OrdinaryITPostAd

তুরস্ক কিসের জন্য বিখ্যাত? বিস্তারিত জানুন

তুরুস্ক এমন একটি দেশ যার বৈচিত্র্যময় ইতিহাস ঐতিহ্যের জন্য বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত / বিখ্যাত। আর মুসলিম দেশ হিসেবে তুরস্ক কিসের জন্য বিখ্যাত এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে আগ্রহী। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে ঘরে বসেই  তুরস্ক কিসের জন্য বিখ্যাত এ সম্পর্কে  সকল তথ্য জানা সম্ভব। ঢাকা বিশববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের আজকের আর্টিকেল আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো তুরস্ক কিসের জন্য বিখ্যাত  সে সম্পর্কে । তুরস্ক কিসের জন্য বিখ্যাত এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের আর্টিকেলটি স্কিপ না করে সম্পূর্ণ পড়ুন।



আর্টিকেল সূচিপত্র ( যে অংশ পড়তে চান তার ওপর ক্লিক করুন)

  1. তুরস্ক দেশ পরিচিতি। তুরস্ক কিসের জন্য বিখ্যাত
  2.  তুরস্কের অবস্থান ও সীমানা। তুরস্ক কিসের জন্য বিখ্যাত
  3. তুরস্কের ইতিহাস। তুরস্কের কিসের জন্য বিখ্যাত
  4. তুরস্ক যার জন্য বিখ্যাত। তুরস্ক কিসের জন্য বিখ্যাত
  5. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন- উত্তর 
  6. লেখকের মন্তব্য

 ১. তুরুস্ক দেশ পরিচিতি|তুরস্ক কিসের জন্য বিখ্যাত 

তুরস্ক তুর্কি বা টার্কি শব্দ থেকে আগত যার আভিধানিক অর্থ হলো ল্যান্ড অফ তুর্কস অর্থাৎ এটি হলো তুর্ক জনগোষ্ঠীর ভূখণ্ড। তুর্ক জনগোষ্ঠী হাজার হাজার বছর ধরে বসবাস করতো এ অঞ্চলে যার ফলে এর নাম তুরকে বা টার্কি অর্থাৎ বাংলায় যাকে বলে তুরস্ক।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুরস্ক এখন থেকে তুর্কিয়ে হিসেবেই পরিচিত হবে ।
ভাষা - তুরস্কের প্রধান ভাষা হলো তুর্কি। এছাড়া আরো ৩০ টির ও অধিক ভাষা এখানে প্রচলিত রয়েছে।এর মধ্যে আরবী ,কুর্দি,জর্জিয়া, আদিগে,আর্মেনীয় ,আজারবাইজান এবং রোমামী। তবে এখানে প্রায় ৯০ শতাংশের ও বেশি মানুষ তুর্কি ভাষাতেই কথা বলে থাকে।
ধর্মতুরস্ক সাংবিধানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। অবে অধিকাংশ জনগণ মুসলিম হলেও এখনো বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে বৈচিত্র্যময় সব ইসলামিক স্থাপত্য।

প্রশাসনিক অবস্থা- প্রজাতন্ত্র তুরস্ক হলো তুরস্কের সরকারি নাম । আনাতোলিয়া তে অবস্থিত আঙ্কারা হলো তুরস্কের রাজধানী। তুরস্ক কে প্রশাসনিক সুবিধার্থে নোট ৮১ টি প্রদেশে ভাগ করে । আর সবগুলো গুলি প্রদেশ কে পুনরায় সাত টি অঞ্চলে বিভক্ত করে। তুরস্কে সর্বমোট জেলা আছে ৯২৩ টি।তুরস্কের সবচেয়ে বড় শহর হলো ইস্তাম্বুল।তুরস্কের বর্তমান পতাকা সম্পুর্ণ অটোমান সাম্রাজ্যের থেকে গ্রহণ করা। পতাকাটি গৃহীত হয় ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে।জাতীয় পতাকাকে বায়রাক ( লাল) বলে ।
তুর্কিদের অতিথি আপ্যায়ন ও বন্ধুসুলভ ব্যবহারে বিশ্ব ইতিহাসে তাদের সুখ্যাতি বিদ্যমান।

২. তুরস্কের অবস্থান ও সীমানা|তুরস্ক কিসের জন্য বিখ্যাত 

অবস্থান - ভৌগলিক দিক থেকে তুরস্কের অবস্থান এশিয়া মহাদেশে। কিছু অংশ ইউরোপ মহাদেশে ও পড়েছে। অর্থাৎ এশিয়া এবং ইউরোপ মহাদেশের কানেক্টিং পয়েন্টে তুরস্ক অবস্থিত। ইউরোপের দক্ষিণ পূর্ব ও এশিয়ার পশ্চিমে তুরস্কের অবস্থান। তুরস্কের আকার চতুর্ভুজ আকৃতির। এ দেশের মোট আয়তন হলো ৭,৮৩,৫৬২ বর্গ কিলোমিটার ও ৩,০২,৫৩৫ বর্গমাইল। দেশের মোট জনসংখ্যা ৭,৭৬,৯৫,৯০৪ ।তুরস্ক আয়তনের দিক থেকে পৃথিবীর ৩৭ তম বৃহত্তম দেশ।

সীমানা - পূর্বে ইরান, পশ্চিমে এজিয় সাগর ও গ্রিস, দক্ষিণে ইরাক, সিরিয়া,ভূমধ্যসাগর ও উত্তর পূর্বে জর্জিয়া, আর্মেনিয়া,আজারবাইজানি প্রজাতন্ত্র নাখচিভান। এশীয় ও ইউরোপীয় তুরস্ক কে আলাদা করা হয়েছে সামরিক কৌশলগত দিক থেকে তিনটি জলপথ দ্বারা - বসফরাস প্রণালী, মার্মারা সাগর ও দার্দানেল প্রণালী। এ তিনটি জলপথ কৃষ্ণ সাগর থেকে এজীয় সাগরে যাওয়ার পথ তৈরি করে। পৃথিবীর ঠিক মধ্য খানে অবস্থিত তুরস্ক দেশটি।


৩. তুরস্কের ইতিহাস|তুরস্ক কিসের জন্য বিখ্যাত 

তুরস্কের ইতিহাসে  আছে যে যিশুখ্রিস্ট এর জন্মের প্রায় আনুমানিক ৭০ মিলিয়ন বছর পূর্ব থেকে এ অঞ্চলে মানুষ বসবাস করতো এবং এখানে ক্রেক পার্শিয়ান রোমান এবং আরবদের আগমন ছিল। প্রায় ১১০০ শতকের দিকে আরবের যাযাবর জাতি তুর্কি লোকেরা এই অঞ্চলে আসে এবং বসবাস শুরু করে পরবর্তীতে দেশটিকে নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে যায়।

 আর এই তুর্কি জাতিদের মাধ্যমেই সেলজুক রাজবংশ
ধারা শুরু হয় এবং এই অঞ্চলের অধিকাংশ জনগণ তুর্কি ভাষা ও তাদের সংস্কৃতির সাথে মিশে যায় । পরবর্তীতে মোঙ্গল বাহিনী তেরোশো শতকে তুরস্ক আক্রমণ করে এবং তাদের দ্বারা সেলজুক শাসনের পতন ঘটে। এবং সেই একই শতকের শেষের দিকে পুনরায় ওসমানীয় সাম্রাজ্যের শাসন শুরু হয়। এবং তাদের মাধ্যমেই পর্যায়ক্রমে এ অঞ্চলের সীমানা বৃদ্ধি পেতে থাকে । 
ওসমানীয় সাম্রাজ্য প্রায় ৬০০ বছর শাসন করে । এরপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর উসমানীয় সাম্রাজ্য ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যায়। তখন শুরু হয় তুরস্কের জাতীয়তাবাদী স্বাধীনতা যুদ্ধ। মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক এই যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন । এবং পরবর্তিতে কামাল আতাতুর্কের নেতৃত্বে তুরস্ক প্রজাতন্ত্র গঠিত হয়। বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে আতাতুর্ক তুরস্ককে আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করে এবং নারী শিক্ষার বহুল অগ্রগতি হয় তাঁর সময়ে ।

৪. তুরস্ক যার জন্য বিখ্যাত|তুরস্ক কিসের জন্য বিখ্যাত

তুরস্ক গোটা বিশ্বের কাছে এত বেশি বিখ্যাত হওয়ার পিছনে রয়েছে তাদের  বিজ্ঞান , প্রযুক্তি ইতিহাস, খাদ্য,  ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি সহ, তাদের  একইসাথে  অবিশ্বাস্যভাবে বৈচিত্র্যময় একটি  দেশ প্রদর্শন করে যা  প্রশংসা এবং স্বীকৃতির দাবিদার।
চা : পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ তুরস্ককে তাদের অত্যাধিক চা প্রেমীর কারনে চিনে থাকে।প্রায় ৯৬% জনগণ এখানে প্রতিদিন কম করে হলেও এক কাপ চা পান করে। ভ্রমণের সময় অধিকাংশই তাদের এই অসাধারণ চায়ের স্বাদ নেওয়া থেকে বিরত থাকে না। তবে মজার ব্যাপার হলো তুর্কি মেয়েরা কফি এত ভালবাসে যে তার জন্য সে নিজের সঙ্গীকে ও ছেড়ে দিতে পারে। এতটাই কফি পাগল তারা। তাদের এই চা কফির জন্য বিশ্বে বিখ্যাত ভূমিকা পালন করে।
তুর্কি বাজার:তুরস্কের কেনাকাটাকে সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত করে তোলে তাদের ইস্তাম্বুলের গ্র্যান্ড বাজার । এ বাজার বিশ্বের বৃহত্তম এবং প্রাচীনতম ধাঁচের বাজারগুলির মধ্যে অন্যতম একটি । এছাড়াও এখানে প্রায় ৬০০০ এর ও বেশি বিভিন্ন ধরনের দোকান রয়েছে৷ সেগুলোর মধ্যে অনেকেই তাদের বিখ্যাত তুর্কি কার্পেট গুলো বিক্রি করে থাকে যা বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত।
প্রকৃতপক্ষে গ্র্যান্ড বাজার তৈরি করা হয়েছিল মূলত হাগিয়া সোফিয়া মসজিদের নির্মাণকে সমর্থন করার জন্য আয়ের একটি অন্যতম উপায় হিসেবে । বলা যায় তাদের এই বাজারে নানা রকম বৈচিত্র্যময় পণ্যের সমাহারে বিশ্বব্যাপী সমাদিত ।

ইস্তাম্বুল: কনস্টান্টিনোপল নামে পরিচিত তুরস্কের সবচেয়ে বিখ্যাত শহর। তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন শহর হল ইস্তাম্বুল । দুইটি মহাদেশে অবস্থিত হয়েও তুরস্ক এত বিখ্যাত কারণ এখানে রয়েছে গোল্ডেন হর্ন, মারমারা সাগর এবং বসফরাস স্ট্রেইট দ্বারা বেষ্টিত। বিভিন্ন স্মৃতি স্তম্ভের মধ্যে রয়েছে গ্র্যান্ড বাজার, ডলমাবাহসে প্যালেস, গালাতা ব্রিজ ,গালাতা টাওয়ার, তাকসিম স্কয়ার, এবং মসলা বাজারের মতো বিখ্যাত সব জায়গা। অধিকাংশ ভ্রমণকারী সুলতানাহমেত স্কোয়ারের দিকে রওনা দেয়,এটি পুরাতন শহর হলেও সুপরিচিত। এছাড়া আরো বৈচিত্র্যময় স্তম্ভ রয়েছে যার মধ্যে নীল মসজিদ, তোপকাপি প্রাসাদ, ব্যাসিলিকা কুণ্ড, ভূগর্ভস্থ কুণ্ড এবং হিপোড্রোম। এসব বিখ্যাত সব স্থাপনার জন্য তুরস্ক বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত।

ক্যাপাডোসিয়ায় হট এয়ার বেলুন রাইড: তুরস্কের কেন্দ্রীয় অঞ্চল আনাতোলিয়ান বসে ক্যাপাডোসিয়ায় হট এয়ার বেলুন রাইড উপভোগ করা যায় । যা তুরস্কের বিখ্যাত একটি বিনোদনের অংশ। ক্যাপাডোসিয়া সাধারণত ভ্রমণ পত্রিকায় স্বীকৃত হয় যে অনেক গুলো গরম বাতাসের বেলুন সেগুলো সূর্য উঠার সাথে সাথে বাতাসে উঠতে থাকে। এছাড়াও আরো দর্শনীয় স্থান রয়েছে এর মধ্যে ১৪ ও ১৫ শতকের প্রাচীন গীর্জা নিয়ে গঠিত গোরেমে ওপেন-এয়ার মিউজিয়াম। আরো রয়েছে পরী শিলা চিমনি সহকারে একটি চন্দ্রের ল্যান্ডস্কেপের মতো বৃহৎ উপত্যকা।


৫. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন - উত্তর 

প্রশ্ন ১: তুরস্কের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কে ?
উত্তর: রেজেপ তাইয়িপ এরদোয়ান।

প্রশ্ন ২: তুরস্কের অবস্থিত সবচেয়ে বড়ো শহর কোনটি? 
উত্তর: তুরস্কের ইস্তাম্বুল ( বাইজেন্টাইন)।

প্রশ্ন ৩: তুরস্ক কোন মহাদেশের মধ্যে অবস্থিত?
উত্তর: ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশে অবস্থিত।

প্রশ্ন ৪: তুরস্কের রাষ্ট্রীয় ভাষা কোনটি ?
উত্তর: তুর্কি।

প্রশ্ন ৫: তুরস্কের বর্তমান নাম কি  ?
উত্তর:তুর্কিয়ে


৬. লেখকের মন্তব্য 

প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা আপনাদের সাথে তুরস্ক কিসের জন্য বিখ্যাত এ  নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তুরস্ক কিসের জন্য বিখ্যাত এ সম্পর্কে বা যেকোনো বিষয়ে আপনাদের কোনো অভিযোগ বা মতামত নিচের কমেন্ট বক্সে লিখে জানাবেন। ঢাকা বিশববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠন The DU Speech এর সাথেই থাকবেন। তুরস্ক কিসের জন্য বিখ্যাত  এ সম্পর্কে হোক বা যেকোনো বিষয়ে আমরা আপনাদের মতামতকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url