বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা যারা রসায়ন নিয়ে অনার্স এ পড়াশোনা করতে চায় ,তারা রসায়ন সাবজেক্ট এ অনার্স এ ভর্তি হওয়ার পূর্বে কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। এই জন্য রসায়ন সাবজেক্ট রিভিউ সম্পূর্ণ জানলে রসায়ন সাবজেক্ট নিয়ে পড়াশোনা করে ক্যারিয়ার বিল্ড আপ সহ কিছু গুরুত্বপুর্ন বিষয় সম্পর্কে পরিস্কার ভাবে ধারণা লাভ করা যায়।
রসায়নে সাবজেক্ট নিয়ে অনার্স শেষ করে অন্য কোনো দেশে স্কলারশিপ সুযোগ রয়েছে কিনা?
রসায়ান সাবজেক্টে পড়াশোনার চাপ কেমন?
রসায়ন সাবজেক্ট এ পড়াশোনা করলে টিউশনের সুযোগ কেমন?
রসায়নে অনার্স শেষ করে জব সেক্টর, ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার সমূহ কী কী ?
এ সকল প্রশ্ন দূর করার জন্য আজকের এই আর্টিকেল রসায়ন সাবজেক্ট রিভিউ। Chemistry Subject Review আর্টিকেল সে সকল শিক্ষার্থীদের জন্য যারা উপরোক্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না। রসায়ন সাবজেক্ট সম্পর্কিত সকল তথ্য জানার জন্য Chemistry Subject Review আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়ুন। আশাকরি, রসায়ন সাবজেক্ট রিভিউ আর্টিকেল এর মাধ্যমে রসায়ন সাবজেক্ট সম্পর্কিত আপনার মনে যে সকল প্রশ্ন রয়েছে তার সকল উত্তর জানতে পারবেন।
কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন সাবজেক্ট এ অনার্স করা যায়?
রসায়ন আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। রসায়ন সাবজেক্ট টি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের প্রায় সকল পাবলিক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়ে থাকে । পাবলিক, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নের অনেকগুলো শাখা রয়েছে যার মধ্যে অন্যতম বায়োকেমিস্ট্রি, ফার্মেসি, ফলিত রসায়ন ও ভৌত রাসায়ন ইত্যাদি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে সাধারণত ভৌত রসায়ন পড়ানো হয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রাইভেট সেক্টর গুলোতে ভৌত রসায়ন এর চেয়ে ফলিত রসায়ন এর চাহিদা অনেক বেশি।
রসায়ন নিয়ে অনার্স পড়ার সময় কোন কোন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে হয়?
রসায়ন নিয়ে অনার্স পড়ার সময় রসায়ন সম্পর্কিত অনেক বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান আহরণ করতে হয়। প্রচলিত রসায়নের বহুসংখ্যক শাখা প্রশাখা রয়েছে। যে সকল শিক্ষার্থীরা রসায়ন সাবজেক্ট এ অনার্স করে, তাদের প্রতি সেমিস্টার বা প্রতি বর্ষে কোর্স আকারে রসায়নের বিভিন্ন শাখা সম্পর্কে পড়ানো হয়ে থাকে। পাশাপাশি প্রায় প্রতিটা কোর্সেই কিছুসংখ্যক ব্যবহারিক কাজ থেকে থাকে যা শিক্ষার্থীদের রসায়ন সাবজেক্ট এ অনার্স কালীন সময়ে করানো হয়ে থাকে।রসায়ন সাবজেক্ট নিয়ে অনার্স কালীন সময় শিক্ষার্থীদের যে সকল কোর্স থাকে তার মধ্যে অন্যতম কোর্স সমূহ নিম্নরূপঃ
রসায়ন সাবজেক্ট নিয়ে অনার্স পড়ার মেয়াদকাল কত বছর?
আমাদের দেশের প্রায় সকল পাবলিক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন সাবজেক্ট এ অনার্স পড়ানো হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেমিস্টার আকারে শিক্ষাবর্ষ করে রসায়ন সাবজেক্টে অনার্স পড়ানো হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাধারণত প্রতিবছর দুইটা সেমিস্টার অর্থাৎ 4 বছরে আটটি সেমিস্টার সম্পন্ন করে অনার্স কমপ্লিট করতে হয়। এবং এই আর্ সেমিস্টার এর ফলাফল গড় করে একটি নির্দিষ্ট ফলাফল প্রকাশিত হয় অনার্সের চূড়ান্ত ফলাফল হিসেবে পরিগণিত হয়। আবার কিছু কিছু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স শিক্ষার্থীদের জন্য বর্ষ সিস্টেমে শিক্ষাবর্ষ গঠন করা হয়। এক্ষেত্রে প্রতি বর্ষে একটি করে চূড়ান্ত পরীক্ষা হয় এবং চার বছর শেষে চারটি ফলাফলের গড় ফলাফলকে অনার্সের চূড়ান্ত ফলাফল হিসেবে পরিগণিত করা হয়।
বিজ্ঞান অনুষদের প্রায় সকল সাবজেক্টেই অ্যাক্যাডেমিক পড়াশোনার চাপ অনেক বেশি থাকে। আর তাছাড়াও বিজ্ঞান অনুষদের সাবজেক্ট গুলো তে ব্যবহারিক শিক্ষাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়াই কারণে একাডেমী প্রেশার অনেক বেশি থাকে। রসায়ন সাবজেক্ট ও তার ব্যতিক্রম না।
তবে নিয়মিত পড়াশোনা করলে ভালো ফলাফল করা অসম্ভব কিছু না। এজন্য সময়ের কাজ সময়ে করা অধিক যুক্তিসম্মত। অর্থাৎ প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন করে রাখার অভ্যাস রাখতে হবে এবং ব্যবহারিক অংশের জন্য নোটবুক দিনেরটা দিনে লিখতে হবে, যাতে একসময় গিয়ে প্রেসার না পড়ে। পাশাপাশি হ্যান্ড নোট করে রাখা অধিক যুক্তিসম্মত। এটি আপনাকে লিখিত পরীক্ষা ও ভাইভাতে ভালো ফলাফল করতে সাহায্য করবে। ভালো ক্যারিয়ার গঠনের ক্ষেত্রে ভালো ফলাফলের কোন বিকল্প নেই। এজন্য আপনাকে নিয়মিত পড়াশোনার সাথে সংযুক্ত থাকতে হবে।
রসায়ন সাবজেক্টে অনার্স শেষ করে স্কলারশিপ সুযোগ রয়েছে কিনা?
রসায়ন সাবজেক্টে অনার্স শেষ করে নিজস্ব যোগ্যতার ভিত্তিতে অস্ট্রেলিয়া, ইউকে, ইউএসএ, কানাডা, জাপান, কোরিয়া ইত্যাদি দেশে স্কলারশিপ এর মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
বিদেশের বিভিন্ন টপ ব্র্যান্ড ইউনিভার্সিটি তে ছাত্র-ছাত্রীদের নির্দিষ্ট সিজিপিএ বিভিন্ন যাচাই পরীক্ষার মাধ্যমে স্কলারশিপের সুযোগ দিয়ে থাকে। পাশাপাশি ইংরেজি ভাষাগত দক্ষতা থাকলে আপনি সহজেই বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপ এর মাধ্যমে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠনের সুযোগ পেতে পারেন। আর আপনি যদি গবেষণা খাতে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে এই স্কলার্শিপ আপনাকে বিরাট এক সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিবে।
এক্ষেত্রে স্কলারশিপের জন্য সর্ব প্রথমে আপনার একাডেমিক পড়াশোনাকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে এবং ভাল ফলাফল নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য আপনাকে নিয়মিত একাডেমিক পড়াশোনা করতে হবে এবং ব্যবহারিক শিক্ষা কেউ যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ আপনি যদি স্কলারশিপের জন্য প্রাথমিকভাবে আবেদন করতে চান তখন স্কলারশিপের প্রাথমিক আবেদনে একটি নির্দিষ্ট সিজিপিএ বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়। সেই নির্দিষ্ট সিজিপিএর কম সিজিপিএ যুক্ত শিক্ষার্থীরা আবেদনের সুযোগ পায় না। এজন্য আপনাকে প্রথম বর্ষ থেকেই ভালো সিজিপিএ অর্জন এর গুরুত্ব দিতে হবে। আর প্রথম বর্ষের সিজিপিএ খারাপ হয়ে গেলে পরের বছরগুলোতে সিজিপিএ তোলা একটু টাফ হয়ে যায়। এর অন্যতম কারণ থাকে নিজের কনফিডেন্স লেভেল লো হয়ে যাওয়া। এজন্য স্কলার্শিপ নিয়ে বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করার জন্য প্রথম বর্ষ থেকে একটি সুপরিকল্পিত নির্দেশনা ও রুটিন থাকা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি বিভিন্ন কো কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস অ্যাক্টিভ হওয়া জরুরী। এটি আপনার বিভিন্ন ধরনের স্কিল ডেভলপমেন্ট করতে সাহায্য করবে।
উজ্জল ক্যারিয়ার গঠনের লক্ষ্যে বিভিন্ন বিশ্বসেরা দেশের অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ রসায়ন সাবজেক্ট এর উপরে মাস্টার্স, পিএইচডি উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দিয়ে থাকে যা আপনি কাজে লাগানোর মাধ্যমে নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে পারেন।
রসায়ন সাবজেক্ট এ পড়াশোনা করলে টিউশনের সুযোগ কেমন?
পড়াশোনা কালীন সময়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী চায় নিজের খরচ নিজে বহন করতে। এক্ষেত্রে টিউশন হচ্ছে শিক্ষার্থীদের জন্য ছাত্রজীবনে উপার্জন করার অন্যতম হাতিয়ার। ছাত্রজীবনে পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশন করার মাধ্যমে নিজের খরচে চালানো সম্ভব। এক্ষেত্রে টিউশনি পাওয়ার জন্য রসায়ন সাবজেক্ট অনেক চাহিদা সম্পন্ন।
ছাত্রজীবনে পড়াশোনা কালীন সময়ে টিউশন পাওয়ার জন্য বিজ্ঞান অনুষদের প্রায় সকল সাবজেক্ট এর অনন্য। তবে অন্য সাবজেক্ট গুলোর মধ্যে রসায়ন একটি। রসায়ন নিয়ে অনার্স পড়াকালীন সময়ে নবম- দশম ও একাদশ -দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের টিউশন করানোর মাধ্যমে ছাত্রজীবনে ভালো মানের অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। এছাড়াও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য রসায়ন টিউটর অনেক চাহিদা সম্পন্ন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে দক্ষতা ও টেকনিক সম্পন্ন শিক্ষক হতে হবে। তাহলে পড়াশোনা পাশাপাশি টিউশন পেশার মাধ্যমে আপনি অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন, পাশাপাশি টিউশন করানোর মাধ্যমে ভালো দক্ষতাও অর্জন করতে পারবেন।
রসায়নে অনার্স শেষ করে জব সেক্টর, ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার সমূহ কী কী ?
বিভিন্ন সরকারি ,বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছাড়াও বিভিন্ন গবেষণা ইনস্টিটিউট , ফুড কোম্পানি ,বিভিন্ন ফার্মাসিটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিস, বিভিন্ন শিল্প কারখানা, চামড়াশিল্প, পোশাকশিল্প , বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানিতে রসায়ন সাবজেক্ট এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
রসায়ন নিয়ে পড়াশোনা করে আপনি যেসব প্রতিষ্ঠানে আপনার কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবেন তা নিম্নে আলোচনা করা হল
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন পাবলিক বা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন নিয়ে পড়াশোনা করে সরকারি জব ছাড়াও আপনি উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ করে ভাল মানের একটি ক্যারিয়ার তৈরি করতে পারবেন।
এছাড়াও গবেষণা খাতে অবদান রাখার জন্য অস্ট্রেলিয়া, ইউকে, ইউএসএ, কানাডা, জাপান, কোরিয়া ইত্যাদি দেশে স্কলারশিপ এর মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ রয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে রসায়ন সাবজেক্ট এক অপার সম্ভাবনাময় দ্বার।
আশাকরি,Chemistry Subject Review আর্টিকেলের মাধ্যমে রসায়ন সাবজেক্ট সম্পর্কিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পেরেছেন।
This comment has been removed by the author.