OrdinaryITPostAd

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল

 প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল বিষয়টি সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় এর মধ্যে অন্যতম। সকলেই কমবেশি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল এই সম্পর্কে জানেন এবং আরো জানতে চান। বর্তমানে প্রযুক্তির মাধ্যমে খুব সহজেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল তার সম্পর্কে জানা যাবে। তাই এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার অনুরোধ রইলো।

আর্টিকেল সূচিপত্র (যে অংশ পড়তে চান তার ওপর ক্লিক করুন)

  1. বিশ্বযুদ্ধ কি?
  2. প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কবে হয়েছিল?
  3. প্রথমে বিশ্বযুদ্ধ কেন হয়েছিল?
  4. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল?
  5. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকৃত রাষ্ট্রগুলো সামরিক শক্তি কেমন ছিল?
  6. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জয়ী ও পরাজিত রাষ্ট্র কোনগুলো?
  7. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ফলে কেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল?
  8. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার অংশগ্রহণের কারণ কি ছিল?
  9. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণ কি ছিল?
  10. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর
  11. লেখকের মন্তব্য

1. বিশ্বযুদ্ধ কি?। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল

বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র বা জাতি যখন প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভাবে একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং ব্যাপক হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয় অথবা সাহায্যের জন্য অগ্রসর হয় তখন তাকে বিশ্বযুদ্ধ বলে। এই পর্যন্ত পৃথিবীতে দুইটি বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে।

  • প্রথম বিশ্বযুদ্ধ -১৯১৪ থেকে ১৯১৮ সাল পর্যন্ত
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ -১৯৪৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত

এই দুটি বিশ্বযুদ্ধই মানবজাতির সভ্যতা এবং ইতিহাসের ভিত্তিকে নাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্বযুদ্ধ শুধুমাত্র মানুষ আহত নিহত হয়েছে এমন নয়, প্রকৃতি এবং পশু পাখি গাছপালা এই সমস্ত কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশ্বযুদ্ধের কারণে। বিশাল বিশাল বনাঞ্চল ধ্বংস হয়ে গেছে বোমার আঘাতে। কতশত পশুপাখি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে আগুনে। নষ্ট হয়ে গেছে কৃষি জমি, খেত খামার।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ও প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল এবং তাদের প্রত্যেকের ভূমিকা কি ছিল এই নিয়ে সবার মধ্যে কৌতূহল কাজ করে।

2. প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কবে হয়েছিল?। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল 

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্ব ইতিহাস ব্যাখ্যা করতে গেলে কিছু কিছু দেশের নাম সামনে চলে আসে। পূর্বে কয়েকটি দেশ বা সাম্রাজ্য পুরো বিশ্বকে শাসন করতো। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় গ্রেট ব্রিটেনের কলোনিয়ালিজম বিস্তৃত ছিল নিউজিল্যান্ড, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপের বিশাল অঞ্চল, দক্ষিণ আফ্রিকা, আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ এশিয়া পর্যন্ত। ফ্রান্সের বিস্তৃতি ছিল আলজেরিয়া, মরক্কো, লিবিয়া, বেনিন, ইথিওপিয়া সহ উত্তর আফ্রিকার অনেকগুলো দেশ। রাশিয়ান সাম্রাজ্য কম ছিল না। জার্মানি দেশ হিসেবেই তখন ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী তবে আফ্রিকা আর প্রশান্ত মহাসাগরে কিছু ছোট ছোট দ্বীপ ছিল তাদের কলোনির অন্তর্ভুক্ত।

প্রত্যেকটি সাম্রাজ্যই চাইতো তাদের আয়তনের বিস্তৃতি ঘটাতে এবং যত বেশি সম্ভব দেশ সমূহ কে কলোনির অন্তর্ভুক্ত করতে। তাই কখনো তারা একে অপরের সাথে মিত্রতা করে এবং কখনো যুদ্ধ করে জায়গা ছিনিয়ে নিতে চাইতো। তারা সব সময়ই কোন বিষয়কে কেন্দ্র করে একে অপরের সাথে যুদ্ধ শুরু করত। তাই যখন অস্ট্রো- হাঙ্গেরিতে যুবরাজ হত্যাকাণ্ডের প্রচার হয় তখন তারা এটাকে সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল ১৯১৪ সালে ২৮ জুলাই। এটি দীর্ঘ ৪ বছর স্থায়ী হয়েছিল। অবশেষে ১৯১৮ সালের ১১  নভেম্বর এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। এই যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটে ইউরোপে। ৬ কোটি ইউরোপীয় সহ আরো সাত কোটি সামরিক বাহিনীর সদস্যরা ইতিহাসের অন্যতম এই বৃহৎ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। এটি ছিল ইতিহাসের এক অন্যতম রক্তিম সংঘাত এবং এর ফলে বিশ্বের রাজনীতিতে প্রচুর পরিবর্তন ঘটে এবং বিভিন্ন দেশে বিপ্লবের জন্ম হয়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কিছু কিছু রাষ্ট্র মিত্র বাহিনী হিসেবে, কিছু রাষ্ট্র সম্পূর্ণভাবে নিজের উদ্দেশ্যে এবং কিছু রাষ্ট্র বিপক্ষ দল হিসেবে যুদ্ধ করেছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল এবং যুদ্ধের পরিনাম কি ছিল বিষয়টি অত্যন্ত কৌতূহল উদ্দীপক।

3. প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কেন হয়েছিল?। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। তবে এই যুদ্ধের মূল কারণ হিসেবে সারায়েভো  হত্যাকাণ্ডকে দায়ী করা হয়ে থাকে। বসনিয়ার  জাতীয়তাবাদী গ্রুপ ব্ল্যাক হ্যান্ড এক্ষেত্রে তাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে উগ্রপন্থা অবলম্বনে বাধ্য হয়। তারা অস্ট্রো- হাঙ্গেরি সিংহাসনের উত্তরাধিকারী আর্চ ডিউক ফ্রান্জ ফার্দিনান্দ ও কাউন্টেস সোফিয়াকে হত্যা করে। 


অস্ট্রো- হাংগেরির রাজ পরিবার অবৈধভাবে দখল করেছিল বসনিয়া ভূখণ্ড। সেখানে বসবাসরত মুসলমানদের অনেককে গণহত্যার স্বীকার হতে হয় হাঙ্গেরীয় হানাদার বাহিনীর হাতে। পাশাপাশি সেখানে বসবাসরত সার্ভ ক্রয়াডরাও রেহাই পায়নি এ নির্মম হতাযজ্ঞ থেকে। দীর্ঘদিনের এই পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে ১৯১৪ সালের ২৮ জুন অস্ট্রীয় যুবরাজ হত্যার মধ্য দিয়ে। জীবনের নানা ক্ষেত্রে সবকিছু হারিয়ে তারা বাধ্য হয়েছিলেন সরাসরি ফার্দিনান্দ কে নির্বংশ করে বসনিয়ার  উপর থেকে হাঙ্গেরির অশুভ ছায়া দূর করতে। 
অন্যান্য কারণগুলো হল:
  • জাতীয়তাবাদ: ফরাসি বিপ্লবের সময় থেকে যে উগ্র ফরাসি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটেছিল তা অনেকাংশে প্রথম বিশ্বযুদ্ধকে প্রণোদিত করে। এর মধ্য দিয়ে ইউরোপের অনেক দেশ স্বাধীন হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। ১৮১৫ সালে ভিয়েনা কংগ্রেস বাস্তবে রূপান্তরিত হয়নি। তবে ১৮৪৮ সালের পর থেকে শুরু করে ১৮৭০ এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। এর মধ্যে ইতালি, জার্মানি, গ্রীস, সার্বিয়া, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া প্রভৃতি রাষ্ট্রের কথা উল্লেখযোগ্য। পাশাপাশি তাদের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে আরো অনেক ক্ষুদ্র দেশ চেষ্টা করতে থাকে স্বাধীন হওয়ার। তাদের মধ্যে হঠাৎ জাগ্রত হওয়া এই জাতীয়তাবাদ পুরো ইউরোপকে ঠেলে দেয় এক ভয়াবহ যুদ্ধের মধ্যে।
  • জাতিগত দ্বন্দ্ব: ইউরোপের বাইরে উপনিবেশ স্থাপন নিয়ে স্থানীয় পরিসর এবং নানা উপনিবেশের বিভিন্ন দেশের মধ্যে প্রতিনিয়ত সংঘাত চলে আসছিল। এরই মধ্যে ঘটে যায় বিখ্যাত সিডানের যুদ্ধ। যুদ্ধের পর ১৮৭১ সালে জার্মানি ফ্রান্সের থেকে লরেন ও আলসেস কেড়ে নেয়। এই দুই এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ফ্রান্সের অধীনে থাকায় নিজেদের ফ্রান্সের অধিবাসী বলে মনে করার পরেও নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে দখল করা হয় স্থান দুটি। অন্য দিকে জার্মান জাতির অংশ ও নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে তারা জার্মান এই দাবিও তোলা হয় তখন। এ থেকে ফ্রান্স ও জার্মানির সংঘাত শুরু হয়। অন্যদিকে এমনই নানা অসম্ভব বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে ১৮৭০ সালের দিকে প্রতিষ্ঠিত হয় ঐক্যবদ্ধ ইতালি। ঐক্যবদ্ধ ইতালির সাথে ট্রেনটিস্টের সংযুক্তিকরণ নিয়ে একটি যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে। এ সমস্ত কারনে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা আরো বেড়ে যায়।
  • অর্থনৈতিক ও সাম্রাজ্যবাদ: ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মধ্যে বিদ্যমান অর্থনৈতিক বৈষম্য ছিল চোখে পড়ার মত। অর্থনৈতিক দৈন্য তাদের বিশ্বে নানা দেশে উপনিবেশ স্থাপনের প্রণোদিত করে। এনিয়ে ইউরোপের নানা দেশের মধ্যে চলতো ক্রমাগত সংঘাত। বিশ্বে নানা স্থানে তাদের পণ্য বাজার সৃষ্টি নিয়ে যে অসুস্থ প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হয়, এ থেকে প্রতিষ্ঠা লাভ করে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত। এই সংঘাত একদিন অনেক বড় আকার ধারণ করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের। বৃটেনের অধিকৃত অঞ্চলের দিকে জার্মানির নজর একটি মূল কারণ।
  • উপনিবেশ বৃদ্ধি: ইউরোপে নানা দেশে শিল্প বিপ্লবের পর নানা ধরনের শিল্পজাত পণ্যের উৎপাদন বহুলাংশে বেড়ে যায়। এই বাড়তি পণ্যের বিপণন ও বাজারজাতকরণ নিয়ে ঝামেলায় পড়ে দেশগুলো। তখন নতুন ভূখণ্ড দখলের অন্যরকম এক তাগিদ লক্ষ্য করা যায় তাদের মধ্যে। তাদের এই দখলবাজের প্রবণতা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সৃষ্টি করার জন্য অনেকাংশে দায়ী।
  • সামরিক শক্তি: বৃদ্ধি নানাস্থানে বাজার সৃষ্টি ও বিভিন্ন দেশের সাথে অহেতুক প্রতিযোগিতা বহুগুনে বৃদ্ধি করে প্রতিটি দেশের সামরিক বাহিনীর আকার। বর্ধিত সেনাবাহিনীর ভরণপোষণের জন্য যে অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন, অনেক দেশের পক্ষে এ সংস্থান  সম্ভব ছিল না। তাই যুদ্ধ আর দখলবাজিতে মেতে উঠতে হয় তাদের অস্তিত্বের প্রয়োজনেই।
  • জার্মান-ইংরেজ নৌবহর: কাইজার দ্বিতীয় উইলহেমের উত্থানের আগে সাগরে অপ্রতিরোধ্যভাবে রাজত্ব করত ইংরেজ নৌ বাহিনী। তারপর পর বেশ কয়েকটি নৌ যুদ্ধে জয়লাভের মধ্য দিয়ে পুরোপুরি সাগরের ত্রাস হিসেবে আবির্ভূত হয়। ঠিক এমনই পরিস্থিতি কাইজারের পক্ষ থেকে জার্মান নৌ বাহিনী গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন গ্রান্ড এডমিরাল আলফ্রেড ফোন টার্পিজ‌। তার প্রচেষ্টায় জার্মান বাহিনী ইংরেজদের সাথে সমান তালে পাল্লা দিয়ে লড়ার ক্ষমতা অর্জন করে। দুই দেশের নৌ বাহিনী শক্তিমত্তা বৃদ্ধি নতুন করে আরেকটি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার উপক্রম হয়। 
  • ক্রমবর্ধমান সামরিকবাদ: ১৯০৪ সালের পর ইউরোপের প্রায় প্রতিটি দেশ সেনাবাহিনী আকার বৃদ্ধি করে। বর্ধিত সেনাবাহিনী তাদের কৃতকর্মের জন্য কোন নির্বাচিত সরকার নয় বরং দায়ী থাকতো সম্রাটের কাছে। বেশিরভাগ যুদ্ধবাজ সম্রাট চাইতেন যেভাবেই হোক শান্তিতে অশান্তিতে তার রাজ্যসীমা কিঞ্চিত হলেও বৃদ্ধি পাক। এই নীতি বুঝতে পেরে সামরিক বাহিনীর প্রধানরা বেপরোয়া হয়ে। ওঠে তাদের অহেতুক যুদ্ধবাজ নীতিও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর অন্যতম কারণ।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কেন হয়েছিল এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল এ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পরবর্তীতে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল।

4. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল?। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল তার উত্তর এক কথায় দেওয়া যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ৭০ টি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল। যুদ্ধের একপক্ষে ছিল উসমানীয় সাম্রাজ্য, অস্ট্রো- হাঙ্গেরি, জার্মানি ও বুলগেরিয়া। যাদের বলা হত কেন্দ্রীয় শক্তি। যুদ্ধের অপরপক্ষে ছিল সার্বিয়া, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জাপান, ইতালি, রোমানিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যাদের বলা হত মিত্রশক্তি।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী উল্লেখযোগ্য দেশগুলোর নাম হল অস্ট্রো-হাঙেরি, সার্বিয়া, রাশিয়া, মন্টিনিগ্রো, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, গ্রেট ব্রিটেন তথা কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভারত, সাউথ আফ্রিকা, এবং ব্রিটেনের কলোনির রাজ্যসমূহ, ইতালি, পর্তুগাল, রোমানিয়া, আমেরিকা, কিউবা, পানামা, গ্রীস, লাইবেরিয়া, চীন, ব্রাজিল, গুয়েতেমালা, নিকারাগুয়া, কোস্টারিকা, হাইতি, হন্ডুরাস, জার্মানি, তুরস্ক, বুলগেরিয়া ইত্যাদি।

এই সমস্ত দেশগুলো কেউ কেন্দ্রীয় শক্তি, কেউ মিত্রশক্তি, কেউ বিপ্লবী শক্তি হিসেবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সংঘাতে লিপ্ত হয়েছিল।

5. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকৃত রাষ্ট্রগুলোর সামরিক শক্তি কেমন ছিল?। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার কারণ যাই হোক না কেন, অংশগ্রহণকৃত যুদ্ধবাজ দেশগুলোর উদ্দেশ্য ছিল অভিন্ন। তারা বিভিন্ন স্থানে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার এবং নিশ্চিত করার জন্য এই যুদ্ধকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। একে অপরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার জন্য তাদের একটি কারণের প্রয়োজন ছিল। এবং এই হত্যাকাণ্ডের পর তাদের একে অপরের সাথে বিবাদে লিপ্ত হতে বেশি সময় লাগেনি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল এবং তাদের সামরিক শক্তি কেমন ছিল দুইটি বিষয় একে অপরের সাথে সম্পর্কিত।

বিভিন্ন দেশের সামরিক শক্তির বিবরণ:
  • ব্রিটেন: ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনীর পাশাপাশি তাদের বিমান ও সেনাবাহিনীও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। তবে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর তুলনায় তাদের নৌবাহিনীর ছিল অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী। যুক্তরাষ্ট্রের মতো ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর জনশক্তিও সময়ের সাথে সাথে বিশাল আকার ধারণ করে। ১৯১৪ সালে মাত্র ২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৩২ জন  ব্রিটিশ সৈনিক প্রতিনিধিত্ব করলেও ১৯১৬ সাল নাগাদ এই সৈন্য সংখ্যা বেড়ে হয় ২৬ লাখের কাছাকাছি । যার প্রায় ১৬ লাখ সৈন্য হতাহত হওয়ার ঘটনা থেকেই বোঝা যায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কত ধ্বংসাত্মক ছিল। ১৮টির মত আধুনিক ড্রিড নট,১৪টি ব্যাটেল ক্রুজার, ২০ টি টাউন ক্রুজার, ১৫ টি স্কাউট  ক্রুজার, ২০০ টির মতো ডেস্ট্রোয়ার, আর ২৯ টি শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজ নিয়ে তখনকার দিনে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ছিল অপরাজেয়।
  • জার্মানি: কাইজার দ্বিতীয় উইলহেম ও আর্মি চিফ অফ স্টাফ জেনারেল হেল্মুট ফন মোলটকির অধীনে ছিল চৌকোস জার্মান বাহিনী। ১৯১৪ সালের বাস্তবতায় জার্মান সেনাবাহিনী ছিল বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী। জার্মান সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বিমান ও নৌ বাহিনী ও ছিল বেশ শক্তিশালী। বিশেষ করে তাদের সেনাবাহিনী প্রথম থেকে শক্তিশালী হওয়াতে বিমান ও নৌ বাহিনী উন্নয়ন করনের তেমন গুরুত্ব দেয়নি জার্মানি। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রের শত্রুর চেয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে দেখে নৌবিমান বাহিনীকেও সমান গুরুত্ব দিলে একটি পর্যায়ে এসে অন্যদের ছাপিয়ে যায় তারা।
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিনিরা জল, স্থল ও অন্তরীখে সমানতালে আক্রমণ চালিয়েছিল। বলতে গেলে তাদের এই আক্রমণ যুদ্ধের ফলাফল নির্ধারণ করে দিয়েছিল। ১৯১৪ সালের দিকে ৯৮ হাজার নিয়মিত মার্কিন সৈন্যের প্রায় ৪৫ হাজার মোতায়েন করা হয় দেশের বাইরে আর ১৯১৪ সালের দিকে যুক্তরাষ্ট্র যখন জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে তখন জেনারেল পারসিং এর নেতৃত্বে প্রেরণ করা হয় আমেরিকান ফোর্স।
  • ইতালি: অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশ ইতালি শুরু থেকে যুদ্ধবাজ দেশগুলোর শীতল সম্পর্ক থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে চেয়েছিল, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি ১৯১৫ সালের ২৬ এপ্রিল থেকে বিশ্বযুদ্ধে তাদের সংস্পর্শের প্রমান মিলেছে। তবে এই যুদ্ধে তারা প্রথম থেকেই এমন কোন সুবিধা লাভ করতে পারেনি। ২৫ পদাতিক এবং চারটি কেবলরি ডিভিশনের সৈন্য নিয়ে যুদ্ধে জড়ায় ইতালি। এক্ষেত্রে ব্রিটেন সরাসরি তাদের অর্থ সাহায্য করার কথা বলে। তারা মাত্র ১২০ টি কামান ও ৭০০টি মেশিনগান নিয়ে এ সময় অস্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরিতে সর্বাত্মক হামলা চালায় ইতালি বাহিনী তাদের ৬০০০০ সৈন্য হারায়।
  • ফ্রান্স:  ১৯১০ সালের দিকে ফরাসি আর্মি এয়ার সার্ভিস গঠন করা হলে তা ইউরোপের ত্রাস হিসেবে আবির্ভূত হয়। পাশাপাশি তাদের সেনা ও নৌ বাহিনী ছিল বেশ বিখ্যাত। ১৯১২ সালের মাঝেই তারা ফিল্ড আর্মিসহ ফাইভ স্কোয়াড্রন বিমান তাদের সার্ভিসের যুক্ত করে।প্রায় ছয়টির মতো বিমান নিয়ে গঠিত হয়েছিল তাদের এক একটি ফিল্ড আর্মি। পরে ১৯১৮ সালের দিকে ফরাসি সৈন্যের ৪০ শতাংশ ছিল গোলন্দাজ। বিশেষ করে ক্রমশ ফরাসি এয়ার সার্ভিস তাদের সৈন্যবাহিনীর তুলনায় অপেক্ষাকৃত সফল হওয়ায় সৈন্যবাহিনীর কলেবর আর না বাড়িয়ে উদ্যোগ নেয়া হয় বিমান বাহিনী শক্তিশালী করার।

6. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জয়ী ও পরাজিত রাষ্ট্র কোনগুলো?। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল 

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জয়ী রাষ্ট্র সমূহ হল যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ইতালি। পরাজয়ী রাষ্ট্র সমূহ হল জার্মানি অস্ট্রো-হাঙ্গেরী ও তুরস্ক। প্রত্যেকটি দেশই তাদের নিজস্ব ভূমিকা পালন করেছিল এই যুদ্ধে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল এবং সেই রাষ্ট্রগুলোর যুদ্ধে পালন করা ভূমিকার ওপর নির্ভর করেছিল কোন কোন রাষ্ট্র জয়ী এবং বিজয়ী হবে। যুদ্ধের পরবর্তীকালে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র বাহিনী হিসেবে যোগদান যুদ্ধের মোড়কে ঘুরিয়ে দিয়েছিল। জার্মানির পরাজয়ের সম্ভাবনা যেখানে একেবারেই ছিল না সেখানে পরবর্তীকালে জার্মানি লজ্জাজনক ভার্সাই চুক্তির মাধ্যমে নিজেদের পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হয়। যদিও এই চুক্তি পরবর্তীকালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করেছিল।

অস্ট্রো-হাঙ্গেরিকে কেন্দ্র করে হওয়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তারা পরাজিত হয়েছিল। মূলত তাদের হত্যাকান্ড একটি বাহানা ছিল যা যুদ্ধবাজ দেশগুলো খুব সুন্দর ভাবে ব্যবহার করেছিল। তারা নিজেদের রাষ্ট্রের সীমানা এবং শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য এমন এক রক্তক্ষয়ী হয়ে যুদ্ধের সূচনা করেছিল যার সমাপ্তির রেশ ধরে আরো একটি বিশ্বযুদ্ধ বিশ্বের ইতিহাসে নাম লিখিয়েছিল।

7. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ফলে কেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল?। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল

 আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের সীমানা ছাড়িয়ে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত এসে আছড়ে পড়েছিল ও তার প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ধ্বংসলীলা হত্যাযজ্ঞের ঢেউ। চার বছরের এই যুদ্ধ কেড়ে নেয় প্রায় এক কোটি ষাট লাখ মানুষের প্রাণ। এছাড়া ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল প্রচুর। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল তার ওপর নির্ভর করে হওয়া ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনুমান করা যায়।

  • ব্যাপক প্রাণহানি: বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে হাওয়া যুদ্ধে নিহত সৈন্য সংখ্যা ছিল ৯০ লাখের কাছাকাছি। আবার অপরদিকে বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছিল ৭০ লাখের ওপরযুদ্ধ শুরু হলে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে সাধারণ মানুষদের ঠেলে দেওয়া হয়েছিল নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে। এই যুদ্ধে রাশিয়ার ৩৭ লক্ষ, জার্মানির ২৫ লক্ষ ৩৩ হাজার ৭০০, ফ্রান্সের ১৪ লক্ষ ১৫ হাজার ৮০০, বৃটেনের ৭ লক্ষ ৩৩ হাজার, অস্ত্র হাংগেরির ১৫ লক্ষ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ১ লক্ষ ২৬ হাজার সৈন্য হতাহত হয়েছে বলে অনুমান করা যায়।

  • রাজতন্ত্রের পতন: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিদ্যমান রাজতন্ত্রের পতন ঘটে। যেমন রাশিয়ার রোমানভ বংশীয় জার, জার্মানির কাইজার তুরস্কের উসমানীয় খিলাফত এবং অস্ট্রিয়ার রাজবংশের পতন ঘটে।
  • উপনিবেশ বিরোধী আন্দোলন: প্রথম বিশ্বযুদ্ধে শেষ হতে না হতেই বিশ্বে নানা দেশ উপনিবেশ বিরোধী আন্দোলন শুরু করে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের মানুষকে এতদিন বিশ্বযুদ্ধের ভয় দেখিয়ে চুপ রাখা হয়েছিল এবার বিশ্বযুদ্ধ শেষ হতেই তারাই ইউরোপে নানা দেশের উপনিবেশিক অঞ্চল গুলোই আন্দোলন শুরু করে। এভাবে অনেকগুলো উপনিবেশ স্বাধীন হয়ে গেছে।
  • ব্রিটিশ-ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এশিয়া ও আফ্রিকার মানুষদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনার জাগরণ ঘটাতে সক্ষম হয়েছিল। তারই ফলাফল হিসেবে শুরু হয় ভারতের ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার সংগ্রাম। কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ এরপর থেকে দীর্ঘ আন্দোলন চালিয়ে স্বাধীন করে উপমহাদেশকে।
  • সামাজিক পরিবর্তন: প্রথম বিশ্বযুদ্ধে রাজনৈতিক কাঠামোর পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেও বিস্তৃত পরিবর্তন এসেছিল। এ সময় রাশিয়া শ্রমিক শ্রেণীর নেতৃত্বে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এর উল্লেখযোগ্য।
  • এক নায়ক তন্ত্রের উত্থান: অপমানজনক ভার্সাই চুক্তি মেনে নেয়া কোন বোধশক্তি সম্পন্ন জার্মান নাগরিকের পক্ষে সম্ভব ছিল না। বলতে গেলে এ চুক্তি পরবর্তীকালে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বিশ্বকে আরেকটি মহাযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়।
  • প্রতিশোধ গ্রহণ: ভার্সাই চুক্তির মাধ্যমে ফ্রান্স জার্মানির সাথে বহু বছর পূর্বে ঘটে যাওয়া ঐতিহাসিক অপমানের প্রতিশোধ গ্রহণ করে। পাশাপাশি এর মাধ্যমে এমন অনেকগুলো চুক্তি জার্মানির উপর চাপিয়ে দেয়া হয় যা অনেকটাই বিদ্বেষমূলক ও অনৈতিক।
  • মহামারী: প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জয়লাভ করার জন্য বিভিন্ন স্থানে গ্যাস বোমা হামলা করে। মিত্রবাহিনীর পাশাপাশি জার্মানরাও বিষাক্ত গ্যাস নানা স্থানে ছড়িয়ে পড়ে সৃষ্টি করে নানা রোগের উপসর্গ। এসময় অনেক এলাকায় ক্লোরিনের বিষক্রিয়ায় নানা রোগের পাশাপাশি মহামারী আকারে ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। 
  • খাদ্য সংকট: যুদ্ধ চলাকালীন বিভিন্ন স্থানে পরিখা খনন থেকে শুরু করে সৈন্যবাহিনী এগিয়ে নিতে গিয়ে বিনষ্ট করা হয় মাইলের পর মাইল শস্যক্ষেত্র।নানা স্থানের কৃষক কৃষিকাজ বাদ দিয়ে বাধ্যতামূলক যুদ্ধের যোগদান করে। তাদের বাদ পড়ায় কৃষি উৎপাদন অনেকাংশে কমে যায়।

8. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার অংশগ্রহণের কারণ কি ছিল?। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল এবং তাদের প্রত্যেকের ভূমিকা গভীরভাবে পর্যালোচনা করেছিল আমেরিকা।১৯১৪ সালে গোটা ইউরোপ জুড়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় আমেরিকার রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসন ঘোষণা করেছিলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিরপেক্ষ থাকবে এবং অনেক আমেরিকান নির্বিঘ্নের এই নীতির সমর্থন করেছিল। তবে ১৯১৫ সালে একটি জার্মান ইউ বোট দ্বারা ব্রিটিশ সমুদ্র যাত্রী লুসিটানিয়া ডুবে যাওয়ার পরে নিরপেক্ষতার সম্পর্কে জনমত বদলে যেতে শুরু করে। ১২৮ জন আমেরিকান সহ প্রায় দুই হাজার মানুষ মারা যায়।

 জিম্মার ম্যান নামক টেলিগ্রামটি জার্মানি ও মেক্সিকোর মধ্যে জোটের হুমকি দেওয়ার খবরের পাশাপাশি উইলসেন কংগ্রেসকে জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিতে বলেছিলেন। আমেরিকা আনুষ্ঠানিকভাবে ৬ এপ্রিল ১৯১৭ এ সংঘর্ষে প্রবেশ করেছিল। এই যুদ্ধে আমেরিকা ফ্রান্সকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছিল। এই যুদ্ধের ফলে আমেরিকায় বিপ্লব ঘটেছিল যা ভার্সাই চুক্তির মাধ্যমে শেষ হয়েছিল।

9. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণ কি ছিল?। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি একটি কেন্দ্রীয় শক্তি হওয়া সত্ত্বেও যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিল। তারা অস্ট্রো-হাঙ্গেরি মিত্র বাহিনী সার্বিয়ার সাথে যুক্ত ঘোষণা করার পর পরই সংঘাত শুরু হয়। জার্মান সৈন্যরা মিত্রবাহিনীর সাথে পূর্ব এবং পশ্চিম প্রান্তে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ১৯১৪ সালে অল্প কিছু সময় যখন পূর্ব প্রুশিয়া আক্রমণ হয়, সে সময় ছাড়া যুদ্ধের সমস্ত সময়ে জুড়ে ব্যাপক আক্রমণ থেকে জার্মান রাজ্যগুলো তুলনামূলকভাবে নিরাপদেই ছিল।

 তবে রয়েল নৌবাহিনীর আরোপিত একটি পাকাপোক্ত অবরোধের কারণে শহরগুলোতে খাবারের সংকট দেখা দেয়। বিশেষ করে ১৯১৬-১৭ এর শীতে যেটি টুর্নীপের শীত নামে পরিচিত ছিল। যুদ্ধের শেষে জার্মানির পরাজয়ের চরম অসন্তোষ ১৯১৮-১৯ সালের জার্মান বিপ্লবের সূত্রপাত ঘটায়। আবার জার্মানির অর্থনৈতিক অবস্থাও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল না। যুদ্ধ চলাকালীন সময় অপুষ্টি, ক্লান্তি, রোগ ও হতাশায় উচ্চহারে মৃত্যু ঘটতে থাকে জার্মানিতে। যুদ্ধে আমেরিকার যোগদান একটি অন্যতম কারণ ছিল। এই সকল কারণে জার্মানি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত হয়েছিল। জার্মানি যদি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল এবং তাদের প্রত্যেকের কর্মকান্ডকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করত তবে তারা নিঃসন্দেহে উপকৃত হতে পারতো।

10. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল

 প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কত সালে সংঘটিত হয়েছিল?
উঃ ১৯১৪ সালের ২৮ জুলাই।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কত বছর যাবত হয়েছিল?
উঃ দীর্ঘ চার বছর যাবত।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল?
উঃ প্রায়৭০ টি।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মূল কারণ কি ছিল?
উঃ অস্ট্রো-হাঙ্গেরী যুবরাজ ফার্দিনান্দ এবং কাউন্টেস সোফিয়ার হত্যাকাণ্ড।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কোন দেশ জয়ী হয়েছিল?
উঃ যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কোন দেশ পরাজিত হয়েছিল?
উঃ জার্মানি, অস্ট্রো-হাঙ্গেরী ও তুরস্ক।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কোন চুক্তি মাধ্যমে শেষ হয়েছিল?
উঃ ভার্সাই চুক্তি।

11. লেখকের মন্তব্য। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল

যুদ্ধ সর্বদাই ক্ষয়ক্ষতি বয়ে আনে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ তার ব্যতিক্রম নয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল তা এখন আর কারো অজানা নয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রগুলো একে অপরের সাথে সামরিক শক্তির সংঘর্ষ তৈরি করেছে। এর ফলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রগুলো প্রত্যেকেরই প্রচুর পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। 

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রগুলো প্রত্যেকে জয়ী হওয়ার আশা রেখেছিল। তবে কিছু সংখ্যক দেশ জয়ী হতে পেরেছিল আবার কিছু সংখ্যক দেশ পরাজিত হয়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকটি দেশ তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছিল। এই যুদ্ধের ফলে কিছু দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল এবং প্রায় চারটি সাম্রাজ্য ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এই থেকে বোঝা যায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দুই ধরনের দিক রয়েছে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল এবং তাদের প্রত্যেকের ভূমিকা কি ছিল এ বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন মতামত পোষণ করেছেন।দেখা গিয়েছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কতটি রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেছিল তার উপর বিশ্বযুদ্ধের ফলাফল নির্ভর করেছিল। তাই এটি গভীরভাবে পর্যালোচনার বিষয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url