মেট্রোরেল টিকিট কাটার নিয়ম | সকল স্টেশনের সময়সূচি
মেট্রোরেল টিকিট কাটার নিয়ম, সকল স্টেশনের সময়সূচি সম্পর্কে আপনাদের অনেকেরই সঠিক ধারণা নেই। অনেকেই আমাদের কাছে মেট্রোরেল টিকিট কাটার নিয়ম এবং সকল স্টেশনের সময়সূচি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের পক্ষ থেকে আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব মেট্রোরেল টিকিট কাটার নিয়ম এবং সকল স্টেশনের সময়সূচি সম্পর্কে। এই সম্পর্কে সকল কিছু বিস্তারিত ভাবে জানতে আজকের আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়ুন।
আর্টিকেল সূচিপত্র (যে অংশ পড়তে চান তার ওপর ক্লিক করুন)
- মেট্রোরেল
- বাংলাদেশ মেট্রোরেল
- মেট্রোরেল টিকিট কাটার নিয়ম
- মেট্রোরেলের ভাড়া
- মেট্রোরেলের সময়সূচি
- লেখকের মন্তব্য
১.মেট্রোরেল | মেট্রোরেল টিকিট কাটার নিয়ম | সকল স্টেশনের সময়সূচি
পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশে সাধারণ মানুষের যাতায়াত করার জন্য মেট্রোরেলের ব্যবহার করা হয়। কমবেশি প্রতিটি দেশে হাজারো মানুষকে সাথে নিয়ে একেবারে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় রওনা দিতে পারে এই মেট্রোরেল। আর এই ট্রেনকে ব্যবহার করে খুবই দ্রুতগতি এবং নিশ্চিন্তে যাওয়া যায় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায়। মেট্রোরেলের ব্যবস্থা একটি উন্নত মানের রেলওয়ে ব্যবস্থা। এমনকি বিশ্বের অনেক দেশে মেট্রোরেলের ব্যবস্থার কারণে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনেকে এগিয়ে গেছে। মেট্রোরেল মূলত উড়াল সড়ক পথ দিয়ে চলাচল করে। এটি জ্বালানি তেল দিয়ে না চলে বিদ্যুতের মাধ্যমে যাত্রী পরিষেবা দিয়ে থাকে।
আরও পড়ুনঃ ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে?
২.বাংলাদেশ মেট্রোরেল | মেট্রোরেল টিকিট কাটার নিয়ম | সকল স্টেশনের সময়সূচি
বাংলাদেশ এখন উন্নত দেশগুলোর সাথে তালে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুত গতিতে। আর তারই ধারাবাহিকতাই গত কিছুদিন আগে হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন, এমনকি বর্তমানে মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেছে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর দেশ এভাবে এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুত গতিতে। আগামী দিনগুলোতে দেশকে আরো উন্নত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার নানা রকম পদক্ষেপ ইতিপূর্বেই গ্রহণ করছে। আর সেসব পদক্ষেপ অল্প কিছু দিনের মধ্যে অথবা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী।
বাংলাদেশে মেট্রোরেল চলবে এরকম আশা আজ থেকে কিছুদিন পূর্বে কখনো কল্পনার মধ্যে আসছিল না বলে মনে হয়। আর এসব কিছু সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ সরকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে। আপনারা হয়তো বা লক্ষ্য করলেই দেখতে পারবেন উন্নত দেশগুলোতে নিরাপদে এবং দ্রুত গতিতে যাত্রী পরিষেবার কাজে মেট্রোরেল নির্মিত হয়েছে। আর বর্তমানে আমরা স্বপ্নের মত যা সত্য এখন আমরা বাংলাদেশে দেখছি মেট্রোরেল যাত্রী পরিষেবায় নিয়োজিত। দেশকে আরও উন্নত এবং শক্তিশালী করার জন্য যা যা করণীয় নাগরিক হিসেবে সেসব আমাদের যথা মত করা উচিৎ।
৩.মেট্রোরেল টিকিট কাটার নিয়ম | মেট্রোরেল টিকিট কাটার নিয়ম | সকল স্টেশনের সময়সূচি
মেট্রোরেলে সিঙ্গেল জার্নির জন্য যাত্রীকে প্রত্যেকবার মেট্রোরেলে যাত্রার আগে টিকিট কাটতে হবে এবং যাত্রা শেষ হওয়ার পর টিকিট স্টেশনের নির্ধারিত গেইটে জমা দিয়ে আসতে হবে। এর কারণ হল, এই টিকিট জমা না দিলে আপনার জন্য দরজা খুলবে না, তাই অবশ্যই সব সময় টিকিট গেইটে জমা দিতে হবে না হয় বের হতে পারবেন না।
মেট্রোরেল এমআরটি টিকিট পাসের জন্য যাত্রীকে একবার এমআরটি একটি টিকিট কিনতে হবে ।কেনার জন্য প্রথমে আপনি ভোটার আইডি কার্ড কপি এবং ২০০ টাকা ফি দিতে হবে। আর সাথে আরোও ২০০ টাকা রিচার্জ করতে হবে।মোট ৪০০ টাকা দিলে পার্মানেন্ট এই মেট্রোরেল টিকিট পেয়ে যাবেন। আপনার টাকা শেষ হলে রিচার্জ করতে হবে। এটি কার্ড সিস্টেম। বিশেষ সুবিধা হল এই টিকিট স্টেশনে জমা দিতে হবে না। আপনার কাছেই এই টিকিট থাকবে।
এই দুই ধরনের মেট্রোরেল টিকিট মেট্রোরেলের প্রতিটা স্টেশনে টিকিট কাটতে পারবে সকল যাত্রীরা। মেট্রোরেল স্টেশনে থাকা টিকিট কাউন্টারের কর্মীদের কাছ থেকে এবং মেট্রোরেল টিকিট বিক্রয় মেশিনের মাধ্যমে টিকিট কাটতে পারবেন।
প্রথম ধাপ
মেট্রোরেল টিকিট বিক্রয় মেশিনের মাধ্যমে টিকিট কাটতে হলে আপনাকে সর্ব প্রথম মনিটরে ভাষা সিলেক্ট করতে হবে।আপনি বাংলা অথবা ইংরেজি অপশন নির্বাচন করতে হবে। তারপর সিঙ্গেল ও পারমানেন্ট জার্নির জন্য মেট্রোরেল টিকিট নির্বাচন করতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপ
তারপর আসবে আপনার গন্তব্যের তালিকা। আপনি যেখানে যাবেন সেই জায়গা নির্বাচন করুন। এরপর কোন স্টেশনের কত ভাড়া সেই তালিকা দেওয়া থাকবে আপনার সামনে।
তৃতীয় ধাপ
মেট্রোরেল টিকিট এরপরে কয়টি টিকিট কাটবেন আপনি তার আপশন আসবে সামনে। আপনার সিঙ্গেল জার্নির জন্য একবার যাত্রায় পাঁচটির বেশি আপনি মেট্রোরেল টিকিট কাটতে পারবেন না।
চতুর্থ ধাপ
শেষে ওকে বাটনে চাপ দিলেই মেশিন আপনার কাছে টাকা চাইবে। আপনি টাকা দিলেই সাথে সাথে মেট্রোরেল টিকিট বেরিয়ে আসবে আপনার সামনে। এবং মেট্রোরেল মেশিনে সর্বনিম্ন আপনি ২০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা প্রবেশ করাতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ ইংরেজি শেখার সহজ উপায়
৪.মেট্রোরেলের ভাড়া | মেট্রোরেল টিকিট কাটার নিয়ম | সকল স্টেশনের সময়সূচি
ইতিপূর্বে কিন্তু ঢাকাতে মেট্রোরেল চালু হয়েছে। আর এই মেট্রোরেলের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত হবে। ঢাকা শহরে লাখো মানুষের সমাগমের কারণে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা যেতে প্রচুর সময় লাগে। এমনকি পাঁচ দশ টাকা রাস্তা ১০০ টাকা দিয়ে যেতে হয়। আর এরকম যাত্রী ভোগান্তি অবসান করার জন্য মেট্রোরেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেহেতু মেট্রোরেল ডিজেল চালিত কিংবা কয়লার মাধ্যমে চলবে না সেহেতু এর বৈদ্যুতিক মাধ্যমে চলার ব্যবস্থা করা হয়েছে।আর আপনি যদি মেট্রোরেল ব্যবহার করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে খুবই দ্রুত গতিতে যেতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনাকে মেট্রোরেলের রুট অনুযায়ী ভাড়া তালিকা সম্পর্কে জানতে হবে। আপনাকে প্রথমে কার্ডের মাধ্যমে রিচার্জ করে ভ্রমণ সম্পন্ন করতে হবে।
উত্তরা নর্থ স্টেশন (দিয়াবাড়ি) থেকে আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া হবে ৬০ টাকা। মাঝে মেট্রোরেলের আরও সাতটি স্টেশন রয়েছে। উত্তরা নর্থ স্টেশন থেকে উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা সাউথ স্টেশনের ভাড়া একই, ২০ টাকা। এ ছাড়া প্রথম স্টেশন (উত্তরা নর্থ) থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৪০ টাকা এবং শেওড়াপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৫০ টাকা।
পল্লবী স্টেশন থেকে মিরপুর-১১, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া ২০ টাকা। পল্লবী থেকে শেওড়াপাড়া ও আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা। মিরপুর-১০ নম্বর থেকে ফার্মগেট ৩০ টাকা ও কারওয়ান বাজার স্টেশনে ভাড়া লাগবে ৪০ টাকা। মিরপুর–১০ স্টেশন থেকে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া ৫০ টাকা। মিরপুর-১০ থেকে সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনে যেতে ৬০ টাকা লাগবে। আর কমলাপুর স্টেশনে যেতে বাড়তি ১০ টাকা অর্থাৎ ৭০ টাকা ভাড়া দিতে হবে।
ফার্মগেট স্টেশন থেকে উঠে কারওয়ান বাজারে নামলেও এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনের সর্বনিম্ন ২০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। তবে একই ভাড়া দিয়ে যাওয়া যাবে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন পর্যন্ত। আর ফার্মগেট থেকে সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনের ভাড়া ৩০ এবং কমলাপুরের ৪০ টাকা।
অন্যদিকে কমলাপুর স্টেশন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া ২০ টাকা। মাঝখানে দুটি স্টেশন—মতিঝিল ও সচিবালয়ের ভাড়াও একই। আর কমলাপুর স্টেশন থেকে শাহবাগ ও কারওয়ান বাজারের ভাড়া ৩০ টাকা, ফার্মগেট ৪০ টাকা, বিজয় সরণি ও আগারগাঁও ৫০ টাকা, শেওড়াপাড়া ৬০ টাকা, কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন ৭০ টাকা, মিরপুর-১১ ও পল্লবী ৮০ টাকা এবং উত্তরা সাউথ স্টেশনের ভাড়া ৯০ টাকা।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন মুড সুইং এর আসল কারণ
৫.মেট্রোরেলের সময়সূচি | মেট্রোরেল টিকিট কাটার নিয়ম | সকল স্টেশনের সময়সূচি
উদ্বোধনের পর থেকে প্রথম কিছুদিন সকাল ৮.৩০টা থেকে দুপুর ১২.৩০টা পর্যন্ত চলাচল করবে মেট্রোরেল। তবে গেট খোলা হবে ৮টা থেকে আর বন্ধ হবে ১২টায়। উত্তরা ও আগারগাঁও ছাড়াও ২৫ জানুয়ারী ২০২৩ থেকে থামবে পল্লবী স্টেশনেও। ধীরে ধীরে মেট্রোরেল চলাচলের সময় ও ট্রেন সংখ্যা বাড়ানো হবে। প্রতি স্টেশনে যাত্রীদের ওঠানামার জন্য ১০ মিনিট করে থেমে থাকবে ট্রেন।
৬.লেখকের মন্তব্য | মেট্রোরেল টিকিট কাটার নিয়ম | সকল স্টেশনের সময়সূচি
মেট্রোরেল টিকিট কাটার নিয়ম এবং সকল স্টেশনের সময়সূচি সম্পর্কে আজকে আমরা আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আশা করছি মেট্রোরেল টিকিট কাটার নিয়ম ও সকল স্টেশনের সময়সূচি সম্পর্কে আপনারা ভালো একটি ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। মেট্রোরেল টিকিট কাটার নিয়ম এবং সকল স্টেশনের সময়সূচি সম্পর্কে আপনাদের যেকোনো প্রশ্ন বা মতামত আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।এছাড়াও যেকোন বিষয় সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
আর্টিকেলটি লিখেছেন: নুসরাত জাহান হিভা
পড়াশোনা করছেন: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
লেখকের জেলার নাম: কুমিল্লা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
জেলা: নাটোর
আরও পড়ুনঃ আক্কেল দাতের সমস্যায় যা যা করবেন
The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url