আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত? জানুন বিস্তারিত
বিশ্বের প্রতিটি দেশেরই রয়েছে নিজস্ব কিছু বৈচিত্র্যময় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি যার জন্য বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ও বিখ্যাত হয়ে থাকে।ঠিক তেমনি বিশ্বের একমাত্র পরাধক্তিধর আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে আগ্রহী। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে ঘরে বসেই আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত এ সম্পর্কে সকল তথ্য জানা সম্ভব। ঢাকা বিশববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের আজকের আর্টিকেল আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত সে সম্পর্কে । আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের আর্টিকেলটি স্কিপ না করে সম্পূর্ণ পড়ুন।
আর্টিকেল সূচীপত্র (যে অংশ পড়তে চান তার উপর ক্লিক করুন)
- আমেরিকা দেশ পরিচিতি। আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত
- আমেরিকার অবস্থান ও সীমানা। আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত
- আমেরিকা যার জন্য বিখ্যাত। আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত
- আমেরিকার ইতিহাস। আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত
- অনুচ্ছেদ সম্পর্কিত প্রশ্ন- উত্তর
- লেখক মন্তব্য
আরও পড়ুনঃ দ্বিতীয় জম
জব করুন ঢাকা নিয়ম নীতি বিষয়ক ওয়েবসাইট
১.আমেরিকা দেশ পরিচিতি|আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত
বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি ধর দেশ হলো আমেরিকা। দেশটির অর্থনীতি, সামরিক শক্তি, শিক্ষা ব্যবস্থা, তথ্য প্রযুক্তি, এবং শিল্প বানিজ্য সবক্ষেত্রেই রয়েছে তাদের আশ্চর্যজনক সুখ্যাতি।
আমেরিকা ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা (USA) যা আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নামেও পরিচিত। দেশটি মূলত মানচিত্রকর আমেরিগো ভেসপুচির এবং ইতালীয় আবিষ্কারক এর নামানুসারে দেশটির নাম রাখা হয় “আমেরিকা”।উত্তর আমেরিকা মহাদেশে অবস্থিত দেশটি। এ দেশটি গঠিত হয়েছে ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়া নিয়ে। ওয়াশিংটন ডিসি হলো আমেরিকার রাজধানী। দেশটির সবচেয়ে বড় শহর হলো নিউ ইয়র্ক সিটি।
আমেরিকার প্রধান ভাষা ইংরেজি। কিন্তু এখানে স্প্যানিশ, চাইনিজ, ফ্রেঞ্চ ভাষা ও রয়েছে। তবে অধিকাংশ মানুষই ইংরেজিতে কথা বলে থাকে।
দেশটির আয়তন প্রায় ৯৮,২৬,৬৭৫ বর্গকিলোমিটার (৩৭,৯৪,১০০ বর্গমাইল)। আমেরিকা আয়তনের দিক থেকে বিশ্বে চতুর্থ বৃহত্তম দেশ।আমেরিকার বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ৩৩.৩৬ মিলিয়ন অর্থাৎ জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম দেশ।
আরও পড়ুনঃ
জাপানে স্কলারশিপ উপায়
২.আমেরিকা অবস্থান ও সীমানা|আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত
আমেরিকার পশ্চিমে রয়েছে প্রশান্ত মহাসাগর,পূর্ব সীমানায় রয়েছে আটলান্টিক মহাসাগর,উত্তর সীমান্তে রয়েছে কানাডা ও দক্ষিনাঞ্লে আছে মেক্সিকো।আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চল প্রায় পাহাড়ী এছাড়াও মধ্যাঞ্চল মোটামুটি সমতল ভূমিতে আবৃত। এ দেশটির সর্বোচ্চ উচু স্থান হলো ম্যাকিনলে পর্বতের চূড়া যার উচ্চতা প্রায় আনুমানিক ৬ হাজার ১শ ৯৮ মিটার এবং এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮৬ মিটার গভীরে।
আমেরিকা ভৌগলিকভাবে খুব বৈচিত্রময় একটি দেশ। দেশটিতে পাহাড়-পর্বত থেকে শুরু করে বন-জঙ্গল, নদ-নদী, মরুভূমি সব কিছুই বিদ্যমান। এছাড়াও এখানে ভূমির মতো নানান প্রজাতির প্রাণী ও দেখা যায়। এখানে সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় কালো রঙের ভাল্লুক, হরিন সদৃশ গৃজলি এবং মেরু অঞ্চলের দিকে রয়েছে শ্বেত রঙের ভাল্লুক। দেশটির জাতীয় পাখি ও তাদের প্রতীক ঈগল।
আরও পড়ুনঃ
নারীদের সামনে কাজ
৩. আমেরিকা যার জন্য বিখ্যাত|আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত
আমেরিকা কে আক্ষরিক অর্থে বলা যায় এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত স্থানসমূহের মধ্যে একটি।নিঃসন্দেহে এর জনপ্রিয়তা সম্পর্কে সবাই জানে ।আর এই জনপ্রিয়তার ও বিখ্যাত হওয়ার পিছনে কিছু ইতিহাস ঐতিহ্য রয়েছে।এর মধ্যে রয়েছে -স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, মাউন্ট রাশমোর,গোল্ডেন গেট ব্রিজ, এবং গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মতো বিখ্যাত সব স্থাপনার তালিকা।এছাড়াও আমেরিকা জনপ্রিয়তার পিছনে রয়েছে আরো অনেক কারণ নিম্নে টা আলোচনা করা হলো-
- প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন : আমেরিকানদের নিজস্ব উদ্ভাবন ও তাদের প্রযুক্তিগত বিকাশের অন্যতম একটি স্বতন্ত্র পদ্ধতি রয়েছে যা অন্য জাতিদের তুলনায় অনেক বেশি । আমেরিকান প্রতিটি উদ্যোক্তার নিজস্ব চিন্তা চেতনা যা বিশ্বের বাকি অংশের থেকে অনেক গুণ বেশি। প্রতিটি বৃহত্তম আবিষ্কার বা উদ্ভাবনের আবাসস্থল হিসেবে সুপরিচিত দেশটি। এর মধ্যে নানান রকমের উদাহরণ রয়েছে যেমন আইবিএম ব্যক্তিগত কম্পিউটারগুলিকে বাস্তবে রূপান্তর করেছিল। এছাড়া ও গুগল মানুষের আঙ্গুলের টিপসগুলিতে সমস্ত তথ্য নিয়ে আসে। বহুল আলোচিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক মানুষকে একে অপরের খুব কাছে নিয়ে আসে। এছাড়াও আরেকটি বিষয় হলো সিলিকন ভ্যালি যা আমেরিকার বিখ্যাত। দেশটি প্রায় বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের কেন্দ্র হিসেবে বহুল পরিচিত।
- ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব: ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের জন্য আমেরিকা বিশ্বব্যাপী অনেক বেশি সুপরিচিত ও বিখ্যাত । আমেরিকার এই রকম বহু সংখ্যক বিশ্বের ইতিহাসখ্যাত ব্যক্তিত্ব রয়েছে তাদের মধ্যে -আব্রাহাম লিংকন, ডাঃ মার্টিন লুথার কিং, রোজা পার্কস,জন এফ কেনেডি, এবং হ্যারিয়েট টুবম্যানকে অন্যতম।এরা সবাই দেশটির বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, এবং তারা আমেরিকানদের উন্নত করার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিল।
- বেসবল: আমেরিকায় বেসবল হচ্ছে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি খেলা। আর এই খেলাটি বিশ্বব্যাপী আমেরিকার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করে থাকে। তাদের এই বেসবল এর বিশাল ফ্যান ফলোয়িং রয়েছে।অন্যান্য অনেক দেশে।
- গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন: আমেরিকার বিখ্যাত স্থান সমূহের মধ্যে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন অন্যতম।এটি একটি মহৎ স্থান যা সত্যিই প্রত্যাশার বাইরে মনে হবে নিজের চোখে প্রত্যক্ষ করার পর। দেশটির এই বিখ্যাত স্থাপনা টি সবাইকে বিস্মিত করার জন্য প্রকৃতি দ্বারা নির্মাণ করা একটি অন্যতম মাস্টারপিস। গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন অ্যারিজোনায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক আশ্চর্য যাতে প্রত্যেক বছরই প্রচুর পর্যটক আসে। এছাড়াও গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ন্যাশনাল পার্ক গুলো সারা বছরই খোলা থাকে।
- দ্য স্ট্যাচু অফ লিবার্টি : আমেরিকার নিউইয়র্কে লিবার্টি দ্বীপে খুব জাঁকজমক ভাবে দাঁড়িয়ে আছে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি। এই স্ট্যাচু টি মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতাকে স্মরণ করে থাকে। আর এই স্ট্যাচু টি তৈরি করা হয় তামা দিয়ে এবং এটি মূলত আমেরিকার কাছে উপস্থাপন করেছিল ফ্রান্সের লোকেরা।
- এছাড়াও যে বিষয় গুলো আমেরিকা কে এত বেশি সুপরিচিত ও বিখ্যাত করেছে তার মধ্যে আছে তাদের নিজস্ব খাদ্য, সঙ্গীত, খেলাধুলা,সংস্কৃতি, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব।
আরও পড়ুনঃ
হানিফ ঢাকা ঢাকা টু কক্সবাজার ভাড়া
৪. আমেরিকার ইতিহাস|আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত
দীর্ঘ বছর যাবৎ আমেরিকার বিস্তৃির্ন সমভূমি জুড়ে রয়েছে স্থানীয় মানুষেদের বসবাস। ধারণা করা হয় আনুমানিক প্রায় ১২,০০০ বছর পূর্বে সাইবেরিয়া থেকে লোকজনের আবির্ভাব ঘটে এখানে।বেশ কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে ১২ হাজার বছর পূর্বেও এখানে মানুষের বসবাস ছিল।সময়ের পরিক্রমায় আমেরিকার যে আদিবাসী সংস্কৃতি ছিলো টা ধীরে ধীরে বেশ জটিল হয়ে পড়ে এবং বেশ কিছু আদিবাসী যারা মিসিসিপির সংস্কৃতি হিসাবে তাদের স্থাপত্য ,কৃষি, ও রাজ্য-সদৃশ সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলে।
আমেরিকান আদিবাসী সাথে সর্বপ্রথম ইউরোপীয়দের পরিচয় হয়েছিল যখন বিখ্যাত ইউরোপীয় পর্যটক ক্রিস্টোফার কলম্বাস ১৪৯২ সালের ১৯ নভেম্বর 'পুয়ের্তো রিকো' নামে আমেরিকার অঞ্চলের আসে। এখানে স্পেনই ছিলো প্রথম ইউরোপীয় শক্তি যারা কিনা আমেরিকাতে তাদের ঘাঁটি এবং উপনিবেশ স্থাপন করে।পরবর্তীতে দেশটিতে আসতে থাকে পর্তুগীজ ওলন্দাজরা।এদের মধ্যে দেখা যায় পর্তুগীজরা বেশ প্রভাব ফেলে আমেরিকাতে।তাদেরই ধারাবাহিকতায় ১৪৯৭ সালের দিকে আমেরিকাতে আসে ব্রিটিশরা।ব্রিটিশরা প্রথমদিকে তেমন সফল না হলেও পরবর্তীতে তারা ক্যারিবিয়ান উত্তর আমেরিকার পূর্বাংশ, এবং দক্ষিণ আমেরিকার বেশ প্রভাব বিস্তার করে।
আর এসব প্রভাব বিস্তারকারী ইউরোপীয় শক্তিসমূহের বিরুদ্ধে আমেরিকান বিপ্লবী যুদ্ধ (American Revolutionary War) ছিল আমেরিকার প্রথম সফল স্বাধীনতার পক্ষে উপনিবেশিক যুদ্ধ। পরিবর্তিতে ব্রিটিশদের একচেটিয়া ব্যবসা বাণিজ্য, স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা, নিজস্ব অধিকার সম্বন্ধে সচেতনতা এবং জাতীয়তাবোধ এসব এর কারনে তারা ব্রিটিশদের প্রাধান্য কে অস্বীকার করতে অনুপ্রাণিত হয়।পড়ে ১৭৭৬ সালের দিকে জর্জ ওয়াশিংটন ব্রিটিশদের থেকে বোস্টনের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণা করে থাকে ৪ জুলাই তে।
আরও পড়ুনঃ
রাঙ্গামাটি ভ্রমণ গাইড ও রিভিউ
৭. অনুচ্ছেদ সম্পর্কিত প্রশ্ন - উত্তর
প্রশ্ন ১: আমেরিকা স্বাধীনতা দিবস কয় তারিখে?
উত্তর: ৪ জুলাই।
প্রশ্ন ২: আমেরিকার বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নাম কি ?
উত্তর: জো বাইডেন।
প্রশ্ন ৩: বর্তমান বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি ধর দেশ কোনটি ?
উত্তর: আমেরিকা।
প্রশ্ন ৪: আমেরিকা দেশ আবিষ্কার করে কে?
উত্তর: ক্রিস্টোফার কলম্বাস।
আরও পড়ুনঃ
ফ্রিল্যান্সিং শিখব?
৮. লেখক মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা আপনাদের সাথে আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত এ সম্পর্কে বা যেকোনো বিষয়ে আপনাদের কোনো অভিযোগ বা মতামত নিচের কমেন্ট বক্সে লিখে জানাবেন। ঢাকা বিশববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠন The DU Speech এর সাথেই থাকবেন।আমেরিকা কিসের জন্য বিখ্যাত এ সম্পর্কে হোক বা যেকোনো বিষয়ে আমরা আপনাদের মতামতকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবো।
The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url