OrdinaryITPostAd

ট্রান্সজেন্ডার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

 

সাম্প্রতিক সময়ে ট্রান্সজেন্ডার বিষয়টি নতুন করে আবার প্রতিবাদরূপে এসেছে। ট্রান্সজেন্ডার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইস্যু এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদপত্রে অন্যতম একটি আলোচিত বিষয়। এই আর্টিকেল প্রকাশিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ট্রান্সজেন্ডার কোটা নিয়ে প্রতিবাদ এখনও চলমান। প্রিয় পাঠক,  ট্রান্সজেন্ডার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত তথ্য জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

এছাড়াও বিস্তারিত আরও জানুন- ট্রান্সজেন্ডার কারা, ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে পার্থক্য, ট্রান্সজেন্ডার কোটা, ঢাবিতে কখন ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটা অন্তর্ভুক্ত করা হয়? হো চি মিন ও নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়- ট্রান্সজেন্ডার বিতর্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষার্থী, ট্রান্সজেন্ডার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

আর্টিকেল সূচিপত্র - ট্রান্সজেন্ডার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় 

১. ট্রান্সজেন্ডার কারা

ট্রান্সজেন্ডার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাম্প্রতিক ইস্যু আলোচনা করার ক্ষেত্রে আমাদের জানা জরুরি ট্রান্সজেন্ডার আসলে কাদের বলা হয়। আমেরিকান বিভিন্ন জনপ্রিয় সাইটগুলোতে বলা হয়- রুপান্তরিত লিঙ্গ যার ইংরেজি ‘Transgender’ বা সংক্ষেপে ‘Trans’ হল সেসব ব্যক্তি যাদের মানসিক লিঙ্গবোধ তাদের জন্মগত সেক্স বা লিঙ্গ চিহ্ন হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন। রুপান্তরিত কোন ব্যক্তি ডাক্তারি সাহায্যের মাধ্যমে নিজের সেক্স বা লিঙ্গ চিহ্ন পরিবর্তন করলে তাকে অনেক সময় রুপান্তরকামী বা ‘Transsexual’ বলা হয়। 

বিবিসি’র সংজ্ঞামতে- একজন ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তির লিঙ্গ পরিচয় তার আসল জন্মসূত্রে প্রাপ্ত সেক্স বা লিঙ্গ পরিচয়ের মত নয়। অর্থাৎ, একজন ট্রান্সজেন্ডার পুরুষ নারীর সেক্স চিহ্ন নিয়ে জন্মালেও নিজেকে একজন পুরুষ হিসেবে জাহির করে থাকেন অপরদিকে, একজন ট্রান্স নারী জন্মসূত্রে পুরুষ সেক্স বা লিঙ্গ চিহ্ন জন্মালেও নারী হিসেবে নিজেকে পরিচিত করে থাকেন। এটির ডাক্তারি ব্যাখ্যা দেয়া হয় যে- Gender Dysphoria বা ‘জেন্ডার অসন্তোষের' ফলে কিছু ব্যক্তি মানসিকভাবে নিজের জন্মগত লিঙ্গকে অস্বীকৃতি জানান। 

আরও সহজভাবে বুঝতে হলে আমাদের জেন্ডার ও সেক্স বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে।
জন্মগ্রহণের সময় আমাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্যে যেমন- হরমোন, সেক্স অরগান ইত্যাদির ভিত্তিতে ‘পুং’ লিঙ্গ বা ‘স্ত্রী’ লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয় সেটাই মূলত আমাদের সেক্স বা লিঙ্গ। অপরদিকে, কোন ব্যক্তির আচরণ, বাহ্যিক প্রকাশভঙ্গী ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে আমাদের ‘পুরুষ’ বা ‘স্ত্রী’ জেন্ডার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। 

স্বাভাবিকভাবেই যেটি আমাদের সেক্স বা লিঙ্গ তার দ্বারাই আমাদের জেন্ডার নির্ধারিত। সেক্স বা লিঙ্গের সঙ্গে আমাদের জেন্ডার মিল থাকবে সেটি প্রত্যাশা করা হয়। যেসব মানুষ সেক্সের সঙ্গে জেন্ডারের বৈসাদৃশ্য খুঁজে পান তখন চিকিৎসাবিজ্ঞানে সেটিকে জেন্ডার অসন্তোষ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং সেসব ব্যক্তি নিজেদের ‘ট্রান্স’ বা ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে ঘোষণা দিয়ে থাকেন। অনেকেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নিজেদের আকাঙ্ক্ষিত (Desirable) জেন্ডার বেছে নিয়ে থাকেন যাদের অনেকসময় রুপান্তরকামীও ডাকা হয়। 

২. ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে পার্থক্য 

ট্রান্সজেন্ডার: ট্রান্সজেন্ডারের সংজ্ঞা ইতোমধ্যে আমরা আলোচনা করেছি৷ সহজ ভাষায় ট্রান্সজেন্ডার হলেন তারা, যে কি না জেন্ডার অসন্তোষের জন্য নিজের জন্মগত সেক্স বা লিঙ্গকে অস্বীকৃতি জানান এবং নিজের পছন্দ অনুযায়ী জেন্ডার গ্রহণ করেন সেটির জন্য অনেকেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নিজের সেক্স বা লিঙ্গ পরিবর্তন করে থাকেন। ট্রান্সজেন্ডার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইস্যুর এ পর্যায়ে আমরা আলোচনা করছি হিজড়া সম্প্রদায় বা জনগোষ্ঠী আসলে কাদের বলা হয়।

হিজড়া: জন্মগতভাবেই কিছু কিছু মানুষের লিঙ্গ বা সেক্স বিশেষ কিছু শারীরিক পরিবর্তনের জন্য নির্দিষ্ট থাকে না। তাদেরকে আমরা হিজড়া/ থার্ডজেন্ডার বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হিসেবে চিনে থাকি। যদিও এখন আর থার্ডজেন্ডার শব্দটি ব্যবহার না করে তাদের ‘বৃহন্নলা’ হিসেবে ডাকা হয়। কিছু সন্তান জন্মের সময়ই নির্দিষ্ট ‘সেক্স’ বা লিঙ্গ চিহ্ন নিয়ে জন্মায় না। তারা দেখতে কিছুটা মেয়েদের মত হলেও অনেক সময় শারীরিকভাবে ছেলেদের মত পেশীবহুল ও শক্ত গঠনের অধিকারী। তাদেরকেই আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় ‘হিজড়া’ হিসেবে চিহ্নিত করে থাকি। 

অনেক ট্রান্স এক্টিভিস্টরা বলে থাকেন- ট্রান্স বিষয়টি তাদের জেন্ডার আইডেন্টিটি এবং হিজড়া জনগোষ্ঠী হলো কালচারাল একটি আইডেন্টিটি অর্থাৎ তারা আলাদা সম্প্রদায়। যদিও বেশিরভাগ এক্টিভিস্টরা বলেন যে- Transgender is a bigger umbrella যেখানে রুপান্তরিত বা রুপান্তরকামী এদের সঙ্গে হিজড়া জনগোষ্ঠীও অন্তর্ভুক্ত। সে হিসেবে তারা হিজড়াকে ট্রান্সজেন্ডারের আওতায় ফেলে থাকেন এবং দুটোকে সমার্থক হিসেবে ব্যবহার করেন। 

৩. ট্রান্সজেন্ডার কোটা

বেশ সম্প্রতি ২০২৩- ২৪ শিক্ষাবর্ষের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবন্ধী কোটার অংশে হিজড়া শব্দের পাশে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ শব্দটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ট্রান্সজেন্ডার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্কে আপনাদের ট্রান্সজেন্ডার কোটা সম্পর্কে জানতে হবে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক/কর্মকতা/কর্মচারীর ওয়ার্ড কোটা(স্বামী/স্ত্রী/সন্তান), উপজাতি বা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, হরিজন ও দলিত সম্প্রদায়, প্রতিবন্ধী (দৃষ্টি, বাক,শ্রবণ, নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডারস ও ট্রান্সজেন্ডার/ হিজড়া)।এছাড়াও, মুক্তিযোদ্ধা ও খেলোয়াড় কোটাও উল্লেখ করা আছে। এসব কোটার মধ্যে প্রতিবন্ধী কোটা হলো ঐসকল শিক্ষার্থীর জন্য যারা শারীরিকভাবে কোন ধরনের ত্রুটির সম্মুখীন। সুস্থসবল কেউই এ কোটায় মনোনীত নন এ কোটায় আবেদন করতে হলে তাকে যথাযথ সনদপত্র প্রদর্শন করে তা প্রমাণ করতে হয়।
©ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষা বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা বিজ্ঞপ্তি


৪. ঢাবিতে কখন ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটা অন্তর্ভুক্ত করা হয়?

ট্রান্সজেন্ডার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষক আর্টিকেলে উল্লেখ করছি কখন ঢাবিতে ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটা উল্লেখ করা হয়। ২০২৩ সালের ১২-ই জানুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ভর্তি কমিটির সভায় ট্রান্সজেন্ডার শব্দটির প্রথম অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের চেয়ারপারসন তাওহিদা জাহান এ কোটা যুক্ত করার প্রস্তাব করেন। 

পরে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড.মো. আখতারুজ্জামানের সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়। উপাচার্য তখন ট্রান্সজেন্ডার/ হিজড়া কোটাকে বিশেষ সুবিধা দেয়ার উদ্দেশ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হিসেবে উল্লেখ করেন। পরবর্তীতে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবন্ধী কোটায় ট্রান্সজেন্ডার শব্দটি হিজড়া কোটার সঙ্গে ‘ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া’ কোটা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

৫. হো চি মিন ও নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়- ট্রান্সজেন্ডার বিতর্ক 

অতিসম্প্রতি ট্রান্সজেন্ডার নারী হো চি মিন ইসলাম এর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সেমিনারে যোগদানকে কেন্দ্র করে আলোচনায় আসে ট্রান্সজেন্ডার বিতর্কটি। ‘হিরোস ফর অল( এইচএফএ) এবং আই-সোশ্যাল এর আয়োজনে গত ২৪ এবং ২৫ নভেম্বর, ২০২৩ এ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেন্যুতে ‘উইমেন’স ক্যারিয়ার কার্নিভ্যাল-২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়। মূলত, লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ, নেতৃত্বের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ক্যারিয়ারের প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে নারীদের অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। 

উক্ত সেমিনারে হো চি মিনের সেশনটি বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে ব্যাপক বিক্ষোভ কর্মসূচী প্রদর্শন করে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের তীব্র বিক্ষোভের মুখে হো চি মিনের সেশনটি এবং বক্তার তালিকা থেকে তাকে বাতিল করতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আয়োজক কমিটি।
এদিকে ট্রান্সজেন্ডার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রান্স কোটা প্রতিবন্ধী কোটায় অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে শিক্ষার্থীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জারি রেখেছেন। 

৬. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষার্থী

২০২৩ এর জানুয়ারিতে প্রথম ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হোন অংকিতা ইসলাম। বেসরকারি একটি ব্যাংকে চাকরির পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ব্যবস্থাপনা বিভাবে এক্সিকিউটিভ প্রোগ্রামে এমবিএ করার সুযোগ পান তিনি। 
অপরদিকে, আরেক ট্রান্স নারী সঞ্জীবনী সুধা এই প্রথমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীনের তত্ত্বাবধানে এমফিল করবেন। তার গবেষণার বিষয় ‘রিফ্রেমিং জেন্ডার ইন পলিটিক্স অব বাংলাদেশ’। জুলাই(২০২৩) মাস থেকে শুরু করা হয় এই গবেষণা কর্ম।  

৭. ট্রান্সজেন্ডার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

এই আর্টিকেলটি প্রকাশিত হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতিবন্ধী কোটায় ট্রান্সজেন্ডার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে শিক্ষার্থীরা ঢাবি ক্যাম্পাস এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে নিম্নোক্ত দাবিগুলোর সাথে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- 
  • অনতিবিলম্বে ভর্তি পরীক্ষায় ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিল করা। 
  • দ্রুত সময়ে এই ভর্তি বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা।
  • হিজড়া জনগোষ্ঠীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বিঘ্নে পড়াশোনার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয়া। 
  • ট্রান্সজেন্ডার মতবাদকে প্রমোট কের আইনন এবং সংবিধান বিরোধী কাজ করায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ক্ষমা চাইতে হবে। 
তবে আলোচনার ভিত্তিতে এ দাবিগুলো কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। শিক্ষার্থীদের দাবি- ‘কোন মতেই একজন জেন্ডার অসন্তোষে থাকা ব্যক্তিকে প্রতিবন্ধী কোটায় অন্তর্ভুক্ত করা যায় না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ট্রান্সজেন্ডার বিষয়টিকে প্রোমোটের মাধ্যমে সংবিধান বিরোধী কাজ করেছে।’

অপরদিকে, বর্তমান উপাচার্য সংবাদ মাধ্যমগুলোতে উল্লেখ করেন যে, ‘ট্রান্সজেন্ডার বলতে শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট নয়৷ এখানে হিজড়া হিসেবেই ট্রান্সজেন্ডার শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে রুপান্তরকামীদের বলছেন কিন্তু রুপান্তরকামীরা আলাদা যাদের ট্রান্সসেক্সুয়াল বলা হয়। প্রতিবন্ধী কোটায় আমরা বুঝিয়েছি হিজড়াদের।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের মতে- ‘একাডেমিভাবে হিজড়ার সমার্থক ট্রান্সজেন্ডার শব্দের ব্যবহার ভুল নয়। হিজড়া জনগোষ্ঠী ট্রান্সজেন্ডারদের মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত। শিক্ষার্থীরা শব্দটি কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে সেটি প্রশাসন থেকে স্পষ্ট না হয়ে আন্দোলনে যাওয়া উচিত নয়।’
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীরা এরই মধ্যে প্রতিবাদ চলমান রেখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দাবিসমূহ লিখিত দিয়েছেন।

৮. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর

প্রশ্ন ১: ট্রান্সজেন্ডার কারা?

উত্তর: যাদের জেন্ডার ডিসফোরিয়া বা জেন্ডার অসন্তোষের জন্য জন্মগত লিঙ্গবোধ থেকে মানসিক লিঙ্গবোধের ধারণা ভিন্ন। 

প্রশ্ন ২: হিজড়া ও ট্রান্সজেন্ডার কী এক?

উত্তর: কোন কোন ব্যক্তি ট্রান্সজেন্ডার শব্দটি হিজড়ার সমার্থক হিসেবে ব্যবহার করেন। তবে অনেক ট্রান্সজেন্ডার হিজড়া সম্প্রদায়কে আলাদা হিসেবে গণ্য করেন এবং নিজেদের ট্রান্স নারী বা ট্রান্স পুরুষ  হিসেবে উল্লেখ করেন।

প্রশ্ন ৩: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কখন ট্রান্সজেন্ডার কোটা চালু করা হয়?

উত্তর: ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে প্রথম উল্লেখ করা হয়।

প্রশ্ন ৪: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার নারী কে?

উত্তর: ট্রান্স নারী অংকিতা।

৯. লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, ট্রান্সজেন্ডার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে- ট্রান্সজেন্ডার কারা, ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে পার্থক্য, ট্রান্সজেন্ডার কোটা, ঢাবিতে কখন ট্রান্সজেন্ডার/হিজড়া কোটা অন্তর্ভুক্ত করা হয়? হো চি মিন ও নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়- ট্রান্সজেন্ডার বিতর্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষার্থী, ট্রান্সজেন্ডার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি তথ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি। এমন সাম্প্রতিক আরও বিষয় জানতে -The Du Speech এর সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ
লেখক- তামান্না বেগম 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url