয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। প্রথম অবস্থায় জাপানে প্রতি ঘণ্টায় পার্টটাইম কাজের বেতন সর্বনিম্ন ১০০০ থেকে ১২০০ জাপানি ইয়েন। দক্ষতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেতনও বাড়তে থাকে।

৩.যে বিষয়ে পড়াশোনা করা যাবে | জাপানে পার্ট টাইম জব পাওয়ার উপায়

জাপানে প্রায় সব বিষয়েই পড়াশোনার সুযোগ আছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে: হিউম্যান স্টাডিজ, লিঙ্গুগুয়িস্টিক স্টাডিজ, হিস্টোরিক্যাল স্টাডিজ, হিউম্যান সায়েন্স, এডুকেশনাল সায়েন্স, ল অ্যান্ড সোসাইটি, পাবলিক ল অ্যান্ড পলিসি, ইকোনমিক্স, ম্যানেজমেন্ট, অ্যাকাউন্ট্যান্সি, ফিজিক্স, অ্যাস্ট্রোনমি, জিওফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, আর্থ সায়েন্স, মেডিকেল সায়েন্স, ডিজঅ্যাবিলিটি সায়েন্স, ডেন্টিস্ট্রি, ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি, বায়োফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্স, লাইফ সায়েন্স, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল সিস্টেস অ্যান্ড ডিজাইন, ন্যানোমেকানিক্স, অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং, কোয়ান্টাম সায়েন্স অ্যান্ড এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, ইত্যাদি।

৪.ভিসা আবেদন | জাপানে পার্ট টাইম জব পাওয়ার উপায়

আপনার কোর্সের মেয়াদের উপর আপনার ভিসার আবেদন নির্ভর করবে। কোর্স বাছাই করে তারপর জাপানের যেকোনো স্কুল, কলেজ অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভিসার আবেদন করুন। যদি আপনি ‘লং টার্ম’ কোর্স বেছে নেন, তাহলে আপনার ভিসার প্রসেসিং হবে আপনার পছন্দ করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। ভিসার জন্য আবেদন করার সময় হচ্ছে ৫ মাস। এর মধ্যেই আপনাকে ভিসার জন্যে বিশ্ববিদ্যালয় ও ইমিগ্রেশন অফিসে আবেদন করতে হবে।

প্রথমত, ভিসা আবেদন ফর্ম পূরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবমিট করুন। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনার ফর্ম খতিয়ে দেখবে ও কোন ধরনের সমস্যা না পাওয়া গেলে সেটি সরাসরি ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেবে। ইমিগ্রেশন অফিসে সেই ফর্মটি পুনরায় খতিয়ে দেখা হবে ও সেটি গৃহীত হলে আপনাকে ‘সার্টিফিকেট অব এলিজিবিলিটি’ দেয়া হবে।

এরপর ‘সার্টিফিকেট অব এলিজিবিলিটির’ একটি স্ক্যান কপি আপনাকে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে হবে। সেখান থেকে আপনার কোর্স শুরু হওয়ার এক মাস পূর্বে আপনাকে ‘সার্টিফিকেট অব এনরোলমেন্ট’ দেয়া হবে। মনে রাখবেন, ‘সার্টিফিকেট অব এনরোলমেন্ট’ পাওয়ার পূর্বে আপনার কাছে ২ মাসের মতো সময় থাকবে। এই সময়ের মধ্যেই  প্রথম সেমিস্টারের ফি জমা দিতে হবে।

ভিসা পাওয়ার জন্য সর্বশেষে আপনাকে, বাংলাদেশে অবস্থিত জাপান দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হবে। সেখানে আপনাকে ‘সার্টিফিকেট অব এনরোলমেন্ট’, আপনার পাসপোর্ট, পাসপোর্টের ছবি এবং জাপান ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষরকৃত ভিসার আবেদন ফর্মের এক কপি জমা দিতে হবে। উল্লেখ্য যে, এই প্রক্রিয়াটি জাপানে পৌঁছানোর পূর্বেই সম্পন্ন করতে হবে।


৫.সাপোর্টিং ডকুমেন্ট | জাপানে পার্ট টাইম জব পাওয়ার উপায়

জাপানের পার্ট টাইম জব পাওয়ার উপায় আর্টিকেল এর এই অংশে আমরা আলোচনা করব কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে।
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রহীতা চিঠি
  • সিভি ও রিজ্যুমি
  • জাপানে কেন পড়তে চান সে সম্পর্কিত বক্তব্য
  • ব্যাংক ব্যালেন্সের প্রমাণপত্র
  • অপরাধমূলক ও ফৌজদারী কাজে জড়িত না থাকার প্রমাণপত্র
  • ভিসার আবেদন ফর্ম
  • দুটি পাসপোর্ট আকারের ছবি
  • বৈধ পাসপোর্ট
  • ভিসা এনরোলমেন্টের ইলেকট্রনিক কনফার্মেশনের স্ক্যান কপি
  • অ্যাকাডেমিক ও কাজের অভিজ্ঞতার ডকুমেন্ট
  • ভ্রমণ সম্পর্কিত কাগজপত্র

৬.পার্ট টাইম জব | জাপানে পার্ট টাইম জব পাওয়ার উপায়

জাপানের শ্রমবাজারে বেকারত্বের হার খুবই কম। এবং আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য, প্রচুর বাইটো রয়েছে, মানে অদ্ভুত চাকরি, আন্তর্জাতিক ছাত্ররা রেস্তোরাঁ, হোটেল, দোকান, ভিডিও গেম প্রকাশক ইত্যাদির মতো জায়গায় করতে পারে। সাধারণত, যদি আপনার কাছে জাপানি ভাষার দক্ষতা না থাকে, তবুও আপনি ব্যক্তিগত টিউটরিং পরিষেবা দিতে পারেন, ইংরেজি বা আপনার মাতৃভাষা শেখান। যাইহোক, আপনি যদি ভাষাটি আরও ভাল দক্ষতা অর্জন করেন তবে আপনি জাপানে আরও চাকরির সুযোগ পাবেন।

জাপানে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশশি আপনি সপ্তাহে ২৮ ঘন্টা কাজ করতে পারবেন। আর মাসে পড়াশুনার পাশাপাশি পার্ট টাইম জব করতে পারবেন ১২০ ঘন্টা। এছাড়া ছুটির সময় তো পাবেন ফুল টাইম জব করার সুযোগ। জাপানে পার্ট টাইম জব করে ঘন্টায় পাওয়া যায় ৯০০-১২০০ ইয়েন। যা বাংলাদেশি টাকা ৭০০-৯০০ টাকার সমতুল্য। এই জব করেই আপনি আপনার টিউশন ফি কমাতে পারবেন। তাই জাপানে উচ্চশিক্ষা শেষে আপনি স্টুডেন্ট ভিসাকে পরিবর্তন করে ফুল টাইম ভিসা করতে পারবেন। আর আপনি চাইলেই এই ভিসা নিয়ে আপনি যত দিন ইচ্ছে জাপানে থাকতে পারবেন। এমনকি ৩ বছর পর স্থায়ী বসবাসের জন্য জাপানের নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন।

জাপানে আপনি প্রতি ঘন্টায় ন্যূনতম যে আয় করতে পারেন তা হল 1000 ইয়েন, তবে আপনি যে শহর বা অঞ্চলে থাকেন তার উপর নির্ভর করে এটি কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। এছাড়াও, মনে রাখবেন যে শহরগুলিতে বসবাসের খরচ বেশি, সেই অনুযায়ী ন্যূনতম গড় মজুরি বৃদ্ধি পাবে উদাহরণস্বরূপ, টোকিওতে, একজন শিক্ষার্থীর জন্য সর্বনিম্ন মজুরি প্রতি ঘন্টায় 1,041 ইয়েন।

৭.পার্ট টাইম জবের জন্য কিছু নির্দেশনা | জাপানে পার্ট টাইম জব পাওয়ার উপায়

জাপানে পার্ট টাইম জব পেতে হলে আপনাকে কিছু নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
  • কাজের সময় অধ্যয়নের সময়ের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়া উচিত নয়।
  • আপনার ভিসা (অধ্যয়ন) দ্বারা অনুমোদিত কার্যকলাপ অতিক্রম করার জন্য সরকারী অনুমোদন। আপনি ছাত্রদের বসবাসের জন্য নিকটতম আঞ্চলিক অভিবাসন ব্যুরো থেকে এই অনুমোদন পেতে পারেন। অন্যদিকে, আপনি যদি আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা বা শিক্ষকতা সহকারী হিসাবে কাজ করেন তবে আপনার এই অনুমোদনের প্রয়োজন হবে না।
  • বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আপনি প্রতি সপ্তাহে 28 কর্মঘন্টা অতিক্রম করতে পারবেন না। যাইহোক, আপনি যখন অধ্যয়নের বিরতিতে থাকেন, আপনি দিনে সর্বোচ্চ 8 ঘন্টা কাজ করতে পারেন। আপনি যদি আরও ঘন্টা কাজ করতে চান তবে আপনাকে একটি পৃথক অনুমোদন ফর্ম পেতে হবে যা আপনাকে অধ্যয়নের সময় সপ্তাহে 28 ঘন্টার বেশি কাজ করতে দেয়।

৮.লেখকের মন্তব্য | জাপানে পার্ট টাইম জব পাওয়ার উপায়

প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম জাপানের পার্ট টাইম জব হওয়ার উপায় নিয়ে। এ সম্পর্কে আপনার কি মতামত অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। জাপানে পার্ট টাইম জব পাওয়ার উপায় নিয়ে অথবা যে কোন বিষয়ে আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে সেটিও আমাদেরকে জানাবেন। ঢাকা ভার্সিটির আর্টিকেল রাইটিং সংগঠন The DU SPEECH এর পাশেই থাকবেন। জাপানে পার্ট টাইম জব পাওয়ার উপায় সহ  যেকোন বিষয় জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন।

আর্টিকেলটি লিখেছেন-

নুসরাত জাহান হিভা

শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url