মামলার ধারা সমূহ জেনে নিন!
মামলা একটি আইনি প্রক্রিয়া। ইচ্ছা না থাকা স্বত্তেও অনেকে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে মামলায় জড়িয়ে যায়। আবার অনেকে রয়েছেন যারা মামলা করতে চান অন্যের বিরুদ্ধে। যারা মামলা করতে চান তাদের মামলার ধারা সমূহ জানা জরুরী, আবার যার নামে মামলা রয়েছে তারও মামলার ধারা সমূহ জানা জরুরী। কেননা কোনো সমস্যা সমাধানের আগে সেই সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা থাকা আবশ্যক। ঢাকা ভার্সিটি আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের আজকের আয়োজন মামলার ধারা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। সেই সাথে থাকছে মামলা সম্পর্কে মৌলিক কিছু বিষয়ের আলোচনা।
সংক্ষেপে জেনে নিন | |
---|---|
প্রশ্ন | মামলার ধারা সমূহ |
উত্তর ধাপ ০১ | মামলা হলো বিচার চাওয়ার প্রক্রিয়া। মামলা ফোজদারি ও দেওয়ানি দুই প্রকার হয়। |
উত্তর ধাপ ০২. | ফোজদারি মামলা দায়ের, বিচার ও নিষ্পত্তি কার্যবিধি সংবলিত গুরুত্বপূর্ণ ধারা |
উত্তর ধাপ ০৩. | দেওয়ানি মামলা দায়ের, বিচার ও নিষ্পত্তি কার্যবিধি সংবলিত গুরুত্বপূর্ণ ধারা |
অনুচ্ছেদ সূচি (যে অংশ পড়তে চান তার উপর ক্লিক করুন)
১.মামলা কী এবং কত প্রকার। মামলার ধারা সমূহ
সংক্ষেপেঃ মামলা হলো আইনি বিচার প্রক্রিয়া। মামলা প্রধানত দুই প্রকার। ফৌজদারি মামলা ও দেওয়ানী মামলা।
মামলার ধারা সমূহ জানার আগে আমাদের মামলা সম্পর্কে প্রাথমিক বিষয়গুলো জানতে হবে। তাই আর্টিকেলের এই অংশে মামলা এবং মামলার প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা করব।
মামলাঃ কোনো ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর আইনি বিচার চাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার পদ্ধতির নামই হলো মামলা। সংঘটিত হওয়া সকল ঘটনাই অপরাধ নয়। বাদির কাছে সংঘটিত হওয়া ঘটনাটি অপরাধ মনে হলেও আইনের দৃষ্টিতে ঘটনাটি অপরাধ হতেও পারে আবার না ও হতে পারে। বাদির অভিযোগটিই মামলা হিসেবে গণ্য হয়। আদালত সকল সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে মামলার রায় দিয়ে থাকে।
মামলা সাধারণত দুই প্রকার।
- ফৌজদারি মামলা: ফৌজদারি অর্থ মারপিট, খুন ইত্যাদি সম্বন্ধীয় মামলা। সাধারণ ভাষায় কোনো ব্যক্তিকে যখন মারামারি, চুরি, ডাকাতি, খুন, যখম, রেপ, প্রতারণা, দস্যুতা, অপহরণ, জালিয়াতি, বে-আইনি সমাবেশ, ইভটিজিং প্রভৃতি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় তাকে বলে ফৌজদারি মামলা। একে ক্রিমিনাল কেস ও বলা হয়।
- দেওয়ানী মামলা: কোন বিষয়ে অধিকারের দাবি বা ক্ষতিপূরণের দাবির জন্য যে মামলা করা হয় তাকে দেওয়ানী মামলা বলে।
- আমলযোগ্য মামলা: কিছু অপরাধ সংঘটিত হলে আইন মোতাবেক পুলিশ ওয়ারেন্ট ছাড়াই অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারে। এসব ক্ষেত্রে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিয়ে থাকেন। এসব অপরাধে যে মামলা হয় তাই আমলযোগ্য মামলা।
- অআমলযোগ্য মামলা: কিছু অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশ ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেফতার করতে পারে না। অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশ সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে প্রসিকিউশন রিপোর্ট বা নন-এফআইআর মামলা আদালতে দাখিল করে। এগুলো আমল অযোগ্য মামলা।
- GR (General Register) মামলা বা পুলিশি মামলা: কোনো আমলযোগ্য ঘটনার খবর পেলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আইন মোতাবেক মামলা করে আদালতে এফআইআর দাখিল করে। এটিই জিআর মামলা।
- Non-GR ( Non-General Register) মামলা: আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটিত হওয়ার খবর পেলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেটিকে এজহার হিসেবে গন্য না করে জিডি এন্ট্রি করে সংশ্লিষ্ট মেজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে আদালতে নন- এফআইআর প্রসিকিউশন রিপোর্ট দায়ের করতে পারেন। এগুলো নন জিআর মামলা।
- CR (Complaint Register) মামলা বা নালিশী মামলা: মেজিস্ট্রেট আদালতে সরাসরি গিয়ে কোর্ট ফি দিয়ে বিচার প্রার্থনা করা যায়। কোর্ট রেজিস্টারে মামলা এন্ট্রি হয়ে পরিচালিত হওয়ার কারনে এগুলোকে সিআর বা নালিশী মামলা বলে।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশে ১ ভরি সোনার দাম কত
২.ফৌজদারি মামলার ধারা সমূহ | মামলার ধারা সমূহ
- ধারা ৬-২৭ এ ফৌজদারি আদালত ও অফিসের গঠন সম্পর্কে বলা হয়েছে।
- ধারা ২৮-৪১ এ আদালতের ক্ষমতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ধারা ২৮ এ দণ্ডবিধির অধীঐ অপরাধ সম্পর্কে বলা হয়েছে।
- ধারা ৪৬-৬৭ তে গ্রেফতার, পলায়ন ও পুনরায় গ্রেফতার সম্পর্কে বলা হয়েছে।
- ধারা ৫২ তে মহিলার দেহ তল্লাশির পদ্ধতি সম্পর্কে বলা আছে।
- ধারা ৬৬ তে কোন আসামি পলায়ন করলে আসামিকে অনুসরণ ও গ্রেফতারের ক্ষমতা প্রসঙ্গে বলা আছে।
- ধারা ১৫৪ থেকে ১৭৬ এ আমল যোগ্য ও আমলযোগ্য মামলার কথা বলা হয়েছে।
- ধারা ২০০-২০৩ এ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট নালিশ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে।
- ধারা ২০৪ এ পরোয়ানা ইস্যু নিয়ে লিপিবদ্ধ রয়েছে।
- ধারা ২৪১-২৫৯ এ ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক মামলার বিচার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে।
- ধারা ২৬০-২৬৫ তে সংক্ষিপ্ত বিচার পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়েছে।
- ধারা ৩৬৬-৩৭৩ পর্যন্ত রায় প্রসঙ্গে বলা হয়েছে ।
- ধারা ৩৮১ থেকে ৪০০ দন্ড কার্যকর প্রসঙ্গে বলা হয়েছে।
- ধারা ৪০৪-৪৩১ এ আপিল প্রসঙ্গে বলা হয়েছে।
- ধারা ৫২৫ এ ফৌজদারি মামলার স্থানান্তর প্রসঙ্গে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ১ দিরহাম কত টাকা
৩.দেওয়ানী মামলার ধারা সমূহ | মামলার ধারা সমূহ
- ধারা ২ এ দেওয়ানি মামলা সংক্রান্ত সকল বিষয়ের সংঙ্গা ও পরিচিতি রয়েছে।
- ধারা ৬ এ আর্থিক এখতিয়ার নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ৯ এ বিষয়গত এখতিয়ার নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ১০ এ সাব সুডিস বা মামলা স্থগিত রাখার বিষয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ১১ তে রেস জুডিকেটা বা পূর্ব বিচার সিদ্ধান্ত নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ১২ এ পুনরায় মামলা করার বাধা নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ১৩ তে বিদেশি রায়ের বিষয়ে মামলাতে বাধা প্রসঙ্গে বলা আছে।
- ধারা ১৪: বিদেশী রায়ের সহি মোহরকৃত নকল আদালতে পেশ করলে আদালত ধরে নিবে রায়টি এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতের।
- ধারা ১৫ তে কোন আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে তা বলা হয়েছে।
- ধারা ১৬-২০ এ আঞ্চলিক এখতিয়ার নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ২১ এ এখতিয়ারের আপত্তি নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ২২-২৪ এ মোকদ্দমা স্থানান্তর ক্ষমতার বিষয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ২৬-৪৪ এ দেওয়ানি মোকদ্দমা কার্য প্রণালী লিপিবদ্ধ রয়েছে।
- ধারা ৪৬ এ লিখিত হুকুমনামা/ বিচারকের আদেশ পত্র/আদেশ নামা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
- ধারা ৪৮ এ ডিক্রি জারির তামাদি বা সময়সীমা নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ৫১-৫৪ ডিক্রি জারীর পদ্ধতি বলা হয়েছে।
- ধারা ৫৫-৫৬ তে গ্রেফতার ও আটক মাধ্যমের ডিক্রি জারী করা হয়েছে।
- ধারা ৫৮ এ আটক ও মুক্তি নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ৫৯ তে অসুস্থতার কারণে মুক্তি নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ৬০-৬১ তে ক্রোকের মাধ্যমে ডিক্রিজারী সম্পর্কে বলা হয়েছে।
- ধারা ৭৫ এ কমিশন প্রেরণের জন্য আদালতের ক্ষমতা আলোচনা রয়েছে।
- ধারা ৮৩ তে বিদেশী ব্যক্তির মামলা করার শর্ত নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ৮৪ তে বিদেশী রাষ্ট্রের মামলা করার শর্ত নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ৮৫ তে বিদেশী শাসনকর্তার পক্ষে মামলা পরিচালনা বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বিশেষভাবে নিযুক্ত ব্যক্তির সম্পর্কে বলা হয়েছে।
- ধারা ৮৬ তে শাসকের বিরুদ্ধে মামলার সম্পর্কে বলা হয়েছে।
- ধারা ৮৭ তে মামলার পক্ষ হিসেবে শাসনকর্তার উপাধি নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ৯১-৯২ তে গণউপদ্রব ও জন দাতব্য প্রতিষ্ঠান নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ৯৬-৯৯ এ মূল ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল সম্পর্কে বলা হয়েছে।
- ধারা ১০৪-১০৬ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল সম্পর্কে বলা হয়েছে।
- ধারা ১০৯ তে কখন সুপ্রিম কোর্টের নিকট আপিল চলবে তা বলা হয়েছে।
- ধারা ১১০ বিষয়বস্তু মূল্য নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ১১৩ তে রেফারেন্স সম্পর্কিত বিধান লিপিবদ্ধ রয়েছে।
- ধারা ১১৪ তে রিভিউ সম্পর্কিত বিধান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
- ধারা ১১৫ তে রিভিশন সম্পর্কিত বিধান আছে।
- ধারা ১৪৪ এ পুনরুদ্ধারেরর জন্য আবেদন নিয়ে আলোচনা রয়েছে।
- ধারা ১৫১ এ অন্তনিহিত সহজাত ক্ষমতা নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ১৫২ এ রায় ডিক্রি বা আদেশগুলোর সংশোধন নিয়ে বলা হয়েছে।
- ধারা ১৫৩ এ সংশোধন করার অসাধারণ ক্ষমতা লিপিবদ্ধ রয়েছে।আরও পড়ুনঃ রকেটে টাকা দেখার নিয়ম
The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url