OrdinaryITPostAd

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল

 রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ,  গোটা বিশ্বকে বর্তমানে  নাকানি চুবানি খাওয়াচ্ছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ এ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেমন মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে ঠিক একই সাথে টালমাটাল অবস্থা তৈরি হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিচালিত অনলাইন পত্রিকায় আজকে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ জানানোর চেষ্টা করব পাশাপাশি কেন এই যুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে এবং যুদ্ধের ভবিষ্যৎ ও ফলাফল নিয়ে বড়সড় আলোচনা থাকবে। 


সংবাদ সূচীপত্র (যে অংশ পড়তে চান তার ওপর ক্লিক করুন)

  1. যুদ্ধের প্রেক্ষাপট 
  2. সাধারণত যুদ্ধ এর কারণ
  3. রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এর আসল কারণ সমূহ
  4. রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ইউরোপিয় ইউনিয়নের ভূমিকা
  5. রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা
  6. রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে মেরুকরণ 
  7. কোন পক্ষের লাভ বেশি।
  8. রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এর কারণএ গোটা বিশ্বে প্রভাব
  9. উপসংহার

১. যুদ্ধের প্রেক্ষাপট | রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল

আমরা সবাই জানি ১ম ও ২য় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা ঠিক কতটা ভয়ংকর ছিল। এই দুটি বিশ্বযুদ্ধ সম্পূর্ণ বিশ্বকে হুমকির মুখে ফেলেছিল না অজানা নয় কাররই। উক্ত যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্বের নেতৃত্বে চলে যায় বিশ্ব শাসনভার। এদিকে দুটি বিশ্বযুদ্ধেই রাশিয়া পশ্চিমাদের সহযোগী থাকলেও বিভিন্নভাবে তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব নায্য সম্মান ও অধিকার থেকে বঞ্চিত করে আসছে। তাছাড়া দুটি বিশ্বযুদ্ধে ক্ষতির সম্মুখীন ইউরোপ হলেও বিন্দুমাত্র আচড় পড়েনি যুক্তরাষ্ট্রের গায়ে।

ক. অশান্ত ইউরোপ | রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ এবং ফলাফল

বিভিন্ন ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে আপনি একটা বিষয় জেনে খুবই অবাক হবেন যে, বার বার যুদ্ধের দামামা বেজেছে ইউরোপে। শুধু রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ এ ইউরোপ অশান্ত হয়নি। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ ছাড়াও নানা সময়ে যুদ্ধ লেগেই থেকেছে এই ইউরোপে। এবং আশ্চর্যের বিষয় হল এটা যে যখনই ইউরোপ ক্ষমতা বা অর্থনৈতিকভাবে সুদৃঢ় হতে শুরু করর তখনই এই মহাদেশে যুদ্ধের দামামা বেজে জনজীবনে দুর্ভোগ নিয়ে ফিরে আসে। এসব উন্নত রাষ্ট্র গুলোকে এমন কিছুর সম্মুখিন হতে হয় যা সেসকল রাষ্ট্রের সাধারণ মানুষ কখনোই ভাবেনি।
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ বর্তমানে ইউরোপ জুড়ে অভাব অনটনের যে সমস্যা তৈরি হয়েছে এর পিছনে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ একমাত্র দায়ী।  ইউরোপিয়দের এমন মনভাবের কারণ এ বার বার তারা বিপদের সম্মুখীন হয়েছে।  একেবারে ধন-সসম্পদশালী থেকে দরিদ্র রাষ্ট্রর পরিণত হয়েছে ইউরোপ বার বার। 
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ নতুন করে শুরু করবে ইউরোপের সেই চিরপরিচিত যুদ্ধাংদেহী রুপ। এ ক্ষেত্রে শুধু ইউরোপ নয় ক্ষতির সম্মুখীন হবে গোটা বিশ্ব এমনকি গোটা বিশ্বে এমন একটি অবস্থা তৈরি হবে যেখানে মানুষের মৈলিক অধিকারসমূহই পূরণ করতে পারবে না প্রতিটি দেশের সরকারগণ।

খ.স্থিতিশীল যুক্তরাষ্ট্র | রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ এবং আপডেট

যতই অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হোক সম্পূর্ণ বিশ্বে,  যুক্তরাষ্ট্র থেকেছে ধরাছোয়ার বাইরে। বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এর কারণ গোটা বিশ্বকে ভোগালেও তেমন একটা সমস্যা হচ্ছে না এই স্থিতিশীল যুক্তরাষ্ট্রের। যদিও এই যুদ্ধের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কতটুকু আছে সেই নিয়ে বিশ্ব মহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এর কারণ কখনো কি যুক্তরাষ্ট্র হতে পারে এমন প্রশ্ন তো আপনার মনে আসতেই পারে।

কেননা রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এর আসল কারণ হলো ন্যাটো জোট। বর্তমানে ইউক্রেন সরকার, তারা পশ্চিবাদের সামরিক সংগঠন ন্যাটো তে যোগদান করতে চায়। যা পরিচালিত হয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে।
  এখন অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন এর সাথে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এর কারণ কিভাবে জড়িত? অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এর কারণ জড়িত।  গোটা বিশ্বের নামি দামি অস্ত্রের কারখানা কোথায়? আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় তাহলে আপনি হয়তো উত্তর দিবেন যুক্তরাষ্ট্র- এ,  কিন্তু পৃথিবী যদি স্থিতিশীল থাকে শান্তিময় থাকে তাহলে যারা অস্ত্রের কারখানা তৈরি করে বা অস্ত্রের কারখানা পরিচালনা করে তারা কিভাবে তাজের অস্ত্র বাণিজ্য পরিচালনা করবে? 
পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বর্তমানে কেন অশান্তি বা যুদ্ধ চলছে তার একটা বড় কারণ হলো অস্ত্র বাণিজ্য। সোশ্যাল মিডিয়া বা গুগলে এমন তথ্য তেমন একটা খুঁজে পাবেন না, কেননা অস্ত্র বাণিজ্য একটা হিডেন ট্রিকস এর মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে অনুন্নত যে সকল দেশ উন্নতির পর্যায়ে রয়েছে,এরকম দেশে এই অস্ত্রের কারখানা বা অস্ত্র ব্যবসায়ী দেশগুলো বিভিন্নভাবে যুদ্ধের জন্য অনুপ্রাণিত করে থাকে, একে অপরকে হুমকি বা যুদ্ধের হুমকি দেওয়ার ফলে উভয় পক্ষের কাছেই এই সকল অস্ত্র ব্যবসাহী দেশগুলো অস্ত্র বিক্রি করার মাধ্যমে মোটা টাকার অর্থ উপার্জন করে নেয়, আর অপরদিকে উক্ত দেশগুলোর মধ্যে অশান্তি, হাহাকার এবং ক্ষুধা লেগেই থাকে । 
অর্থাৎ, যে সকল দেশগুলো যুদ্ধ করে সে সকল দেশগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হয় এবং যারা তাদের উসকে দিচ্ছে লাভবান কিন্তু তারাই হচ্ছে। এখন রাশিয়া ইউক্রেন যুক্ত এর কারণ হিসেবে আপনি যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করবেন কিনা সেটা আপনার একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়।

২. সাধারণত যুদ্ধের কারণ| রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এর কারণ এবং ফলাফল

পৃথিবীর শুরু থেকে যুদ্ধ একটি সাধারন বিষয়। বিভিন্ন কারণে প্রাচীন পৃথিবীতে যেমন এক গোষ্ঠীর সাথে অন্য গোষ্ঠীর যুদ্ধ লেগেছে বর্তমানেও ঠিক একই রকম এক দেশের সাথে অন্য দেশের যুদ্ধ বিভিন্ন কারণ এ চলতে থাকে। প্রাচীনকালে যুদ্ধ এর কারণ একরকম ছিল কিন্তু বর্তমানে আধুনিক যুগে যুদ্ধের কারণ পাল্টেছে। পৃথিবী শুরুর দিকে বা প্রাচীন পৃথিবীতে এক সম্প্রদায়ের সাথে অন্য সম্প্রদায়ের যুদ্ধ লেগেছে খাবার এবং বাসস্থানের কারণে। বিভিন্ন অন্ত:দ্বন্দ্বের কথা এখানে ব্যতিক্রম বলে ই মনে করা হবে।
 প্রাচীনকালে যুদ্ধ এর কারণ হিসেবে পারিবারিক শত্রুতা অন্যতম একটি কারণ ছিল। কিন্তু বর্তমানে আধুনিক বিশ্বে যে সকল কারণে যুদ্ধ লাগে বা আমাদের মনে হয় যে কারণে যুদ্ধ লেগেছে তার পেছনে একটা বড় ধরনের সিন্ডিকেট সব সময় থাকে। যুদ্ধ এর সাথে অর্থনৈতিক প্রক্রিয়াটা খুবই আঙ্গাআঙ্গিভাবে জড়িত। প্রাচীনকাল, মধ্যযুগ এবং আধুনিক যুগে যুদ্ধের কারণ পাল্টেছে।
  • প্রাচীনকালের যুদ্ধের কারণ
  • মধ্যযুগের যুদ্ধ এর কারণ
  • আধুনিক যুগের যুদ্ধ এর কারণ

ক. প্রাচীনকালের যুদ্ধের কারণ | রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল

  • অঞ্চল দখলের জন্য লড়াই।
প্রাচীনকালের যুদ্ধের সাথে প্রাচীনকালে সংস্কৃতি খুবই গুরুত্বের সাথে আপনাকে বিবেচনা করতে হবে। প্রাচীনকালে সাধারণত মানুষ বিভিন্ন ফল মূল বা শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতো। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যেত একটি অঞ্চলে কয়েক মাস থাকলে বা একটি এলাকায় কয়েক মাস শিকার এবং খাদ্য সংগ্রহ করলে সে অঞ্চলের খাদ্যাভাব দেখা দিত। এবং খাদ্যাভাব দেখা দেওয়ার ফলে তারা উক্ত অঞ্চল পরিত্যাগ করে আরো ভালো বা খাবার সমৃদ্ধ অঞ্চলের দিকে যাত্রা শুরু করত। তখন মানুষ যাযাবর শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত ছিল । বর্তমান বিশ্বের মতো তারা স্থায়ী কোন একটি স্থানে কখনো বসবাস করত না।
এবং তখন পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা খুবই কম ছিল এটা হয়তো সবাই বুঝতেই পারছেন। যখন তারা একটি অঞ্চল হতে অন্য একটি অঞ্চলে প্রবেশ করতো তখন উক্ত অঞ্চল  যদি অন্য কোন সম্প্রদায়ের দখলে থাকে তাহলে যুদ্ধ বেধে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। প্রাচীনকাল এর যুদ্ধ এর কারণ হিসেবে এটা  গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়।
  • সুন্দরী নারীর জন্য যুদ্ধ বা লড়াই।
প্রাচীনকাল এবং মধ্যযুগের সুন্দরী নারীদের জন্য যে লড়াই বা সংগ্রাম হয়ে থাকে এটা হয়তো অনেকেই আপনারা অনুধাবন করতে পারছেন। তৎকালে সুন্দরী নারীদের পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা শক্তিশালী পুরুষদের মধ্যে প্রবল ভাবে প্রতিয়মান ছিল। এবং এ সকল সুন্দরী নারীদের জন্য একটি সম্প্রদায়ের সাথে অন্য একটি সম্প্রদায়ের খুব সহজেই যুদ্ধ বেধে যেত।
এ সকল যুদ্ধগুলো খুবই রক্তক্ষয়ী এবং নির্মম হয়ে থাকে। তবে এ সকল যুদ্ধ বর্তমান পৃথিবীর মতো এত বেশি সময় ধরে চলতো না। এবং এগুলো মূলত খন্ড খন্ড যুদ্ধ এর আকারে সংঘটিত হয়ে থাকতো। এ সকল যুদ্ধের সাধারণত শক্তিশালী সম্প্রদায় এগুলো জয় লাভ করত এবং জয়লা ভ করলে উক্ত নারীকে তারা নিয়ে গিয়ে ব্যবহার করত।
  • সম্প্রদায়ের মধ্যে অন্ত:দ্বন্দ্ব এর কারনে যুদ্ধ।
যখন কোন সম্প্রদায় স্বাভাবিক আকৃতি থেকে বেশ বড় আকার ধারণ করত তখন এর মধ্যে বিভিন্ন কারণে অন্তর্দ্বন্দ দেখা যেত। বিশেষ করে একটি সম্প্রদায় দুটি ভাগে ভাগ হতে দেখা যেত। এবং এই দুটি ভাগের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়ে থাকত এবং যারা জয়লাভ করতো তারা ক্ষমতা দখল করতে এবং অন্য পক্ষ উক্ত স্থান হতে বিতাড়িত হয়ে অন্য কোন স্থানে চলে যেত। এভাবেই প্রাচীনকালে যুদ্ধ সংঘটিত হতো।
  • নেতৃত্বের জন্য যুদ্ধ।
নেতৃত্বের জন্য লড়াই প্রাচীনকালে মধ্যযুগে এবং আধুনিক যুগেও বিদ্যমান রয়েছে। এটা যুদ্ধের একটি মৌলিক কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়। নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা শক্তিশালী প্রায় প্রতিটি গোষ্ঠী সম্প্রদায় এবং দেশ অর্জন করতে চায়। এবং এর ফলে বিভিন্নভাবে যুদ্ধ সংঘটিত হয়ে থাকে।  আধুনিক যুগে গোটা বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে চায় আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া যারা পূর্বে সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল। এবং এই কারণ রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এর অন্যতম কারণ। 
  • পারিবারিক শত্রুতার কারণে যুদ্ধ
প্রাচীনকালে খাবার সহ বাসস্থানের বেশ সংকট ছিল।  প্রয়োজন , বাসস্থান বা খাবারের তাগিদে প্রাচীন মানুষরা এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে যাযাবরের মতো স্থান পরিবর্তন করে থাকতো। খাবার, নারী এবং বাসস্থানের অব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন সময়ে একটি পরিবারের সাথে অন্য একটি পরিবারের শত্রুতার জের ধরে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ বা অন্তর্দ্বন্দ্ব  সৃষ্টি হতো।

খ. মধ্যযুগের যুদ্ধের কারণ

প্রাচীনকাল পেরিয়ে মানুষ যখন মধ্যযুগে অবতীর্ণ হয়েছে চাহিদার পরিবর্তনসহ দৃষ্টিকোণ এবং ধর্মীয় মেরুকরণ তৈরি হয়েছে। তাই মধ্যযুগে বেশ কিছু নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে যার কারণে মধ্যযুগ বেশ কয়েকটি যুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছে। প্রাচীনকাল পেরিয়ে মানুষ যখন মধ্যযুগে অবস্থান করছে সে সময়ে গোষ্ঠীভিত্তিক বা সম্প্রদায় ভিত্তিক কাঠামো ভেঙে গিয়ে রাষ্ট্রীয় কাঠামো তৈরি হয়েছে। এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভেতরে সম্প্রদায় এবং গোষ্ঠীগতভাবে মানুষ বসবাস করত। প্রাচীনকালের বেশ কয়েকটি কারণ এর সাথে মধ্যযুগে বেশ কয়েকটি নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
  • ধর্মীয় কারণে যুদ্ধ
  • শাসনের অঞ্চল বৃদ্ধির জন্য যুদ্ধ
  • নারীর জন্য যুদ্ধ
  • পারিবারিক অন্তর্দ্বন্দ্বের জন্য যুদ্ধ
  • বিশ্ব নেতৃত্বের জন্য যুদ্ধ
মধ্যযুগে যে সকল কারণে যুদ্ধ হয়েছে তার সাথে বর্তমানের রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এর কারণ সম্পূর্ণ প্রাসঙ্গিক না হলেও কিছু কিছু বিষয়ে প্রাসঙ্গিক। মধ্যযুগের যে সকল কারণে যুদ্ধ হয়েছে সেগুলোর নিচে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হলো-

  • ধর্মীয় কারণে যুদ্ধ
প্রাচীনকালে ধর্মের প্রভাব এবং প্রতিপত্তি তেমন একটা ছিল না। ধীরে ধীরে মানুষের বিচার বিবেচনার ক্ষমতা এবং আইকিউ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে তারা অনুসন্ধান করার চেষ্টা করেছেন এই মহাবিশ্বের মালিক কে এবং কে এই মহাবিশ্ব পরিচালনা করে? এভাবেই বিভিন্ন ধর্মের আবর্তন ঘটেছে প্রাচীন যুগ পেরিয়ে মধ্যযুগ এবং মধ্যযুগের ধর্মীয় রীতি নীতি এবং অনুশাসন তুঙ্গে অবস্থান করছিল। 
বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে প্রভেদ এবং ভেদাভেদ ছিল যার কারণে একেক ধর্মের অনুসারীদের সাথে অন্য ধর্মের অনুসারীদের খুব একটা ভালো সম্পর্ক ছিল না ফলাফলে বিভিন্ন সময়ে একে অপরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে মধ্যযুগে যতগুলো ধর্মযুদ্ধ হয়েছে ঠিক এতটি ধর্মযুদ্ধ প্রাচীনকাল এবং আধুনিককাল মিলিয়েও এতটা যুদ্ধ সংঘটিত হয়নি।
মধ্য যুগে ধর্মীয় রীতি নীতি কঠোরভাবে পালন করা হতো এবং যারা ধর্মীয় রীতি নীতি মানতে ব্যর্থ হতো তাদের কঠোর শাস্তিও প্রদান করা হতো। কিছু কিছু ধর্ম ছিল জাজক বা ধর্মগুরু শাসিত সে সকল ধর্মগুরু বা শাসকরা নিজের ইচ্ছা এবং সুবিধার জন্য ধর্মের বিভিন্ন পরিবর্তন করত। এতে সাধারণ মানুষ যে ধর্মের মধ্যে বেশি সুবিধা পেতো সে ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে যেত। এতে করে বিভিন্ন সময়ে নানা ধর্মযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে।
  • শাসনের অঞ্চল বৃদ্ধির জন্য যুদ্ধ
মধ্যযুগের বেশ কয়েকটি শাসকের মধ্যে অন্যতম হলেন, চেঙ্গিস খান। এমন অনেক শাসক ছিলেন যারা নিজেদেএ শাসন অঞ্চল বারানোর জন্য আশে পাশের রাজ্য দখল করা শুরু করে এতে করে বিভিন্ন যুদ্ধের সৃজন হয়েছে। সাধারণত যুদ্ধের পূর্বে সম্প্রদায়ের মধ্যে একটা স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। কেনন যুদ্ধ পরিচালনা তরাই করে যারা যুদ্ধের খরচ পরিচালনা করার মতো অর্থ সম্পদের মালিক হয়। মধ্যযুগের শাসন অঞ্চল থেকে যে কর বা শুল্ক নেওয়া হয় এতে করে রাজার অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। তাই শাসন অঞ্চল বৃদ্ধির জন্য শক্তিশালী শাসকরা পার্শ্ববর্তী রাজ্যের দখল নেওয়া শুরু করে এতে করে শুরু হয় যুদ্ধ।
  • নারীর জন্য যুদ্ধ
নারীর জন্য যুদ্ধ অনেক পূর্ব থেকেই হয়ে আসছে । প্রাচীনকাল থেকেই নারীর সৌন্দর্যের মোহে পড়েছে প্রভাবশালী পূরুষরা এবং এই দাবীদার  যদি একাধিক হয় তাহলেই সমস্যা  তৈরি  হয় । তখন একাধিক প্রভাবশালী পুরুষদের মধ্যে সংঘর্ষ তৈরি হয় । মধ্যযুগে এটা প্রকট আকার ধারণ করে। কারণ আমরা ইতিহাস ও সাহিত্য বিশ্লেষণ  করলে দেখি মধ্যযুগের রাজা বা বাদশাহরা নারীললুপ ছিলেন। তবে সবাই যে এমন ছিলেন এমন নয় । কিন্তু, অধিকাংশই এমন টাইপের ছিলেন ও ভোগ লিপ্স্যুতে মগ্ন ছিলেন। সাধারণ প্রজাদের কল্যাণে তাদের মনোযোগ ছিল না। 
  • পারিবারিক অন্তর্দ্বন্দ্বের জন্য যুদ্ধ
পারিবারিক অন্ত:দ্বন্দ্বের জন্য মধ্যযুগের বেশ কয়েকটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। এ সকল যুদ্ধগুলো পরিবারের মধ্যে যখন মেরুকরণ তৈরি হয় তখন সৃষ্টি হয় বা সংগঠিত হয়। যে সকল পরিবার রাষ্ট্র শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করে সে সকল পরিবারের মধ্যে যদি কাউকে তার ন্যায্য দাবি থেকে বঞ্চিত করা হয় তাহলে অসন্তোষ তৈরি হয় এবং সেখান থেকেই পারিবারিক অন্তর্দ্বন্দ্বের জন্য যুদ্ধ তৈরি হয়। এছাড়াও কোন রাজার পরিবারের মধ্যে যদি শত্রুপক্ষের প্রলোভনে কাছের মানুষ বিশ্বাসঘাতকতা করে তখন এই সকল যুদ্ধ সংঘটিত হয়ে থাকে।
 ইতিহাসের পাতা বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাই সিরাজউদ্দৌলা এবং জাফরের মধ্যের বিশ্বাসঘাতকতা যার ফলে বাংলার স্বাধীনতা চিরদিনের জন্য অস্তমিত হয়ে যায় এবং এমনকি এখন পর্যন্ত বাংলা তার সম্পূর্ণ অঞ্চল জুড়ে একটি রাষ্ট্র হতে পারেনি। বাংলার অধিকাংশ অঞ্চল ভারতের মধ্যে রয়েছে এবং বাংলার একটি অঞ্চল বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন দেশ হয়েছে অর্থাৎ মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে বাংলার বৃহৎ একটি অংশ যেমন উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার এই সকল অঞ্চলগুলো এখনো স্বাধীনতা লাভ করতে পারেনি।
  • বিশ্ব নেতৃত্বের জন্য যুদ্ধ
বিশ্ব নেতৃত্বের জন্য যে যুদ্ধগুলো সংগঠিত হয়েছে সেগুলো ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ ও নৃশংস। বিশ্ব নেতৃত্বের জন্য বর্তমানে যেমন রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ এর কারণ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ঠিক তেমনি মধ্যযুগেও বেশ কিছু যুদ্ধ হয়েছে যার মূলে ছিল বিশ্ব নেতৃত্বের লোভ। ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনা যদি আমরা বিশ্লেষণ করি তাহলে খুব সহজেই আমরা বিষয়টি অনুধাবন করতে পারব। বিশ্ব নেতৃত্বের জন্য যে সকল মানুষ যুদ্ধের অংশ হয়ে উঠেছিল তাদের মধ্যে চেঙ্গিস খান অন্যতম।
চেঙ্গিস খান পৃথিবীর প্রায় পুরো অঞ্চল দখল করে নিয়েছিল এবং তার শাসন কায়েম করেছিল। চেঙ্গিস খানের বাহিনীর অত্যাচারে বিভিন্ন গোষ্ঠী অঞ্চল ও রাজ্য ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে। এমনকি শিশু নারী ও বৃদ্ধরাও কোনরকম রক্ষা পায়নি চেঙ্গিস বাহিনীর তান্ডব থেকে। চেঙ্গিস খানের যুদ্ধের ভয়াবহতা ছিল সবচেয়ে বেশি। চেঙ্গিস খান যে অঞ্চল দিয়ে গেছেন সে অঞ্চলকে লুটপাট খুন-খারাবির মাধ্যমে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে কোনরকম দ্বিধা করেননি। বর্তমানে রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ এর কারণ যদি আপনি বিশ্লেষণ করতে চান তাহলে খুব সহজেই আপনি বুঝতে পারবেন যে এই যুদ্ধের মূলে রয়েছে বিশ্ব নেতৃত্বের নৃশংস লোভ ও লালসা।

গ. আধুনিক যুগের যুদ্ধের কারণ

আধুনিক যুগে যুদ্ধের বেশ কিছু কারণ নির্ধারণ করা যায়। প্রাচীনকাল এবং মধ্যযুগের যেসব কারণে যুদ্ধ হয়েছে আধুনিক যুগে সে সকল কারণ অন্তর্ভুক্ত থাকলেও এর সাথে নতুন নতুন কারণ ও প্রেক্ষাপট যুক্ত হয়েছে। আধুনিক কালে বিশ্ব নেতৃত্ব যে সকল কারণে যুদ্ধের প্রেক্ষাপট হয়ে উঠেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করা। 
  • বিশ্ব নেতৃত্বের লোভ
বিশ্ব নেতৃত্বের জন্য বেশ কয়েকটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়  এর মধ্যে অন্যতম হলো প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। এই দুটি বিশ্বযুদ্ধ গোটা বিশ্বকে কাপিয়ে তোলে। বিশ্বযুদ্ধে আমরা প্রত্যক্ষ করেছিলাম জার্মানির চ্যান্সেলর হিটলারের কথা ।  হিটলার কৌশলে তার দেশের  মানুষদের ক্ষেপিয়ে তোলে এবং এর ফলে জার্মানির জনসাধারণ বিশ্বের নেতৃত্বের জন্য আগ্রাসী রুপ ধারণ করে এবং বিশ্ব নেতৃত্বের লোভে শুরু করে বিশ্বব্যাপী এক মহাযুদ্ধ। 
  • অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করা
বর্তমানে অধিকাংশ  যুদ্ধ সংগঠিত হয় অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করার জন্য । গোটা বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে চাইলে সর্বপ্রথম অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করা । যার ফলে এটা সহজেই বোঝা যায় যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করাটা ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ । আপনি যদি একটু অনুধাবন করেন তাহলে বুঝতে অসুবিধা হবে না যে বর্তমানে আমেরিকা গোটা বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার পেছনে সে দেশের ধনকুবেরদের অবদান অনেক বেশি। আপনি এখন যে প্ল্যাটফরমে আমাদের লেখাটা পড়ছেন সেটারও নেতৃত্ব আমারিকার হাতে। বিশ্বের সেরা দশজন ধনকুবেরের কথা বলেন তাহলে খুব সহজেই জেনে যাবেন যে অধিকাংশই আমেরিকার। 
  • নিরাপত্তার জন্য যুদ্ধ
নিরাপত্তার জন্য যুদ্ধ প্রায়ই যুদ্ধ ঘটে থাকে । কেননা এমন অনেক যুদ্ধবাজ জাতি থাকে যারা সব সময় যুদ্ধ করতে ভালোবাসে এমন অনেক অপ্রয়োজনে যুদ্ধ  করে থাকে যা খুবই সামান্য বিষয় । এসকল জাতি বা দেশকে ঠেকাতে বা নিরাপত্তার জন্য যুদ্ধ হয়ে থাকে। বর্তমানের রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধ পশ্চিমাদের মতে নিরাপত্তার জন্য সংগঠিত হয়ে আসছে। যদিও এই যুদ্ধের ফলে প্রাণহানী ঘটেছে অধিকসংখ্যক । 
  • অস্ত্র ব্যবসার জন্য যুদ্ধ
বর্তমানে অস্ত্র ব্যবসায় যেসকল দেশ শীর্ষে অবস্থান করছে এরাই প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধ এর কারণ। তারা শুধু রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এর কারণ নয় তারা গোটা বিশ্বেই যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করে এবং অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা তারা আয় করে থাকে।
 আপনারা হয়তো একটা বিষয় লক্ষ্য করর থাকবেন যে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রকে ভয় দেখালেও সরাসরি বা প্রত্যক্ষলভাবে কোন দেশের সাথে যুদ্ধে জড়ায় না। কেননা যুদ্ধে জড়ালে আপনি জয় লাভ করলেও আপনার ক্ষতি হবেই। 
বর্তমানের রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের অন্যতম কারণ অস্ত্র বানিজ্য।  
সাম্প্রতিক সময়ে চিন ও তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে আমেরিকার সাথে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে চিনের যার পেছনে রয়েছে এই অস্ত্র বানিজ্য।  বিশ্বে যদি শান্তিপূর্ণ অবস্থা তৈরি হয় তাহলে নিশ্চিতভাবেই কমে যবে অস্ত্রবানিজ্য। তাই অপেক্ষাকৃত দূর্বল রাষ্ট্রগুলোকে বা স্বাধীনতাকামী বিপ্লবীদের অস্ত্র সাহায্য বা সামরিক সাহায্যের নামে অস্ত্র বানিজ্য করে থাকে উন্নত বিশ্ব।
নিজের দেশের অর্থে তৈরি যুদ্ধের ষড়ঞ্জাম ব্যবহার করলে লাভবান না হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক। তাই আমেরিকা ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা প্রদান করার মাধ্যমে তাদের সাথে কৌশলে অস্ত্রবানিজ্য করেছে। আবার ঠিক একই পথে হাটছে তাইওয়ান প্রসঙ্গে। শুধু রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এর কারণ নয় আধুনিক যুগের প্রায় সব যুদ্ধের সাথে এই কারণ আঙ্গা আঙ্গিভাবে জড়িত। 


৩. রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের আসল কারণ | রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল 

গোটা বিশ্ব খুব ভালোভাবেই জানে যে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য রাশিয়ার গৌরবান্বিত অতীত  অর্থাৎ সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। বিশেষ করে রাশিয়ার জনগণ কখনো ভুলবেও না। সোভিয়েত ইউনিয়ন এর পূর্বে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রকাঠামের দিকপাল হিসেবে গোটা বিশ্বে নেতৃত্ব দিয়েছে, কিন্তু গোটা বিশ্বকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আনার জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নকে খুব কৌশলে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। 
ফলশ্রুতিতে, গোটা বিশ্বকে নেতৃত্ব প্রদান করে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। বাণিজ্য নীতি এবং অর্থনৈতিকভাবে নতুন নতুন অঞ্চল তৈরি করতে তেমন একটা বাধার সম্মুখীন হতে হয় না ফলে, রাষ্ট্রের যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি দিন দিন আরো সমৃদ্ধ হচ্ছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এর অন্যতম কারণ এই এক পাক্ষিক ভাবে গোটা বিশ্বকে স্বেচ্ছাচারী শাসন থেকে দূর করার লক্ষ্যে রাশিয়া ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। নিচে বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হলো:
  • রাশিয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধ এর অন্যতম কারণ হলো ন্যাটো জোট। 
  • ন্যাটো আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে একটি সামরিক সংগঠন। যার সদস্য হলো পশ্চিমা বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। নাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে যদি অন্য কেউ সামরিকভাবে আঘাত হানার চেষ্টা করে, তাহলে ন্যাটোর সকল সদস্য রাষ্ট্র  মিলে ওই রাষ্ট্রকে প্রতিহত করা হয়।
  • আমেরিকা এবং ন্যাটোর সদস্যভুক্ত  রাষ্ট্র মনে করে ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগদান করুন কিন্তু রাশিয়া মনে করে ইউক্রেন যদি ন্যাটোতে যোগদান করে তাহলে আমেরিকা সব রাশিয়ার সীমান্তের পাশে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করবে, এতে রাশিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হচ্ছেন পুতিন সরকার।
  • আমেরিকার শক্তিশালী বলয় ভাঙতে চায় রাশিয়া।
  • রাশিয়া পশ্চিমা বিশ্বকে বার বার জানিয়ে আসছে যে ইউক্রেনকে যেন ন্যাটোতে না নেওয়া হয় কিন্তু পশ্চিমাবিশ্ব রাশিয়ার কথায় কর্ণপাত না করায় এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে।

৪. রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ইউরোপিয় ইউনিয়নের ভূমিকা | রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল 

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের অন্যতম কারণ ইউরোপিয় ইউনিয়নের দুর্বল নেতৃত্ব। শুধু ইউরোপিয় ইউনিয়ন নয় গোটা ইউরোপকেই পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র।  ইউরোপিয় ইউনিয়ন আমেরিকার প্রদর্শিত পথেই পা বাড়িয়েছে। বিভিন্নভাবে রাশিয়াকে দমাতে চেয়েছে এর কারণে ইউরোপিয় ইউনিয়ন রাশিয়ার ওপর চাপিয়েছে বিভিন্ন অর্থনৈতিক চাপ ও নিষেধাজ্ঞা।  এভাবেই আমেরিকার পথেই চলেছে রাশিয়াকে নাস্তানাবুদ করার জন্য।  ফলে আমরা দুরদর্শিতার অভাব লক্ষ্য করি ইউরোপিয় ইউনিয়নের নেতৃত্বে।

ইউরোপিয় ইউনিয়নের অধিকাংশ দেশই ন্যাটোর সদস্য হওয়াই তাদেরকে আমেরিকার নির্দেশেই চলতে হয়। ফলে বিভিন্নভাবে গোটা বিশ্ব এককেন্দ্রীক শাসনের ফলে ইউরোপও স্বাধিনভাবে মতামত নিয়ে সেভাবে আগ্রহী নয়। পাশাপাশি রাশিয়ার স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত কখনো ইউরোপ মেনে নিবে না এটাও স্বাভাবিক।  রাশিয়ার স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত এবং আমেরিকার প্রভাবে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ কোনভাবেই পরিষ্কার করতে পারেনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন। 


৫. রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা | রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল 

রাশিয়ার ভাঙনের পূর্বে সোভিয়েত ইউনিয়ন গোটা বিশ্বের একাংশের নেতৃত্বে ছিল এক সময়, কিন্তু নব্বইয়ের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর গোটা বিশ্বের মাতবর বনে গেছে যুক্তরাষ্ট্র।  ফলে বিশ্বের কোথাও যুদ্ধ এর পরিস্থিতি তৈরি হলে সেখানে কোন ভাবে না কোনভাবে হাত থাকে। ঠিক একই কারণে রাশয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণেও এই আমেরিকার বড় সড় হাত রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্নভাবে ইউক্রেনকে  রাশিয়ার বিরুদ্ধে সহযোগিতা করে আসছে। এবং এখনও যুদ্ধ চলমান রয়েছে আমেরিকার অস্ত্র সরবরাহের জন্য। রাশিয়ার উন্নতি কখনোই আমেরিকা মেনে নিবে না এটা সম্পূর্ণ বিশ্বই জানে। 

৬. রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে মেরুকরণ | রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল 

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে গোটা বিশ্ব এখন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে এমনটি অনেকে ভেবে থাকলেও আসলে গোটা বিশ্ব এখন তিন ভাগে বিভক্ত। তিন ভাগের মধ্যে অন্যতম দুইটি শক্তিশালী মেরুর এক প্রান্তে রয়েছে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের জোট এই জোটটির পক্ষে রয়েছে আমেরিকা এবং ইউরোপ মহাদেশের অধিকাংশ দেশ এবং এশিয়ার সৌদি আরব ,দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান এবং অপরদিকে রাশিয়ার নেতৃত্বের জোট রয়েছে। তবে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ হিসেবে যে ন্যাটো  জোট রয়েছে সেটা নেতৃত্ব প্রদান করছে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের জোটকে। 
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এর ভয়াবহ ঘটনার কারণে এখন সাধারণত উন্নয়নশীল দেশ বা দুর্বল শক্তির দেশগুলো যুদ্ধে জড়াতে চায় না। এ সকল দেশগুলো সাধারণত নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টা করে থাকে। সুতরা ং খুব সহজেই আমরা বুঝতে পারছি যে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ এ গোটা বিশ্ব এখন প্রধানত দুইটি মেরুতে অবস্থান করছে।

৭. রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে কোন পক্ষের লাভ বেশি?  রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল 

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ এ গোটা বিশ্বকে ভুগতে হচ্ছে। প্রথমদিকে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রসহ তার মিত্র ইউরোপের অধিকাংশ দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রাশিয়াকে দুর্বল করে দিতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত রাশিয়াকে দুর্বল করা যায়নি। উল্টো আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ জ্বালানি সংকটের চরম পর্যায়ে রয়েছে অন্যদিকে রাশিয়া তার অর্থনীতি কে এই সুযোগে শক্তিশালী করে তুলেছে। রাশিয়া আসলে জানে যে পশ্চিমা বিশ্ব মূলত জ্বালানি সংকটের চরম পর্যায়ে পৌঁছাবে যদি রাশিয়া গ্যাস ও জ্বালানি ইউরোপে না রপ্তানি করে।

৯. উপসংহার | রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল 

যুদ্ধ আসলে সকল দেশ বা জাতির জন্য ভয়াবহ একটি অবস্থা সৃষ্টি করে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণ বর্তমান সকল দেশপ্রেমিক জনগণের নিকট ভয়ংকর থাবার নামান্তর। দুটি দেশের যুদ্ধের কারণ এ সংকটে রয়েছে সম্পূর্ণ বিশ্ব বিশেষ করে আফ্রিকার দরিদ্র দেশ গুলোতে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে । আফ্রিকার দরিদ্র রাষ্ট্র  নয় এমনকি  সম্পূর্ণ এশিয়াতেও জ্বালানী সংকটের অবস্থা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। শুধু রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ নয়, সাধারণ মানুষ চাই যেন কোন প্রকার যুদ্ধ সংঘটিত না হতে পারে। মানবতার জয় হোক হিংসা ও বিদ্বেষ বা ক্ষমতার লড়াই বন্ধ হোক।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url