OrdinaryITPostAd

টাকা নিয়ে কিছু বাস্তব কথা ২০২২

টাকা  জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু টাকা নিয়ে কিছু বাস্তব কথা ২০২২ সালে এসে অনেকেই জানতে চায় এই টাকা আসলো কোথা থেকে এর উৎপত্তি কোথায়, টাকা কিভাবে মানুষের মাঝে ছড়িয়েছে, এটি কেন  গুরুত্বপূর্ন, এখনকার সময়ে টাকার বর্তমান অবস্থা কেমন- তাদের এ সকল প্রশ্নের উত্তর মিলবে টাকা নিয়ে কিছু কথা ২০২২ আর্টিকেলে।  তাই টাকা নিয়ে বাস্তব এবং মজার কিছু তথ্য নিয়েই থাকবে আজকের টাকা নিয়ে কিছু কথা ২০২২- আর্টিকেলে। তাই মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।



অনুচ্ছেদ সূচি(যে অংশ পড়তে চান তার উপর ক্লিক করুন)

  1. টাকার প্রাচীন ইতিহাস
  2. দক্ষিন এশিয়ায় "টাকা" শব্দের উৎস 
  3. টাকার নামের উৎস
  4. বাংলাদেশে টাকার আবির্ভাব এবং তার ইতিহাস
  5. স্বাধীন বাংলার প্রথম টাকা
  6. .অনলাইনে টাকার প্রচলন
  7. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর
  8. লেখকের মন্তব্য

১.টাকার প্রাচীন ইতিহাস। টাকা নিয়ে কিছু কথা ২০২২

টাকা নিয়ে কিছু কথা ২০২২-লেখার এই পর্যায়ে এসে জানানো হবে টাকার প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে।মানব সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে যখন লেনদেনের প্রয়োজন ছিলো তখন এর কোনো নিদ্রিষ্ট কোনো মাধ্যম ছিলো না। তখন লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে বা টাকা হিসেবে বস্তু বা পরিষেবার বিনিময়ে বস্তু, পন্য বা পরিসেবার আদান প্রদান চলতো।  কিন্তু এই পন্য আদান প্রদানে কয়েকটি সমস্যা ছিলো। 

  • সেটি হলো মান নির্ধারণ বা মানের তুলনা করার সমস্যা। একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝা যাক- ধরেন প্রথমজনের দরকার ৮ কেজি চাউল দ্বিতীয়জনের দরকার একটি ছাগল। কিন্তু প্রথমজন মনে করছেন যে একটি ছাগলের বিনিময়ে ৫ কেজি চাউলের বেশি দেয়া ঠিক হবে না। এ গেলো প্রথম সমস্যা।
  • দ্বিতীয় সমস্যা হলো - কখনো কখনো যে ব্যক্তি চাউল দিচ্ছেন তার হয়তো গরুর প্রয়োজন। তার ১০টি ছাগল প্রয়োজন নেই, তাহলে সে ছাগল নিবে কেন?তার হয়তো দরকার গরু এক্ষেত্রে তৃতীয় ব্যক্তির হস্তক্ষেপ করতে হয় যার ১টি গরুর বিনিময়ে ১০টি ছাগল প্রয়োজন।

এছাড়া আরো অনেক সমস্যা থাকার কারনে মানুষ গহনা বা সোনা ও রুপার ধাতব মুদ্রার প্রচলন শুরু করলো যা সম্ভবত তুরস্কের দেশের অন্তর্গত কোনো অঞ্চল থেকে শুরু হয় বলে ইতিহাস থেকে জানা যায়। কিন্তু এর কিছুদিন পর বুঝা গেল যে, সোনা বা রুপার ধাতব মুদ্রা বা টাকা বহন করা অনেক কঠিন হচ্ছে যেহেতু এগুলো অনেক ভারি। দ্বিতীয় সমস্যা হলো - বিভিন্ন জায়গায় সোনা বা রুপার ধাতব মুদ্রা বা টাকার মুল্যায়ন ছিলো বিভিন্ন রকম। এক দেশে স্বর্নের মুদ্রাকে দামি মনে করা হতো অন্যজায়গায় রুপার মুদ্রাকে। এবং তাদের আকৃতিও ছিলো বিভিন্ন রকম।

স্বর্ণমুদ্রার ধাতুর যুগে, এ ধরনের টাকা ক্ষয় হতো এবং ধীরে ধীরে এর পরিমাণ কমে যেত। অন্য দিকে অনেক পরিমাণ স্বর্ণমুদ্রা পরিবহন করা ঝুঁকি ছিলো।এরপর মানুষ স্বর্ণকারের কাছে স্বর্ণ  ও রুপা রেখে একটা রশিদ নিতো, এবং এই রশিদের মাধ্যমে তারা খুব সহজে লেনদেন করতে পারতো। এবং পরর্বতীতে এই রশিদ দেখিয়ে স্বর্ণকারের কাছ থেকে স্বর্ণমুদ্রা নিতে পারতো, এবং এই রশিদের অপরে লেখা ছিলো যে "‘চাহিবামাত্র ইহার বাহককে মুদ্রা দিতে বাধ্য থাকিবে।",এবং কালের বিবর্তনে এই রশিদ টাকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

২.টাকার নামের উৎস। টাকা নিয়ে কিছু কথা ২০২২

বর্তমানে টাকা বলতে আমরা বাংলাদেশের কারেন্সিকে বুঝি। এই টাকাকে টাকাই কেন বলা অন্য কিছু কেনো নয় তা জানতে পারবেন টাকা নিয়ে কিছু কথা ২০২২-লেখার এই অংশে।মুদ্রার প্রচলন শুরু থেকে কিছু লোক নদীর পাশে বসে মুদ্রা যাচাই করতেন সোনা ও রুপার মুদ্রায় তামা আছে কিনা।যাচাই করার সময় তারা একটি কাঠের টেবিলে মুদ্রাকে বাড়ি মারতেন এবং তাতে "টং" করে শব্দ হতো।পরর্বতীতে লোকমুখে টং থেকে মুদ্রাকে টংকা বলা শুরু করলো এবং আস্তে আস্তে টংকা থেকে মুদ্রা টাকা হয়ে উঠলো।তাছাড়া প্রাচীনকালে রুপা দিয়ে মুদ্রা বানানো হতো বলে মানুষ রুপার মুদ্রাকে রুপিয়া বলতো। এজন্য আজকাল বিভিন্ন দেশের কারেন্সিকে "রুপিয়া" হিসেবে দেখে যেমন ইন্দোনেশিয়া, ভারত।

৩.দক্ষিন এশিয়ায় "টাকা" শব্দের উৎস। টাকা নিয়ে কিছু কথা ২০২২

দক্ষিন এশিয়ায় টাকা শব্দের উৎস কোথা থেকে তা জানতে পারবেন, টাকা নিয়ে কিছু কথা ২০২২ এই পার্টে। আসলে টাকা শব্দের উৎপত্তি হয়েছে মূলত সংস্কৃত শব্দ "টঙ্ক" থেকে যার অর্থ দাঁড়ায় রুপার মুদ্রা। বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান যখন একসাথে ছিলো তখন থেকেই মানুষ ধাতব মুদ্রা বা যেকোনো মুদ্রা কে টাকা বলে সম্বোধন করতো। শুরু থেকেই বাঙালীরা সবধরণের মূলধনকে বা নোট বুঝাতে টাকা শব্দটি ব্যবহার করতো। এবং সেখান থেকে টাকা শব্দের উৎপত্তি বলা যায়,

৪.বাংলাদেশে টাকার আবির্ভাব এবং তার ইতিহাস।  টাকা নিয়ে কিছু কথা ২০২২

বাংলাদেশে টাকার আভির্বাব হলো কিভাবে এবং তার টাকার ইতিহাস কি তা জানতে টাকা নিয়ে কিছু কথা ২০২২- এই অংশটি পড়ুন। বাংলাদেশ স্বাধীনের পূর্বে দেশে পাকিস্তানি রুপির প্রচলন ছিলো যেটিকে টাকাও বলা হতো। এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙ্গালিরা পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে অবস্থান স্বরুপ পাকিস্তানি টাকার একপাশে "বাংলাদেশ" এবং অপর পাশে "Bangladesh" লেখা  ব্যবহার করতো। পরর্বতীতে দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের মার্চের প্রথম দিকে বাংলাদেশের কারেন্সিকে "টাকা" হিসেবে ঘোষণা করা হয়।পরর্বতীতে ১৯৭৯ সালের ৩ রা সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ “রয়েল বেঙ্গল টাইগার“-এর জলছাপ সম্বলিত ১ টাকার নোট ইস্যু করে এবং এভাবেই বাংলাদেশে টাকার প্রচলন ঘটে যা এখনো ধরে চলে আসছে।

৫.স্বাধীন বাংলার প্রথম টাকা। টাকা নিয়ে কিছু কথা ২০২২

স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম টাকা কিভাবে আসলো? তা জানবেন টাকা নিয়ে কিছু কথা ২০২২-লেখার এই অংশে। মুক্তিযুদ্ধের পর সদ্য জন্ম নেয়া বাংলাদেশ সর্বপ্রথম টাকা ছাপানো হয় ১৯৮৮ সালে টাকশালে কিন্তু এই টাকশালের যাত্রা শুরু হয় আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৮৯ সালের শেষের দিকে।বর্তমানে বাংলাদেশের গাজীপুরে অবস্থিত সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন লিমিটেড হলো একমাত্র টাকা ছাপানোর প্রতিষ্ঠান যা দেশের সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ১৯৮৮ সালের আগে, বাংলাদেশে ১৯৮৩ সালে ভারতের সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস (নাসিক) থেকে অনুমোদিত ১ ও ১০০ টাকার নোট ছাপানো হয়। কারন  ১৯৮৯ সালের আগে  দেশে টাকা ছাপানোর জন্য কোনো কারখানা বা টাকশাল ছিলো না। 

বর্তমানে বাংলাদেশি টাকার প্রতিক হলো "৳"

৬.অনলাইনে টাকার প্রচলন। টাকা নিয়ে কিছু কথা ২০২২

এই ডিজিটাল যুগে মানুষ কাগুজে টাকার প্রতি কম এবং ডিজিটাল টাকার পরতি বেশী ঝুকছে। কিন্তু এই ডিজিটাল টাকার শুরু কোথা থেকে এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে টাকা নিয়ে কিছু কথা ২০২২- আর্টিকেলের এই পর্বে। তাই সাথেই থাকার অনুরোধ রইল।

Confinity  এবং X.com এই দুটি কোম্পানি একসাথে জুড়ে গিয়ে তারা শুরু করে বিশ্বের নামকরা কোম্পানি :"PayPal"। বর্তমানে মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনালি যে কোনো দেশে লেনদেনের সুযোগ পাওয়া যায়, যা এক্সময়ে কল্পনাতীত ছিলো। এখনকার সময়ে মানুষ অনলাইনে লেনদেন করুক বা সরাসরি তাদের লেনদেনের জন্য মিডলম্যান বা মধ্যবর্তী তৃতীয় কোনো ব্যক্তি বা ব্যাংককে অন্তর্ভুক্ত করাই লাগে। এই ব্যাংকের কাজ হলো এটা নিশ্চিত করা যেনো একই টাকা যেনো লেনদেনের ক্ষেত্রে একবারের বেশি ব্যবহার না হয়।

৭.আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তরঃ

১.প্রশ্নঃ বাংলাদেশে সরকারি নোট কয়টি আছে?

উত্তরঃ ৩টি(১,২ ও ৫ টাকার নোট)

২.প্রশ্নঃ সর্বপ্রথম ধাতব মুদ্রা কোন অঞ্চল থেকে শুরু হয়?

উত্তরঃ তুরস্ক থেকে

৩.প্রশ্নঃবাংলাদেশে কোন সালে  টাকার প্রচলন শুরু হয়?

উত্তরঃ ১৯৮৮ সালে

৪. প্রশ্নঃ কত সালে টাকার (অর্থ ও ঋন) আইন করা হয়?

উত্তরঃ ২০০৩

৫.প্রশ্নঃ ১ ডলার কত টাকার সমান

উত্তরঃ ৯৫টাকা (আগে ছিলো ৮৪টাকা)

৬.প্রশ্নঃ বর্তমানে বাংলাদেশের টাকার মানের অবস্থা কি?

উত্তরঃ টাকার মান আগের চেয়ে কমেছে

৮.লেখকের মন্তব্যঃ

এমন একটা সময় ছিলো যখন একমাত্র বিনিময় মাধ্যম ছিলো টাকা, কিন্তু মানুষ এখন কাগুজে টাকার দিকে ঝুঁকছে কম এবং ডিজিটাল টাকার (কার্ডের মাধ্যমে) দিকে ঝুঁকছে। অন্যকথায় বলতে গেলে "অর্থনীতির বিবর্তনের সঙ্গে টাকার ব্যবহারেও বিবর্তন হয়েছে"। এই অনলাইনের যুগে অনেকে জানার ইচ্ছা থাকে আমাদের ব্যবহৃত টাকা কিভাবে আসলো আমাদের কাছে, তাদের মনের এই প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্যই মূলত আজকের এই টাকা নিয়ে কিছু কথা ২০২২- আর্টিকেলটি লেখা।টাকা নিয়ে আরও কিছু জানতে চাইলে আমাদের এ বিষয়ে থাকা অন্যান্য আর্টিকেল পড়ে আসতে পারেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url