রোমানিয়া যাওয়ার উপায়! রোমানিয়ার বিস্তারিত তথ্য
বর্তমানে রোমানিয়া বাংলাদেশীদের জন্য অপার সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। যারা রোমানিয়া যাওয়ার উপায় খুঁজছেন বা রোমানিয়া যেতে ইচ্ছুক তাদের জন্যই আজকের এই আর্টিকেল। রোমানিয়া যাওয়ার পূর্বে রোমানিয়া সম্পর্কে কিছু বেসিক বিষয় জেনে রাখা উচিত।জনশক্তি নিয়োগের দিক থেকে বৈদেশিক শ্রমবাজারে নতুন হলেও বেশ চাহিদা সম্পন্ন ও জনপ্রিয় একটি দেশের নাম রোমানিয়া। শ্রমশক্তি নিয়োগের নতুন হওয়ার জন্য বা স্বল্প সময়ে শ্রমিক নেওয়ার জন্য রোমানিয়া যাওয়ার উপায় সম্পর্কে অনেকেরই পরিষ্কার ধারণা নেই। তাই আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে রোমানিয়া যাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে।আপনি যদি রোমানিয়া যাওয়ার উপায় সম্পর্কে ভালোভাবে না জানেন, তাহলে আশা করি এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে রোমানিয়া যাওয়ার উপায় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সম্পূর্ণ তথ্য জানতে পারবেন।
- রোমানিয়া কোথায় অবস্থিত? রোমানিয়ার সার্বিক অবস্থা!
- রোমানিয়া যাওয়ার প্রক্রিয়া!
- রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিশন প্রক্রিয়া
- রোমানিয়া যাওয়ার ভিসা
- রোমানিয়া ভিসার খরচ
- ভিসা পেতে কতো দিন সময় লাগবে?
- রোমানিয়ায় শ্রমিক নিয়োগের বয়সসীমা
- রোমানিয়া যাওয়ার যোগ্যতা
- রোমানিয়ায় কাজের ধরন
- রোমানিয়ায় শ্রমিকদের বেতন কত?
- রোমানিয়ায় স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ
- রোমানিয়া থেকে অন্যান্য দেশে যাওয়ার সুযোগ
- দালাল হতে সাবধান!
- রোমানিয়া যাওয়ার পূর্বে যে বিষয় নিশ্চিত হবেন!
প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য অন্যতম শ্রমবাজার হিসেবে স্বল্প সময়ে অধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে রোমানিয়া। বর্তমান সময়ে বিদেশ গিয়ে কাজ করা বা টাকা উপার্জন করার জন্য উচ্চ দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকা অতীব জরুরী। কিন্তু আপনি উচ্চ দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা ছাড়াও রোমানিয়া গিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন।
রোমানিয়া কোথায় অবস্থিত? রোমানিয়ার সার্বিক অবস্থা!
রোমানিয়া হচ্ছে 2,38,397 বর্গকিলোমিটার বিশিষ্ট দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপের একটি দেশ। রোমানিয়ার আয়তন বাংলাদেশের আয়তনের তুলনায় প্রায় দেড় গুণ এবং সেখানে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা প্রায় 20 মিলিয়ন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সপ্তম বৃহত্তম দেশ হচ্ছে রোমানিয়া। ভৌগোলিকভাবে পূর্ব ইউরোপের শেষপ্রান্তে রোমানিয়া অবস্থিত। রোমানিয়া 2007 সালে ন্যাটোর সদস্য পদ লাভ করে এবং 2007 সালে ইউরোপ ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হয়।বুখারেস্ট হচ্ছে রোমানিয়ার রাজধানীর নাম । স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত রোমানিয়া উসমানীয় সাম্রাজ্যের একটা অংশ ছিল ইউরোপীয় মহাদেশের দক্ষিণাংশে রোমানিয়া সবচেয়ে পূর্বে অবস্থিত এবং পশ্চিমে সিনচেনের দেশ হাঙ্গেরি অবস্থিত। রোমানিয়ার দক্ষিণ পশ্চিম দিকে সার্বিয়া অবস্থিত এবং দক্ষিণ দিকে বুলগেরিয়ার অবস্থান। রোমানিয়ার উত্তরে ইউক্রেন ও উত্তর পূর্বে মলদোভা অবস্থিত।
রোমানিয়া দেশের আয়তনের তুলনায় জনশক্তি তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এছাড়া এদেশে বসবাসরত প্রায় 60% মানুষ রোমানিয়ার প্রকৃত অধিবাসী নয়। ইউরোপীয় অন্যান্য দেশের তুলনায় এই দেশে অর্থনৈতিক অবস্থা তেমন ভালো না ।এখানকার প্রায় 60% মানুষ দিন এনে দিন খায় প্রকৃতির। রোমানিয়ার অর্থনৈতিক দুর্দশার অন্যতম কারণ দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার ও দক্ষ জনশক্তির অভাব।
অর্থনীতির পাশাপাশি শিক্ষাগত দিক দিয়েও বেশ পিছিয়ে রয়েছে দেশটি। রোমানিয়ায় বসবাসকারী উচ্চ শিক্ষিত লোকের সংখ্যা 40 শতাংশের নিচে।
তাই রোমানিয়া ইউরোপীয় অনুন্নত দেশ হিসেবে পরিচিত এবং দক্ষ জনশক্তির অভাব পূরণ করার জন্যই দেশটি বর্তমানে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারত থেকে শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে।
রোমানিয়া যাওয়ার প্রক্রিয়া!
রোমানিয়া থেকে অন্যান্য সেনজেনভুক্ত দেশে যাওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ হাওয়ায় বাংলাদেশের যে কোনো শ্রমিকের রোমানিয়া যাওয়া তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি সুবিধাজনক। এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে নতুন শ্রমিক নেওয়া বন্ধ হওয়ার পরে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য রোমানিয়া যাওয়া জনপ্রিয় হয়ে গেছে। এছাড়াও এই দেশে আয়তনের তুলনায় জনগণের সংখ্যা সীমিত হওয়ায় রোমানিয়াতে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ রয়েছে।
রোমানিয়া যাওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া হচ্ছে ভিসা গ্রহণ বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা গ্রহণ। এছাড়াও রোমানিয়া যেহেতু অনুন্নত দেশ তাই এখানে সাধারণত আনঅফিশিয়াল বা কৃষিনির্ভর, কনস্ট্রাকশন ও হোটেল ইত্যাদির কাজের জন্য শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে শ্রমিকের শিক্ষাগত যোগ্যতার চাহিদা অনেক কম থাকে। রোমানিয়া থেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসার বিজ্ঞাপন দেওয়ার পরে নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব যোগ্যতা অনুসারে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় রোমানিয়া গেলে আপনি সেখানে বৈধভাবে বসবাস করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি এজেন্সি এর সহায়তা নিতে পারেন, তবে সতর্কতার সহিত।
আপনি যদি শ্রমিক হিসেবে কাজ এর খোঁজে রোমানিয়া যেতে চান তাহলে সর্বপ্রথম আপনাকে রোমানিয়া থেকে শ্রমিক নিয়োগ সম্পর্কিত দৈনিক পত্রিকাগুলোতে খেয়াল রাখতে হবে। রোমানিয়াতে বিভিন্ন কৃষি সেক্টর ছাড়াও বিভিন্ন হোটেল ও কারখানা রয়েছে যেখানে নিয়মিতভাবে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগের মাধ্যমে শ্রমিক নেওয়া হয় এবং এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট একটি সময়সীমা দেওয়া হয় আবেদন বা রেজিস্ট্রেশন করার জন্য । এজন্য আপনি যদি শ্রমিক হিসেবে রোমানিয়া যেতে চান,তাহলে আপনাকে বিভিন্ন দেশের শ্রমিক নিয়োগের পত্র পত্রিকাতে নিয়মিত ও সঠিকভাবে খোঁজখবর রাখতে হবে যাতে আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় রোমানিয়া যাওয়ার জন্য সঠিক সময়ে সঠিকভাবে আবেদন করতে পারেন।
রোমানিয়া যাওয়ার জন্য প্রাথমিক নিবন্ধন প্রক্রিয়া! রোমানিয়া যাওয়ার উপায়
অনেকেই রোমানিয়া যেতে আগ্রহী কিন্তু তারা জানে না কিভাবে রোমানিয়া যাওয়ার জন্য আবেদন করতে হয়। আসুন জেনে নিই কিভাবে রোমানিয়া যাওয়ার জন্য আবেদন করতে হয়। রোমানিয়া যাওয়ার জন্য প্রাথমিক নিবন্ধন করতে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস এবং কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে পারেন এছাড়াও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে উল্লেখিত নির্দিষ্ট শাখায় অথবা রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট এর বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে রোমানিয়া যাওয়ার জন্য প্রাথমিক নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারবেন।
- রোমানিয়া যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করার সময় গ্রহণযোগ্য বয়স অনুসারে আবেদন করতে হবে।রোমানিয়াতে বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন বয়স সীমা অনুযায়ী শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। আপনি যে ধরনের কাজ করার জন্য রোমানিয়াতে যেতে চান সেই নিয়োগ বিজ্ঞাপন অনুসারে বয়স সীমা অনুযায়ী আবেদন আবেদন করতে পারবেন। আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।
- যদিও রোমানিয়াতে শ্রমিক হিসেবে যাওয়ার জন্য খুব একটা অভিজ্ঞতা বা যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। তাই যদি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে আপনি কোন যোগ্যতাভিত্তিক কাজে যোগদান করতে যোগদান করতে ইচ্ছুক হন, তাহলে নিবন্ধন করার সময় অবশ্যই সকল যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সনদ পত্র ডাটা ব্যাংকের প্রধান করতে হবে।
- প্রাথমিক নিবন্ধন প্রক্রিয়া অবশ্যই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
- প্রাথমিক নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরে মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে আপনি নিবন্ধন সম্পর্কিত সকল আপডেট পেতে থাকবেন।
প্রাথমিক আবেদনের পরে নির্দেশনা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে রোমানিয়া যাওয়ার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিশন প্রক্রিয়া
শ্রমিক হিসেবে রোমানিয়া গিয়ে কাজ করার জন্য সর্বপ্রথম আপনার যেটা প্রয়োজন হবে তা হচ্ছে রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা। রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এর জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট প্রাথমিক আবেদন করতে হবে।
রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য প্রাথমিক আবেদন করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
- সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড এর পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- কমপক্ষে এক বছর মেয়াদ সম্পন্ন ভ্যালিড পাসপোর্ট
- মেয়াদ সম্পন্ন পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট।
রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য উক্ত কাগজপত্রের স্ক্যান কপি প্রদান করতে হবে।
কাগজপত্রের ফাইল রোমানিয়াতে পৌঁছানোর পরে সে গুলোকে রোমানিয়ার জাতীয় ভাষা তে রুপান্তর করা হবে এবং তারপর তা নোটারি করা হবে। উক্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে প্রায় 7 থেকে 10 দিন সময় লাগবে । তারপর ফাইল রোমানিয়ার ইমিগ্রেশন অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আবেদনকৃত প্রতিটি ফাইল রোমানিয়া ইমিগ্রেশন অফিসের একসাথে জমা করানো হবে এবং সবগুলো ফাইল এর জন্য একটি ডকুমেন্ট পেপার প্রদান করা হবে যেখানে কবে ফাইল সমূহ উত্তোলন করা যাবে এবং কত জন প্রার্থীর ফাইল একসাথে জমা করানো হয়েছে তা উল্লেখ থাকবে।
ফাইল জমা নেওয়ার প্রায় 30 দিনের মধ্যে ফাইলসমূহ ডেলিভারি করা হবে। এই সময়ের মধ্যে মূলত পারমিট ইস্যু করা হবে এবং তারপর ফাইলসমূহ উত্তোলন করা যাবে।
ফাইল উত্তোলনের পরে জমাকৃত সকল ডকুমেন্ট ও কন্টাক্ট লেটার কোম্পানি কর্তৃক আবেদনকারী ঠিকানায় কুরিয়ার করে দেয়া হবে। সে সকল ডকুমেন্ট এর স্ক্যান কপি রোমানিয়ান মিনিস্ট্রিতে অনলাইনের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতে হবে এবং ডকুমেন্ট পাঠানোর পরে কোম্পানি থেকে একটি মেইল বা ডকুমেন্ট আপনার অনলাইন ঠিকানায় পাঠানো হবে যা আপনার সংরক্ষণ করতে হবে। এটি আপনাকে সহজে ভিসা পেতে সহায়তা করবে।
আপনার ডকুমেন্ট অনলাইনের মাধ্যমে পাঠানোর কিছুদিনের মধ্যেই এম্বাসী থেকে অ্যাপোয়েন্টমেন্ট লেটার দিবে। তারপর সেই অ্যাপোয়েন্টমেন্ট লেটার প্রিন্ট করতে হবে এবং তা দিল্লিতে অবস্থিত রোমানিয়া এম্বাসি তে পাঠিয়ে দিতে হবে।
সেখানে আপনার ওয়ার্ক পারমিট এর সত্যতা যাচাই করা হবে এবং ওয়ার্ক পারমিটসন রিয়েল হলে 5 থেকে 10 দিনের মধ্যে পাসপোর্টে ভিসা স্টিকার করে দিবে। তখন পাসপোর্ট কালেক্ট করার জন্য আপনার মেইলে একটি ম্যাসেজ আসবে এবং আপনাকে পাসপোর্ট কালেক্ট করে নিতে হবে।
রোমানিয়া এম্বাসি তে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
- কমপক্ষে এক বছর মেয়াদ সম্পন্ন পাসপোর্ট
- সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড এর 35×45 সাইজের 2 কপি ছবি
- মেয়াদ সম্পন্ন পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট
- ভিসার আবেদন পত্র
- ওয়ার্ক পারমিট লেটার
- কন্ট্আক্ট লেটার
- ছয় মাসের ট্রাভেল ইন্সুরেন্স।
রোমানিয়া এম্বাসি তে উক্ত কাগজপত্র জমা নিবে এবং ডেলিভারির সময় শুধু পাসপোর্ট, ওয়ার্ক পারমিট লেটার ও কন্টাক্ট লেটার ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
রোমানিয়া যাওয়ার ভিসা
রোমানিয়াতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া বাংলাদেশি যেকোনো শ্রমিকের জন্য স্বপ্ন পূরণের একটা বড় সুযোগ। রোমানিয়াতে শ্রমিকদের জন্য যেমন রয়েছে আবাসন সুবিধা, তেমনই রয়েছে রোমানিয়া থেকে কাজের জন্য অন্য যে কোন দেশে গমনের সুযোগ।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনা সময়কালিন বিশ্বের অন্যান্য দেশে জনশক্তি নিয়োগ বন্ধ বা স্বল্প পরিমাণে থাকলেও রোমানিয়াতে নিয়মিত জনশক্তি নিয়োগ এর কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। 2021 সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়েছে 471 জন শ্রমিক এবং 2020 সালে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার সংখ্যা ছিল 365 টি।
রোমানিয়া যাওয়ার জন্য ভিসা নেওয়ার ক্ষেত্রে 2 টি সিস্টেম চালু আছে-
- কিস্তিতে টাকা প্রদান বা নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ করে টাকা প্রদান। যখন যে পরিমাণ টাকা লাগবে , প্রার্থীকে নির্দিষ্ট সময়ে সে পরিমান টাকা প্রদান করতে হবে।
- কন্টাক বেসিক বা একেবারে নির্দিষ্ট পরিমাণে টাকা প্রদান। এক্ষেত্রে ভিসা হাতে পাওয়ার পরে সম্পূর্ণ টাকা প্রদান করা লাগে। ভিসা গ্রহণের এটি একটি নিশ্চিত প্রক্রিয়া এবং এক্ষেত্রে খরচ তুলনামূলক বেশি পড়ে।
আপনার ভিসা সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রোমানিয়া সরকারের নির্ধারিত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে চেক করে নিতে পারবেন।
রোমানিয়া ভিসার খরচ
রোমানিয়ায় শ্রমিক নিয়োগের সংখ্যা বাড়ায় অনেক শ্রমিকই রোমানিয়া যেতে চাই। এজন্য তারা রোমানিয়া যাওয়ার জন্য কত টাকা খরচ হয় এ সম্পর্কিত সঠিক তথ্যের খোঁজ করে। রোমানিয়া যেতে কত টাকা খরচ হয় তা নির্ভর করে ভিসা সহ সকল কার্যক্রমের উপর নির্ভর করে।
শ্রমিক হিসেবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় রোমানিয়া যেতে প্রায় 8 থেকে 9 লক্ষ টাকা খরচ পড়তে পারে । তবে এর থেকে কিছু পরিমাণ বেশি বা কম পড়তে পারে।
রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আপনার কত টাকা খরচ হবে তা নির্ভর করে আপনি কোন সিস্টেমে ভিসা সংগ্রহ করছেন। কন্টাক সিস্টেমে ভিসা গ্রহণ করলে ভিসা হাতে পাওয়ার পরে পেমেন্ট করতে হয় এবং এক্ষেত্রে খরচ তুলনামূলক একটু বেশি পড়ে। তবে ভিসা সংগ্রহের ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে যাতে কোন দালালের পাল্লায় না পড়েন।
আশাকরি, রোমানিয়া যেতে কত টাকা খরচ হয়, তার সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পেয়েছেন।
ভিসা পেতে কতো দিন সময় লাগবে?
শ্রমিক হিসেবে রোমানিয়া যাওয়ার জন্য ওয়ার্ক পারমিটশন সহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে প্রায় তিন থেকে চার মাস সময় লাগে।
রোমানিয়ায় শ্রমিক নিয়োগের বয়সসীমা
রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আবেদন করার পূর্বে অনেকেই রোমানিয়ায় শ্রমিক নিয়োগের বয়সসীমা নিয়ে কনফিউজড থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোমানিয়ায় শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়স 22 থেকে 40 বছরের মধ্যেই থাকে। আপনার বয়স 22 থেকে 40 এর মধ্যে হলেই আপনি রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এছাড়াও রোমানিয়ায় বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে উল্লেখ্য বয়সসীমার কমবয়স্ক শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। শ্রমিকদের কাজের উপর ভিত্তি করে বয়স সীমা নির্ধারণ করা হয়।
রোমানিয়া যাওয়ার যোগ্যতা
রোমানিয়া শৈল্পিক ও অর্থনৈতিক অনুন্নত একটি দেশ হওয়ায় রোমানিয়ায় সাধারণত কাজের জন্য অন্যান্য দেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়। রোমানিয়া কৃষি সেক্টর ছাড়াও নির্মাণ খাতে কারখানাতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করার জন্য অধিক পরিমাণে নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে এক্ষেত্রে নির্মাণ খাতে ও কলকারখানার কাজের দক্ষতা থাকলে রোমানিয়ায় ভালো মানের উপার্জন করার সুযোগ রয়েছে।
এছাড়াও আপনি যদি এসব বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হন ,তাহলে রোমানিয়ায় আপনার ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার তুলনামূলকভাবে অনেক সহজ হয়ে যাবে।
তবে রোমানিয়ায় শ্রমিক হিসেবে কাজের ক্ষেত্রে খুব একটা শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না।
রোমানিয়ায় কাজের ধরন
রোমানিয়া যেতে আগ্রহী অনেক শ্রমিকই রোমানিয়ায় কাজের ধরণ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানে না।রোমানিয়ায় শ্রমিকদের কোন ধরনের কাজ কে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় এবং শ্রমিক হিসেবে আপনি কোন কাজে পারদর্শী এই বিষয়ে সামঞ্জস্যতা থাকা প্রয়োজন। এজন্য রোমানিয়া যাওয়ার পূর্বে রোমানিয়ায় কাজের ধরন সম্পর্কে আপনার খুঁটিনাটি সবকিছু জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
ইউরোপের অনুন্নত দেশগুলোর তালিকায় রোমানিয়া অন্যতম। রোমানিয়ায় টাকা আয় করার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতাকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না । এখানে আপনাকে শ্রমিক হিসেবে শারীরিক শ্রম দিয়ে দক্ষতার সহিত কাজ করে টাকা আয় করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট রোমানিয়া অবস্থানরত শ্রমিকদের জন্য উল্লেখযোগ্য কাজ হচ্ছে
- কল কারখানার শ্রমিক
- নির্মাণ খাতে শ্রমিক
- গার্মেন্টস শ্রমিক
- রেস্তোরাঁ বা রেস্টুরেন্টের শেফ
- কৃষিকাজ
- কাঠমিস্ত্রি
বাংলাদেশ থেকে যেসব শ্রমিক রোমানিয়া কাজের সন্ধানে যায় ,তাদের অধিকাংশই নির্মাণ খাতে কাজ করে। রোমানিয়ায় নির্মাণকাজ ও শিল্প কারখানায় শ্রমিকদের সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে । এছাড়াও কৃষিকাজের জন্য রোমানিয়ায় শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে।
তবে বাংলাদেশের বিভিন্ন মালিক বা কোম্পানির সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে কারিগরি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া ও ভালো মানের কাজের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা সহজতর। তবে এক্ষেত্রে কোম্পানি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে তাদের সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।
রোমানিয়ায় শ্রমিকদের বেতন কত?
শ্রমিক বা যেকোনো কাজে রোমানিয়ায় যাবার পূর্বে মানুষ অধিক পরিমাণে আগ্রহী থাকে এই ব্যাপারে যে শ্রমিকদের রোমানিয়ায় বেতন কত। রোমানিয়া আগে আপনি কত টাকা বেতন পাবেন তা নির্ভর করে শ্রমিক হিসেবে আপনি কতটা দক্ষতার সহিত কাজ করছেন তার ওপর। রোমানিয়ায় আপনি যত বেশি দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারবেন , আপনি তত বেশি অর্থ আয় করতে সক্ষম।
রোমানিয়া সাধারণত ইউরো মুদ্রা টাকা প্রদান করা হয় । নিজস্ব দক্ষতার ভিত্তিতে বাংলাদেশী শ্রমিকরা বেতন পায় তা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় 30 হাজার থেকে 5 লক্ষ এর মধ্যে।রোমানিয়া যাওয়ার পরে শ্রমিক হিসেবে আপনার কাজের পারদর্শিতায় বলে দিবে রোমানিয়ায় বেতন কত আপনার জন্য।
কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শ্রমিকরা বেতন এর দিক দিয়েও রোমানিয়ায় অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে। রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিটে শ্রমিক হিসেবে কত টাকা বেতন পাওয়া যায়, আশা করি তার সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।
রোমানিয়ায় অস্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ
আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যার দিক থেকে পিছিয়ে থাকা দেশ রোমানিয়ায় রয়েছে অস্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ সুবিধা । এ ছাড়া এদেশে জীবন যাত্রার মান খুব একটা ব্যয়বহুল নয়। উপার্জিত অর্থের খুব নগণ্য একটা অংশই জীবন যাত্রার জন্য শ্রমিকদের ব্যয় হয় রোমানিয়ায়।
প্রথমে শ্রমিকরা একটি নির্দিষ্ট সময়ের ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় রোমানিয়ায় গমন করে। তারপর বৈধভাবে বসবাসের জন্য তাদের প্রতি বছর ভিসা রিনিউ করতে হয়। এভাবেই রিনিউ করে প্রথম কয়েক বছর থাকার পরে 2 বছর ক্রমান্বয়ে 5 বছর মেয়াদী রিনিউ শুরু হয় এবং এক পর্যায়ে গিয়ে অস্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য অনুমতি পত্র দেওয়া হয়। যার মাধ্যমে শ্রমিকরা রোমানিয়ায় বৈধভাবে বসবাসের সুযোগ পায়।
রোমানিয়া থেকে অন্যান্য দেশে যাওয়ার সুযোগ
রোমানিয়া ইউরোপীয় দেশ হাওয়ায় রোমানিয়া থেকে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের দূরত্ব খুব একটা বেশি নয়। রোমানিয়া থেকে অন্য কোন সেনজেনভুক্ত দেশে যেতে চাইলে অবশ্যই বৈধ ভাবে যেতে হবে। রোমানিয়া থেকে অন্য কোনো দেশে অবৈধভাবে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। গ্রীস, পোল্যান্ড সহ বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে অভিবাসনের রুট পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানিতেও আপনি অবৈধভাবে প্রবেশ করতে পারবেন না। ভুল তথ্য দিলেও আপনি ধরা পড়ে যাবেন কারণ বর্তমানে ডাবলিন বিধিমালা অনুযায়ী আঙ্গুলের ছাপ রাখা হয়। যার মাধ্যমে আপনাকে খুঁজে পাওয়ার জন্য কয়েক মুহূর্তই যথেষ্ট।
তবে বৈধভাবে গিয়ে হোটেল রেস্তোরায় কাজ করে ভালো মানের উপার্জন করতে চাইলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপ ইত্যাদিতে সুযোগ রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে আপনার রান্নার দক্ষতা ও পুষ্টি জ্ঞান সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে।
দালাল হতে সাবধান!
তুলনামূলক সহজ ভাবে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার জন্য অনেকেই ভুল কোম্পানি, এজেন্সি বা ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করে প্রতারিত হচ্ছে । বিদেশ যাওয়ার জন্য দালালের ফাঁদে পা দিয়ে মানুষ এক নিমেষে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষকে ভিসার প্রলোভন দেখিয়ে বা ভিসার সহজলভ্যতা বা কম খরচে ভিসা পাওয়া যায় এমন বলে কে যাচ্ছে দেশের অসাধু কিছু দালাল চক্র।
তাই বিদেশ যাওয়ার জন্য ভিসা গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করুন। আপনার ওয়ার্ক পারমিট ভালোভাবে চেক করে নিন। মনে রাখবেন , আপনার একটু অসচেতনতা ও বোকামি এক নিমিষেই আপনাকে সর্বস্বান্ত করতে পারে । তাই যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে সবকিছু নির্ধারণ করুন।
রোমানিয়া যাওয়ার পূর্বে যেসব বিষয়ে নিশ্চিত হবেন!
ইউরোপীয় দেশ রোমানিয়াতে বাংলাদেশ থেকে কাজের সন্ধানে যেসব শ্রমিক পাড়ি জমায়, তাদের অধিকাংশেরই ভিসা করা সহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করতে অনেক টাকা খরচ হয়ে থাকে। একজন সাধারণ শ্রমিকদের ক্ষেত্রে এই ব্যয়বহুল কার্যক্রম সম্পন্ন করা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাই এক্ষেত্রে একটু অসচেতনতায় একজন শ্রমিকের পথে বসার জন্য যথেষ্ট। আর এই কারণে রোমানিয়া যাওয়ার পূর্বে ভিসা পাসপোর্ট ইত্যাদি কাগজপত্র ছাড়াও আরো কিছু বিষয় আপনাকে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।
তারমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য-
- কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত ও সঠিক তথ্য
- কোম্পানি , এজেন্সি বা চাকরী দাতার নাম করে ঠিকানা
- কর্মক্ষেত্র
- ওয়ার্ক পারমিট এর মেয়াদ
- ভিসার মেয়াদ
- মাসিক বেতন
- নিরাপত্তাব্যবস্থা
- ওভারটাইম
- সপ্তাহিক ছুটি ও অসুস্থতা কালীন ছুটি
- মেডিকেল স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা
- খাদ্য ও বাসস্থানের ব্যবস্থা ও খরচ
যে ধরনের কাজ করতে চান তা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা
রোমানিয়া যাওয়ার পূর্বে আপনাকে এই বিষয়টা নির্ধারণ করতে হবে যে রোমানিয়া গিয়ে আপনি কি ধরনের কাজ করতে চান। রোমানিয়া যাওয়ার পরে আপনি যে কাজ করতে আগ্রহী, রোমানিয়া যাওয়ার পূর্বেই তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন। কাজের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ,সুবিধা-অসুবিধা জেনে বাড়ান।
কোম্পানি ,এজেন্সি বা চাকরী দেওয়ার নাম ও ঠিকানা
রোমানিয়া যাওয়ার ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আপনি যদি কোনো কোম্পানীর, এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে থাকেন, তাহলে রোমানিয়া যাওয়ার পূর্বে কোম্পানি বা এজেন্সির নাম ও ঠিকানা নিয়ে নিন এবং এজেন্সি নির্বাচনের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট সর্তকতা অবলম্বন করুন। এছাড়াও রোমানিয়া গিয়ে আপনি যে মালিক বা কোম্পানির অধীনস্থ হয়ে কাজ করতে চান তার নাম , ঠিকানা ও বিস্তারিত সকল তথ্য কাছে রাখুন যাতে রোমানিয়া যাওয়ার পরে আপনার খুঁজে পেতে সমস্যা না হয়।
কর্মক্ষেত্র
রোমানিয়া গিয়ে আপনি যেখানে কাজ করবেন তার ঝুঁকি কতটা সহ সকল তথ্য সংগ্রহ করে রাখুন। রোমানিয়া গিয়ে আপনি যে ধরনের কাজ করতে আগ্রহী, তার জন্য প্রশিক্ষণ লাগবে কি না এগুলো সতর্কতার সাথে খেয়াল রেখে রওনা হওয়া উচিত।
ওয়ার্ক পারমিট এর মেয়াদ
রোমানিয়া যাওয়ার পরে আপনি যে কাজ করতে আগ্রহী , তার ওয়ার্ক পারমিট এর মেয়াদকাল কত বছর এই সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য নিয়ে রওনা দিন। কারণ ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া কিন্তু আপনি বৈধভাবে কাজ পেতে পারবেন না। আর রোমানিয়া কাজের জন্য বাইরের দেশ থেকে যেসব শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়, তার অধিকাংশ নির্দিষ্ট সময় কালীন ওয়ার্ক পারমিট থাকে। তাই এই বিষয়ে সর্তকতা অবলম্বন করুন ও প্রতারিত না হওয়ার জন্য সবকিছু ভালো করে চেক করে নিন।
মাসিক বেতন
রোমানিয়া যাওয়ার পরে আপনাকে আপনার কাজের বিনিময়ে বেতন কত দেবে সে সম্পর্কে আপনার পূর্ব ধারণা বা চুক্তিপত্র রাখা উচিত। বেশিরভাগ শ্রমিকরা সাধারণত নিম্নবিত্ত পরিবারের হয়, এক্ষেত্রে রোমানিয়া যাওয়ার পরে অর্থ উপার্জনে তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য থাকে। এজন্য রোমানিয়া গিয়ে কাজের বিনিময়ে রোমানিয়ায় বেতন কত পাবেন তা সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য আগে থেকে জেনে নিন।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা
আপনি রোমানিয়া গিয়ে যে ধরনের কাজ করবেন, সেখানে নিরাপত্তা কতটুকু আর স্বাস্থ্য ঝুঁকি কতটুকু এই বিষয়গুলো পূর্বে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।
ওভারটাইম সুবিধা
সাধারণত নিম্নবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষরা শ্রমিক হিসেবে রোমানিয়া যায় টাকা উপার্জনের জন্য। এক্ষেত্রে কাজের পাশাপাশি ওভারটাইম করে তারা তুলনামূলক অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করে।এজন্য রোমানিয়া যাওয়ার পরে কাজের পাশাপাশি ওভারটাইম করতে চাইলে, যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে যাচ্ছেন, সেখানে ওভারটাইমের সুযোগ আছে কিনা এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন।
সাপ্তাহিক ছুটি ও অসুস্থ থাকাকালীন ছুটি
আপনি শ্রমিক হিসেবে যে কাজের জন্য রোমানিয়া যাবেন, সেখানে সপ্তাহিক ছুটি কতদিন ,অসুস্থ থাকা কালিন সময় ছুটি আছে কিনা ,কোন প্রয়োজনীয় কাজে ছুটি কাটালে বেতন কাটা যাবে কিনা এই বিষয়গুলো নিশ্চিত ভাবে জেনে নিন।
মেডিকেল স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা
রোমানিয়ায় কর্মকালীন সময়ে আপনি অসুস্থ হলে চিকিৎসা বা স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কিত কোন সুবিধা পাবেন কিনা রোমানিয়া যাওয়ার পূর্বে তা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন।
খাদ্য ও বাসস্থানের ব্যবস্থা ও খরচ
আপনি রোমানিয়ায় গিয়ে কোথায় থাকবেন এবং আপনার খাওয়া-দাওয়া, জীবনযাপন সবকিছু মিলিয়ে কী পরিমাণে খরচ পড়তে পারে সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নিয়ে সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।
আশা করি , এই পোষ্টের মাধ্যমে রোমানিয়া যাওয়ার উপায়, প্রক্রিয়া-পদ্ধতি, রোমানিয়ায় বেতন কত, রোমানিয়া যেতে কত খরচ হয়, ওয়ার্ক পারমিটের জন্য কিভাবে আবেদন করা হয়, ভিসা পেতে কত সময় লাগে, রোমানিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাজের সুযোগ, রোমানিয়ায় শ্রমিকরা কোন ধরনের কাজ পায় ইত্যাদি সকল প্রশ্নের একটি স্বচ্ছ ধারণা পেয়েছেন।
The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url