OrdinaryITPostAd

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন সম্পর্কে বিস্তারিত!

আজকে আমরা আলোচনা করব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা এবং শিক্ষকদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনে আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন, শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা এবং শিক্ষকদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার জন্য আবেদনের যোগ্যতা এবং শিক্ষকদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা জানতে আজকের আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়ুন।


আর্টিকেল সূচিপত্র (যে অংশ পড়তে চান তার ওপর ক্লিক করুন)

  1. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
  2. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা
  3. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বেতনের স্কিল
  4. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া
  5. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এর অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
  6. লেখকের মন্তব্য

১.ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন

১৯০৫ সালের ১৬ই অক্টোবর বঙ্গভঙ্গে ঢাকাকে রাজধানী করে নতুন পূর্ব বাংলা ও আসাম প্রদেশ সৃষ্টি করা হয়। বঙ্গভঙ্গের ফলে পূর্ব বাংলায় শিক্ষার সবচেয়ে উন্নতি ঘটে। কিন্তু ১৯১১ সালের ১লা নভেম্বর দিল্লির দরবারে ঘোষণার মাধ্যমে ১২ই ডিসেম্বর বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়।বঙ্গভঙ্গের ফলে পূর্ববঙ্গে শিক্ষার যে জোয়ার এসেছিল, তাতে অচিরেই ঢাকাতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা অবধারিত ছিল। বঙ্গভঙ্গ রদের ফলে সে সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। ১৯১২ সালের ২১শে জানুয়ারি ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ঢাকা সফরে আসেন। এই সফরকালে ঢাকার কিছু নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি তার সাথে সাক্ষাৎ করে বঙ্গভঙ্গ রদের কারণে তাদের ক্ষতির কথা জানান।

 এই ক্ষতি পূরণের লক্ষ্যে ঘোষণা দেন যে তিনি সরকারের কাছে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করবেন। ১৯১২ সনের মে মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যারিস্টার রবার্ট নাথানের নেতৃত্বে নাথান কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির ২৫ টি সাবকমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ভারত সরকার প্রস্তাবিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রূপরেখা স্থির করে। ভারত সচিব ১৯১৩ সালে নাথান কমিটির রিপোর্ট অনুমোদন দেন। কিন্তু, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পথে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। ১৯১৭ সালের মার্চ মাসে ইমপেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী সরকারের কাছে অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল পেশের আহ্ববান জানান। ১৯১৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর লর্ড চেমস্‌ফোর্ড কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাসমূহ তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন। সেই কমিশনের উপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে পরামর্শ দেবার দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এই কমিশনের প্রধান ছিলেন মাইকেল স্যাডলার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন (স্যাডলার কমিশন) ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করে। কিন্তু, এ কমিশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সরকারি বা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় করার নাথান কমিটির প্রস্তাব সমর্থন করেনি।

 কিন্তু, ঢাকা কলেজের আইন বিভাগের সহাধ্যক্ষ ড. নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল শক্তিরূপে অভিহিত করেন। একই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতির অধ্যাপক টি সি উইলিয়ামস অর্থনৈতিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণ স্বাধীনতা দাবি করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন ঢাকা শহরের কলেজগুলোর পরিবর্তে বিভিন্ন আবাসিক হলকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিটরূপে গণ্য করার সুপারিশ করে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সিল হাউসের পাঁচ মাইল ব্যাসার্ধ এলাকাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত এলাকায় গণ্য করার কথাও বলা হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তেরোটি সুপারিশ করেছিল, এবং কিছু রদবদল সহ তা ১৯২০ সালের ভারতীয় আইন সভায় গৃহীত হয়। ভারতের তদানীন্তন গভর্নর জেনারেল ১৯২০ সালের ২৩শে মার্চ তাতে সম্মতি প্রদান করেন। স্যাডলার কমিশনের অন্যতম সদস্য ছিলেন লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক রেজিস্টার পি. জে. হার্টগ। তিনি ১৯২০ সালের ১লা ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। ১৯২১ সালের ১লা জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিক ভাবের কার্যক্রম শুরু করে।

২.ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও আইন অনুষদের বিভাগগুলোতে প্রভাষক হওয়ার জন্য প্রার্থীকে অবশ্যই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উভয় পরীক্ষায় সিজিপিএ-৪–এর মধ্যে ন্যূনতম ৩ দশমিক ৫০ থাকতেই হবে। আর মানবিক অনুষদের বিভাগগুলোতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের
যেকোনো একটি ন্যূনতম ৩ দশমিক ৫০ এবং অন্যদিকে ন্যূনতম ৩ দশমিক ২৫ থাকতেই হবে।

এমফিল বা পিএইচডি ডিগ্রি অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হলেও এ কারণে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের যোগ্যতা শিথিল হবে না।বর্তমানে কোনো ক্ষেত্রে চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি দিয়েই শিক্ষক হওয়া যায়। নতুন নির্দেশিকায়, সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগে শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি প্রভাষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ন্যূনতম তিন বছরের সক্রিয় শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। 

৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের যোগ্যতা ও বেতনের স্কেল | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন

প্রভাষক

যোগ্যতা: প্রার্থীদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ/সিজিপিএ স্কেল ৫.০০–এর মধ্যে ন্যূনতম ৪.২৫ সহ ভূতত্ত্ব বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি পরীক্ষায় সিজিপিএ ৪.০০–এর মধ্যে কমপক্ষে ৩.৫০ প্রাপ্ত হতে হবে। অন্যান্য যোগ্যতা সমান থাকলে উচ্চতর ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যেসব প্রার্থী অনার্স বা মাস্টার্স পরীক্ষায় প্রথম স্থান/সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জন করেছে, তাদের ক্ষেত্রে এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার যেকোনো একটির শর্ত শিথিলযোগ্য।

বেতন স্কেল: ২২,০০০-৫৩,০৬০ টাকা

সহকারী অধ্যাপক

যোগ্যতা: প্রার্থীকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ অথবা জিপিএ/সিজিপিএর ক্ষেত্রে স্কেল ৫.০০–এর মধ্যে ন্যূনতম ৪.২৫ সহ ভূতত্ত্ব বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি অথবা জিপিএ/সিজিপিএর ক্ষেত্রে স্কেল ৪.০০–এর মধ্যে ন্যূনতম ৩.৫০ প্রাপ্ত হতে হবে। প্রার্থীকে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছরের শিক্ষা দান ও গবেষণার অভিজ্ঞতাসহ স্বীকৃতমানের জার্নালে তিনটি প্রকাশিত গবেষণামূলক নিবন্ধ থাকতে হবে।

শিক্ষক হিসেবে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ক্ষেত্রে, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক শিক্ষা ও শিক্ষা আনুষঙ্গিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বিশেষ অবদান যোগ্যতা হিসেবে গণ্য করা হবে। অন্যান্য যোগ্যতা সমান থাকলে এমফিল/পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

বেতন স্কেল: ৩৫,৫০০-৬৭,০১০ টাকা

৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন

আগ্রহী প্রার্থীদের অবশ্যই ব্যাংক ড্রাফট সহ ৮ কপি দরখাস্ত রেজিস্ট্রার দপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর দরখাস্ত প্রেরণ করতে হবে। অবশ্যই দরখাস্তের প্রত্যেক কপিতে সার্টিফিকেট,মার্কশিট এবং অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি সংযুক্ত করতে হবে।

৫. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন

শিক্ষকদের কাজের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গবেষণা ভাতা চালু করেছে। শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময়ে এর পরিমাণও বৃদ্ধি করা হয়। তাছাড়াও ক্যাম্পাসের বাহিরে বসবাসরত শিক্ষকদের জন্য যাতায়াত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের জন্য সর্বোচ্চ চারটি ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবসর গ্রহণের ক্ষেত্রে সেশন বেনিফিট দেওয়া হয়। বিদেশে সেমিনারে শিক্ষকদের অংশগ্রহণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নির্ধারিত অনুদানও রয়েছে। শতবর্ষে অতিক্রমকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণায় অনন্য উচ্চতায় প্রতিস্থাপন এবং এর বৈশ্বিক  বৃদ্ধির জন্য নানা ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং সাথে সাথে শিক্ষকদের নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

৬.লেখকের মন্তব্য | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন

আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হওয়ার জন্য আবেদনের যোগ্যতা, এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্যান্য  সুযোগ-সুবিধা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস সম্পর্কে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে সেটি আমাদের জানাতে পারেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন ও  শিক্ষকদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ছাড়াও যে কোন বিষয় সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
আর্টিকেলটি লিখেছেন: নুসরাত জাহান হিভা 
পড়াশোনা করছেন: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় 
লেখকের জেলার নাম: কুমিল্লা



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন:  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। 
জেলা: নাটোর

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url