OrdinaryITPostAd

সুসন্তান গড়তে বাবা-মায়ের করণীয়


আজকের শিশুই ভবিষ্যতের পিতা। প্রতিটি সন্তানই মা-বাবার জন্য সৃষ্টিকর্তার অপূর্ব দান। সন্তানকে ঘিরে জন্ম নেয় বাবা-মায়ের শত আশা-আকাঙ্ক্ষার। সন্তানের জীবনে সাফল্য আসে বাবা-মায়ের সঠিক প্যারেন্টিংয়ে। সন্তানকে স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ না দিয়ে প্রত্যেক বাবা-মায়েরই কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। তবেই আপনার সন্তান হবে সুসন্তান। সুসন্তান সকল বাবা-মায়েরই কাম্য। সন্তান সঠিকভাবে মানুষ হলে বাবা-মায়ের জীবন ধন্য হয়। প্রত্যেক ধর্মেই সন্তানকে সঠিকভাবে মানুষ করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে। বাবা-মায়ের জীবনে প্রশান্তি আসে সন্তানের সুশীল জীবনের মাধ্যমে।



ইসলাম ধর্মেও সুসন্তানের ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতায়।সুসন্তানের ইসলামি পরিভাষা নেককার সন্তান। হযরত আবু হুরাইরা (র.) থেকে বর্ণিত "রাসূল (স.) ইরশাদ করেছেন যখন কোনো ব্যক্তি মারা যায়, তখন তার আমলের পথ বন্ধ হয়ে যায়।তবে তিনটি আমল কখনো বন্ধ হয় না ১. সাদকায়ে জারিয়া, ২. ওই ইলম যা দ্বারা অন্যরা উপকৃত হয়, ৩. নেককার সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে।( সহিহ মুসলিমঃ১৬৩১, সুনানে আবু দাউদঃ২৮৮০)

আপনার সন্তানকে সুসন্তান হিসেবে গড়ে তুলতে হলে যেসব মেনে চলা উচিত। আজকে আমরা সঠিক প্যারেন্টিং নিয়েই আলোচনা করবো।

ভদ্র,সভ্য,শিষ্টাচার সম্পন্ন সন্তান গড়ে তুলুন

বাবা-মায়ের কাছে সন্তান সাত রাজার ধন।সন্তানের জন্যই তারা পরিশ্রম করে।সন্তানকে সুখে রাখার উদ্দেশ্যে তাদের সকল পরিকল্পনা। সন্তানের জন্য শুধু টাকা উপার্জন করলেই হবে না,দরকার সঠিক প্যারেন্টিং।বর্তমানে আধুনিক সমাজে পিতা-মাতা উভয়েই চাকরিতে ব্যস্ত থাকে। সন্তানকে সময় দেয়ার সুযোগ পায়না।ফলে সন্তান বখে যায়।যার ফলে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।সন্তানকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য আছে কিছু নিয়ম-কানুন।ছোট থেকেই তাকে শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়া দরকার।এর জন্য দরকার অসীম ধৈর্য ও অক্লান্ত পরিশ্রম। সৃষ্টিকর্তা পিতা-মাতাকে সে ধৈর্য দিয়েই প্রেরণ করেছেন। বাবা-মায়ের ধৈর্য, শ্রম সন্তানের জীবনকে প্রভাবিত করে।


ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি শেখাতে হবে

সন্তানকে ছোট থেকেই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন করে গড়ে তুলতে হবে।কথা বলার সময় তাদেরকে না বলা যাবে না।হ্যা,বোধক বাক্যের মাধ্যমে সন্তানের সাথে কথা বলতে হবে।ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সন্তানের মানসিক গড়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।পরবর্তীতে সে আত্মবিশ্বাসী হয়।আত্মবিশ্বাসী সন্তান জীবনে সফল হয় বেশি। তবে অতি আত্মবিশ্বাসী ভালো নয়, এদিকেও বাবা-মাকে নজর দিতে হবে।


বিনয়ী হতে শেখাতে হবে

সন্তানকে শেখাতে হবে,অনুরোধ করা,ধন্যবাদ বলা,দুঃখিত বলা এক্সকিউজ মি বলা শব্দগুলো।এগুলো বিনয়ী বাক্য।তাকে শেখাতে হবে সরি বা প্লীজ বললেই কেউ ছোট হয়ে যায় না।এগুলো বাবা-মায়ের দৈনন্দিন প্রয়োজনে বলা উচিত। বাবা-মায়ের বলা দৈনন্দিন কথাগুলো সন্তান অনুসরণ করে সবচেয়ে বেশি।


ন্তানের কথায় মনোযোগ দিতে হবে

আপনার বাচ্চা যখন কথা বলা শিখবে তখন থেকেই তার কথায় মনোযোগ দিতে হবে।সে কি বলতে চায় তা শুনতে হবে।আবার অন্যরা কথা বলার সময় চুপ থাকতে হয় ও মনোযোগী শ্রোতা হতে হবে এটা সে আপনার কাছেই শিখবে।আপনি আপনার সন্তানের সাথে যেরকম ব্যবহার করবেন সে ও ঠিক তেমনটাই করবে।


দৈহিক আকৃতি নিয়ে মন্তব্য না করা

দৈহিক আকৃতি নিয়ে কু-মন্তব্য করা কখনোই ভালো ব্যক্তিত্বের লক্ষ্যণ নয়।সকল মানুষই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি। তাই কানা হোক,খোড়া হোক তাকে নিয়ে মন্তব্য করা যাবে না।উল্টো তাদের সাথে স্বাভাবিক বন্ধুত্ব করা শেখাতে হবে।প্রয়োজনে সাহায্য করতে হবে।পিতা-মাতার উচিত সন্তানকে এ বিষয়ে আগেই শেখানো।কাউকে নিয়ে অহেতুক মজা করা যাবে না।


কোথাও প্রবেশের ক্ষেত্রে অনুমতি নেয়া

যেকোনো ব্যাপারেই অনুমতি নেয়া শেখানো বাঞ্ছনীয়।কারো বাসায় প্রবেশের ক্ষেত্রে অনুমতি নেয়া শেখাতে হবে।এমনকি পিতা-মাতার বেডরুমে প্রবেশের ক্ষেত্রে নক করা শেখাতে হবে।শিক্ষকদের কক্ষে অথবা শ্রেণিকক্ষে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করতে না করতে হবে।অনুমতি ছাড়া কারো কোনো জিনিসে হাত না দেয়াও একটা গুরুত্বপূর্ণ শিষ্টাচার।


বাজে ভাষা এড়িয়ে চলা

বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন মানুষ বাজে বা অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে থাকে।আবার টিভিতে দেখেও সন্তান এসব শিখতে পারে।তাই আগে থেকেই সন্তানের চলাচলে খেয়াল রাখতে হবে।এবং বাজে ভাষা ব্যবহারকারী থেকে দূরে রাখতে হবে।সন্তানকে শেখাতে হবে কোনটা ভালো কথা আর কোনটা বাজে কথা।ছোট থেকেই সন্তান কার সাথে মিশছে তার ব্যবহার কিরকম, তার মুখ থেকে উচ্চারিত শব্দাবলীর খেয়াল করতে হবে।


সাহায্য করা শেখানো

কেউ বিপদে পরলে হাত গুটিয়ে না নিয়ে সাহায্যের জন্য বাড়িয়ে দিতে হবে।সন্তানকে শেখাতে হবে বিপদের ভয়ে পিছিয়ে গেলে হবে না।দৃঢ় মনোবল নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।বাবা-মায়ের জন্যই সন্তান আত্মবিশ্বাসী হয়।আর যে সন্তানের আত্মবিশ্বাস রয়েছে সে সকল বিপদেই মাথা উচু করে দাড়াতে পারে।


নিজ নিজ ধর্মে অনুরাগী করা

প্রত্যেক ধর্মেই রয়েছে জীবন পদ্ধতি। যা মেনে চললে মানুষ বিপথগামী হয় না। সন্তানকে নিজ নিজ ধর্মের প্রতি ছোট থেকেই অনুরাগ বাড়াতে চেষ্টা করতে হবে বাবা-মায়ের।বাবা-মায়ের ধর্মের প্রতি টান থাকলে দেখা যায় পরবর্তীতে সন্তানও ধর্মের প্রতি অনুরক্ত হয়। এ থেকে সন্তানের নৈতিক জীবনের প্রতি আগ্রহ বাড়ে।


প্রত্যেক বাবা-মায়ের উচিত সন্তানের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া। সন্তান ভবিষ্যতে সফল হবে নাকি বিফল হবে পুরোটাই নির্ভর করে সঠিক প্যারেন্টিংয়ের উপর।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
2 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • Unknown
    Unknown January 27, 2022 at 11:30 PM

    MashaaAllah

  • ganinjacome
    ganinjacome March 3, 2022 at 4:31 PM

    CASINO DEALER TURN TO SACRAMENTO - JetBlue
    › casinos › sic › casinos › sic 울산광역 출장샵 This casino is temporarily closed. 경산 출장샵 The property was built for sale in August, 2018. Casino Shuttle Bus - Las 진주 출장마사지 Vegas (NV); Hotels - 1xbet 먹튀 Las Vegas 파주 출장안마 (USA)

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url