OrdinaryITPostAd

জমি বন্ধক লেখার পদ্ধতি [সর্বশেষ আপডেট]

জমি বন্ধক হলো এমন একটি পদ্ধতি যাতে একজন ব্যাক্তি তার জমিকে নিরাপত্তা হিসেবে ব্যবহার করে এবং ঋণ নিয়ে থাকে। এতে ঋণদাতা ব্যাক্তি জমিটি ভোগ করতে পারে। জমি বন্ধক লেখার পদ্ধতি এক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করব জমি বন্ধক লেখার পদ্ধতি। জমি বন্ধক লেখার পদ্ধতি সম্পর্কে সম্পুর্ন জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। 


সংক্ষেপে জেনে নিন
প্রশ্ন জমি বন্ধক লেখার পদ্ধতি 
উত্তর ধাপ ০১. প্রথমে জমি বন্ধকের অঙ্গীকার নামাতে তারিখ,প্রথম পক্ষের স্বাক্ষর, এবং দ্বিতীয় পক্ষের স্বাক্ষর লিখতে হবে।
উত্তর ধাপ ০২.  প্রথম পক্ষের পিতার নাম, প্রথম পক্ষের ঠিকানা  যেমন- ডাকঘর, উপজেলা ও জেলার নাম লিখতে হবে। তারপর দ্বিতীয় পক্ষের স্বীকার নাম যেখানে প্রথম পক্ষের কাছ থেকে জমি বন্ধক রাখছে তার লিখা থাকবে। অবশ্যই জমির সম্পুর্ণ বিবরণ লিখা থাকতে হবে।

আর্টিকেল সূচিপত্র - জমি বন্ধক লেখার পদ্ধতি 

  1. জমি বন্ধক লেখার পদ্ধতি 
  2. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর - জমি বন্ধক লেখার পদ্ধতি 
  3. লেখকের মন্তব্য - জমি বন্ধক লেখার পদ্ধতি 

১. জমি বন্ধক লেখার পদ্ধতি 

অনেক সময় আমাদের টাকার প্রয়োজনে বা অন্যান্য যেকোনো প্রয়োজনে নিজেদের জমি অন্যের কাছে বন্ধক রাখতে হয়। আমাদের মধ্যে অনেকেরই জমি বন্ধক দেওয়ার সময় চুক্তিপএ কিভাবে তৈরি করতে হয় জানি না। নিচে জমি বন্ধক লেখার একটি নিয়ম দেওয়া হলো:

প্রথম পক্ষ বা জমির মালিক:

  • নাম.....
  • ঠিকানা...
  • পিতার নাম...
  • জাতীয়তা-বাংলাদেশী
  • ধর্ম -ইসলাম
  • পেশা-কৃষক

বন্ধক গ্রহীতা বা ২য় পক্ষ :

  • নাম.....
  • ঠিকানা...
  • পিতার নাম...
  • জাতীয়তা-বাংলাদেশী
  • ধর্ম -ইসলাম
  • পেশা-কৃষক
জমি বন্ধক লেখার চুক্তিনামা শুরু করছি মহান পরম করুনাময় আল্লাহতায়ালার নাম স্মরণ করে। যেহেতু জমির মালিক বর্ণিত সম্পত্তি শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছেন। যদি ১ম পক্ষের নগদ টাকার বিশেষ প্রয়েজন হয় তাহলে  ২য় পক্ষ তফসিল অনুযায়ী ২দাগে সারে এগারো কাঠা জমি বন্ধক রাখার প্রস্তাব করলে দ্বিতীয় পক্ষ প্রস্তাব গ্রহণ করে সারে এগারো কাঠা জমি বন্ধক নিতে রাজি হয়েছেন। তাই উভয় পক্ষের সম্মতিতে শর্ত সাপেক্ষে উক্ত জমির বন্ধকনামা চুক্তিপএে আবদ্ধ হলাম।

শর্তসমূহ:

  1. জমির মালিক বন্ধক গ্রহীতার কাছে থেকে তফসিল অনুযায়ী খালি জমি বন্ধক রেখে এককালীন নগদ ২৫,০০০ টাকা (পচিঁশ হাজার)টাকা স্বাক্ষীগণের সামনে বুঝে নিয়েছেন। 
  2. বন্ধককৃত জমিটি যেহেতু ফসলী জমি তাই বন্ধক গ্রহীতা নিজে জমিতে ফসল ফলিয়ে ভোগ করতে পারবেন। তিনি চাইলে অন্য কারো মাধ্যমেও ফসল ফলাতে পারবেন।
  3. প্রথম পক্ষ যতদিন পর্যন্ত ২য় পক্ষকে টাকা দিতে না পারবেন ততদিন পর্যন্ত ২য় পক্ষ জমির ভোগ দখল করে থাকবে। 
  4. জমি বন্ধক বাবদ ২৫,০০০ টাকা যখন ১ম পক্ষ ২য় পক্ষের কাছে ফেরত দিবে, ২য় পক্ষকে তখন জমির দখল প্রথম পক্ষকে বুঝিয়ে দিতে বাধ্য থাকবে।
  5.  জমি বন্ধক থাকা অবস্থায় ১ম পক্ষ অন্য কারো কাছে জমি হস্তান্তর করতে পারবে না।যদি জমি হস্তান্তর করে তাহলে ২য় পক্ষ আইনের আশ্রয় নিতে পারবে। 
  6. বন্ধক দাতা যদি উক্ত চুক্তি সম্পাদনের পর মৃত্যুবরণ করেন আল্লাহ না করুক তাহলে তার পরবর্তী বৈধ ওয়ারিশানকে জমি বন্ধকের টাকা ২য় পক্ষকে ফেরত দিবে।
  7. একইভাবে দ্বিতীয় পক্ষের মৃত্যু হলে তার পরবর্তী বৈধ ওয়ারিশান ১ম পক্ষকে জমি বুঝিয়ে দিতে বাধ্য থাকিবে।
  8. উল্লেখ্য যে, উক্ত জমির বন্ধকের ব্যাপারে তার পরিবার বা ওয়ারিশগণ কোনো আপত্তি করতে পারবে না।কোনো প্রকার ঝামেলা হলে আদালতের সাহায্য নেওয়া যাবে।
সুতরাং স্বেচ্ছায়, সরল মনে, এবং সুস্থভাবে আমি কারো প্ররোচনা ছাড়া জমির বন্ধকনামা দলিল পাঠ করে উপস্থিত স্বাক্ষীগণের সামনে জমি সম্পাদন করে দিলাম।

বন্ধককৃত জমির তফসিল পরিচয়:

  • থানা-
  • জেলা- 
  • জমির দাগ নং-
  • দাগ নং জমির পরিমান-১…/২

স্বাক্ষীগণের নাম ও স্বাক্ষর :

১/
২/
৩/
দলিল দাতার স্বাক্ষর :
দলিল গ্রহীতার স্বাক্ষর :

চুক্তিনামার পেইজ সেটআপ:

জমি বন্ধকের চুক্তিনামা আপনি চাইলে এমএস ওয়ার্ডে লিখতে পারেন। তারপর এটাকে পেইজে সেটআপ করে নিতে হবে।প্রথমে পেইজ সেটআপ করার জন্য মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ফাইল মেনুতে যেতে হবে। ফাইল মেনু থেকে পেইজ লেআউট যেতে হবে।

 তারপর কাস্টমস অপশনে যেতে হবে।উপরের মানে টপে  4.5 ইঞ্চি এবং লেফট ও রাইটে 1 ইঞ্চি সেট করে দিন।এবার পেইজ সেটআপটি ওকে করে দিন।আপনি এটাকে প্রিন্টারে প্রিন্ট করতে পারবেন। বাংলাদেশের আইন অনুসারে যেকোনো চুক্তিপএে ৩০০টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প বসাতে হয়। অর্থাৎ,১০০ টাকার ৩ টি স্ট্যাম্প তিনটি পেইজে সেটআপ করে নিতে হবে। আপনি তিন পেইজে ভাগ করে প্রিন্ট করে নিন।

জমি বন্ধকের রেজিষ্ট্রেশন ফি পরিশোধ :

স্থানীয় ব্যাংকের ট্রেজারি শাখায় দলিল রেজিষ্ট্রেশনের জন্য যাবতীয় ফি জমা দিতে হবে। এন ফি, ই ফি, রেজিষ্ট্রেশন ফি কোড নং ,১-২১৬১-০০০০-১৮২৬ একটি পে অর্ডারের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। পে অর্ডারের মাধ্যমে কোড নং ১-১১০১-০০২০-১৩১১স্ট্যাম্প শুল্ক প্রদান করতে হবে। নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প দলিলে আপনি সর্বোচ্চ ১২০০ টাকার  ব্যবহার করতে পারবেন। অফিসে এসে নগদে এনএন ফি প্রদান করতে হবে। ৫ লক্ষ টাকা ঋণের ক্ষেত্রে কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক বা লিজিং কোম্পানি কর্তৃক দলিল দাতার  TIN সনদ দাখিল করতে হবে। কোর্ট বা আদালতে রেজিষ্ট্রেশন ব্যাতীত গ্রহণযোগ্য হবে না।

জমি বন্ধকের সমাজে প্রচলিত পদ্ধতি :

জমি বন্ধক দেওয়ার প্রচলন আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি হচ্ছে একজন নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে জমি বন্ধক দিয়ে থাকে। কত বছরের জন্য সাধারণত বন্ধক নেওয়া হলো তা উল্লেখ থাকে না।এর ফলে টাকাদাতা জমি ভোগ করতে থাকে। এভাবেই তিন চার বছর চলে যায়। 

একটি নির্দিষ্ট সময় পর জমির মালিক টাকা দিয়ে জমি ফিরিয়ে আনে।আরেকটি পদ্ধতি হলো যখন টাকা ফিরিয়ে দেয় জমির মালিক তখন নির্দিষ্ট বছরের হিসাব করে কম টাকা নেওয়া হয় জমি দাতার কাছে থেকে। যেমন -কেউ যদি এক কাঠা জমি বিশ হাজার টাকাতে বন্ধক রাখে তাহলে দুই বা তিন বছর পর জমির মালিকের কাছে থেকে পাঁচশ বা হাজার টাকা কম নেওয়া হয়।

ইসলামিক শরিয়তমতে বন্ধক হলো কোন বস্তুকে কোনো দাবির বিপরীতে এমনভাবে আটকে রাখা যাতে আটককৃত বস্তু দিয়ে পাওনা আদায় করা সম্ভব হয়।মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা:)এক ইহুদির কাছে থেকে খাদ্য ক্রয় করেছিলেন যার বিনিময়ে তিনি তার বর্মকে বন্ধক রেখেছিলেন। সুতরাং দেখা যায়, নবীজী নিজে জমি বন্ধকের সুবিধা নিতেন।

২. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর - জমি বন্ধক লেখার পদ্ধতি 

প্রশ্ন ১: বন্ধক কত প্রকার?

উত্তর: বন্ধক ৬ প্রকার। 

প্রশ্ন ২: জমি বন্ধক আইন কত সালে কার্যকর হয়?

উত্তর: জমি বন্ধক আইন ১৮৮২ সালের ১ জুলাই কার্যকর হয়।

প্রশ্ন ৩: জমি বন্ধকের কতটি ধারা রয়েছে?

উত্তর: জমি বন্ধকের ১৩৭ টি ধারা রয়েছে। 

৩. লেখকের মন্তব্য - জমি বন্ধক লেখার পদ্ধতি 

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করলাম জমি বন্ধক লেখার পদ্ধতি। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবেন। আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার মতামত, পরামর্শ কিংবা প্রশ্ন আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকমই আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যবহুল আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট The Du  Speech  ভিজিট করতে পারেন।

এই আর্টিকেলের-
লেখক: মোসা: কবিতা
পড়াশোনা করছেন লালমনিরহাট নার্সিং কলেজে । তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন।
জেলা: নরসিংদী 


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা
মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন
পড়াশোনা করছেন:  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে।
জেলা: নাটোর

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url