সোনা একটি মূল্যবান ধাতব পদার্থ যা দিয়ে অলংকার তৈরি করা হয়। বাংলাদেশে সোনার দাম প্রতিনিয়তই কম বেশি হয়। কারণ ডলার রেটের সাথে নির্ভর করে সোনার দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ১ ভরি সোনার দাম কত ২০২৩ আর্টিকেলে আমরা সোনার প্রকারভেদ, পরিমাপের একক ও বর্তমান দাম নিয়ে আলোচনা করব। যেহেতু সোনার দাম প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হতে থাকে সেহেতু আমাদের বাংলাদেশে ১ ভরি সোনার দাম ২০২৩ জানা প্রয়োজন। তাই আমরা আজকের আর্টিকেলে বাংলাদেশে ১ ভরি সোনার দাম কত ২০২৩ তা আলোচনা করব।
অনুচ্ছেদ সূচি ( যে অংশ পড়তে চান তার উপর ক্লিক করুন)
১.সোনার প্রকারভেদ | বাংলাদেশে ১ ভরি সোনার দাম কত ২০২৩
সোনা প্রধানত অলংকার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, যদিও এর আরও কাজ রয়েছে। তবে সোনার কিছু প্রকারভেদ রয়েছে যা জানা জরুরী আমাদের জন্য। বাংলাদেশে ১ ভরি সোনার দাম কত ২০২৩ জানার আগে আমাদের সোনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। তাই আর্টিকেলের এই অংশে আমরা সোনার প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা করব।
সোনার প্রকারভেদ: বিশুদ্ধ সোনা হয় ২৪ ক্যারেট অর্থাৎ ৯৯.৯% খাঁটি। যা কেবল বার হিসেবে পাওয়া যায়। বিশুদ্ধ সোনা এমন একটি ধাতু যা খুবই নরম, ভঙ্গুর এবং অলঙ্কার তৈরীর জন্য অকার্যকর। তাই সোনার অলঙ্কার গড়তে সাধারণত সোনার সাথে খাদ মিশ্রিত করা হয়। কার্যত পরিধানযোগ্য অলঙ্কার নির্মাণের জন্য বিশুদ্ধ স্বর্ণের সাথে অন্যান্য কঠিন ধাতু যা খাঁদ হিসেবে পরিচিত প্রয়োজনীয় অনুপাতে মিশানো হয় যা সোনাকে অনমনীয় এবং টেকসই করে তুলে। খাঁদ হিসেবে সাধারণত তামা ও রূপা মিশানো হয়। মিশ্রিত খাদের শতাংশের উপর নির্ভর করে সোনাকে কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন:
২২ ক্যারেট: ২২ ক্যারেট সোনায় ২০ ভাগ বা ক্যারেট সোনা ও ২ ভাগ খাঁদ থাকে। এটি ৯১.৬% বিশুদ্ধ।
২১ ক্যারেট : ২১ ক্যারেট সোনায় ২১ ভাগ সোনা ও ৩ ভাগ খাঁদ থাকে। এটি ৮৭.৫% বিশুদ্ধ হয়।
১৮ ক্যারেট : ১৮ ক্যারেট সোনায় ১৮ ভাগ বা সোনা ও ৬ ভাগ খাঁদ আছে। এটি ৭৫.০% বিশুদ্ধ হয়।
১৪ ক্যারেট : ১৪ ক্যারেট সোনায় ১৪ ভাগ সোনা ও ১০ ভাগ খাঁদ থাকে।
১০ ক্যারেট : ১০ ক্যারেট সোনায় ১০ ভাগ সোনা ও ১৪ ভাগ খাঁদ থাকে।
সাধারণত গহনা তৈরিতে ২২ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট ও ১৮ ক্যারেট এর সোনা ব্যবহৃত হয়। ১৪ ক্যারেট ও ১০ ক্যারেটের সোনা ববহৃত হয় না। ২৪ ক্যারেটের সোনা কেবল বার হিসেবেই পাওয়া যায়, সোনার অলংকার তৈরিতে এই নিখাঁদ সোনার ব্যবহার করা হয় না।
২.সোনার পরিমাপ | বাংলাদেশে ১ ভরি সোনার দাম কত ২০২৩
বাংলাদেশে ১ ভরি সোনার দাম কত ২০২৩ এই কথাটি বলতে গেলে প্রথমেই আমাদের ভরি কি বা আমরা কি পরিমান সোনার দাম জানতে চাচ্ছি তা বুঝতে হবে। তাই আর্টিকেলের এই অংশে আমরা সোনার পরিমাপ নিয়ে আলোচনা করব।
সোনার পরিমাপ:
দেশীয় হিসাবে স্বর্ণ পরিমাপের একক
১ ভরি = ১৬ আনা
১ ভরি = ৯৬ রতি
১ আনা = ৬ রতি
গ্রাম, কেজি যেমন মাপের একক ঠিক তেমনি ভরি সোনা পরিমাপের একক। ভরি ২৪ ক্যারেট ধরে হিসাব করা হয়।
৯৬ রতি = ১ ভরি
সে হিসাবে ৯৬ কে ২৪ দিয়ে ভাগ করলে হয় ৪ রতি।
সুতরাং ৪ রতি = ১ ক্যারেট।
কিন্তু বিদেশে বা আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণ কিনতে গেলে ভরি হিসেবে সোনা কেনা যায় না। কারণ, বিদেশে সোনা বিক্রির একক হিসেবে ওজন পরিমাপের আন্তর্জাতিক একক “কিলোগ্রাম” বা “আউন্স” ব্যবহার করা হয়। কিলোগ্রামের ভগ্নাংশ হচ্ছে "গ্রাম"। সোনা যেহেতু অনেক মূল্যবান, তাই লোকে অত্যন্ত অল্প পরিমাণে এটা কিনে থাকে। তাই বিশ্ববাজারে সোনার ওজন পরিমাপে গ্রাম বা আউন্স-ই বেশি ব্যবহার হয়। সেই হিসেবে :
৩.সোনার দাম কত টাকা | বাংলাদেশে ১ ভরি সোনার দাম কত ২০২৩
বাংলাদেশে ১ ভরি সোনার দাম কত ২০২৩ তা সঠিকভাবে বলা একটু কঠিন।কেননা এই দাম প্রতিনিয়ত কমবেশি হতে থাকে। আর্টিকেলের এই অংশে সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী বাংলাদেশে সোনার দাম সম্পর্কে আলোচননা করব।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় " স্হানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্নের (পিওর গোল্ড) মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এমতাবস্থায় আজ ১৫ এপ্রিল, ২০২৩ বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন- বাজুস স্ট্যান্ডিং মিটিং অন রাইসিং এ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে সর্বসম্মতিক্রমে ১৬ এপ্রিল, ২০২৩ থেকে বাংলাদেশের বাজারে স্বর্নের মূল্য নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী :
৪.সোনা চেনার উপায় | বাংলাদেশে ১ ভরি সোনার দাম কত ২০২৩
সোনার বিভিন্ন ক্যাটাগরি থাকলেও অলংকার বানানোর ক্ষেত্রে ২২ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট ও ১৮ ক্যারেট সোনা ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে ১ ভরি সোনার দাম কত আর্টিকেলের এই অংশে আমরা অলংকারের সোনা চেনার উপায় নিয়ে আলোচনা করব।
আসল সোনা চেনার উপায়: খাঁটি সোনা চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় হল হলমার্ক। সাধারনত সোনার গয়না, কয়েন বা বার এ হলমার্ক দেওয়া থাকে যা দেখে বোঝা যায় সোনা কতটুকু খাটি। বেশিরভাগ সময়েই হলমার্ক গয়নার ভিতরের দিকে দেওয়া থাকে। ক্যারট অনুযায়ী ২৪, ২২, ১৮, ১৪ বা ১০ এই নম্বরগুলি লেখা থাকে। নম্বর যত বেশির দিকে থাকবে বুঝতে হবে সোনার গুণগত মান তত ভালো। সাধারণত ২২ বা ২৪ ক্যারেটের সোনা কেনা উচিত।
এছাড়াও সোনার অলংকার গায়ে খোদায় করা সংখ্যা দেখে সোনার মান নিশ্চিত হওয়া যায়। ৯১৬ সংখ্যাটি দিয়ে ২২ ক্যারেট সোনা, ৮৭৫ সংখ্যাটি ২১ ক্যারেট সোনা ও ৭৫০ সংখ্যাটি ১৮ ক্যারেট সোনাকে বোঝায়। সাধারণত চেনের হুকে, কানের দুলের পিছনে , রিং এর নিচে নেকলেস এর পিছনে খোদাই করা থাকে। এই সংখ্যাগুলো দ্বারা সোনা চেনা যায়।
৫.লেখকের মন্তব্য | বাংলাদেশে ১ ভরি সোনার দাম কত ২০২৩
সোনা একটি হলুদ বর্ণের ধাতু। বহু প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ এই ধাতুর সাথে পরিচিত। অপরিবর্তনীয় বৈশিষ্ট্য, চকচকে বর্ণ, বিনিময়ের সহজ মাধ্যম, কাঠামোর স্থায়ীত্বের কারণে এটি অতি মূল্যবান ধাতু হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে সেই প্রাচীনকাল থেকেই। সোনা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের অলঙ্কার তৈরির প্রথা এখনও সমানভাবে বিরাজমান রয়েছে।
বিশ্ববাজারে সোনার দাম যেমন তারতম্য হয় তেমনি বাংলাদেশেও এই দাম কমবেশি হয়ে থাকে। আজকের আর্টিকেলে আমরা বাংলাদেশে ১ ভরি সোনার দাম কত ২০২৩ এর পাশাপাশি সোনার বিষয়ে মৌলিক কিছু আলোচনা করেছি। আর্টিকেল সম্পর্কিত যেকোন প্রশ্ন, পরামর্শ, মতামত কিংবা অভিযোগ আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম তথ্যবহুল আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট The DU Speech ভিজিট করুন।
0 Comments
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন