OrdinaryITPostAd

২৬ শে মার্চের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও ভাষণ

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদাযাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বক্তব্য প্রদান। "২৬ শে মার্চের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও ভাষণ" আর্টিকেলের এই অংশে আমরা বক্তব্য প্রদানের নিয়ম ও ২৬ শে মার্চের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও ভাষণ এর কিছু নমুনা নিয়ে আলোচনা করব। "২৬ শে মার্চের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও ভাষণ" সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ুন।



অনুচ্ছেদ সূচি (যে অংশ পড়তে চান তার উপর ক্লিক করুন)

  1. বক্তব্য প্রদানের নিয়ম
  2. সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের নমুনা
  3. প্রশ্ন-উত্তর পর্ব 
  4. লেখকের মন্তব্য

১.বক্তব্য প্রদানের নিয়ম|২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও ভাষণ

বক্তব্য ও ভাষণ প্রদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ।ভাষণ প্রদানের জন্য অবশ্যই কিছু দক্ষতার প্রয়োজন হয়।কোনো অনুষ্ঠানে বক্তৃতা প্রদানের পূর্বে বক্তব্য প্রদানের নিয়ম সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা অত্যাবশ্যকীয়।২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও ভাষণ আর্টিকেলের এই অংশে আমরা বক্তব্য প্রদানের নিয়ম সম্পর্কে জানব:

একটি বক্তব্য/ভাষণের মূলত চারটি অংশ থাকে:

  1. সম্ভাষণ
  2. বক্তব্যের ভূমিকা
  3. মূল বক্তব্য
  4. সমাপ্তি
প্রত্যেকটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
সম্ভাষণ: ভাষণ/বক্তব্যের শুরুতেই উপস্থিত যারা রয়েছেন তাদের যথাযথভাবে সম্মোধন করতে হবে। ভাষণ যদি কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে হয় তাহলে সেখানে উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দ, সভাপতি, শিক্ষার্থীর পাশাপাশি অতিথিও থাকতে পারেন।তাই বক্তব্য/ভাষনের শুরুতেই সম্ভাষণ করতে হবে।
বক্তব্যের ভূমিকা: উপস্থিতের সম্ভাষণ দেয়ার পর ভাষণের মূল বিষয় নিয়ে এই অংশে ধারণা দিতে হবে। এটি খুব বেশি দীর্ঘ করা যাবে না। অনেকেই এই অংশে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। এটি অপশনাল,চাইলে কেউ অনুষ্ঠান আয়োজনকারী কমিটিকে ধন্যবাদ জানাতে পারেন আবার না জানালেও সমস্যা না.
মূল বক্তব্য: বক্তব্য/ ভাষণের এই অংশে ভাষণের মূল বিষয় আলোচনা করতে হবে। বক্তব্যের মূল বিষয় অযথা বড় না করে পয়েন্ট অনুযায়ী হলে ভালো হয়।কারণ অল্প কথায় সুন্দরভাবে মূল বক্তব্য প্রদান করা হচ্ছে  আদর্শ বক্তব্যের পূর্ব শর্ত।
সমাপ্তি: মূল বক্তব্যের পর আশাবাদ ব্যক্ত করে কিংবা কোন উপদেশ বা অনুরোধ মূলক কথা বলে বক্তব্য/ভাষণ সমাপ্ত করতে হবে। সমাপ্তির অংশটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বক্তব্য দেয়ার সময় যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে:
  • ভাষণ বক্তব্য প্রদানের পূর্বেই স্ক্রিপ্ট তৈরি করা
  • সঠিক উচ্চারণ ও বাচনভঙ্গি
  • দেখে দেখে না পড়া
  • অনুষ্ঠানের ধরন সম্পর্কে ধারণা
  • বক্তব্যের মাঝে বিরতি নেওয়া
  • বক্তব্য দেওয়ার আগে অনুশীলন করা।
একজন ভালো বক্তা হিসেবে সুন্দর ও সাবলীলভাবে বক্তৃতা প্রদান করতে এইসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। একজন বক্তা কে অবশ্যই আত্মবিশ্বাসী হতে হবে ।বক্তব্যের মাঝে কোনরকম বিশৃঙ্খলা না করে সুশৃঙ্খলভাবে বক্তব্য প্রদান করতে বক্তৃতা দানের নিয়মসমূহ অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

২.সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের নমুনা|২৬ শে মার্চ এর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও ভাষণ

 ২৬ শে মার্চ এর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও ভাষণ আর্টিকেলের এই অংশে আমরা একটি নমুনা বক্তব্য সংযোজন করব যা নিম্নরুপ:

নমুনা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য/ভাষণ:

  আমার বক্তব্যের শুরুতেই আজকের অনুষ্ঠানের সম্মানিত সভাপতি,সম্মানিত প্রধান অতিথি,বিশেষ অতিথি ও আমার সম্মুখে উপবিষ্ট সুধীজন, সবাইকে জানাচ্ছি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা।

আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালির অবিসংবাদিত  নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বাঙালি জাতির জীবনে স্বাধীনতা দিবস একই সঙ্গে আনন্দ ও বেদনার দিন।৫২ এর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে স্বধীকারের চেতনার উন্মেষ ঘটেছিল, তা ধাপে ধাপে স্বাধীনতা আন্দোলনে রূপ নেয়। দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে উপমহাদেশ ভাগের পর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকেরা বাঙালি উপর শোষণ এবং ভাষা ও সংস্কৃতির উপর আগ্রাসন চলতে থাকে।
এই প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধিকারের দাবিতে জেগে ওঠা নিরীহ বাঙালির উপর ২৫ মার্চ রাতে ভারী অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী চালায় বর্বর গণহত্যা।
গণহত্যা চালানোর পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার করা হয়।গ্রেফতারের পূর্ব মুহূর্তে বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের।

জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার সর্বস্তরের জনগণ জাতি, ধর্ম ,বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দীর্ঘ ৯ মাষ রক্তক্ষয়ী গৌরবেজ্জ্বল সশস্ত্রে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও ২ লক্ষ মা বোনের সম্মানহানির বিনিময়ে বাংলার জনগণ অর্জন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির ২৩ বছরের রক্তঝরা সংগ্রাম শেষে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনে সারা বাংলার জনগণকে অপরিসীম ত্যাগের সম্মুখীন হতে হয়েছিল।

প্রিয় সুধী,
৫২ এর ভাষা আন্দোলন, '৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভ, '৫৬ এর সংবিধান প্রণয়নের আন্দোলন, '৫৮ এর মার্শাল বিরোধী আন্দোলন, '৬২ এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, '৬৬ এর বাঙালি মুক্তির সনদ ৬ দফার আন্দোলন, '৬৯ এর  রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের পথ পেরিয়ে, '৭০ এর ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন সবই বাঙালি জাতির গৌরবউজ্জ্বল ইতিহাসের মাইলফলক।
পাকিস্তানি শাসনামলে দীর্ঘ ১২ বছরের বেশি সময় কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা,কয়েকবার ফাঁসির কাষ্টের মুখোমুখি, মিথ্যা মামলায় অসংখ্যবার কারাবরণ করার পরও এদেশের স্বাধীনতার আন্দোলনে প্রেরণা দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তার অপরিসীম সাহস, দৃঢ়চেতা মনোভাব ও আপোষহীন নেতৃত্ব পরাধীন বাঙালি জাতিকে সংগ্রামী হওয়ার প্রেরণা যুগিয়েছিল।১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বক্তব্যে বাঙ্গালীদের ইস্পাত কঠিন ঐকা গড়ে তুলে স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে শক্তি ও সাহস যুগিয়েছিল।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে গরিব দুঃখী মেহনতি মানুষদের মুখের হাসি ফুটানো ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লক্ষ্য। তিনি জেল- জুলুম,শত যন্ত্রণা, দুঃখ- কষ্ট বেদনাকে সহ্য করেও বাংলার কৃষক শ্রমিক জনতার মুখে হাসি ফুটানোর জন্য প্রাণান্তর চেষ্টা চালিয়েছেন।
বাংলা, বাঙালি, বঙ্গবন্ধু এই তিনটি বিষয়কে বাংলার জনগণ একবৃন্তে তিনটি চেতনার ফুল হিসেবে মনে করে। এই কারণে বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের মাঝে বঙ্গবন্ধুর চিরদিন অম্লান থাকবে এবং বাংলার জনতার হৃদয়ে চির ভাস্বর হয়ে থাকবেন।

সুপ্রিয় সুধীবৃন্দ,
স্বাধীনতা রক্ষার জন্য স্বাধীনতাকে মর্যাদা দিতে হয় এবং থাকতে হয় সাদা সতর্ক, তাই স্বাধীনতার মর্ম উপলব্ধি করে  রক্ষা করা আমাদের জাতীয় কর্তব্য।
আসুন সবাই মিলে জাতির পিতার অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা- দারিদ্রমুক্ত ও সুখী সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি।আজকের  দিনে এই হোক আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার।

৩. প্রশ্ন-উত্তর পর্ব|২৬ মার্চের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও ভাষণ

বাঙালির জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই এই স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান রাখা প্রত্যেকটি বাঙালির দায়িত্ব ও কর্তব্য। ২৬ মার্চের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও ভাষণ আর্টিকেলের এই অংশে স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হবে।
  1. প্রশ্ন: উপমহাদেশে দেশভাগ হয়েছিল কি কারনে? উত্তর: দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে।
  2. প্রশ্ন: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কত বছর কারাবরণ করেন? উত্তর: ১২ বছর।
  3. প্রশ্ন স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য প্রদানে কোন কোন বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে? উত্তর: প্রথমে অনুষ্ঠানের ধরন সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে এবং নির্ভীকভাবে অত্যন্ত সাবলীল ও স্পষ্ট বচনভঙ্গির মাধ্যমে বক্তব্য প্রদান করতে হবে।

৪.লেখকের মন্তব্য|২৬ মার্চের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও ভাষণ

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য,ভাষণ কিংবা উপস্থিত বক্তৃতা প্রদান করা হলো স্বাধীনতা দিবস পালনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ২৬ মার্চের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও ভাষণ আর্টিকেলে আমরা স্বাধীনতা দিবসে বক্তব্য প্রদানে জন্য কিছু সাধারণ নিয়ম ও একটি নমুনা বক্তব্য নিয়ে আলোচনা করেছি। আর্টিকেল সম্পর্কিত যেকোনো প্রশ্ন,মতামত,অভিযোগ কিংবা পরামর্শ আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।আমরা আপনাদের প্রতিটি কমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে উত্তর প্রদানের চেষ্টা করব। এরকম আরো তথ্যবহুল আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট    The DU Speech থেকে ঘুরে আসুন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url