OrdinaryITPostAd

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র | বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র সম্পর্কে জানুন|

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (জেসিডি) বাংলাদেশের একটি অন্যতম ছাত্রদল। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৯ সালের ১লা জানুয়ারি। শহীদ মেজর জিয়াউর রহমান এই ছাত্রদলটি গঠন করেছিলেন। ছাত্রদলের অতীত অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল। সূচনালগ্ন থেকে শুরু করে বিভিন্ন জাতীয় পর্যায়ে সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিয়ে এই ছাত্র সংগঠনটি সুনাম অর্জন করেছে। তারা পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। শুধু তাই নয়, স্বৈরাচারী আন্দোলনের সময় তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবচেয়ে বড় ছাত্র সংগঠন। গঠনতন্ত্র হলো কোনো সংগঠনের কর্মকান্ডের মূল দলিল, যেই দলিলে সেই সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণিত থাকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সংগঠনটিরও একটি নিজস্ব গঠনতন্ত্র রয়েছে। এই আর্টিকেলটিতে আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো‌। এই গঠনতন্ত্র সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে চাইলে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

যে আর্টিকেলের সূচিপত্র (যে অংশ পড়তে চান তার উপর ক্লিক করুন)

  1. সংগঠনের নামকরণ
  2. মূলনীতি
  3. দলীয় পতাকা
  4. ছাত্রদলের মনোগ্ৰাম
  5. প্রাথমিকভাবে সদস্যপদ লাভ ও সদস্যপদ বাতিল 
  6. ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি
  7. জাতীয় কাউন্সিল ও কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন 
  8. মূল সংগঠনের সাথে এই সংগঠনের সম্পর্ক
  9. তহবিল
  10. সংবিধান ও ঘোষণাপত্র বাতিল
  11. ব্যক্তিপদ 
  12. বিশেষ দিবস পালন 
  13. সিদ্ধান্ত ও অনুমোদন
  14.  শোকজ, সতর্কতা ও বহিস্কার বিষয়ক নীতি 
  15. সদস্যপদ বাতিল 
  16. সমালোচনা 

1. সংগঠনের নামকরণ|বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এর ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠার সময় শহীদ জিয়াউর রহমান এই সংগঠনের নামকরণ করেছিলেন ' বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল '। এই সংগঠনটি বহুদলীয় গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায় বিচার ভিত্তিক শোষণহীন সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, উৎপাদনমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়নের সহায়তা শক্তি হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য গঠিত। 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রে উল্লেখ রয়েছে যে, এটি ইংরেজিতে 'Bangladesh Jatiotabadi Chhatradal' লিখিত, সংক্ষেপে J.C.D। প্রতিটি শাখায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নামটি ব্যবহৃত হবে। যেমন: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা কলেজ শাখা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মানিকগঞ্জ জেলা শাখা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গাজীপুর পৌর শাখা ইত্যাদি।

2. মূলনীতি| বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রে মূলনীতি তিনটি উল্লেখিত হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে -
  • শিক্ষা 
  • প্রগতি
  • ঐক্য 
শিক্ষা : শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষা ব্যতীত কোনো দেশের পক্ষে উন্নতি করা সম্ভব নয়। ছাত্র জীবন শুরু হয় শিক্ষা গ্ৰহণের মধ্য দিয়ে। এজন্য শিক্ষাকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রধান মূলনীতি 
করা হয়েছে।

প্রগতি : আমাদের সমাজ ও দেশকে প্রগতিশীল করে তোলার জন্য সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবার কোনো বিকল্প নেই।  তাই সুশিক্ষিত ও স্বশিক্ষিত হয়ে দেশকে প্রগতির দিকে নিয়ে যাওয়া আমাদের দায়িত্ব। এই দায়িত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে একে প্রধান মূলনীতিগুলোর একটি বানানো হয়েছে।

ঐক্য : ঐক‌্যতাই সাফল্যের চাবিকাঠি। একটি জাতির সম্মিলিতভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকার উপর দেশের উন্নয়ন নির্ভর করে। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ঐক্যের মূল স্পিরিট। তাই ছাত্র সমাজকে সুসংগঠিত করে একটি আধুনিক ও প্রগতিশীল জাতিতে পরিণত করার লক্ষ্যে ঐক্যকে তিনটি মূলনীতির একটি করা হয়েছে।

3. দলীয় পতাকা| বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রের পতাকা সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ছাত্রদলের পতাকায় দুটি রং থাকবে, লাল ও সবুজ। পতাকার উপরের অংশ লাল ও নিচের অংশ সবুজ হবে। লাল অংশে দলের তিনটি মূলনীতি শিক্ষা, প্রগতি ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে তিনটি সাদা তারকা থাকবে। লাল রংটি হলো -  ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের প্রতীক, তাদের মহান আত্মত্যাগের মূর্ত প্রকাশ। আর সবুজ রংটি হলো - সবুজ শস্য শ্যামল বাংলাদেশ প্রতীক ও তারুণ্যের আবহ বিজয়গানের বহিঃপ্রকাশ।

4. ছাত্রদলের মনোগ্ৰাম|বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রে মনোগ্ৰামের আকার সম্পর্কে আছে যে, মনোগ্ৰামের গোলাকার বৃত্তের উপরের অংশ লাল ও নিচের অংশ সবুজ রঙের হবে। লাল রংটি হলো - ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের প্রতীক, তাদের মহান আত্মত্যাগের মূর্ত প্রকাশ। আর সবুজ রংটি হলো - সবুজ শস্য শ্যামল বাংলাদেশ প্রতীক ও তারুণ্যের আবহ বিজয়গানের বহিঃপ্রকাশ। উপরের লাল অংশে দলের তিনটি মূলনীতি শিক্ষা, প্রগতি ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে তিনটি সাদা তারকা থাকবে। বৃত্তের মাঝে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল লেখাটি থাকবে এবং বৃত্তের দুই পাশে দুইটি ধানের শীষ প্রতীক থাকবে।

5. প্রাথমিকভাবে সদস্যপদ লাভ ও সদস্যপদ বাতিল|  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|


প্রাথমিকভাবে সদস্যপদ লাভ 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রে সদস্য পদ নিয়েও উল্লেখ রয়েছে। এক্ষেত্রে বলা আছে যে, দেশের যেকোনো মাধ্যমিক অথবা সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের সদস্যপদ লাভ করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে তাদের অবশ্যই দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং আদর্শের সাথে একাত্ম হয়ে সংগঠনের নিয়ম-কানুন মেনে চলার অঙ্গীকার করতে হবে। কেন্দ্রীয় সংসদ হতে দলের সদস্য ফরম যোগার করতে হবে। সদস্য পদ পেতে হলে নির্ধারিত সদস্য ফরমে শাখা নির্বাহী কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে আবেদন করতে হবে। কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদন করার পরে আবেদনকারী প্রাথমিক সদস্য হিসেবে বিবেচিত হবে।

(১) সদস্যদের বার্ষিক চাঁদা সদস্য পদ গ্ৰহণের সময় দলের তহবিলে ৫ টাকা প্রদান করতে হবে। এছাড়া প্রতি বছর সদস্য নবায়নের জন্য আরো ৫ টাকা প্রদান করতে হবে। সদস্যদের কাছ থেকে আদায় করা তহবিল নিম্নোক্ত বিভিন্ন ইউনিটের তহবিলে জমা দিতে হবে -
  • প্রাথমিক কমিটি - ৪০%
  • থানা কমিটি - ২০%
  • জেলা কমিটি - ২০%
  • কেন্দ্রীয় কমিটি - ২০%
(২) বাংলাদেশের নাগরিক ও অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরাই কেবল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সদস্য হবার যোগ্য বলে গণ্য হবে।

(৩) মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও এই দলের সদস্য হতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে দাখিল মাদ্রাসা থেকে শুরু করে আলিম, ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা পর্যন্ত এটি সীমাবদ্ধ থাকবে।


প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিল 

কোনো সদস্য যদি সংগঠনের নীতি, আদর্শ বিরোধী কাজ করে, শৃঙ্খলা ভঙ্গ, ব্যক্তি জীবনে নৈতিকতা বিরোধী কোনো কাজ করলে তার সদস্য পদ বাতিল করা হবে।

6. ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি| বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

(১) জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে গঠনতন্ত্রে উল্লেখ আছে যে, জাতীয়তাবাদি ছাত্রদলের মধ্যে কোনো শহরে/জেলায়/থানায়/কলেজে/বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি কোনো কারণে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা সম্ভব না হয়, তাহলে সেখানে একজন আহ্বায়ক ও ৩ জন যুগ্ম আহ্বায়কের সমন্বয়ে থানা মর্যাদা ইউনিটের ক্ষেত্র ও জেলা মর্যাদা সম্পন্ন ৫ জন যুগ্ম আহ্বায়ক সহ ৬১ জন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হবে।

(২) আহ্বায়ক কমিটিকে অবশ্যই তিন মাসের মধ্যে সম্মেলন সম্পন্ন করতে হবে।

(৩) আহ্বায়ক কমিটি যদি কোনো কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্মেলন করতে না পারে, তাহলে এক্ষেত্রে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেবে।  

(৪) কেন্দ্রীয় সংসদের ক্ষেত্রে দলীয় যিনি চেয়ারপার্সন, তিনি একজনকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠন করবেন।


7. জাতীয় কাউন্সিল ও কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন| বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

(১) কেন্দ্রীয় সংসদের সমস্ত সদস্য ও কর্মকর্তাগণ কেন্দ্রীয় কাউন্সিলার।

(২) প্রত্যেক সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতিগণ কেন্দ্রীয় কাউন্সিলার।

(৩) যেসব জেলাতে পূর্ণাঙ্গ কমিটির জায়গায় আহ্বায়ক কমিটি, সেসব জেলার আহ্বায়ক ও প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক জাতীয় সম্মেলনে কাউন্সিলার। 

(৪) কাউন্সিল অধিবেশনে সংগঠনের গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র, চূড়ান্তভাবে গ্ৰহণ করা, সংশোধন ও সংযোজন করা এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি গঠন করা হবে। জাতীয় কাউন্সিল দ্বারা কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটি গঠিত হবে। জাতীয় কাউন্সিলে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করবেন।  জাতীয় কাউন্সিলের কাছে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জবাবদিহিতা করবেন।

(৫) জাতীয় কাউন্সিল : জাতীয় কাউন্সিল দ্বিবার্ষিকভাবে অনুষ্ঠিত হবে। যদি কোনো কারণে যথা সময়ে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত করা সম্ভব না হয়, তাহলে দলীয় চেয়ারপারসনের অনুমতি অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে অবশ্যই জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত করতে হবে।

8. মূল সংগঠনের সাথে এই সংগঠনের সম্পর্ক|বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের গঠনতন্ত্রে এর অঙ্গ সংগঠনের বিষয়ে বলা হয়েছে যে, দলটির ছাত্র/অঙ্গ সংগঠন হলো 'বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল'।
তাই, ছাত্রদল মূল জাতীয়তাবাদী দলের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও আদর্শ বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে কাজ করবে। চেয়ারপার্সন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি বিশেষ প্রয়োজনে বাতিল অথবা কেন্দ্রীয় কার্যক্রম স্থগিত করে নতুন পূর্ণাঙ্গ অথবা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করতে পারবে। তিনি কোনো কারণে প্রয়োজন হলে যেকোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে পারবেন। চেয়ারপার্সন প্রয়োজন হলে ছাত্রদলের সংবিধানের যেকোনো ধারা-উপধারা, অনুচ্ছেদ স্থগিত করতে পারেন এবং প্রয়োজনে সংবিধান পর্যন্ত বাতিল করে দিতে পারেন।

9. তহবিল| বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

(১) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গঠনতন্ত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত ও সঠিক রশিদ ব্যতীত দলের নামে কোনো চাঁদা সংগ্রহ করা যাবে না। তহবিলের আয়-ব্যয়ের সুবিধা অনুযায়ী সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং অর্থ সম্পাদকের স্বাক্ষর নিয়ে যেকোনো ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হবে।

(২) তহবিলের উৎস : সংগঠনের সদস্য অথবা সদস্যদের বাৎসরিক চাঁদা, শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহযোগিতা বা অনুদান ও মূল সংগঠনের সাহায্য ইত্যাদি হলো তহবিলের উৎস।

(৩) চাঁদার নিয়ম-কানুন

(ক) প্রাথমিক কমিটির সভাপতি, সহ-সভাপতিবৃন্দ ও সম্পাদকগণ প্রতি মাসে ৫ টাকা করে চাঁদা প্রদান করবে। সদস্যগণ ২ টাকা ইউনিট তহবিলে প্রদান করবে। 
(খ) পৌর/শহর, থানা ও থানার মর্যাদাসম্পন্ন ইউনিট‌ সভাপতি, সহ-সভাপতিগণ, সম্পাদকগণ প্রতি মাসে ১০ টাকা প্রদান করবে। সদস্যগণ প্রতি মাসে ৫ টাকা ইউনিট তহবিলে প্রদান করবে।
(গ) সাংগঠনিক জেলার সভাপতি, সহ-সভাপতিগণ,
সম্পাদকগণ প্রতি মাসে ১৫ টাকা প্রদান করবে। সদস্যগণ ১০ টাকা ইউনিট তহবিলে প্রদান করবে।
(ঘ) কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম ও সম্পাদকগণ প্রতি মাসে ২৫ টাকা প্রদান করবে। সদস্যগণ ২০ টাকা ইউনিট তহবিলে প্রদান করবে।

(৪) সদস্যগণের বাৎসরিক চাঁদা ও ইউনিট কমিটি হতে সংগৃহীত তহবিল দলীয় কাজে ব্যয় করা হবে।

(৫) ইউনিট সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অর্থ সম্পাদক একত্রে মে কোনো ব্যাংকে তহবিল জমা রাখবেন ও দলীয় কর্মকাণ্ডে ব্যয় করবেন।

10. সংবিধান ও ঘোষণাপত্র বাতিল|বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

যদি কোনো কারণে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সংগঠনের সংবিধান এবং ঘোষণাপত্র সংশোধন করার প্রয়োজন হয়, তাহলে কেন্দ্রীয় সংসদ বিশেষ কাউন্সিল অধিবেশন আহ্বান করবে। সেই কাউন্সিলের অধিবেশনে অংশগ্রহণ করা সদস্যগণ যদি সম্মতি প্রদান করে, তাহলে সংবিধান ও ঘোষণাপত্র সংশোধন করা যাবে। এটা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রে অনুমোদন করা হয়েছে।


11. ব্যক্তিপদ| বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

গঠনতন্ত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সংগঠনের গতি এবং নেতৃত্বের উৎকর্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য ছাত্রদলের কোনো সদস্য একই সঙ্গে তিনটি পদে থাকতে পারবে না। যদি কখনো এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেক্ষেত্রে তাকে একটি পদ থেকে সরে যেতে হবে। তা না হলে কেন্দ্রীয় সংসদ তাকে যেকোনো একটি পদ থেকে অব্যাহতি দেবে।


12. বিশেষ দিবস পালন| বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রে কিছু দিবস পালনের কথা বলা হয়েছে যেগুলো ছাত্রদল পালন করে থাকে। দিবসগুলো নিম্মরূপ - 
  • ১ জানুয়ারি = ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী 
  • ১১ জানুয়ারি = শহীদ খালেদ দিবস 
  • ১৯ জানুয়ারি = শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী 
  • ২০ জানুয়ারি = আসাদ দিবস 
  • ২৪ জানুয়ারি = গণঅভ্যুত্থান দিবস
  • ১৪ ফেব্রুয়ারি = সামরিক আইন বিরোধী দিবস
  • ২১ ফেব্রুয়ারি = শহীদ দিবস
  • ৯ মার্চ= মাহবুবুল হক দিবস
  • ২৪ মার্চ = গণতন্ত্র হত্যা দিবস
  • ২৬ মার্চ = জাতীয় ও স্বাধীনতা দিবস
  • ১ মে = মে দিবস
  • ৩০ মে = শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বরণ বার্ষিকী
  • ১৬ জুন = কালো দিবস
  • ১৭ সেপ্টেম্বর = শিক্ষা দিবস
  •  ১০ অক্টোবর = শহীদ জিহাদ দিবস
  • ৭ নভেম্বর = জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস
  • ১০ নভেম্বর = নূর হোসেন দিবস
  • ২৭ নভেম্বর = ড. মিলন দিবস
  • ৬ ডিসেম্বর = গণতন্ত্র মুক্তি দিবস
  • ১৬ ডিসেম্বর= মহান বিজয় দিবস 

13.সিদ্ধান্ত ও অনুমোদন|বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

কমিটি অনুমোদন : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রে অধিনস্ত কমিটি সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, অধিনস্ত কমিটিতে কোনো কিঊ অনুমোদন করার ক্ষেত্রে উর্ধ্বতন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি যৌথভাবে অনুমোদন করবেন ।

সিদ্ধান্ত : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রে সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারে উল্লেখ রয়েছে যে, যেকোনো সভায় সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ যে রায় দেবে, সেটিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে। 


14. শোকজ, সতর্কতা ও বহিস্কার বিষয়ক নীতি| বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

দলের কোনো সদস্য যদি সংগঠন বিরোধী কোনো কাজে লিপ্ত হয়, তাহলে তাকে কারণ দেখানোর নোটিশ দিতে হবে। নোটিশ পাবার ২১ দিনের মধ্যে যদি সেই সদস্য কোনো সন্তোষজনক লিখিত উত্তর না দেয়, তাহলে তাকে সাময়িক সময়ের জন্য সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হবে। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে উর্ধ্বতন কমিটি। যেমন- জেলার ক্ষেত্রে বহিষ্কারের আদেশ কেন্দ্রীয় কমিটি চূড়ান্ত করবে। আর কেন্দ্রের বেলায় কোনো সদস্য ও কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করার জন্য কেন্দ্রীয় সংসদের সভায় অনুমোদন করে দলীয় চেয়ারপারসনের মাধ্যমে সেটি চূড়ান্ত করবে।

15. সদস্যপদ বাতিল | বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে যে, কেন্দ্রীয়/জেলা/শহর/থানা/পৌর/প্রাথমিক শাখার কোনো সদস্য যদি কোনো কারণ ছাড়া পর পর দুটি সভা অথবা পাঁচটি জরুরি সভায় অনুপস্থিত থাকে, তাহলে তার সদস্যপদ সাময়িক সময়ের জন্য বাতিল হয়ে যাবে।  উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা সেটা চূড়ান্তভাবে ঘোষণা দেবেন।


16. সমালোচনা| বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

জাতীয়তাবাদী গঠনতন্ত্রে এটি উল্লেখ রয়েছে যে, ছাত্রদলের সমস্ত কর্মীকে আদর্শবান কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে হলে নিজেদের মধ্যে ভুল-ভ্রান্তি দূর করার জন্য এবং আত্ম সংশোধন করার জন্য গঠনমূলক আত্ম সমালোচনা ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে ছাত্রদলের প্রতিটি কর্মী আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও নিষ্ঠাবান ও নিবেদিত এক একজন বলিষ্ঠ সৈনিক হবে। তাদের দ্বারা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতৃত্ব শক্তিশালী হবে। তাই এসব গঠনমূলক কার্যক্রম খুব প্রয়োজন।

আর্টিকেল সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন-উত্তর|বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র সম্পর্কে আপনাদের মনে নিশ্চয়ই বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন রয়েছে। আর্টিকেলের এই অংশে এই ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। আশা করি আপনাদের মনে যেসব প্রশ্ন রয়েছে সেগুলোর উত্তর এই অংশে পেয়ে যাবেন। 

প্রশ্ন (১): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কে গঠন করেছিল?
উত্তর: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান গঠন করেছিল।

প্রশ্ন (২): এই সংগঠনের প্রধান কর্মকর্তা কে?
উত্তর: এই সংগঠনের প্রধান কর্মকর্তা হচ্ছে সভাপতি।

প্রশ্ন (৩): কেন্দ্রীয় কমিটি কতজন সদস্যদের নিয়ে গঠিত হবে?
উত্তর: কেন্দ্রীয় কমিটি ৫৬ জন‌ কর্মকর্তা ও ৯৫ জন সদস্য সহ মোট ১৫১ জন নিয়ে গঠিত হবে।

প্রশ্ন (৪): সংগঠনের প্রসার লাভের জন্য কার দায়িত্ব অপরিসীম? 
উত্তর: সংগঠনের প্রসার লাভের জন্য প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব অপরিসীম।

প্রশ্ন (৫):  জেলা কমিটিতে কত জন সহ সম্পাদক থাকবে?
উত্তর: জেলা কমিটিতে ৭ জন‌ সহ সম্পাদক থাকবে।

লেখকের মন্তব্য|বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র|

প্রিয় পাঠক, আজ আপনাদের সাথে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র সম্পর্কিত এই আর্টিকেল সম্পর্কে অথবা যেকোনো বিষয়ে আপনাদের যদি কোনো মতামত বা অভিযোগ থেকে থাকে, কমেন্ট বক্সে লিখে জানাবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল সংগঠন The DU Speech এর ব্যাপারে হোক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রে সম্পর্কে এই আর্টিকেলের ব্যাপারে হোক বা অন্য যেকোনো বিষয় সম্পর্কে হোক, আপনার মতামত আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url