OrdinaryITPostAd

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত


প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকা নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে বিরত থাকে। কিন্তু এমন পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছিল যে ,সেই নিরপেক্ষতার নীতি কে অগ্রাহ্য করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ! তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ সম্পর্কে অনেকেই জানতে আগ্রহী। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে ঘরে বসেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ সম্পর্কে খুব সহজেই  সকল তথ্য জানা সম্ভব। ঢাকা বিশববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠনের আজকের আর্টিকেল আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ  সম্পর্কে । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের আর্টিকেলটি স্কিপ না করে সম্পূর্ণ পড়ুন।


আর্টিকেল সূচিপত্র ( যেঅংশ পড়তে চান তার ওপর ক্লিক করুন)

  1. বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে ধারণা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ
  2. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ  
  3. বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার পক্ষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ 
  4. আমেরিকা সরাসরি যোগদানের কারণসমূহ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ 
  5. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ
  6. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলাফল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ
  7. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন- উত্তর 
  8. লেখকের মন্তব্য

 ১. বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে ধারণা| দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ 

বিশ শতকের  দ্বিতীয় দশকে পৃথিবীর ইতিহাসে মানুষ বিশ্বযুদ্ধের সাক্ষী হয়েছিল প্রথম বারের মতো। বিশ্বযুদ্ধকে ওয়ার্ল্ড ওয়ার ( world war) ও বলা হয় । ওয়ার্ল্ড ওয়ার একারণেই বলা হয় - যেখানে বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে অংশগ্রহন করে থাকে । মানবসভ্যতার ইতিহাসে ভয়ানক এই যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ হতাহত ও প্রাণহানির সম্মুখীন হয়। সাধারণ মানুষের জীবযাত্রা হুমকির মুখে পড়ে। পুরো বিশ্বে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিশৃংখলা সৃষ্টি হয় ।পৃথিবীতে  এ পর্যন্ত দুইটি বিশ্বযুদ্ধ সংগঠিত হয়।
  1. (১৯১৪-১৮) সালের মধ্যে বিশ্ববাসী প্রথমবারের মতো বিশ্বযুদ্ধের সাক্ষী হয়। যা ইতিহাসে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ নামে পরিচিত ( ওয়ার্ল্ড ওয়ার ওয়ান )
  2. প্রায় বিশ বছরের ব্যবধানে বিশ্বে আরও একটি যুদ্ধ সংগঠিত হয় ১৯৩৯-৪৫ সালের মধ্যে যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নামে অভিহিত। এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৬১ টির মত দেশ অংশগ্রহন করে যা দীর্ঘ ছয় বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের চেয়ে সব দিক থেকেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অনেক বেশি ভয়াবহ ও বিপর্যয় ঘটে। এই যুদ্ধে উন্নত পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করে যার দরুণ প্রাণহানি ও হতাহতের সংখ্যা অনেক গুণ বেশি হয়।   আমেরিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে  প্রথম পরোক্ষ ভূমিকা পালন করলে পরে সরাসরি যোগদান করে ।

২. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমি| দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ 

মানবসভ্যতার ইতিহাসে  বিশ্বে সবচেয়ে  ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘাত হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের  পর প্রায় দুই দশকের ব্যবধানে পুনরায়  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংগঠিত হয় , যা পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিভীষিকাময় অধ্যয়। প্যারিস শান্তি সম্মেলন এর ব্যর্থতা এবং জার্মানদের জন্য অপমানজনক ও অন্যায় ভার্সাই চুক্তির শর্ত বিশ্বে আরো একটি যুদ্ধের পরিবেশ তৈরি হয়
। ১৯৩৯ সালে ১ সেপ্টেম্বর জার্মান পোল্যান্ড আক্রমণ করে ফলে ব্রিটেন ও ফ্রান্স পোল্যান্ডের পক্ষ নিয়ে তার দুই দিনের মধ্যেই জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে । এর মধ্য দিয়েই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রণাঙ্গন শুরু হয়ে যায় ।একের পর এক দেশ আক্রমণের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে যুদ্ধ । 
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কে গ্লোবাল ওয়ার হিসেবেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে। কারণ একমাত্র এই যুদ্ধেই পৃথিবীর প্রায় অধিকাংশ দেশ অংশগ্রহণ করে এবং দেশের সাধারণ নাগরিকগণ ও যোগদান করে। এছাড়াও পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করে ভয়াবহতার চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায় । ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়া মহাদেশ পর্যন্ত বিশ্বযুদ্ধ বিস্তৃত হয়ে থাকে । এতে প্রায় ৩০ টি দেশের দশ কোটি সামরিক সদস্য অংশগ্রহণ করে । 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মূলত দুইটি বড় পরাশক্তি ছিলো - নাৎসী জার্মান,ইতালি ও জাপান অন্যদিকে ইংল্যান্ড , ফ্রান্স ,সোভিয়েত রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র । তবে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের প্রথম দিকে সরাসরি যোগদান না করলেও পরবর্তীতে সরাসরি অংশ নেয় যুদ্ধে।

১৯৪৫ সালে জার্মান ও জাপান দুই দেশের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়েই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে।

৩. বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার পক্ষ| দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের পশ্চাতে রয়েছে জাপান কর্তৃক পার্ল হারবার আক্রমন। বৃহৎ শক্তি আমেরিকা মিত্র শক্তির হয়ে যুদ্ধে অংশ নেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যে দুইটি শক্তিজোট যুক্ত ছিলো - অক্ষ শক্তি ও মিত্রশক্তি ।
  1.  অক্ষশক্তি - তে জার্মান,ইতালি,জাপান,তুরস্ক , হাঙ্গেরী, রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া দেশসমূহ যুক্ত ছিল। অক্ষশক্তির নেতৃবৃন্দের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো- জার্মানির চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপ্রতি অ্যাডলফ হিটলার , জাপানের প্রধামন্ত্রী হিদেকি তোজো ও সম্রাট হিরোহিতো , ইতালির প্রধানমন্ত্রী বেনিতো মুসোলিনি।
  2. মিত্রশক্তি - তে ব্রিটেন, ফ্রান্স,ব্রাজিল,কানাডা,চীন , ডেনমার্ক , গ্রিস ও নেদারল্যান্ড ইত্যাদি দেশ যুক্ত ছিল।মিত্র শক্তিতে পরবর্তীতে মহাশক্তিধর রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র যোগ দেয়।মিত্রশক্তির নেতৃত্বে ছিল - ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল , ফ্রান্সের পল রেনো, রুশ প্রেসিডেন্ট জোসেফ স্ট্যালিন,মার্কিন রাষ্ট্রপ্রতি রুজভেল্ট ও ট্রুম্যান এবং অন্যান্যরা।

৪. আমেরিকা সরাসরি  যোগদানের কারণসমূহ| দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ 

প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের পর থেকে আমেরিকা নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে থাকে তবে ইউরোপে ফ্যাসিবাদ ও নাৎসিবাদের উত্থান ও জাপানের আগ্রাসন নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কে সরাসরি যুদ্ধে যোগদানের ইন্দন যোগায়। এছাড়াও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের পশ্চাতে রয়েছে জাপান কর্তৃক পার্ল হারবার আক্রমন।প্রশান্ত মহাসাগরে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে জাপান আমেরিকার নৌঘাঁটি পার্ল হারবারে আক্রমণ করে । 
এ পর্যায়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের  কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে
  • পার্ল হারবার আক্রমণ - দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের একমাত্র প্রত্যক্ষ কারণ জাপান কর্তৃক আমেরিকার নৌঘাঁটি পার্ল হারবার এ আক্রমণ। ঘটনার প্রথম পর্যায়ে দেখা যায় ইন্দোচীনে জাপানের সেনা মোতায়ন প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিলে জাপান তা অস্বীকার করে । পরবর্তীতে দুই পক্ষের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনার উদ্দেশে ওয়াশিংটনে মিলিত হয় । কিন্তু এর মধ্যেই জাপান অঘোষিত আক্রমণ করে বসে । উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের হাওয়াই দ্বীপে আমেরিকার নৌঘাঁটি পার্ল হারবারে ১৯৪১ সালে ৭ ডিসেম্বর সকাল আনুমানিক সাতটার দিকে জাপান আক্রমণ করে। এতে জাপান ৭২ টি যুদ্ধজাহাজ ও প্রায় ৪৪৪-৪৫ টি যুদ্ধবিমান নিয়ে জাপান নৌ ও বিমানবহর নিয়ে পার্ল হারবারে বোমা নিক্ষেপ করে । এতে প্রায় দুই হাজার এর বেশি মার্কিন সৈন্য ও অন্যান্য মানুষ প্রাণ হারায়।হিটলারের পোল্যান্ড আক্রমণের  মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলেও জাপান কর্তৃক পার্ল হারবার আক্রমণ এর মধ্যে দিয়ে যুদ্ধে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয় ।  এরপর থেকেই আমেরিকা নিরপেক্ষতার নীতি ভেঙে জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।এবং সরাসরি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে।
  • ক্যাশ এন্ড ক্যারি নীতি - দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্র পক্ষের প্রতি আমেরিকার সমর্থন থাকলেও দেখা যায় যুদ্ধ শুর থেকে প্রায় দুই বছর অর্থাৎ ১৯৩৯-৪১ সাল পর্যন্ত নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে । গণতান্ত্রিক আদর্শের দেশগুলোকে সাহায্য করার জন্য আমেরিকা অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র সহ পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করতো । এই বিনিময় ব্যবস্থাকেই ক্যাশ‌ অ্যান্ড ক্যারি নীতি বলে । এই ভাবেই আমেরিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ না করে ও পরোক্ষ ভাবে ভূমিকা পালন করে ।হিটলারের আগ্রাসী মনোভাব এর ভীতির কারনেই মিত্রশক্তি ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি নীতি গ্রহণ করে থাকে।ফলশ্রুতিতে অক্ষশক্তি জার্মান ইতালি আমেরিকার এই কেশ অ্যান্ড ক্যারি নীতি অর্থাৎ মিত্রশক্তি কে পরোক্ষভাবে অস্ত্র দিয়ে সাপোর্ট করাতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ।
  • আটলান্টিক সনদ - আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট ও ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষে তারা উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে অগাস্টা ( মার্কিন যুদ্ধ জাহাজ ) প্রিন্স অব ওয়েলস ( ব্রিটিশ যুদ্ধ জাহাজ) এ নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক আলোচনা করেন । একপর্যায়ে তারা উভয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়ে একটি সনদে স্বাক্ষর করে যা আটলান্টিক সনদ ( Atlantic Charter) নামে পরিচিত। এই সনদ অনুযায়ী বিশ্বে শান্তি রক্ষার মর্যাদায় আমেরিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগদান করে ।
  • গণতান্ত্রিক আদর্শকে রক্ষা - আমেরিকাকে গণতন্ত্রের আঁতুড়ঘর বলা হয়ে থাকে । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দুই পক্ষের ( অক্ষশক্তি ও মিত্রশক্তি ) মধ্যে দুই ধরনের আদর্শিক মতবাদ বিদ্যমান ছিল । মিত্রশক্তি ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স ছিলো গণতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাসী অন্যদিকে অক্ষশক্তি জার্মানে নাৎসীবাদ ও ইতালিতে ফ্যাসিবাদের মত স্বৈরতন্ত্রের উত্থান হয় । সুতরাং অক্ষশক্তির এই চরম স্বৈরতান্ত্রিক উত্তেজনার কাছে যাতে আমেরিকার গণতান্ত্রিক আদর্শ হেরে না যায় এরূপ সংকোচ বা ভীতির কারণে আমেরিকা একপর্যায়ে সরাসরি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়ায়।এমন পরিস্থিতিতে যাতে ভয়ংকর ফ্যাসিবাদ ও নাৎসীবাদ  যাতে পুরো পৃথিবীকে গ্রাস করতে না পারে সেই ধারণা থেকেই অবশেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগদান করে
  • এশিয়ায় জাপানের আধিপত্য বিস্তার/ সাম্রাজ্যবাদ - যদিও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ মূলত ইউরোপের মধ্যেই বিস্তৃত ছিলো কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তিতে যোগ দেওয়া এশিয়ার জাপান ছিলো অনেক শক্তিশালী দেশ । এশিয়ায় জাপান সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হিসেবে পরিগণিত ছিলো এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তারা একের পর এক আধিপত্য বিস্তার/ সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসন চালাতো। জাপানের এই চরম সাম্রাজ্যবাদ শক্তি বৃদ্ধি যা আমেরিকার জন্য হুমকস্বরূপ।কিংবা তাদের আধিপত্য বিস্তারে বাধা হতে পারে এই ভীতি থেকে আমেরিকা নিরপেক্ষতার নীতি উপেক্ষা করে যুদ্ধে অংশ নেয়।
  • লেন্ড লিজ আইন - ১৯৪১ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট একটি আইন পেশ করে । আইনের মূল লক্ষ্য ছিল মিত্রশক্তির সকল দেশকে সব ধরনের সামরিক অস্ত্র দিয়ে সাহায্য  করবে ।   এই লক্ষ্য কে সামনে রেখে দেখা যায় যুদ্ধে হিটলারের বিরোধী সকল গণতান্ত্রিক দেশকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্যের মাধ্যমে আমেরিকা গণতান্ত্রিক অস্ত্রাগারে পরিণত  হয়।  অক্ষশক্তির কাছে আমেরিকার এই লেন্ড  লিজ আইন যা মোটেও ভালো  ঠেকেনি । এরূপ পরিস্থিতিতে সম্পর্কের তিক্ততা আরো চরম পর্যায়ে চলে যায় ফলস্বরূপ আমেরিকা যুদ্ধে অংশ নেয়।
  • অক্ষশক্তির আশঙ্কা /ভীতি - দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তি গুলো পরস্পর জোট তৈরি করে - বার্লিন রোম ও টোকিও জোট। অর্থাৎ জার্মান ইতালি ও জাপান এসব স্বৈরতান্ত্রিক / একনায়তান্ত্রিক শক্তি গুলো একের পর এক দেশে আক্রমণ চালাচ্ছে তাদের ক্ষমতার আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে । জার্মান কর্তৃক চেকোস্লোভাকিয়া, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ ও পোল্যান্ড , ইতালি কর্তৃক আবিসিনিয়া, আলবেনিয়া, ইরিথ্রিয়াও জাপান কর্তৃক মাঞ্চুরিয়ায়া, নানকিং, ইন্দোচীন আক্রমণ যুদ্ধক্ষেত্রে রীতিমত চরম উত্তেজনা সৃষ্টি করে । পরবর্তীতে এসব স্বৈরাচারী শক্তি সাম্রাজ্যবাদে আরো আগ্রাসী হয়ে উঠে । অক্ষশক্তির এই আগ্রাসী মনোভাবে ভীতি সঞ্চারিত হয় , আমেরিকা ভাবে যুদ্ধে অক্ষশক্তি জয়লাভ করলে তাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে । এই চিন্তা থেকেই আমেরিকা মিত্র শক্তির পক্ষে প্রত্যক্ষভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্ত হয় ।

৫. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ 

বিশ্ব যুদ্ধ কোনো একক কারনে হয় না এর পেছনে নানাবিধ কারণ থাকে তেমনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পিছনে ও  প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারণ বিদ্যমান - 

প্রত্যক্ষ কারণ -

  • পোল্যান্ড আক্রমণ - প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের পর অক্ষশক্তি তথা জার্মান , জাপান ও ইতালি জোটবদ্ধ হয়। একপর্যায়ে হিটলার পোলিশ করিডর দখল করে চায়। এমন পরিস্থিতিতে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স কোনো মতেই হিটলারের দাবি রাজি নয়। তারা দরকার হলে পোল্যান্ডের হয়ে যুদ্ধ করবে। ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের এসব জবাব উপেক্ষা করে ১৯৩৯ সালে ১ সেপ্টেম্বর জার্মান পোল্যান্ডে আক্রমণ শুরু করে দেয় । যার পরিপ্রেক্ষিতে মাত্র দুই দিনের মধ্যেই ৩ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স পোল্যান্ডের হয়ে জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে । এইভাবেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নামক বিপর্যয় শুরু হয়ে যায় বিশ্বে যা চলতে থাকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ছয় বছর।
পরোক্ষ কারণসমূহ-
  • ভার্সাই চুক্তির ত্রুটি (২৮ শে জুন , ১৯১৯)- মূলত ভার্সাই চুক্তি হলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর আত্মসমর্পণ পত্র । আর এই চুক্তিতে যুদ্ধে জয়ী মিত্রশক্তির পক্ষ থেকে সাক্ষরিত নীতি অনুযায়ী জার্মানিকে লাগামহীন মূল্য পরিশোধ করতে হয়। এই চুক্তির ৪৪০ টি শর্তের প্রায় বেশির ভাগ শর্ত জার্মান দের জন্য অন্যায় এবং অপমানজনক ছিলো । মিত্রশক্তি জার্মান কে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের যুদ্ধপরাধী হিসেবে ঘোষণা করে বিদ্ধস্ত জার্মান কে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৬৬০ কোটি পাউন্ড দাবি করে । এছাড়া দেখা যায় , ফ্রান্স এবং বেলজিয়াম এর কাছে জার্মান রাজ্যের পশ্চিম অঞ্চল গুলোর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা চলে যায় অন্যদিকে পূর্ব অঞ্চলে একটি নতুন রাষ্ট্র পোল্যান্ড তৈরি করে । যার ফলে এ অঞ্চল সমূহের স্থানীয় জার্মানদের কে বিভিন্নভাবে হেয়পন্য করতে থাকতে । এবং পাশাপাশি জার্মানদের সামরিক , নৌ,শিল্প বাণিজ্য শক্তিকে সংকুচিত করে মিত্রশক্তি নিজেদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে থাকে । এমনকি জার্মানে ট্যাংক- কামান ও বিমানবাহিনী না রাখার বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছিল ।ফলে জার্মানবাসীদের প্রতিশোধ স্পৃহাকে জাগ্রত হয় । যার দরুণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পরে
  • বিশ্ব অর্থনীতিতে মহামন্দা-দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে ১৯২৯ সালের শেষের দিকে বিশ্ব অর্থনীতিতে চরম অর্থ সংকট দেখা দেয় । এমন পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক গবেষকরা এরূপ অর্থনৈতিক ছন্দ পতন যে ইতিহাসে মহামন্দা বা গ্রেট ডিপ্রেসন বলে অভিহিত করেছেন ।প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে বিশ্বে চরম অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয় । এতে অনেক দেশেই চরম মুদ্রা স্পৃথি দেখা দেয় বিশেষ করে জার্মানিতে। এছাড়াও আমেরিকাতে বড় বড় শেয়ার বাজার গুলোতে ধস নামে ফলে পুরো বিশ্বের অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে পড়ে। বিশ্ববাণিজ্য ও শিল্পায়ন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। বেশ কিছু দেশ এই পরিস্থিতি থেকে দেশবাসী কে বেরিয়ে আনার লক্ষ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহন করে।
  • লীগ অফ ন্যাশন এর ব্যর্থতা-পৃথিবীর ইতিহাসে লীগ অফ ন্যাশন এই প্রথম আন্ত্জাতিক সংস্থা যা বর্তমানে জাতিসংঘ নামে পরিচিত।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম আরেকটি কারণের মধ্যে রয়েছে লীগ অফ ন্যাশন এর ব্যর্থতা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে বৈশ্বিক সমস্যা সমাধান ও শান্তি রক্ষার জন্যই মূলত লীগ অফ ন্যাশন গঠন করা হয়েছিলো। কিন্তু লীগ অফ ন্যাশন ব্যর্থ হয়েছিল যার পশ্চাতে কারণ সমূহের মধ্যে রয়েছে বৃহৎ শক্তিবর্গের অংশগ্রহণ না করা (আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র) নিরস্ত্রকরনে ব্যর্থতা , সামরিক বাহিনীর অভাব ও সাংগঠনিক ত্রুটি। এছাড়াও সদস্য রাষ্ট্রের ভেটো প্রয়োগ পদ্ধতির ত্রুটি। জাপান , জার্মান প্রথমে লীগ অফ ন্যাশন এ যুক্ত থাকলেও পরবর্তীতে তারা বেরিয়ে যায় । কারণ হলো লীগ অফ ন্যাশন এ এমন কোনো বিধিনিষেধ ছিলো না যে কোনো দেশ যদি তাদের সংরক্ষিত নীতি ভেঙে ফেলে তাহলে তাদের শাস্তি পেতে হবে । এক পর্যায়ে লীগ অফ ন্যাশন আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে ও শান্তি রক্ষার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় ফলশ্রুতিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পরে।রাষ্ট্রগুলো সামগ্রিক চিন্তা না করে নিজস্ব স্বার্থ রক্ষার নীতি গ্রহণ করে ফলে লীগ অফ নেশনস পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়ে।
  • হিটলারের নাৎসি বাহিনী- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে হিটলারের যুদ্ধ ও বলা হয় । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানির ওপর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা ও অবরোধ জার্মানবাসীদেরকে কোণঠাসা করে রাখে। পাশাপাশি পুঁজিবাদী ইহুদীদের অত্যাচার ও ক্ষুব্ধ করে তোলে । এমন পরিস্থিতিতে জার্মানরা প্রতিশোধের নেশায় মত্ত হয়ে উঠে । ফলে এসব অত্যাচার ও অনাচার কে জব্ধ করতে উগ্র জার্মান জাতীয়তাবাদ আদর্শে গড়ে তোলে নাৎসি বাহিনী। নাৎসি বাহিনীর প্রধান হয়ে হিটলার ক্ষমতায় আসে এবং একপর্যায়ে পুরো জার্মানদের উপর তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে । একে একে ভার্সাই সন্ধির সকল শর্ত ভেঙে ফেলে ও ইহুদীদের সম্পদ বায়েজাপ্রাপ্ত করে । এছাড়া নাৎসি বাহিনী তাদের সামরিক বাহিনী অনেক বেশি শক্তিশালী করে তোলে যা এক পর্যায়ে যুদ্ধ ঘোষণা করার মত অবস্থা সৃষ্টি করে
  • সমাজতন্ত্র বিরোধী আদর্শ / মতবাদ
  • সাম্রাজ্যবাদ
  • বর্ণবাদ
  • ফ্রান্সের নিরাপত্তা নীতি
  • জার্মানীর প্রতিক্রিয়া
  • প্যারিস শান্তি সম্মেলন
  • ফ্যাসিবাদের উত্থান
  • স্পেনের গৃহযুদ্ধ
  • মিউনিখ চুক্তি 
  • মিত্র বাহিনীর সঙ্গে পোল্যান্ড এর সখ্যতা
  • বিশ্ব মহামন্দা

৬. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলাফল|দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন বৃহৎ পরাশক্তি হিসেবে নিজেদেরকে আত্মপ্রকাশ করে । অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ তথা ইংল্যান্ড ফ্রান্স ও ইতালি বিশ্ব রাজনীতিতে তুলনামূলক নিচের সারিতে অবস্থান করে । এছড়াও নিচে আরো কিছু ফলাফল উল্লেখ্য  করা হয়েছে -
  • আমেরিকার আধিপত্য - দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ ধ্বংসের সাক্ষী হয়েছে বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশ । অংশগ্রহণকারী অধিকাংশ দেশই যুদ্ধের পর অর্থনৈতিক ও সামরিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল । যুদ্ধের কবল থেকে বেরিয়ে আসতে অনেক সংকট পোহাতে হয় । সেক্ষেত্রে দেখা যায় একমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়। যা পরবর্তীতে খুব কম সময়ের মধ্যেই অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয় । এবং বিশ্বে একমাত্র শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে আর্বিভাব হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের।
  • মানবিক বিপর্যয় - মানবসভ্যতার ইতিহাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এক রক্তক্ষয়ী আতংকের নাম । এই বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ অনাহারে , অপুষ্টিতে,নানারকম রোগ ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে জীবন অতিবাহিত করতে হয়েছে। এই যুদ্ধে প্রায় ৬০-৭০ কোটি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। সমগ্র ইউরোপ ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়। এছাড়াও প্রায় আট কোটি মানুষ প্রাণ হারায়। পুরো বিশ্বে অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।
  • জার্মানীর পতন - দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর প্রথম পর্যায়ে অক্ষশক্তি জার্মান , জাপান একের পর এক সাম্রাজ্য বিস্তার করতে থাকে । বলা হয় প্রথম দিকে অক্ষশক্তির জয়জয় কার চলতে থাকে । জাপান যুক্তরাষ্ট্রের পার্ল হারবারে আক্রমণ করার পরই আমেরিকা সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহন করে। এরপরই মিত্রশক্তির ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় । তারা একেরপর এক পর আক্রমণ করে যা একপর্যায়ে জার্মানি ও ইতালির পরাজয় ঘটে । ১৯৪৫ সালে জার্মান ও ইতালি মিত্রশক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করে।
  • সমাজতন্ত্র ও পুঁজিবাদের উত্থান - দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পুরো বিশ্ব দুইটি মতবাদের ভিত্তিতে দুই ভাগ হয়ে যায় - সমাজতন্ত্র ও পুঁজিবাদ । একপক্ষ সমাজতন্ত্রের বলয়ে ও অন্যপক্ষ পুঁজিবাদের বলয়ে বিকশিত হয়। ইউরোপ পশ্চিম ও পূর্ব ইউরোপে বিভক্ত হয়ে যায় । এইভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এর পর পুরো পৃথিবী পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্র দুই আদর্শের বিকশিত হয় ।
  • জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা - ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট ১৯৪১ সালে আটলান্টিক মহাসাগরে "অগাষ্টা যুদ্ধ জাহাজ " আটলান্টিক সনদপত্র স্বাক্ষর করে।১৯৪২ সালে ২৬ টি দেশের সম্মেলনে জাতিসংঘ কথাটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করা হয় । সর্বশেষ ১৯৪৫ সালে ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয় ।আটলান্টিক সনদে উল্লেখ করা হয় - সনদে যোগদানকারী সকল দেশ সমান মর্যাদা ও সার্বভৌমত্ত্বের অধিকারী হবে,সকল প্রকার বিবাদ শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিষ্পত্তি করা হবে এবং প্রতি দেশের জনগণ তাদের ইচ্ছামত শাসনতন্ত্র তৈরি করার অধিকার পাবে।
  • বিশ্বরাজনীতিতে ফ্রান্স ও ব্রিটেনের ভঙ্গুর অবস্থা - দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রান্স ও ব্রিটেন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ে। ব্রিটেন তার শক্তি ও সাম্রাজ্য দুটোই হারিয়ে বসে । স্বভবতই দীর্ঘ যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তাদের কৃষিজমি গুলো অনাবাদী হয়ে পড়ে । এছাড়া ব্রিটিশ পণ্যরপ্তানি বিশ্ববাজারে প্রায় বন্ধ হয়ে যায় বললেই চলে । যুদ্ধ পরবর্তীতে পুনর্বাসন নিয়েও নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয় । পাশাপাশি তাদের সামরিক শক্তি হ্রাস পায়। সব মিলিয়ে অক্ষশক্তি ব্রিটিশ বিশ্ব রাজনীতিতে পতনের দিকে ধাবিত হয় । অন্যদিকে ফ্রান্স এর অবস্থাও ব্রিটিশদের থেকে ভয়াবহ পর্যায়ে । তাদের শিল্প বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায় যার দরুণ ব্রিটেনের মত তাদের ক্ষমতা ও কমতে থাকে।
১৯৪৫ সালে ১৪ আগস্টে রক্তক্ষয়ী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ রণাঙ্গন লড়াই শেষ হলেও একেই বছরের সেপ্টেম্বরে সর্বশেষ জাপানের সৈন্য বাহিনী আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের মাধ্যমেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে।

৭. আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন - উত্তর

প্রশ্ন ১ : আমেরিকা প্রথম কখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সরাসরি  যোগদান করে ?
উত্তর:  জাপান কর্তৃক  পার্ল হারবারে।
প্রশ্ন ২ :  যুদ্ধ চলাকালীন আমেরিকা কোন পক্ষের সঙ্গে যুক্ত ছিল?
উত্তর: মিত্রপক্ষের সাথে।
প্রশ্ন ৩ : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একমাত্র কোন দেশে   সবচেয়ে কম ক্ষয়ক্ষতি হয়?
উত্তর: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ।
প্রশ্ন ৪ : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলো কে ?
উত্তর: ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট।
প্রশ্ন ৫ : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয় কখন?
উত্তর: ১৯৪৫ সালে জার্মান ও জাপান আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে ।
প্রশ্ন ৬ : আমেরিকা কত সালে সরাসরি যুদ্ধে জড়ায়?
উত্তর: ১৯৪১ সালে ৮ ডিসেম্বর।
প্রশ্ন ৭ :  বিশ্বে প্রথম কোন দেশ পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করে ?
উত্তর: আমেরিকা , জাপানের ওপর ।
প্রশ্ন ৮ : আমেরিকা জাপানে কয়টি বোমা নিক্ষেপ করে এবং নাম কি ছিলো ?
উত্তর: দুইটি , লিটল বয় ও ফ্যাট ম্যান ।
প্রশ্ন ৯ : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সর্বশেষ আত্মসমর্পণ করে কোন দেশ ? 
উত্তর: জাপানের সৈন্য  বাহিনী। 
প্রশ্ন ১০: ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি নীতি কি?
উত্তর: আমেরিকা কর্তৃক, অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির ব্যবস্থা কে ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি নীতি বলে।

৮. লেখকের মন্তব্য 

প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা আপনাদের সাথে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ সম্পর্কে বা যেকোনো বিষয়ে আপনাদের কোনো অভিযোগ বা মতামত নিচের কমেন্ট বক্সে লিখে জানাবেন। ঢাকা বিশববিদ্যালয় আর্টিকেল রাইটিং সংগঠন The DU Speech এর সাথেই থাকবেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদানের কারণ সম্পর্কে হোক বা যেকোনো বিষয়ে আমরা আপনাদের মতামতকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url