OrdinaryITPostAd

পিএসজিই মেসির নতুন ঠিকানা

 লিওনেল আন্দ্রেস মেসি (Lionel Andrés Messi)। সারাবিশ্বের কাছে যিনি ফুটবল যাদুকর। ১৯৮৭ সালের ২৪ জুন আর্জেন্টিনার রোজারিওতে তার জন্ম। তবে তার অসাধারণ ফুটবল দক্ষতার কারণে শৈশবের ক্লাব নিউওয়েলস বয়েজ থেকে তাকে বার্সেলোনায় নিয়ে আসা হয়। 

২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর সামান্য এক টিস্যু পেপার কন্ট্রাক্ট এ সাইন করার মাধ্যমে শুরু হয় বার্সায় মেসির পথচলা। সেই থেকে বার্সায় মেসি (Messi) গড়েছেন শত কীর্তি। তবে অবশেষে বার্সেলোনার সাথে দীর্ঘ ২১ বছরের সম্পর্কের অবসান ঘটাতে  চলেছেন ৬ বারের ব্যলন ডি'অর জয়ী এই তারকা ফুটবলার। সেই সাথে ইতি ঘটবে মেসি-বার্সার টিস্যু পেপারে মোড়ানো ভালোবাসার।

বার্সায় মেসি

সুদীর্ঘ বার্সা ক্যারিয়ারে মেসির রয়েছে আনন্দ বেদনা ও সাহসিকতার মিশেলে এক অমায়িক গল্প। বার্সেলোনার হয়ে এ পর্যন্ত ৭৭৮ ম্যাচে ৬৭২ গোল এবং ২৮৮ অ্যাসিস্ট এর মালিক মেসি। ২০ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি  (Messi)  শুধুমাত্র ফুটবলার হিসেবে নয়,ভাল মানুষ ও বন্ধু হিসেবেও জায়গা করে নিয়েছেন সতীর্থ ও কোটি ভক্ত সমর্থকদের হৃদয়ে।

বার্সেলোনার হয়ে মেসির কীর্তি তাকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। তার সময়কালে তিনি বার্সাকে (Barca) উপহার দিয়েছেন ১০ টি লা লীগা শিরোপা, ৪ টি চ্যাম্পিয়নস লীগ ট্রফি ও ৭ টি কোপা দেল রে এর শিরোপা। এছাড়া তার হাত ধরেই বার্সেলোনা পেয়েছে সমান ৩ বার করে ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ ও ইউরোপিয়ান সুপার কাপ চ্যাম্পিয়ন, ৮ বারের স্প্যানিশ সুপার কাপ চ্যাম্পিয়নের তকমা। তাই তো মেসি বার্সেলোনার কাছে ছিলেন বরাবরই স্পেশাল।

২০১৮ সালে দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়ের কাঁধে অধিনায়কত্ব তুলে দেয় বার্সা বোর্ড। অধিনায়ক হিসেবে মেসি ছিলেন অনবদ্য। প্রিয় দলের আর্মব্যান্ড বাহুতে জড়িয়ে তিনি এনে দিতে থাকেন একের পর এক সাফল্য। লা লীগা, স্প্যানিশ সুপার কাপ থেকে শুরু করে সবশেষে কোপা দেল রে শিরোপা বার্সা ঘরে তুলেছে মেসির নেতৃত্বে। 


মেসি (Leo Messi) বার্সেলোনাকে চিরকালই আগলে রেখেছেন মমতার ছায়া দিয়ে। দলের বিপদে তার ভূমিকা ছিল বরাবরই উৎসাহ-জাগানিয়া। সবশেষ মৌসুমে ক্লাব ও বোর্ডের মধ্যে চলমান বৈরীতার কারণে দলে বিরূপ প্রভাব পড়ে। সেই কঠিন মুহূর্তে মেসিই (Lionel Messi) ছিলেন ত্রাতার ভূমিকায়।তার বন্ধুসুলভ আচরণ ও নেতৃত্বের গুণ দলের মধ্যে টনিকের ন্যায় কাজ করে। মেসির এই গূ্ুণ দলের মধ্যে তাকে দিয়েছে অনন্য মর্যাদা। তুলনামূলক ভঙ্গুর ও খর্বশক্তির দল নিয়ে এগিয়ে যাবার সাহসী মনোভাব কোটি প্রাণকে করেছে বিমোহিত। 

বার্সার-মেসি মনোমালিন্যের সূত্রপাত

সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে মেসির  রয়েছে অনেক আনন্দ ও বেদনাময় স্মৃতির মিশেল। একসময়ের প্রবল শক্তিধর বার্সেলোনা ক্লাবে আলো ছড়িয়েছিলেন রোনালদিনহো,ডেভিড ভিয়া, জাভি, ইনিয়েস্তা, মাসচেরানো এর মত বিশ্বমানের ফুটবলাররা। তাদের সঙ্গে মেসির ভাবের আদান প্রদান ছিল প্রাণের বন্ধুসুলভ। তবে সময়ের বয়ে চলা ও প্রকৃতির নিষ্ঠুর নিয়মে বারবার ক্ষত-বিক্ষত হয়েছেন তিনি। 'অবসর' নামক নিষ্ঠুর বাস্তবতায় তিনি সময়ে সময়ে হারিয়েছেন তার প্রাণের সতীর্থদের। 

তবে বন্ধুবাৎসল মেসির সাথে ক্রমেই সখ্যতা গড়ে ওঠে বার্সেলোনায় যোগ দেয়া বিভিন্ন খেলোয়াড়ের।  ২০১৩ সালে বার্সায় যোগ দেন ব্রাজিলীয়ান ফরওয়ার্ড নেইমার। সেখানে ভ্রাতৃত্বের স্নেহ লাভ করেন মেসির কাছে। এছাড়া ২০১৪ সালে লুইস সুয়ারেজ  বার্সায় যোগ দেবার পর বন্ধুত্বের নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ হন সময়ের সেরা দুই ফুটবলার। 

২০১৪ পরবর্তী সময়ে বার্সেলোনার আক্রমণ ভাগকে অপ্রতিরোধ্য করে তোলে এই ত্রয়ীর ফুটবল দক্ষতা। এছাড়া ব্যক্তিগত জীবনেও তাদের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত মধুর। তবে ২০১৭ সালে বার্সা বোর্ড নেইমারকে ছেড়ে দিলে  ফরাসি ক্লাব পিএসজি (PSG) তাকে দলে ভেরায়। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বার্সা চুক্তি নবায়ন না করায় নেইমারকে ছাড়তে হয় এই ভাতৃত্যের বন্ধন। বার্সা বোর্ডের সাথে কথা বলেও তখন মত বদলাতে পারেননি মেসি। আবার,চলতি মৌসুমের শুরুতে বার্সেলোনার নতুন কোচ রোনাল্ড কোম্যান সাফ জানিয়ে দেন যে,বার্সেলোনার পরবর্তী মৌসুম পরিকল্পনায় তিনি সুয়ারেজ কে রাখতে চাচ্ছেন না। ফলে বার্সা ট্রান্সফার মেথডে সুয়ারেজ কে রিলিজ করে আতোয়াঁ গ্রিজমানকে দলে ভেরায়। ফলে খেলোয়াড়ি জীবনে আরও একটি বন্ধুকে হারানোর বেদনার সাক্ষী হন আর্জেন্টাইন এই ফুটবল যাদুকর।

ক্ষোভ ও বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্ত 

ছোট-খাটো গড়নের এই ফুটবল সম্রাট স্বভাবে চিরকালই নীরব-প্রতিবাদী ও ঈষৎ অভিমানী।  বার্সা বোর্ড এর একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ও সম্পর্কের টানাপোড়নে ২০২০ সালের শেষ দিকে সাবেক ক্লাব প্রেসিডেন্ট বার্তামেউ এর সাথে মনোমালিন্য তৈরি হয় লিও'র।এহেন পরিস্থথিতির জেরে বার্সাতে তিনি (Messi) আর থাকতে চান না বলে জানান। 

তবে সেখানে বাদ সেধেছিল মেসির রিলিজ ক্লজ ইস্যু। বার্সেলোনার সাথে তার চুক্তির মেয়াদ ৩০ জুন ২০২১ পর্যন্ত বলবৎ থাকায় এর আগে তাকে দলে পেতে যেকোন দলকে গুনতে হত ৭০০ মিলিয়ন ইউরো। এত বিশাল অঙ্কের অর্থ দেয়া কোন ক্লাবের জন্য ছিল অসম্ভব ব্যাপার। তাই ফ্রি এজেন্ট মেসির (Lionel Messi) জন্য অপেক্ষা করাই ছিল যৌক্তিক সিদ্ধান্ত।

মেসি-কাণ্ড ও বার্তামেউ এর পদত্যাগ 

মেসির (Lionel Messi) এই চলে যাবার খবরে পুরো শহর ফেটে পড়ে ক্রোধের অনলে। দলের প্রাণভ্রমরার ক্লাব ছাড়ার সংবাদে পুরো বার্সায় নেমে আসে শোকের ছায়া। ন্যু ক্যাম্পে লক্ষ লক্ষ জনতার প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরে ভারী হয়ে ওঠে চারপাশ। সেই সময়কার দায়িত্বরত প্রেসিডেন্ট বার্তামেউ এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামেন যেন পুরো বার্সাবাসী। বার্তামেউ এর নামে দুয়োধ্বনি, নানা ব্যাঙ্গ-বিদ্রূপ, এমনকি তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার জোর দাবি তোলেন মেসির ভক্ত-সমর্থকরা। প্রথমে পদ ছাড়তে না চাইলেও প্রবল আন্দোলন ও তোপের মুখে প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়তে বাধ্য হন বার্তামেউ। পরবর্তীকালে তার স্থলাভিষিক্ত হন হুয়ান লাপোর্তা।

মেসি কেন ফ্রি এজেন্ট? 

মূলত,চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে বোর্ডের সাথে এ বিষয়ে কোন কথা হয় নি মেসির। ফলে তিনি চলতি মৌসুমে এই ক্লাবে থাকবেন কী না এ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। তবে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আইনত মেসি এখন আর বার্সেলোনার চুক্তিবদ্ধ কোন খেলোয়াড় নন। এক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতিতে চলমান অচলাবস্থাকে দায়ী করছে বোর্ড। এছাড়া করোনার কারণে পিছিয়ে যাওয়া কোপা আমেরিকা ২০২১ সালের নতুন সূচীতে আয়োজিত হওয়ায় উক্ত সময়ে মেসি (Lionel Messi) জাতীয় দলের সাথে ব্যস্ত সময় পার করেন। ফলে চুক্তি নবায়নের ব্যাপারটি অন্ধকারেই রয়ে যায়। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের কোপা আমেরিকা ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল কে হারিয়ে শিরোপা জেতা জাতীয় দলের জার্সিতে তার (Lionel Messi) অন্যতম সেরা প্রাপ্তি।

 মেসির বার্সায় থেকে যাবার সম্ভাবনা কতটুকু?

আপাতদৃষ্টিতে মেসি বার্সায় থেকে যাবার সম্ভাবনা একেবারে নেই বললেই চলে। বার্সার আর্থিক সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করায় মেসিকে রেখে দেয়া বোর্ডের জন্য প্রায় অসম্ভব। মেসির চুক্তি পার হয়ে যাওয়ায় তাকে রাখার জন্য বোর্ডেকে বাড়তি অর্থ খরচ করতে হবে যা এই মুহূর্তে বোর্ডের পক্ষে অসম্ভব।

বর্তমান পরিস্থিতিতে মেসিও বার্সা ছাড়তে রাজি নন। মেসি ও বার্সার মধ্যে ২০২৫ সাল পর্যন্ত চুক্তি নবায়নের কথা চলেছিল এবং মেসি অর্ধেক বেতনে হলেও এই ক্লাবে থেকে যেতে চাচ্ছিলেন।

 তবে তাতে বাদ সাধল স্প্যানিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা। তারা আইনগত ভাবে মেসিকে রাখতে হলে অতিরিক্ত অর্থের বাধ্যবাধকতা আরোপ করে। সেজন্য আর্থিক দিক বিবেচনায় বার্সা বোর্ড কে নগদ অর্থ প্রদানে আইনগত ভাবে মেসিকে রাখার প্রস্তাব করে তবে এজন্য বহুল সমালোচিত নব্য সুপার লীগ থেকে নাম প্রত্যাহারের শর্ত জুড়ে দেয়। কিন্তু এহেন শর্ত মেনে মেসিকে রাখার ব্যাপারে একমত নয় বার্সার কর্তারা। ফলে ন্যু ক্যাম্প এ ফিরে যাওয়ার মেসির জন্য এমুহূর্তে আর খোলা নেই।

বার্সা ছেড়ে কোথায় যাবেন মেসি?

গ্রহের সেরা ফুটবলার মেসিকে (Messi) দলে ভেরাতে উদগ্রীব বিশ্ব ফুটবলের নামিদামি সব ক্লাবগুলো। এছাড়া ফ্রি এজেন্ট মেসিকে দলে পাওয়া দলের আক্রমণভাগে বাড়তি শক্তিমত্তা তৈরি করবে। 

মেসিকে দলে নেয়ার জন্য মুখিয়ে থাকা ক্লাবের তালিকায় আছে ম্যানসিটিি,চেলসি,পিএসজি (PSG) বা বায়ার্নের মত বাঘা ক্লাবগুলো। তবে পিএসজি (PSG) ফুটবল ক্লাবের দাবি,মেসিকে নেয়ার ব্যাপারে তার পরিবার ও মেসির বাবার সাথে কথা বেশ এগিয়েছে ক্লাবটির। এখন চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসা শুধু সময়ের অপেক্ষা। সেক্ষেত্রে মেসির নতুন ঠিকানা হতে পারে ফরাসি হাইপ্রোফাইল ক্লাব পিএসজি(PSG)। 

পিএসজিতে (PSG) মেসিকে স্বাগত জানাবেন নেইমার !

মেসিকে পিএসজিতে আনতে পিএসজি (PSG) বোর্ডের সাথে কয়েক দফা আলোচনা সেরেছেন নেইমার। প্রিয় বন্ধু মেসিকে কাছে পাবার জন্য তিনি উদগ্রীব হয়ে আছেন। এমনকি নিজের ১০ নম্বর জার্সি মেসির জন্য ছেড়ে দিতেও প্রস্তুত তিনি। তবে মেসি অবশ্য সেই প্রস্তাব নাকচ করেছন। পিএসজি (PSG) তার নতুন ঠিকানা হলে নিজের বহুল স্মৃতি বিজড়িত ১৯ নম্বর জার্সি আবারও গায়ে চাপাতে চান মেসি (Lionel Messi)। গুঞ্জন সত্যি হলে আবারও একই সাথে দেখা যাবে দুই সুপারস্টারকে।

 


হৃদয় ভাঙা বেদনায় পুড়ছে বার্সা সমর্থকেরা

মেসি বার্সা ছেড়ে যাচ্ছেন, যেন বিশ্বাস হচ্ছে না কোটি মেসি ভক্তের। দিনভর তারা মেসির বাড়ির সামনে অবস্থান নেন। তাদের ভাষ্যমতে, "আমাদের কাছে বার্সা মানে শুধুই মেসি। মেসিবিহীন বার্সা আমরা কল্পনাও করতে পারি না।"কারো কারো অভিযোগ, "বার্সা বোর্ড মেসিকে (Leo Messi) রাখবার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেনি। বহুল সমালোচিত নব্য সুপার লীগের আশায় তারা মেসিকে বলী হিসেবে ব্যবহার করেছে।" এদিকে মেসির (Messi) বিদায়ের খবর প্রচারের পর থেকে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে বার্সার ভক্তের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। মেসির বিদায়ে বেদনাহত সমর্থকদের এখন একটাই চাওয়া, যে ক্লাবেই যাক,ভাল থাকুক লিও।

বার্সা প্রেসিডেন্ট লাপোর্তার মন্তব্য 

মেসির বার্সা ছাড়ার প্রসঙ্গে লাপোর্তা বলেন,"আমরা মেসিকে বার্সায় রাখার সবরকম চেষ্টা করেছি। সে (Messi) এই ক্লাবকে ভালোবাসে। একারণে এখানে থেকে যেতে চেয়েছিল। তবে কিছু নির্মম পরিস্থিতির দরুন মেসিকে রাখা সম্ভব হয়নি। আমি কাউকে মিথ্যে আশা দিতে রাজি নই। মেসির (Lionel Messi) সাথে বার্সা বোর্ডের চুক্তি নবায়ন করার সকল পথ বন্ধ হয়ে গেছে।" মেসিকে ছাড়া একাদশ সাজাতে বেগ পেতে হবে বলেও জানান তিনি। সেক্ষেত্রে বার্সার আক্রমণ ভাগে গ্রিজমান, ফাতি রা হতে পারেন তুরুপের তাস। 

মেসির বিদায়ী বার্তা

মেসি (Leo Messi) পরশু (বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী ৮ আগস্ট ২০২১) বার্সায় তার শেষ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। এসময় মঞ্চের ওপর দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মেসি। তিনি বলেন,"বার্সা ছেড়ে কখনো যেতে হবে তা কোনদিন স্বপ্নেও ভাবিনি। গত মৌসুমে আমি বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেটি ভিন্ন তবে এ মৌসুমে বার্সা ছেড়ে যাবার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা আামার নেই। তাই বেশি কষ্ট হচ্ছে।  বোর্ডের সাথে এ নিয়ে সমঝোতা ও হয়েছিল আমার। তবে স্প্যানিশ ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থার কঠোর নিয়মে কারণে আামাকে বার্সা ছাড়তে হচ্ছে।"



মেসি আরও বলেন,"আমি বার্সাকে, আমার ভক্তদের  প্রচণ্ড ভালোবাসি। বার্সার সাথে আমার সম্পর্ক এখানেই শেষ নয়। বার্সাকে নিয়ে আমার অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। আমি বার্সায় আবার ফিরে আসব,হয়তোবা অন্য কোন ভূমিকায়।" পিএসজি তে যোগ দেয়ার প্রসঙ্গে মেসি বলেন,"অনেক গুলো ক্লাবে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছি। এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি। পিএসজি (PSG) অবশ্যই বিশ্বমানের একটি ক্লাব। কিছুই এখনো নিশ্চিত নয়। তবে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এটি নির্ধারিত হবে।"

অবশেষে অপেক্ষার অবসান 

বহু জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ফরাসি ক্লাব পিএসজিতেই (PSG) যোগ দিয়েছেন মেসি। নতুন চুক্তিপত্র অনুযায়ী পিএসজির সাথে ২ বছর এবং ঐচ্ছিক ১ বছরসহ মোট ৩ বছরের চুক্ততে আবদ্ধ হয়েছেন মেসি। আাজ (১০ আগস্ট ২০২১) এই চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত হয়।

চুক্তি স্বাক্ষর করার জন্য সপরিবারে প্যারিসে অবস্থান করছেন মেসি। চুক্তিমতে পিএসজিতে (PSG) তার বেতন ধরা হয়েছে ৩৫ মিলিয়ন ইউরো। অর্থাৎ প্রতি সপ্তাহে পিএসজি (PSG) বোর্ড তাকে দেবে প্রায় ৫ লাখ ইউরো।

এর আগে চেলসি ও টটেনহ্যাম এর মত বড় দলের প্রস্তাব পেলেও মেসি বেছে নেন পিএসজি (PSG) কে। PSG তে মেসি মাঠে নামবেন অচেনা ৩০ নম্বর জার্সিতে। সেখানে আবারও প্রিয় বন্ধু নেইমারের দেখা পাচ্ছেন মেসি। এছাড়াও পিএসজি তে (PSG) সতীর্থ হিসেবে স্বদেশী ডি মারিয়া, পারদেস রা মাঠ কাঁপাবেন তার সঙ্গে। 


শেষ কথা

একজন মেসিকে ফুটবলের ইতিহাসে বারবার পাওয়া যাবে না। মেসির এই ঈশ্বর প্রদত্ত ফুটবল দক্ষতা প্রতিটা ফুটবল অনুরাগীর মনে আলাদা অনুরণন সৃষ্টি করে। মেসির অসাধারণ নৈপুণ্য শৈলী তাকে দিয়েছে প্রচুর মর্যাদা ও খেতাব।

ভক্ত সমর্থক দের ভালোবাসার অবারিত ধারায় বার বার সিক্ত হয়েছেন মেসি। হবেনই না বা কেন,মেসি যে অনন্য। তবে যে ক্লাবের হয়ে কীর্তি গড়েছেন এতসব, সেই বার্সা ছেড়ে যাওয়াটা অবশ্যই পীড়াদায়ক মেসির কাছে।

 ফুটবল এমনই। কখনো আনন্দে ভাসায়, আবার কখনো দুঃখের সাগরে নিমজ্জিত করে খেলোয়াড়, ভক্ত সমর্থকদের। তবে বিশ্বব্যাপী অগণিত মেসিভক্তের হৃদয়ে তার জন্য ভালোবাসার এতটুকু ঘাটতি হবে না গ্রেটেস্ট ফুটবলার অব দ্যা আর্থ খ্যাত মেসির (Lionel Messi)। কোটি ভক্তের হৃদয় অন্তঃস্থলের উচ্চারিত সুর, "তুমি আামাদের সকলের জন্য স্পেশাল। ভাল থেকো লিও। পাশে আছি সবসময়।"

মো. এমদাদুর রহমান উদয়

স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট,

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

The DU Speech-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url