OrdinaryITPostAd

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ সংকট!

 

 


আজি হতে শতবর্ষ পরে

কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি

কৌতুহলভরে- 

আজি হতে শতবর্ষ পরে।

দূরদর্শী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেখানে একশত বছর পূর্বে নিজের কর্মের জয়গান গেয়েছিলেন সেখানে জাতি হিসেবে রবীন্দ্রনাথের উত্তরসূরী হয়ে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানান সংকট নিয়ে প্রবন্ধ লিখতে বসেছি। সেটা আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শতবর্ষের বেশি সময় উত্তীর্ণ হওয়ার পরে। 

আরো পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন থেকে সকল স্টেশনের ভাড়া তালিকা নির্ধারিত হয়েছে!

১৯১৭ সালে গঠিত 'কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন' এর সুপারিশের ভিত্তিতে 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯২০' গঠিত। আর এই আইনের ভিত্তিতে ১৯২১ সালের ১ জুলাই অনুষ্ঠানিকভাবে ৩টি অনুষদ, ১২টি বিভাগ, ৮৭৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আশাবাদের বিষয় এই যে কালের বিবর্তনে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি অনুষদ, ৮৪টি বিভাগ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, ৫৬টি গবেষণা ব্যুরো ও কেন্দ্র, ১৯টি আবাসিক হল ও ৩টি ছাত্রাবাস রয়েছে।

আরো পড়ুন: সকল ব্যাংক ও সংস্থার শিক্ষাবৃত্তির আপডেট তথ্য

প্রতিষ্ঠার শুরুতে যেই গৌরবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয়েছিলো বর্তমান সেটা অনেকটাই স্থিত হয়ে পড়েছে বলে মনে হয়। অথচ প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত এই বিশ্বিবিদ্যালয়ে অতীতে সত্যেন বোসের মতো বিজ্ঞানী, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ এর মতো ভাষাবিজ্ঞানী, জেসি দেবের মতো দার্শনিক, আর সি মজুমদারের মতো ইতিহাসবিদ, নাজমুল করিমের মতো সমাজবিজ্ঞানী প্রমূখ শিক্ষকতা করতেন। কিন্তু বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে অতীতেও এরূপ প্রশ্ন উঠেছিলো। অতীতের এরূপ প্রশ্নগুলোর সম্মুখীন আমরা হয়েছি তবে কেনো বর্তমানেও আমরা এর সমাধান পাচ্ছি না সেটাই ভাবার বিষয়।

আরো পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনে আর্টিকেল রাইটিং জব অফার!

অনেকেই মানসম্মত শিক্ষার মূল উপাদান হিসেবে মানসম্মত শিক্ষক, শিক্ষা উপকরণ ও পরিবেশ প্রয়োজন। এই তিনটি বিষয়ের যথার্থ প্রয়োগ অবশ্যই প্রয়োজন মানসম্মত শিক্ষার জন্য। তবে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে তিনটি উপাদানের মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি জরুরি বলে মনে হয় শিক্ষার পরিবেশ। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাপটে সেটা অবশ্যই জরুরি।  

শিক্ষার পরিবেশ হলো এমন একটি পরিবেশ যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশ করতে পারে। এজন্য শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত আবাসন, পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার এবং পড়ালেখা করার জন্য নিরিবিলি পরিবেশ প্রয়োজন।

আরো পড়ুন: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনলাইন টিকেট কাটার নিয়ম!

শতবর্ষ পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা সম্মুখীন হচ্ছে তা হলো আবাসন সংকট। আবাসন হলগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা এই হলগুলোতে অবস্থান করে পড়ালেখা শেষ করে। এছাড়াও প্রত্যেক শিক্ষার্থী যাবতীয় একাডেমিক কাজও হলের মধ্য দিয়ে শেষ করে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো হলগুলো কি শিক্ষার্থীবান্ধব?

আরো পড়ুন: পলিসিস্টিক ওভারি থেকে মুক্তির উপায়!

এই প্রশ্নের উত্তরে অধিকাংশই নেতিবাচক মন্তব্যই দিবে এর অবশ্য কিছু কারণও আছে যার প্রধান কারণ হলো পর্যাপ্ত পরিমাণ স্থানের অভাব। প্রত্যেকটি হলে গণরুম সিস্টেমে দেখা যায় অনেক স্টুডেন্ট এক রুমে গাদাগাদি করে থাকে যেখানে একটি টেবিল রাখার ব্যবস্থা করার কল্পনাও করা যায় না।

 প্রত্যেকটি হলেই খাবার ব্যবস্থার জন্য হলে ক্যান্টিন রয়েছে কিন্তু ওই ক্যান্টিনগুলোতে পুষ্টিকর খাবারের খুবই অভাব। এছাড়াও প্রতিনিয়ত খাবারের দাম বৃদ্ধি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আর্থিক সংকট সৃষ্টি করছে এবং পাশাপাশি মানসিক হতাশাও বাড়াচ্ছে। এই সকল প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করার জন্য কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে যায় পড়ালেখা করার জন্য কিন্তু সেখানেও সকাল সকাল বিশাল সিরিয়াল ধরতে হয় একটি সিটোর জন্য। অনেক সময় অনেকেই ফিরে আসে একটি সিট না পেয়ে।

 এছাড়াও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ বই পাওয়া যাবে এই আশায় কিন্তু বিভাগের পাঠ্যতালিকার অন্তর্ভুক্ত বইগুলোও সবসময় পাওয়া যায় না। জনবহুল এই দেশে সবচেয়ে ব্যাস্ততম নগর ঢাকা আর এই ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিয় ক্যাম্পাসটি। আর এর ফলে ক্যাম্পাসে প্রতিনিয়ত বহিরাগত মানুষের আগমন দিন দিন ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করে ফেলছে।ই

আরো পড়ুন: অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণ!

প্রিয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হয়ে আশা করি এই সমস্যাগুলো প্রশাসন দ্রুতই সমাধান করবে। আর এটাই প্রত্যেক শিক্ষার্থীর দাবি বলে মনে করি।


আলী আহসান 

শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আরো পড়ুন: মাথা ব্যাথা কমানোর উপায়!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url