OrdinaryITPostAd

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : অদম্য অগ্রযাত্রা

১৯২১ সালের ১ জুলাই  ৬০০ একর জমির উপর পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের পরিত্যক্ত কিছু ভবনে ৩ টি অনুষদ ও ১২ টি বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে গৌরবের সঙ্গে ১০২ টি বছর অতিবাহিত করেছে। সময়ের আবর্তনে অর্জিত হয়েছে হাজারো সাফল্যগাথা, উদ্ভুত হয়েছে আলোচিত -সমালোচিত নানা সংকট এবং সৃষ্টি হয়েছে আবারিত সম্ভাবনা। 

আরো পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন থেকে সকল স্টেশনের ভাড়া তালিকা নির্ধারিত হয়েছে!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্যের সুরধ্বনি অনুরণিত হয়েছে দেশের উচ্চশিক্ষা, গবেষণা, সংস্কৃতিসহ সকল অঙ্গনে। নারী শিক্ষার প্রসারেও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রতিষ্ঠালঙ্গে ৮৭৭ জন ছাত্রের বিপরীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী ছিল মাত্র ১ জন।  বর্তমানে মোট শিক্ষার্থীর ৪০ শতাংশই ছাত্রী। তাছাড়া বর্তমানে দেশের শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রশাসন, কুটনীতি, জনসংযোগ, রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প কারখানায় নিয়োজিতদের ৭০% ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। এছাড়া বাংলার সমাজ জাগরণে নানাভাবে ভূমিকা রাখা  স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশের  বর্তমান  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাহিত্যিক বুদ্ধদেব বসু , হুমায়ূন আহমেদ ভাষাবিদ আনিসুজ্জামান, কৌতুক শিল্পী দিনো শাফিক, সঙ্গীত শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন, পরিচালক তানভীর মোকাম্মেলসহ প্রমুখ  ব্যক্তিত্ব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সফলতার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করেছে। 

আরো পড়ুন: সকল ব্যাংক ও সংস্থার শিক্ষাবৃত্তির আপডেট তথ্য

শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখার  পাশাপাশি ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন এবং মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ গঠনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশ্বজুড়ে স্বনামধন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও একটি স্বাধীন -সার্বভৌম রাষ্ট্রগঠনে ভূমিকা রাখা বিশ্বের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হলো প্রাণের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। 

আরো পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনে আর্টিকেল রাইটিং জব অফার!

সাফল্যের পাশাপাশি ১০২ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝুলিতে যোগ হয়েছে নানা সমস্যা ও সংকট। ফলশ্রুততি বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব ও মর্যাদায় ভাটা পরিলক্ষিত হচ্ছে। যার অন্যতম একটি কারণ হলো শিক্ষার্থীদের অস্বাস্থ্যকর, অপরিচ্ছন্ন ও অপর্যাপ্ত আবাসনব্যবস্থা। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ১৯টি আবাসিক হল, ৪ টি হোস্টেলের ব্যবস্থা থাকলেও মোট শিক্ষার্থীর ৫৫ শতাংশ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে না। এছাড়াও যারা আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন তারা বঞ্চিত হচ্ছেন স্বাস্থকর পরিবেশ থেকে। অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন ব্যবস্থার একটি নিয়মিত চিত্র। খাবারের গুণগত মান ও দাম নিয়েও বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে।

আরো পড়ুন: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনলাইন টিকেট কাটার নিয়ম!

শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিতকরণ এখন সময়ের দাবী হয়ে উঠেছে। এছাড়া ১৯২১ সালের তুলনায় ক্যাম্পাসের আয়তন কমেছে আড়াই গুণের বেশি অন্যদিকে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেড়েছে ৫০ গুণেরও বেশি। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাবস্থাপনায় অপরিপক্কতাকে নির্দেশিত করে। উপরন্তু বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৬০ টি  ব্যুরো ও গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে যার অধিকাংশই কিছু সেমিনার করেই গবেষণার দায় শোধ করছে। ৪৬ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে মাত্র দুটি লাইব্রেরি রয়েছে যা বর্তমানে অপ্রতুল হয়ে দাড়িয়েছে। এছাড়া লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত আসনব্যবস্থার সংকটও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

আরো পড়ুন: পলিসিস্টিক ওভারি থেকে মুক্তির উপায়!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্যের সম্ভাবনার দ্বারকে উন্মুক্ত রাখতে  শতবর্ষ পূর্তিকে ভিত্তি ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক বস্তুগত ও অবস্তুগত উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি পূর্ণাঙ্গ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে এবং সরকারের বিশেষ আর্থিক অনুদানে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৫৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার বাজেটের ১.৬৪ শতাংশ অর্থাৎ ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা গবেষণা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই হার আরও বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে। 

আরো পড়ুন: অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণ!

নানা চড়াই উতড়াই পেরিয়ে শতবর্ষ পার করে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে সমূহ সম্ভাবনা। চেষ্টা, অধ্যবসায় আর সঠিক পরিকল্পনার বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানসম্মত শিক্ষা, গুণগত গবেষণা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের স্মারক হয়ে উঠতে পারে,  ফিরে পেতে পারে তার পুরোনো খ্যাতি ও গৌরব। সর্বোপরি শিক্ষক - শিক্ষার্থীদের সমন্নিত প্রচেষ্টাই শতবর্ষী  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অদম্য অগ্রযাত্রাকে নিরবচ্ছিন করতে পারে৷ 

আরো পড়ুন: মাথা ব্যাথা কমানোর উপায়!

ইশরাত জাহান রুনা

ইংরেজি বিভাগ

সেশন: ২০২০-২১

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url